► প্রকাশিত বাক্য ২১ একসঙ্গে পড়ুন। এই শাস্ত্রাংশটি বিশ্বাসীদের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আমাদের কী বলে?
সমস্ত সৃষ্টি ঈশ্বরের গৌরবার্থে বিদ্যমান, কিন্তু স্বর্গ হল মহাবিশ্বের কেন্দ্রীয় দৃশ্য, যেখানে তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্ট প্রাণীদের দ্বারা সর্বোচ্চ স্তরে ঈশ্বরের উপাসনা করা হয়। (পড়ুন প্রকাশিত বাক্য ৫:১১-১৪ পড়ুন)। ঈশ্বরের গৌরব স্বর্গে এমন পূর্ণতায় প্রকাশিত হবে যে তা হবে নগরের জ্যোতি (প্রকাশিত বাক্য ২১:২৩)। এটি সেই স্থান যেখানে আমরা ঈশ্বরকে এতটাই জানতে পারব যে আমরা তাঁর মুখ দেখতে পাব (প্রকাশিত বাক্য ২২:৪)।
স্বর্গে বিশ্বাসীরা ঈশ্বরকে উপাসনা করে পূর্ণ পরিতৃপ্তি ও আনন্দ লাভ করে। গীতসংহিতা ১৬:১১ পদ বলে, "তোমার সান্নিধ্য আমাকে আনন্দ দিয়ে পূর্ণ করবে, তোমার ডান হাতে আছে অনন্ত সুখ।” এটি উপযুক্ত যে আনন্দ ও উপাসনা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছেন, যাতে আমরা তাঁর স্বভাব বুঝে আমরা তাঁর উপাসনা করতে পারি যে তিনি কে। আমাদের আবেগ, প্রেম করার ক্ষমতা এবং বুদ্ধিমত্তা প্রদান করা হয়েছে, যাতে আমরা ঈশ্বরের উপাসনা করতে পারি।
যিশু তাঁর শিষ্যদের এই কথাগুলি বলেছিলেন:
তোমাদের হৃদয় যেন উদ্বিগ্ন না হয়। ঈশ্বরকে বিশ্বাস করো, আমাকেও বিশ্বাস করো। আমার পিতার গৃহে অনেক ঘর আছে, যদি না থাকত, আমি তোমাদের বলতাম। তোমাদের জন্য আমি সেখানে স্থান প্রস্তুত করতে যাচ্ছি। আর যখন আমি সেখানে যাই ও তোমাদের জন্য স্থানের ব্যবস্থা করি, আমি আবার ফিরে আসব এবং আমি যেখানে থাকি, সেখানে আমার সঙ্গে থাকার জন্য তোমাদের নিয়ে যাব। (যোহন ১৪:১-৩)
যিশুর কথাগুলি স্বর্গ সম্বন্ধে আমাদের কিছু বিষয় জানায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, স্বর্গ হল ঈশ্বরের গৃহ। যিশু এটিকে তাঁর পিতার গৃহ বলে অভিহিত করেছিলেন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, আমরা একদিন ঈশ্বরের সঙ্গে সেখানে বাস করতে পারব।
স্বর্গের প্রতিশ্রুতি আমরা পৃথিবীতে যেভাবে জীবনযাপন করি তা পরিচালনা করা উচিত। যে ব্যক্তি চিরন্তন মূল্যবোধে বেঁচে থাকে সে পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে। যে ব্যক্তি স্বর্গীয় পুরস্কার প্রত্যাশা করে, তার কষ্ট সহ্য করার এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা সম্পাদন করার জন্য প্রচেষ্টা করার প্রেরণা রয়েছে। যিশু অত্যাচারিত ব্যক্তিকে বলেন, "উল্লসিত হোয়ো, আনন্দ কোরো; কারণ স্বর্গে তোমাদের পুরস্কার প্রচুর" (মথি ৫:১২)।
কখনও কখনও পৃথিবীর মানুষ তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী বাড়ি কিনতে পারে না, অথবা তারা মনের মোট সবকিছু করে উঠতে সক্ষম হয় না। কিন্তু ঈশ্বরের অসীম ক্ষমতা ও সম্পদ রয়েছে, তাই আমরা জানি যে তাঁর গৃহ হল ঠিক সেটাই, যা তিনি চান। তাই, ঈশ্বরের প্রকৃতির সঙ্গে স্বর্গ ঈশ্বরের প্রকৃতির সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
স্বর্গে কোন পাপ থাকবে না। স্বর্গদূত বা মানুষ অথবা অন্যান্য প্রাণী যা-ই হোক না কেন, স্বর্গে থাকা সমস্ত প্রাণীই হবে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। (পড়ুন প্রকাশিত বাক্য ২১:৮, ২৭)
বেদনা, দুঃখ, দ্বন্দ্ব ও বিপদসহ পাপের সকল ফল থেকে স্বর্গ হবে মুক্ত। (পড়ুন প্রকাশিত বাক্য ২১:৪)। অসুস্থতা, বার্ধক্য এবং মৃত্যু সহ সৃষ্টির উপর আর কোন অভিশাপ থাকবে না। (পড়ুন প্রকাশিত বাক্য ২২:৩)
স্বর্গের সৌন্দর্য বর্ণনার অতীত। আমাদেরকে দেওয়া বিবরণীতে যা বলা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে রয়েছে জ্যাসপারের দেওয়াল, মুক্তার দরজা, দুর্লভ রত্নের ভিত্তি এবং সোনার রাস্তা। (পড়ুন প্রকাশিত বাক্য ২১:১৮-২১)।
কে এবং কখন?
যারা পাপের জন্য অনুতপ্ত হয় এবং যিশুখ্রিষ্টকে পরিত্রাতা ও প্রভু হিসাবে বিশ্বাস করে তাদের জন্য স্বর্গ প্রস্তুত করা হয়েছে (যোহন ৩:১৬)। বাইবেল আমাদের বলে যে, আমরা যদি অনন্তকালীন মূল্যবোধের দ্বারা জীবনযাপন করি, তা হলে আমরা স্বর্গে এক অনন্ত ও সুরক্ষিত ধনে বিনিয়োগ করতে পারি। (পড়ুন মথি ৬:২০)। স্বর্গ কোটি কোটি পরিত্রাণপ্রাপ্ত মানুষ ও স্বর্গদূতেদের দ্বারা পূর্ণ (প্রকাশিত বাক্য ৫:৮-১১)।
মানুষ কখন স্বর্গে যায়? যিশু সেই চোরকে ক্রুশে মারা যাওয়ার সময় বলেছিলেন যে, সেই দিন তারা একসঙ্গে পরমদেশে থাকবে (লূক ২৩:৪৩) পৌল বলেছিলেন যে, শরীর থেকে অনুপস্থিত থাকা হল প্রভুর সাথে উপস্থিত থাকা (২ করিন্থীয় ৫:৮)। অতএব, আমরা জানি যে বিশ্বাসীরা মৃত্যুর পর স্বর্গে যায়। যিশুর পুনরাগমনের সময় যে-বিশ্বাসীরা তখনও জীবিত থাকবে, তারা মৃত্যু ছাড়াই স্বর্গে যাবে। (পড়ুন ১ করিন্থীয় ১৫:৫১-৫২, ১ থিষলনীকীয় ৪:১৩-১৮)
“যদি আমি নিজের মধ্যে এমন একটি আকাঙ্ক্ষা খুঁজে পাই যা এই পৃথিবীর কোন অভিজ্ঞতাই পূরণ করতে পারে না, তাহলে সবচেয়ে সম্ভাব্য ব্যাখ্যাটি হ’ল আমাকে এক অন্য বিশ্বের জন্য তৈরি হয়েছি। ... সম্ভবত পার্থিব সুখভোগ কখনই তা সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে ছিল না, কিন্তু তা জাগিয়ে তোলার জন্য, বাস্তব বিষয় উপস্থাপন করার জন্য...অন্য দেশের দিকে এগিয়ে যেতে এবং অন্যদেরও একই কাজ করতে সাহায্য করা আমার জীবনের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।"
- সি. এস. লুইস-এর Mere Christianity
২য় ভাগ: অবিশ্বাসীদের অনন্তকালীন পরিণতি
পৃথিবীতে শাস্তি কখনও কখনও শেষ হয়ে যায়, এমনকি শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তির মৃত্যুতেও। কিন্তু, যিশু এমন এক শাস্তি যা অনন্তকাল স্থায়ী। তিনি বলেছিলেন,
অভিশপ্ত তোমরা, আমার কাছ থেকে দূর হয়ে অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হও, যা দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। …তারপর তারা চিরন্তন শাস্তির উদ্দেশ্যে যাবে, কিন্তু ধার্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে (মথি ২৫:৪১, ৪৬)।
যিশু এবং প্রেরিতেরা সুনিশ্চিতভাবে জানিয়েছিলেন যে, নরক, অগ্নি হ্রদ এবং অনন্ত শাস্তি বিদ্যমান। যিশু আমাদের এই ভয়ংকর স্থান এড়িয়ে চলার জন্য সাবধান করেছিলেন। এখানে যিশু এবং প্রেরিতদের বিবৃতি রয়েছে।
যুগের শেষ সময়ে এরকমই ঘটনা ঘটবে। স্বর্গদূতেরা এসে ধার্মিকদের মধ্যে থেকে দুষ্টদের পৃথক করবেন এবং জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে তাদের নিক্ষেপ করবেন, যেখানে হবে কেবলই রোদন ও দন্তঘর্ষণ (মথি ১৩:৪৯-৫০)।
ফরীশীদের সঙ্গে কথা বলার সময় যিশু বলেছিলেন,"সাপেরা! কালসাপের বংশেরা! তোমরা ন্যায়বিচারের দিন কীভাবে নরকদণ্ড এড়াতে পারবে?" (মথি ২৩:৩৩)
আরেকবার যিশু যখন ফরীশীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তিনি এমন একজন ব্যক্তির যন্ত্রণা ভোগের বর্ণনা করেছিলেন, যে মারা গিয়েছিলেন এবং পাতালে (হাডিজে) গিয়েছিল:
সে পাতালে নিদারুণ যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছিল। সেখান থেকে সে দৃষ্টি ঊর্ধ্বে তুলে দূরে অব্রাহামের পাশে লাসারকে দেখতে পেল। তাই সে তাঁকে ডাকল, ‘পিতা অব্রাহাম, আমার প্রতি কৃপা করুন; লাসারকে পাঠিয়ে দিন, সে যেন আঙুলের ডগায় জল নিয়ে আমার জিভ ঠান্ডা করে দেয়। কারণ এই আগুনে আমি ভীষণ যন্ত্রণা পাচ্ছি।' (লূক ১৬:২৩-২৪)
প্রেরিত পৌল লিখেছেন
…প্রভু যীশু যখন তাঁর পরাক্রান্ত দূতবাহিনী নিয়ে জ্বলন্ত আগুনের শিখার মাঝে স্বর্গ থেকে প্রকাশিত হবেন, এ সমস্ত তখনই ঘটবে। যারা ঈশ্বরকে জানে না এবং আমাদের প্রভু যীশুর সুসমাচার পালন করে না, তাদের তিনি শাস্তি দেবেন। তাদের দণ্ড হবে চিরকালীন বিনাশ এবং প্রভুর সান্নিধ্য ও তাঁর পরাক্রমের গৌরব থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হবে। (২ থিষলনীকীয় ১:৭-৯)
পিতর লিখেছেন
…কারণ স্বর্গদূতেরা পাপ করলে, ঈশ্বর তাদের নিষ্কৃতি না দিয়ে নরকে পাঠিয়ে দিলেন, বিচারের জন্য অন্ধকারাচ্ছন্ন পাতালে শিকল দিয়ে বন্দি করে রেখে দিলেন। (২ পিতর ২:৪)
যোহন লিখেছেন
আর তাদের প্রতারণাকারী দিয়াবলকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে নিক্ষেপ করা হল, যেখানে সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীকেও নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তারা যুগে যুগে চিরকাল, দিনরাত যন্ত্রণাভোগ করবে। …আর যার নাম সেই জীবনপুস্তকে লিখিত পাওয়া গেল না, তাকেই আগুনের হ্রদে নিক্ষেপ করা হল। (প্রকাশিত বাক্য ২০:১০, ১৫)
এই স্থানকে বর্ণনা করার জন্য ব্যবহৃত শব্দগুলো লক্ষ করুন: অগ্নি, যন্ত্রণা, শাস্তি, বিনাশ, অন্ধকার, শিকল, বিচার, রোদন এবং দন্তঘর্ষণ।
যিশু বলেছিলেন
তোমার ডান চোখ যদি তোমার পাপের কারণ হয়, তা উপড়ে ফেলে দাও। তোমার সমস্ত শরীর নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং শরীরের একটি অঙ্গহানি হওয়া তোমার পক্ষে ভালো। আর যদি তোমার ডান হাত তোমার পাপের কারণ হয়, তা কেটে ফেলে দাও। তোমার সমস্ত শরীর নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং শরীরের একটি অঙ্গহানি হওয়া তোমার পক্ষে ভালো।(মথি ৫:২৯-৩০)
যিশু বলেছিলেন যে চোখ ও হাত সমেত নরকে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে বরং নিজের ডান চোখ উপড়ে ফেলা এবং নিজের ডান হাত কেটে ফেলা ভাল হবে। যিশু দেহের অঙ্গহানি করতে উৎসাহিত করছিলেন না, বরং সে সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ করতে যা আমাদের পাপ ও নরকের দিকে নিয়ে যাবে, তা যতই মূল্যবান বলে মনে হোক না কেন।
► নরক সম্বন্ধে অন্য কিছু ধর্মের মতবাদে ভুল কি আছে?
বাইবেল আমাদের বলে যে মৃত্যু হল মানুষের পরীক্ষাকালের শেষ এবং নরক হল (১) অনন্ত, (২) অপরিবর্তনীয় এবং (৩) নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক। বাইবেলের এই সত্যকে নাস্তিকরা প্রত্যাখ্যান করে, যারা বলে যে মৃত্যুর পরে আর কিছুই নেই, এবং যিহোবার সাক্ষী (Jehovah's Witnesses), মর্মোন এবং বিশ্বজনীন মতবাদীরা (Universalists) বলে যে নরক বলে কিছু নেই। মৃত্যু যে মানুষের পরীক্ষাকালের সমাপ্তি ঘটায় তা রোমান ক্যাথলিকরা অস্বীকার করে এবং তারা বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পরে মানুষের অবস্থার প্রতিকার করা যেতে পারে।
আবার এমনও আছে, যারা নরককের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে কারণ তারা এটিকে অন্যায় বলে মনে করে। তারা বলে যে, পাপ সীমাবদ্ধ সময়ের মধ্যে ঘটে এবং এর শাস্তি অনন্তকালীন হতে পারে না। সাধু অগাস্টিন ফৌজদারি আইনের উদাহরণ দিয়ে এই আপত্তির জবাব দেন। যদি কয়েক মিনিটের মধ্যে ডাকাতি হয়, তাহলে একজনের কি কেবলমাত্র কয়েক মিনিটের সাজা হওয়া উচিত? যে খুন শুধু মুহূর্তের জন্য হয়, তার ক্ষতি অপূরণীয় হয়। শাস্ত্রে আমরা দেখি যে, অনন্ত ও অনন্ত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপের পরিণাম অনন্ত শাস্তি, যদিও তা একটি সীমাবদ্ধ জীবদ্দশায় সংঘটিত হয়েছিল।
২। অনুতাপহীন পাপীরা ঈশ্বরকে সেই অনন্তকালীন সেবা দিতে অস্বীকার করে, যা জন্য তারা তাঁর কাছে ঋণী।
৩। আমরা শাশ্বত প্রাণী, যদি আমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্নতা বেছে নিই তা হলে আমাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
পৃথিবীতে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে চাই। এটিকে খুবই কঠোর বলে মনে হয় যে একটি সিদ্ধান্ত অনন্তকালীন পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। আমরা ভাবতে পছন্দ করি যে ভবিষ্যতে দ্বিতীয় সুযোগ আসবে, এমনকি যদিও যদিও আমরা এখন ইচ্ছাকৃতভাবে পছন্দ করছি। কিন্তু, এটা অযৌক্তিক নয় যে, ঈশ্বর আমাদের পরীক্ষার সময়কালকে এক জীবনকালের মধ্যে সীমিত করবেন।
কেউ কেউ নরকে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করে কারণ তারা চিন্তা করে যে কিভাবে একজন প্রেমময় ঈশ্বর এইরকম এক ভয়ংকর জায়গায় কাউকে পাঠাতে পারেন, যেমনটা এই পদগুলি বর্ণনা করে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, ঈশ্বর চান না যে কেউ হারিয়ে যাক কিন্তু তিনি চান যেন সকলে অনুতপ্ত হয় এবং পরিত্রাণ পায়। বাইবেল বিভিন্ন জায়গায় এই কথা বলে। (পড়ুন ২ পিতর ৩:৯, ১ তীমথিয় ২:৪, প্রেরিত ১৭:৩০)। যারা নরকে যায় তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা তাদেরকে এই ভয়ংকর জায়গায় স্থান দিয়েছে। দুর্ঘটনাবশত কেউ নরকে যায় না। যারা যায় তারা ঈশ্বর, ধার্মিকতা ও পরিত্রাণ প্রত্যাখ্যান করে সেই স্থানকে বেছে নিয়েছে।
যেহেতু সমস্ত উত্তম বিষয় ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে, তাই ঈশ্বরকে প্রত্যাখ্যান করা হল পরিশেষে যা উত্তম তা অস্বীকার করা।” প্রশান্তি, ভয় ও যন্ত্রনা থেকে সুরক্ষা এবং এক আরামদায়ক জায়গা হল উত্তম বিষয়, যা একমাত্র ঈশ্বরই দিতে পারেন। ঈশ্বরের কাছ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকার অর্থ হল যা কিছু উত্তম তার অনুপস্থিতি, এবং তা হল নরক।
ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, যিশুখ্রিস্টের প্রায়শ্চিত্তমূলক কাজের মাধ্যমে তাঁর প্রেম আমাদের জন্য আসন্ন ক্রোধ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভবপর করেছে (১ থিষলনীকীয় ১:১০, ১ থিষলনীকীয় ৪:৯)। নরকের যন্ত্রণার পরিবর্তে, আমরা পরিত্রাণের আনন্দ এবং স্বর্গের আশ্চর্যের অংশীদার হতে পারি।যখন আমরা ঈশ্বরের প্রতি অনুতাপ এবং আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রতি বিশ্বাস বেছে নিই, তখন আমরা আমাদের পরিণতির জন্য স্বর্গকে বেছে নিই (ফিলিপীয় ৩:২০, প্রেরিত ২০:২১)।
“অবশেষে নরকের মতবাদের আপত্তিগুলিকে এই প্রশ্নে আসতে হবে: “ঈশ্বরের কাছে আপনি আর চাইছেন? তাদের অতীতের পাপগুলি মুছে ফেলে নতুন করে শুরু করা, এবং এ কাজের বাধায় সহায়তা করার জন্য অলৌকিক সাহায্য করা? কিন্তু সেই প্রস্তাব তিনি আগেই দিয়েছেন। তাদের ক্ষমা করতে? কিন্তু তারা ক্ষমা চায় না। তাদের একা ছেড়ে দিতে? হায়, আমি ভয় পাচ্ছি যে তিনি তাই-ই করছেন।"
- সি. এস. লুইস-এর The Problem of Pain থেকে শব্দান্তরিত করা।
ত্রুটি এড়ান: অনন্তকালীন পরিণতি ভুলে যাওয়া
পার্থিব জীবনে অনেক সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে মনে হয় না। সময় থাকলে অনেক ভুল সংশোধন করা যায়। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে অনেক সিদ্ধান্তের চিরস্থায়ী পরিণতি রয়েছে। আমরা জানি না আমরা কখন মারা যাব এবং আমাদের প্রবেশনার সময়সীমা শেষ হয়ে যাবে। মৃত্যুর পর আমরা সেই কাজগুলি পরিবর্তন করতে পারব না, যেগুলি আমাদের নিজেদের অনন্তকালীন পরিণতিকে প্রভাবিত করেছিল অথবা যে কাজগুলি অন্যদের উপর তাদের সিদ্ধান্তে প্রভাবিত করেছিল।
প্রত্যেক ব্যক্তি স্বর্গে বা নরকে অনন্তকাল থাকবে। স্বর্গ হল ঈশ্বরের গৃহ, যেখানে বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের সঙ্গে বাস করবে, আনন্দের সাথে তাঁর উপাসনা করবে। স্বর্গে কোন পাপ নেই এবং এর ফলে যে দুঃখকষ্ট আসে, তাও নেই। যারা খ্রিষ্টের দ্বারা তাদের পাপ থেকে পরিত্রান পায়নি, তাদের জন্য নরক হল অনন্ত, অপরিবর্তনীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির স্থান। অনন্ত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত পাপের শাস্তি হল নরক।
১৩ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) প্যাসেজ অ্যাসাইনমেন্ট: প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নীচে তালিকাভুক্ত শাস্ত্রাংশগুলির একটি বরাদ্দ করা হবে। পরবর্তী ক্লাস সেশনের আগে আপনাকে এই শাস্ত্রাংশটি পড়তে হবে এবং সেখানে এই পাঠের বিষয়ে কি বলা হয়েছে সে সম্বন্ধে আপনাকে একটি অনুচ্ছেদ লিখতে হবে।
যিশাইয় ৫:১১-১৬
মথি ৫:২৭-৩০
লূক ১৬:১৯-৩১
প্রকাশিত বাক্য ২২:১-৫
প্রকাশিত বাক্য ২২:১০-১৭
(২) পরীক্ষা: আপনি ১৩ নং পাঠটির উপর একটি পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী ক্লাস শুরু করবেন। প্রস্তুতির সময় পরীক্ষার প্রশ্নগুলি ভালোভাবে অধ্যয়ন করুন।
(৩) শিক্ষাদানের অ্যাসাইনমেন্ট: আপনার ক্লাসের বাইরে শিক্ষা দেওয়ার সময়সূচি এবং রিপোর্ট করার কথা ভুলবেন না।
১৩ নং পাঠের পরীক্ষা
(১) স্বর্গের প্রাথমিক কাজ কি?
(২) এমন চারটি বিষয় তালিকাভুক্ত করুন, যেগুলি স্বর্গে থাকবে না।
(৩) কারা স্বর্গে যাবে?
(৪) বিশ্বাসীরা কখন স্বর্গে যায়?
(৫) নরক সম্বন্ধে বাইবেল আমাদের কোন তিনটে বিষয় জানায়?
(৬) একজন ব্যক্তির তার হাত কেটে ফেলা উচিত বলতে যিশু কি বুঝিয়েছিলেন?
(৭) নরক অনন্তকালস্থায়ী। এর তিনটি কারণ তালিকাভুক্ত করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.