কেন শাস্ত্রের অনুপ্রেরণার অর্থ হল যে, এটি নির্ভুল।
অনুপ্রাণিত, অব্যর্থ, এবং চির-অভ্রান্ত - এই শব্দগুলি।
কেন বাইবেল লেখা সমাপ্ত হয়ে গেছে এবং তা আর প্রসারিত করা যাবে না।
কিভাবে বাইবেল হল ধর্মতত্ত্বের প্রাথমিক উৎস এবং চূড়ান্ত কর্তৃত্ব।
খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের দৈনন্দিন জীবনে বাইবেল কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
বাইবেল সম্বন্ধে খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের একটি বিবৃতি।
(২) শিক্ষার্থী ভুল কর্তৃত্বের কথা শোনা অথবা সীমিত উদ্দেশ্য নিয়ে বাইবেল অধ্যয়ন করা এড়িয়ে চলবে।
ভূমিকা
ক্লাস লিডারের জন্য নোট: সাধারণত সেশনটি পূর্ববর্তী পাঠের উপর একটি পরীক্ষা এবং পূর্ববর্তী পাঠের উদ্দেশ্যগুলির পর্যালোচনা দিয়ে শুরু হবে। যেহেতু এটি প্রথম পাঠ, নীচের শাস্ত্র পাঠ করে ক্লাস শুরু করুন।
► গীতসংহিতা ১১৯:১-১৬ পদ একসঙ্গে পড়ুন। এই অংশটি বাইবেল সম্বন্ধে আমাদের কী জানায়?
পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর কথা বলেছেন। তিনি নিজেকে এবং তার সৃষ্টির উদ্দেশ্য প্রকাশ করেছেন। ঈশ্বর আমাদের কাছে যে সত্য প্রকাশ করেছেন তাকে বলা হয় প্রকাশ বা প্রত্যাদেশ। বাইবেলে “প্রকাশিত বাক্য” নামে একটি বই আছে। কিন্তু “প্রকাশিত” বা “প্রত্যাদেশ” বা “প্রকাশ” শব্দটি ঈশ্বরের প্রকাশ করা সমস্ত সত্যের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে।
► ঈশ্বর আমাদের কাছে কি কি উপায়ে সত্য প্রকাশ করেছেন?
প্রকাশের গঠন বৈচিত্র্য
যেহেতু ঈশ্বর সত্যকে বিভিন্ন উপায়ে প্রকাশ করেছেন, তাই আমরা সেগুলিকে দুটি বিভাগে ভাগ করেছি: সাধারণ প্রকাশ এবং বিশেষ প্রকাশ।
সাধারণ প্রকাশ
সাধারণ প্রকাশ হল যা ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের সম্পর্কে আমাদের দেখিয়েছেন। আমরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নকশায় ঈশ্বরের বিস্ময়কর বুদ্ধিমত্তা ও শক্তি দেখতে পাই।
ঈশ্বরের সর্বোচ্চ সৃষ্টি হল মানুষ। আমরা যখন মানুষকে কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে তা দেখি, তখন আমরা ঈশ্বর সম্বন্ধে বিভিন্ন বিষয় শিখি। আমরা যে যুক্তিতর্ক করতে পারি, সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করতে পারি এবং সঠিক ও ভুলের মধ্যে পার্থক্য বলতে পারি (যদিও পুরোপুরি নয়), তা আমাদের দেখায় যে আমাদের সৃষ্টিকর্তার অবশ্যই সেই ক্ষমতাগুলো উচ্চতর মাত্রায় রয়েছে। আমরা জানি যে ঈশ্বর অবশ্যই এমন একজন ব্যক্তি যিনি চিন্তা করতে ও ভাববিনিময় করতে পারেন কারণ আমাদের সেই ক্ষমতাগুলো রয়েছে।
যেহেতু “সাধারণ প্রকাশ” আমাদের দেখায় যে ঈশ্বর কথা বলতে পারেন, তাই আমরা বুঝতে পারি যে “বিশেষ প্রকাশ” ঘটতে পারে। যেহেতু ঈশ্বর কথা বলতে পারেন, তাই ঈশ্বরের কাছ থেকে বার্তা এবং এমনকি ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি পুস্তকও পাওয়া সম্ভব।
“সাধারণ প্রকাশ” দ্বারা মাধ্যমে মানুষ জানে যে একজন ঈশ্বর আছেন, তাদেরকে তাঁর বাধ্য হওয়া উচিত এবং তারা ইতিমধ্যেই তাঁর অবাধ্য হয়েছে। (পড়ুন রোমীয় ১:২০-২১।) কিন্তু “সাধারণ প্রকাশ” আমাদের বলে না যে কিভাবে ঈশ্বরের সঙ্গে সঠিক সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। “সাধারণ প্রকাশ” আমাদের “বিশেষ” প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা দেখায়। এটি দেখায় যে সব মানুষই পাপী এবং সৃষ্টিকর্তার সামনে তাদের কোনই অজুহাত নেই। কিন্তু এটি আমাদেরকে কোন সমাধান জানায় না।
বিশেষ প্রকাশ
[1]ঈশ্বর তাঁর অনুপ্রাণিত শাস্ত্র এবং তাঁর পুত্র যিশুর মাধ্যমে আমাদেরকে “বিশেষ প্রকাশ” দিয়েছেন। “বিশেষ প্রকাশ” সেই অবস্থা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা যা “সাধারণ প্রকাশ” আমাদেরকে দেখায়: পতিত এবং দোষী। “বিশেষ প্রকাশ” ঈশ্বরকে বর্ণনা করে, পতন ও পাপকে ব্যাখ্যা করে এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সম্মিলিত হওয়ার পথ দেখায়।
কল্পনা করুন যে আপনি বাইবেলের অস্তিত্ব সম্বন্ধে জানতেন না। তবে এখন বুঝতে পারলেন যে একজন ঈশ্বর আছেন। আপনি জানলেন যে আপনি ঈশ্বরের সঙ্গে সমস্যায় আছেন। মৃত্যুর পর কী হয় তা আপনি জানেন না। জীবনের উদ্দেশ্যও আপনি জানেন না। এমনকি আপনি এও জানেন না কিভাবে ঈশ্বরের কাছে পৌঁছাতে হয়।
এরপর কল্পনা করুন যে কেউ আপনাকে একটা বই দেখাচ্ছেন এবং আপনাকে বলছেন যে সেই প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়ার জন্য এটা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে। আপনি কি ভাবতে পারছেন যে এই বইটি আপনার কাছে কতটা মূল্যবান হবে?
“আমি বিশ্বাস করি না যে এমন কোনও ব্যক্তি সুসমাচার প্রচার করতে পারেন যিনি ব্যবস্থা প্রচার করেন না। ব্যবস্থার মানকে নিচু করুন এবং আপনি সেই আলোকে ম্লান করে দেবেন যার দ্বারা মানুষ তার অপরাধ বুঝতে পারে।“
চার্লস স্পারজন (Charles Spurgeon)
বাইবেলের দাবি
► বাইবেল নিজের সম্বন্ধে কি দাবি করে? বাইবেল থেকে কিছু বিবৃতির উদাহরণ দিন যেগুলো দেখায় যে এটি ঈশ্বরের কাছ থেকে বলে দাবি করে।
আসুন আমরা সেই দাবি সম্বন্ধে আলোচনা করি, যা বাইবেল নিজের সম্বন্ধে করে থাকে। এরপর, আমরা প্রমাণ দেখব যে বাইবেল সত্য। বাইবেল নিজেকে ঈশ্বরের বাক্য বলে দাবি করে। পুরাতন নিয়মে ৩,০০০টিরও বেশি বিবৃতি রয়েছে যা বলে যে বার্তাগুলি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছিল। প্রায়শই সহজভাবে বলা হয় যে, "প্রভু বলেছেন...।"0F[1] যিশু পুরাতন নিয়মকে ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে মনে করতেন। (পড়ুন মথি ৫:১৭-১৮; যোহন ১০:৩৫; মার্ক ১২:৩৬)। নতুন নিয়মের লেখকরাও পুরাতন নিয়মকে ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে বলে মনে করতেন (পড়ুন প্রেরিত ৩:১৮; ২ তীমথিয় ৩:১৬; ২ পিতর ১:২০-২১)। নতুন নিয়মের লেখকরা নতুন নিয়মের লেখাগুলিকে ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে মনে করতেন (পড়ুন ১ করিন্থীয় ১৪:৩৭; ২ পিতর ৩:১৬)।
যদি একজন ব্যক্তি নিজের সম্বন্ধে বাইবেলের দাবি মেনে না নেন তাহলে তাকে তার প্রমাণগুলো দেখা উচিত। আবারও কল্পনা করুন যে আপনি বাইবেল সম্বন্ধে জানতেন না। কিন্তু এখন আপনি জানেন যে ঈশ্বর একজন ব্যক্তি এবং তিনি চাইলে কথা বলতে পারেন। সুতরাং, আপনি এটাও জানেন যে ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি পুস্তক আসাও সম্ভব। তারপর কেউ আপনাকে একটি পুস্তক দেখায় এবং আপনাকে বলে যে এটি ঈশ্বরের পুস্তক।
[2]► আপনি কিভাবে জানবেন যে বাইবেল সত্যিই ঈশ্বরের বাক্য? সেটি কেমন হবে বলে আপনি আশা করবেন?
বিশ্বের যে কোনও জায়গাতে যখন সুসমাচার প্রচার করা হয় তখন মানুষ সত্যের অভ্যন্তরীণ নিশ্চয়তা অনুভব করে থাকেন। তারা যখন সুসমাচারে বিশ্বাস করে এবং অনুতপ্ত হয়, তখন তারা ঈশ্বরের ক্ষমা এবং পরিবর্তিত জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করে। অধিকাংশ মানুষের কাছে বাইবেলে বিশ্বাস করার এটাই তাদের প্রথম কারণ। (পড়ুন ১ থিষলনীকীয় ১:৫)
এরপর যারা ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কযুক্ত তাদের জন্য ঈশ্বরের আত্মা শাস্ত্রের মাধ্যমে কথা বলেন, এবং বোধগম্যতা ও প্রত্যয় প্রদান করেন। পবিত্র আত্মা যেভাবে বাইবেল ব্যবহার করেন তা নিশ্চিত করে যে এটি ঈশ্বরের বাক্য। (পড়ুন ইফিষীয় ৬:১৭)
আমরা যখন ঈশ্বরের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে চলি, তখন আমরা দেখতে পাই যে বাইবেল সঠিকভাবে তার প্রকৃতি এবং তিনি আমাদের সাথে যেভাবে কাজ করেন তা প্রকাশ করে। বাইবেল আমাদেরকে ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক শুরু করার এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার উপায় সম্বন্ধে জানায়। এটি প্রমাণ করে যে, বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য। (পড়ুন গীতসংহিতা ১১৯: ১-২)
কিন্তু আপনি যদি এমন কোন প্রমাণ চান যা আপনার নিজের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তির উপর স্থাপিত নয়, তা হলে? অন্যান্য ধর্মের লোকেদেরও আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা রয়েছে, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা সত্যের উপর স্থাপিত নয়। কিভাবে আমরা জানতে পারি যে আমাদের অভিজ্ঞতা সত্যের উপর ভিত্তি করে স্থাপিত?
► বাইবেলে যা লেখা আছে তা যে সঠিক তার কি প্রমাণ আছে?
১,৫০০ বছর ধরে প্রায় ৪০ জন লেখক বাইবেলটি লিখেছেন। বেশিরভাগ লেখকই একে অপরের সাথে পরিচিত ছিলেন না। এই রকম একটি পুস্তক থেকে আমরা সাধারণত কী আশা করতে পারি? আমরা ধরে নিতেই পারি যে এতে সব ধরনের ভুল এবং অসঙ্গতি থাকবে। কিন্তু বাইবেল সম্বন্ধে এই বিষয়গুলি বিবেচনা করুন। বাইবেলে উল্লেখিত হাজার হাজার ভৌগোলিক স্থান খুঁজে পাওয়া গিয়েছে; বাইবেলে উল্লেখিত হাজার হাজার ঐতিহাসিক ঘটনা ও ব্যক্তিদের বিষয়ে ইতিহাসে নিশ্চিত হওয়া যায়; কোনো আবিষ্কারই বাইবেলের কোনো বক্তব্যকে কখনো মিথ্যা বা ভুল প্রমাণ করেনি; এবং বাইবেল কখনোই স্ববিরোধী কিছু বলে না। এখন পর্যন্ত যত বই লেখা হয়েছে তাদের কারো ক্ষেত্রেই এটি সত্য নয়। এই প্রমাণগুলি বাইবেলের এই দাবিকে সমর্থন করে যে বাইবেল ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত।
বাইবেল নিজেকে যে ঈশ্বরের বাক্য বলে দাবি করে সেই বিষয়ে যে প্রমাণগুলি রয়েছে, সেগুলি আমরা ছয়টা পয়েন্টে সংক্ষেপে তুলে ধরতে পারি। আমরা জানি যে বাইবেল সত্যিই ঈশ্বরের বাক্য কারণ:
বাইবেলের হাজার হাজার তথ্য সুনিশ্চিত করা হয়েছে।
বাইবেলের কোনো বিবৃতিই মিথ্যা প্রমাণিত হয় নি।
বাইবেল স্ববিরোধী কিছু বলে না।
প্রভাবের মাধ্যমে সুসমাচার প্রমাণিত হয়।
ঈশ্বরের আত্মা বাইবেলের মাধ্যমে কথা বলেন।
বাইবেল ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে পরিচালনা করে।
অনুপ্রেরণা হল একটি অতিপ্রাকৃত কাজ যেখানে ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ করেছেন এবং সেই প্রকাশকে তিনি লিখিত আকারে আমাদেরকে দিয়েছেন। বাইবেল হল অনুপ্রেরণার অন্তিম ফল। বাইবেলের মতো অনুপ্রেরণায় লেখা আর কোনো বই নেই। বাইবেলের অনুপ্রেরণার অর্থ হল এটি সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের বাক্য, এমনকি এর ব্যবহৃত শব্দগুলি পর্যন্ত।
যখন লোকেদের কাছে কোন বিশেষ ধারণা থাকে তখন তারা কখনও কখনও নিজেদেরকে অনুপ্রাণিত বলে মনে করেন। কিন্তু বাইবেল যখন নিজেকে ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত বলে দাবি করে তখন সেটি এর চেয়ে আরও বেশি কিছুকে বোঝায়।
সমস্ত শাস্ত্রলিপি ঈশ্বর-নিশ্বসিতএবং শিক্ষা, তিরস্কার, সংশোধন ও ধার্মিকতায় প্রশিক্ষণের জন্য উপযোগী (২ তীমথিয় ৩:১৬)
যদিও শাস্ত্র মানুষের হাতে লেখা কলম থেকে এসেছে, কিন্তু বাইবেল ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে তা এই পদে জোর দেওয়া হয়েছে। যেহেতু বাইবেল ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, তাই এটি বিশ্বাসসূত্র বা মতবাদের জন্য নির্ভরযোগ্য। মানুষ যা করতে পারত, তার চেয়ে এটি উত্তম।
সর্বোপরি, তোমাদের অবশ্যই বুঝে নিতে হবে যে, শাস্ত্রের কোনো ভবিষ্যদ্বাণী ভাববাদীর নিজের ব্যাখ্যার বিষয় নয়। কারণ মানুষের ইচ্ছা থেকে কখনও ভাববাণীর উদ্ভব হয়নি, মানুষেরা পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়ে ঈশ্বর থেকে যা পেয়েছেন, তাই বলেছেন। (২ পিতর ১:২০-২১)
২য় পিতরের এই পদগুলি বলে যে লেখকরা পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়েছিলেন। বাইবেল লেখকদের নির্ভুলতা তাদের নিজস্ব জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল ছিল না। লেখকরা তাদের লেখায় পবিত্র আত্মার দ্বারা অনুপ্রাণিত বা সঞ্চালিত হয়েছিলেন, এই বিষয়টা দেখায় যে লেখার নির্ভরযোগ্যতা আসলে ছিল ঈশ্বরের ওপর নির্ভরশীল। তাই বাইবেল হল ঈশ্বরের মতই মতো সম্পূর্ণভাবে নির্ভরযোগ্য।
অনুপ্রেরণা বিষয়টা কেমন ছিল?
► লেখকরা বাইবেল লেখার আগে কি কি উপায়ে ঈশ্বরের সত্যকে জানতে পেরেছিলেন ?
অনেক সময় মানুষ অবাক হয়ে চিন্তা করে যে অনুপ্রেরণা কিভাবে কাজ করেছে। কীভাবে ঈশ্বর তাঁর সত্যকে প্রকাশ করেছিলেন এবং তা সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কি না, তা সুনিশ্চিত করেছিলেন? ঈশ্বরের প্রকাশিত হওয়ার শৈলী সম্পর্কে প্রথমেই আমাদের যে সত্যটা খেয়াল করে উচিত তা হল এর মধ্যে বৈচিত্র্য আছে। তিনি কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নন। (পড়ুন ইব্রীয় ১:১)
কখনও কখনও ঈশ্বর শ্রবণযোগ্য কণ্ঠে কথা বলেছিলেন, যেমন তিনি মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন (যাত্রাপুস্তক ৩৩:১১)। অন্য সময়ে তিনি স্বপ্ন বা দর্শন দিয়েছেন এবং লেখক সেগুলি বর্ণনা করেছেন।[1] সম্ভবত শাস্ত্রের যে অংশটি ঈশ্বরের কাছ থেকে সরাসরি ঈশ্বরের কাছ থেকে মুদ্রণে এসেছে তা ছিল ইস্রায়েলের সাথে চুক্তি যা ঈশ্বরের আঙ্গুল দিয়ে লেখা হয়েছিল (দ্বিতীয় বিবরণ ৯:১০)। শাস্ত্রের অন্যান্য অংশগুলিকে সরাসরি নির্দেশ করা হয়েছে বলে মনে হয়, কারণ যাত্রাপুস্তক, লেবীয় পুস্তক, এবং গণনাপুস্তকের প্রধান অনুচ্ছেদগুলি এই বিবৃতির পরে এসেছে, “সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, ...”
অনুপ্রাণিত হওয়ার অর্থ এই নয় যে, ঈশ্বর সেই কথাগুলো লেখকের কাছে শ্রবণযোগ্য স্বরে বলেছিলেন। আমরা বিভিন্ন লেখকের মধ্যে ব্যক্তিত্ব ও রচনাশৈলীর পার্থক্য দেখতে পাই। উদাহরণস্বরূপ, পৌলের লিখনশৈলী পিতরের থেকে একেবারে আলাদা। অনুপ্রেরণার বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি লেখকদের ব্যক্তিত্ব, শব্দভাণ্ডার, লেখার ধরন, শিক্ষা এবং ঐতিহাসিক গবেষণা সম্বন্ধে ঈশ্বরের ব্যবহারকে স্বীকৃতি দেয়।
অনুপ্রেরণার সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি হল যে ঈশ্বর লেখককে সম্পূর্ণভাবে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। তিনি ঐশ্বরিক সত্য প্রকাশ করার জন্য মানব লেখকের কল্পনা এবং ব্যক্তিত্বকে ব্যবহার করেছিলেন। কেবল তিনি সত্য প্রকাশই করেননি, কিন্তু সেইসঙ্গে সম্পূর্ণ নির্ভুলতা নিশ্চিত করার জন্য লেখার প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানও করেছিলেন।
অনেকে মনে করেন যে, ঈশ্বর কেবলমাত্র সেই ধারণাগুলি দিয়েছেন, যেগুলি তিনি জানাতে চেয়েছিলেন আর মানব লেখক সেগুলিকে তার যথাসাধ্য সর্বোত্তমভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু অনিবার্যভাবে বর্ণনায় মানুষ ভুল-ত্রুটি করেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি বাইবেলের অনুপ্রেরণার বর্ণনার সাথে খাপ খায় না। লেখকদের সম্বন্ধে বাইবেল বর্ণনা করে যে, তারা তাদের লেখায় পবিত্র আত্মার দ্বারা চালিত হয়েছিলেন। তাই আমরা জানি যে, নিজেদের লেখায় ভুল করার জন্য তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি।
বাইবেল যেহেতু ঈশ্বরের বাক্য, তাই এটি ভুল কিছু বলে না কারণ ঈশ্বর ভুল করেন না। (পড়ুন হিতোপদেশ ৩০:৫)। যেহেতু ঈশ্বর বাইবেলে লিপিবদ্ধ ইতিহাসে নিজেকে প্রকাশ করেছেন, তাই বিস্তারিত বিবরণগুলি অবশ্যই সঠিক হতে হবে, যাতে আমাদের কাছে ঈশ্বরের একটি নির্ভরযোগ্য প্রকাশ থাকে। অতএব, বাইবেলের অনুপ্রেরণার বর্ণনার কারণে আমরা জানি যে, ঈশ্বর সেই লেখাগুলিকে পরিচালনা করেছিলেন, যাতে তা পুরোপুরি নির্ভুল হয়।
[1]দর্শনের মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার উদাহরণের জন্য দানিয়েল ৭ ও ৮ এবং প্রকাশিত বাক্য পুস্তকের বেশির ভাগ অংশ দেখুন।
বাইবেলের সম্পূর্ণ নির্ভুলতাকে নিশ্চিত করা করার জন্য ব্যবহৃত পরিভাষা
অনুপ্রাণিত
বাইবেল হল অনুপ্রাণিত। এর অর্থ হল এটি সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের বাক্য, এমনকি এতে ব্যবহৃত শব্দগুলি পর্যন্ত। এই শব্দটি মূলত বাইবেলের সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্যতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু এখন কিছু লোক আছে যারা বলে যে তারা বাইবেলকে অনুপ্রাণিত বলে বিশ্বাস করেন না, অথচ তারা স্বীকার করেন না যে এটি সম্পূর্ণ নির্ভুল। অনুপ্রেরণার অপরিহার্য বিষয়গুলি সুরক্ষিত করার জন্য নিম্নলিখিত শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছে।
অব্যর্থ
এই পরিভাষাটির অর্থ হল "বিফল হতে পারে না।" যখন আমরা বলি যে বাইবেল অব্যর্থ, তখন আমরা বলতে চাই যে এটি বিশ্বাসযোগ্য এবং এটি কখনই আমাদেরকে বিপথে পরিচালিত করবে না। কেবলমাত্র এর মতবাদের বিবৃতিতেই নয়, বাইবেলের কোন প্রতিটি বিবৃতিতেই ভুল নেই।
চির-অভ্রান্ত
এই শব্দটির অর্থ "ত্রুটিহীন"। বাইবেল প্রতিটি বিবৃতিই সঠিক। যেহেতু ঈশ্বর কখনই মিথ্যা বলবেন না বা ভুল করবেন না (পড়ুন তীত ১:২) এবং বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য, আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে এটি ত্রুটিহীন। যদি কোন ব্যক্তি বলেন যে বাইবেলে ভুল থাকতে পারে কারণ মানুষ এর লেখার সাথে জড়িত ছিল, তবে তিনি ২ পিতর ১:২১-এ অনুপ্রেরণার বর্ণনার কথা ভুলে যাচ্ছেন: লেখকদের পবিত্র আত্মা দ্বারা বাহিত ও পরিচালিত হয়ে ছিলেন। অনুপ্রাণিত হওয়ার বিষয়ে বাইবেলভিত্তিক ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি হল এই যে, সম্পূর্ণ বাইবেলটি অনুপ্রাণিত, এমনকি এর প্রতিটি বাক্য পর্যন্ত, এবং তাই এটি নির্ভুল। (পড়ুন মথি ৫: ১৮)
কপি করার ক্ষেত্রে ত্রুটিগুলো সম্বন্ধে কী বলার আছে?
ছাপাখানার আগে, ধর্মগ্রন্থ সহ সমস্ত নথি পত্র হাতে কপি করা হত। আমাদের কাছে পৌল, যিশাইয় বা মোশির লেখা মূল পাণ্ডুলিপিগুলো নেই। আমাদের হাতে যে গ্রিক ও ইব্রীয় ভাষায় হাতে লেখা হাজার হাজার প্রাচীন প্রতিলিপিগুলি আছে তাদের মধ্যে সামান্য কিছু পার্থক্য পাওয়া যায়, এবং আমরা সবসময় সঠিক মূল শব্দটি কী ছিল তা সঠিকভাবে জানতে পারি না। কিন্তু, পার্থক্যগুলো এতটাই সামান্য যে, সেগুলোর কারণে কোনো মতবাদ বা তত্ত্বই প্রশ্নের মুখে পড়ে না। যেহেতু আমরা জানি যে, মূল পুস্তকগুলি ত্রুটিহীন ছিল এবং কপিগুলির মধ্যে পার্থক্য অতি সামান্য, তাই আমরা নিশ্চিত ভাবে জানি যে, বাইবেলের প্রতিটা বিবৃতির ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি।
► আমরা কীভাবে জানি যে বাইবেলটি অনেকবার হাতে কপি করা সত্ত্বেও সঠিক?
► বিভিন্ন কি কোন কারণগুলির জন্য কেউ কেউ মনে করেন যে, বাইবেলে ভুল রয়েছে?
কেন কিছু লোক মনে করেন যে বাইবেলে ভুল রয়েছে?
[1]কখনও কখনও লোকেরা দাবি করেন যে বাইবেলে ভুল রয়েছে। এর কারণ তারা বাইবেলের প্রকৃতির সম্বন্ধে বুঝতে পারেন না।
বাইবেলে মানুষের সাধারণ ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, একটি পদে আছে যে সারা আকাশ জুড়ে সূর্য চলাফেরা করে। বেশিরভাগ বিজ্ঞানীরাই বিশ্বাস করেন যে সূর্যের চারিদিকে পৃথিবী ঘুরছে, বরং সূর্য ঘুরছে না, যদিও তারা সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের শব্দগুলিও ব্যবহার করেন। তারা এটিকে এমনভাবে বর্ণনা করেন, ঠিক যেমনটা তারা দেখতে পান।
এছাড়া কাব্যিক বিবৃতিও রয়েছে, যেমন “পাহাড়গুলি মেষশাবকের মতো লাফিয়ে উঠল” (গীতসংহিতা ১১৪:৪), অথবা “গাছপালা তাদের করতালি দেবে” (যিশাইয় ৫৫:১২)। এগুলি সাহিত্যের একটি শৈলী যা স্পষ্টতই আক্ষরিক নয়।
কখনও কখনও লেখকরা অনুপ্রাণিত নন এমন অন্যান্য লোকদের উদ্ধৃতও দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, উদাহরণস্বরূপ, ইয়োবের বন্ধুদের বক্তৃতা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, যদিও ঈশ্বর বলেছিলেন যে তারা যা সঠিক তা বলেননি (ইয়োব ৪২:৭)।
অনুপ্রেরণার মতবাদের জন্য এর কোনটিই কোন সমস্যা নয়। ঈশ্বর লেখার প্রক্রিয়াকে পরিচালনা করেছিলেন যাতে চূড়ান্ত ফল হিসাবে তাঁর বাক্যই লেখা হয়।
কোন কোন সময় লোকেরা মনে করে যে, তারা বাইবেলের মধ্যে একটা অসঙ্গতি দেখতে পায়, কিন্তু তাদেরকে সেই বৈপরীত্যকে আরও মনোযোগের সঙ্গে দেখতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, মার্ক ৫:১-২ এবং লূক ৮:২৬-২৭ পদ আমাদেরকে এমন একজন ভূতগ্রস্ত ব্যক্তির বিষয়ে জানায়, যাকে যিশু সুস্থ করেছিলেন। মথি ৮:২৮ পদ আমাদের জানায় যে, সেখানে দুজন ভূতগ্রস্ত ব্যক্তিকে সুস্থ করা হয়েছিল। এটা কোনো দ্বিচারিতা নয়। লূক ও মার্ক বলেননি যে, সেখানে কেবল একজন ব্যক্তি ছিল। তারা সেই ব্যক্তির ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা বেছে নিয়েছিল, যার সেই এলাকায় একটা ইতিহাস রয়েছে। কোন ব্যক্তি যদি দেখেন যে, বাইবেলের বিবৃতিগুলো পরস্পরবিরোধী বলে মনে হচ্ছে, তাহলে তার তাড়াহুড়ো করে কোনো উপসংহারে পৌঁছানো উচিত নয়, বরং প্রসঙ্গটি বুঝতে সময় নেওয়া উচিত।
"আমাদের সংস্কৃতি আজ যে দুটি সবচেয়ে বড় মিথ্যা বিশ্বাস করে তা হল আমরা ভাল মানুষ এবং ঈশ্বর প্রেমময় হওয়ায় তিনি পাপের শাস্তি দেবেন না।"
- ফ্রান্সিস চ্যান (Francis Chan)
খ্রিষ্টবিশ্বাসীর জন্য বাইবেল
► যেভাবে খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের বাইবেল ব্যবহার করা উচিত সেগুলি কি কি?
বাইবেল ঈশ্বরের ব্যবস্থা বা আইন প্রদান করে। আইন পালন আমাদের রক্ষা করে না, কিন্তু আইন আমাদের দেখায় যে, ঈশ্বর কীভাবে চান যেন আমরা জীবন যাপন করি। ঈশ্বরের ব্যবস্থা ঈশ্বরের স্বভাব বা প্রকৃতিকে প্রকাশ করে। এটা আমাদের অনুসরণ করা উচিত কারণ আমরা ঈশ্বরের মত হতে চাই। যেহেতু আমরা ঈশ্বরকে ভালোবাসি, তাই আমাদের তাঁর ব্যবস্থা বা আইনকে ভালোবাসতে হবে। গীতসংহিতা ১১৯ অধ্যায় বর্ণনা করে যে, কীভাবে একজন ঈশ্বরের উপাসকের ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করা উচিত। যিনি ঈশ্বরকে ভালবাসেন, তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার সঙ্গে মিল রেখে তাঁর হৃদয় পরিবর্তন করার জন্য প্রার্থনা করবেন। যে ব্যক্তি ঈশ্বরকে ভালবাসে তার পক্ষে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার ব্যাপারে নির্বিকার থাকা অসম্ভব।
ঈশ্বরের বাক্য হল আলো। প্রেরিত পিতর আমাদের বলেন যে, জগত্ আধ্যাত্মিক অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে এবং ঈশ্বরের বাক্য আমাদের চলার পথে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আলো। (পড়ুন ২ পিতর ১: ১৯-২১; এছাড়াও গীতসংহিতা ১১৯:১০৫ দেখুন।) একজন ব্যক্তির কখনই এমন ধারণা বা অনুভূতি অনুসরণ করা উচিত নয় যা ঈশ্বরের বাক্যের বিপরীত। পবিত্র আত্মা কখনই একজন ব্যক্তিকে এমন কিছু করতে পরিচালিত করবে না যা বাইবেল বলে ভুল।
ঈশ্বরের বাক্য হল আমাদের আত্মিক খাদ্য। ভাল খিদে হল স্বাস্থ্যের লক্ষণ, এবং একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী ঈশ্বরের বাক্য কামনা করবে যেমন একটি শিশু দুধ কামনা করে (১ পিতর ২:২)। একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী যখন পরিপক্ব হন, তখন তিনি ঈশ্বরের সত্যকে আরও বেশি করে বুঝতে ও আত্মভূত করতে সক্ষম হন, ঠিক যেমন একটি শিশু কঠিন খাবার খেতে শেখে (১ করিন্থীয় ৩:২)। তাই একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীকে প্রতিদিন ঈশ্বরের বাক্য থেকে আত্মিক খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
বাইবেল হল শয়তানের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরক্ষা। আমাদের আত্মিক যুদ্ধসজ্জায় সজ্জিত হওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র আত্মা আমাদের যে তরবারি প্রদান করেন তা হল ঈশ্বরের বাক্য (ইফিষীয় ৬: ১৭)। যিশু শাস্ত্রের মাধ্যমে শয়তানের প্রলোভনের জবাব দিয়েছিলেন (মথি ৪:৩-৪)।
ঈশ্বরের বাক্য হল সত্য, এবং সেই সত্যের পক্ষে আমাদের সাড়া দিতে হবে। যিশু এটিকে রোপণ করা বীজের সাথে তুলনা করেছেন (লূক ৮:১১-১৫)। মাটি তৈরি হয়নি বলে কিছু বীজ ভাল ফলে নি। আমরা যখন বাইবেল পড়ি, তখন আমাদের অবশ্যই এর সত্যের প্রতি সাড়া দিতে হবে এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে হবে যেন তিনি তাঁর বাক্য দ্বারা আমাদের জীবননে ফল নিয়ে আসেন।
কারণ বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য …
যেহেতু বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য …
এটি কখনই পুরানো বা অপ্রাসঙ্গিক হবে না। এটি সব জায়গায় এবং সব সময়ে সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য।
এটি হল ঈশ্বরের ইচ্ছাকে বোঝার জন্য নির্দেশিকা, কারণ ঈশ্বর কখনই নিজেকে বিরোধিতা করবেন না বা তার মন পরিবর্তন করবেন না।
জীবন থেকে সর্বোত্তমটা পাওয়ার জন্য এটা আমাদের পথপ্রদর্শক, যেহেতু আমাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর আমাদের জন্য নির্দেশনা হিসেবে এটা দিয়েছেন।
এটিতে পরিত্রাণ পাওয়ার এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের যা যা জানতে হবে, সবই রয়েছে।
যদিও আমরা পালকদের কাছ থেকে এবং মন্ডলীর পরম্পরাগত প্রথা থেকে শিখি, তবুও এমন কোনো ধারণা গ্রহণ করা যায় না যা শাস্ত্রের বিরোধিতা করে কারণ এটিই হল চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ।
পবিত্র আত্মা আমাদের বোধগম্যতার জন্য ঈশ্বরের বাক্যকে আলোকিত করে এবং আমাদেরকে তা মেনে চলার নির্দেশ দেয়।
► ঈশ্বর এখনও কথা বলেন। তাহলে আমাদের কি আশা করতে পারি যে বাইবেলে কিছু যোগ করা যেতে পারে?
বাইবেল লেখা কি শেষ হয়ে গেছে?
শেষ প্রেরিত মারা যাওয়ার সময় থেকে মন্ডলী বাইবেলকে একটি সমাপ্ত-গ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। মন্ডলী কেবলমাত্র একটি ধর্মগ্রন্থ সংকলন করার জন্য কিছু লেখা বেছে নেন নি। পরিবর্তে তারা উপলব্ধি করেছিল যে কিছু কিছু লেখা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল এবং সেগুলির শাস্ত্রীয় কর্তৃত্ব আছে। যে লেখাগুলিকে শাস্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি এমন অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য পূরণ করেছিল যেগুলি পরবর্তী কোনো লেখাই পূরণ করতে পারেনি।
পুরাতন নিয়মের পুস্তকগুলির জন্য, মন্ডলী সেই লেখাগুলি রেখেছিল যেগুলি ইস্রায়েল শাস্ত্র হিসাবে সংরক্ষণ করেছিল। অবশেষে, নতুন নিয়মের বইগুলি নিম্নলিখিত যোগ্যতাগুলির দ্বারা শাস্ত্র হিসাবে স্বীকৃত হয়েছিল:
প্রেরিতদের সাথে ঐতিহাসিক সম্পর্ক
স্ব-প্রমাণিত গুণমান
মন্ডলীর সর্বসম্মত গ্রহণযোগ্যতা
পুরাতন নিয়মের সশ্রদ্ধ ব্যবহার
ভ্রান্তশিক্ষার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ব্যবহারযোগ্যতা
ঈশ্বর এখনও কথা বলেন। তাহলে এখন কি বাইবেলে কিছু যোগ করা যেতে পারে? কোনো নূতন লেখার পক্ষেই মূল শাস্ত্রে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা পূরণ করা অসম্ভব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রেরিতদের সঙ্গে নতুন কোনো লেখা আবদ্ধ করা যাবে না, কারণ তারা এখন আর আমাদের মাঝে উপস্থিত নেই। এমনকি বিশ্বব্যাপী সমগ্র মন্ডলীর দ্বারা কোন নতুন লেখা গ্রহণ করা হবে না।
পরিত্রাণ ও খ্রিষ্টীয় জীবনযাপনের জন্য শাস্ত্র সম্পূর্ণ ও যথেষ্ট (২ তীমথিয় ৩:১৪-১৭)। গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কোনো কিছুই শাস্ত্রে যোগ করা যায় না, কারণ এর মধ্যে ইতিমধ্যেই আমাদের যা কিছু প্রয়োজন সবই রয়েছে। যারা দাবি করেন যে তারা নতুন প্রত্যাদেশ (প্রকাশ) লাভ করছেন, তাদের বরং উচিত ঈশ্বর ইতিমধ্যেই যে প্রত্যাদেশ (প্রকাশ) দিয়েছেন তা অধ্যয়ন করার জন্য সময় ব্যয় করা। তারা সেখানে তাদের যা প্রয়োজন পেয়ে যাবে এবং ভ্রান্তি থেকে তারা রক্ষা পাবে।
ত্রুটি এড়ান
ক্লাস লিডারের জন্য নোট: ক্লাসের দুজন সদস্য এই অংশটি এবং পরবর্তী অংশটি ব্যাখ্যা করতে পারে।
বাইবেলের কর্তৃত্বের সঙ্গে আপোশ করা
আপনার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব কি? অনেক খ্রিষ্টবিশ্বাসী বলবেন যে বাইবেলই হল তাদের কর্তৃত্ব, কিন্তু তারা আসলে তাদের নিজেদের অনুভূতির ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করেন। একজন ব্যক্তি বলবে যে কোনো একটি কাজ ঠিক আছে কারণ তিনি যখন এটি করেন তখন তিনি নিজেকে অপরাধী মনে করেন না। ফলে কার্যত এই ব্যক্তি বাইবেলের পরিবর্তে তার অনুভূতিকেই চূড়ান্ত কর্তৃত্ব হিসেবে বেছে নিচ্ছেন।
অনেক কারণে লোকেরা হয়তো বাইবেলকে উপযুক্ত গুরুত্ব দেয় না। সম্ভবত তারা এমন কাউকে সম্মান করেন, যিনি বাইবেলের সুস্পষ্ট শিক্ষাকে উপেক্ষা করেন এবং সেটি তাদের একই কাজ করতে উৎসাহিত করে। সম্ভবত তারা এমন কিছু করার জন্য দোষী যা বাইবেল নিষেধ করে এবং তারা তাদের নিজেদের কাজকে ন্যায্য বলে প্রমাণ করার জন্য একটা উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করে। সম্ভবত তারা বাইবেল যা শিক্ষা দেয় সে সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। বাইবেল বুঝতে এবং এর কর্তৃত্বের বশ্যতা স্বীকার করার জন্য আমাদের অবশ্যই সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করতে হবে।
সীমিত উদ্দেশ্য নিয়ে বাইবেল অধ্যয়ন করা
বাইবেল হল মতবাদ বা বিশ্বাসসূত্রের প্রাথমিক উৎস। যে কোন মতবাদমূলক প্রশ্নের জন্য এটি হল চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ। কিন্তু যখন লোকেরা শুধুমাত্র তাদের মতবাদগুলি প্রমাণ খোঁজার জন্য বাইবেল অধ্যয়ন করে তখন এটা একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তারা আধ্যাত্মিক খাদ্যের জন্য বাইবেল ব্যবহার করে না। তারা কেবল এটিই চিন্তা করে যে অন্য কেউ ভুল করছে সেটা কীভাবে দেখানো যায়। শাস্ত্রের মাধ্যমে আমাদের মতবাদগুলো গড়ে তোলা ও সেগুলি রক্ষা করা আমাদের পক্ষে সঠিক। যাই হোক না কেন, আমরা যদি কেবলমাত্র এই ভাবে বাইবেল ব্যবহার করি তাহলে আমরা ঈশ্বরের সাথে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করার ফলে যে আনন্দ আসে তা হারিয়ে ফেলব।
কিছু লোক শুধুমাত্র উৎসাহ বোধ করার উদ্দেশ্যে বাইবেল পড়েন। আমাদের মনে রাখা দরকার যে বাইবেলের উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে নির্দেশ, দোষপ্রমাণ এবং সংশোধন (২ তীমথিয় ৩:১৬)। আমাদের উচিত বাইবেলের আদেশগুলি এড়িয়ে না গিয়ে সেই প্রতিশ্রুতিগুলির সন্ধান করা যেগুলি আমাদের মনকে খুশি করে। হয়তো ঈশ্বর আজকে আমাদের দোষী বা সংশোধন করতে চান অথবা আমাদের কিছু শেখাতে চান।
ভ্রান্ত ধর্মবিশ্বাসগুলির (কাল্টগুলির) ত্রুটি
কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠী বাইবেলকে বিশ্বাস করে বলে দাবি করে, কিন্তু তারা অন্য কিছুকে তাদের চূড়ান্ত কর্তৃত্ব হিসেবে গ্রহণ করে। তারা দাবি করে যে একমাত্র তারাই বাইবেল ব্যাখ্যা করতে পারে - দৈববাণী বা একটি বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে যা শুধুমাত্র তাদের কাছেই রয়েছে। তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতবাদগুলি বাইবেল থেকে প্রমাণ করা যায় না।
তাদের কাছে বাইবেল ছাড়াও অন্য একটি বই থাকতে পারে যা তারা ধর্মগ্রন্থ হিসেবে ব্যবহার করে। তারা হয়তো বলতে পারে যে বাইবেল নির্ভরযোগ্য নয় কারণ এতে অনুবাদ এবং কপি করার ত্রুটি রয়েছে।
এই ধারণাগুলি ইঙ্গিত করে যে বাইবেল ঈশ্বরের বাক্য হিসাবে সম্পূর্ণ নয়। সেই ব্যক্তিদের জন্য অন্য কিছু চূড়ান্ত কর্তৃত্ব হয়ে ওঠে।
► বিশ্বাসের বিবৃতিটি একসঙ্গে কমপক্ষে দুইবার পড়ুন।
বিশ্বাসের বিবৃতি
বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য। ঈশ্বর লেখকদের অনুপ্রাণিত করেছিলেন যার ফলে তারা নির্ভুলভাবে লিখেছিলেন। পাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং ঈশ্বরের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলার জন্য আমাদের যা কিছু জানতে হবে সেগুলি সবই বাইবেলে রয়েছে। বাইবেল হল আমাদের মতবাদ বা বিশ্বাসসূত্রের প্রাথমিক উৎস এবং চূড়ান্ত কর্তৃত্ব। ঈশ্বরকে আরও ভালভাবে জানার জন্য, ঈশ্বরের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার জন্য, আধ্যাত্মিকভাবে পুষ্ট হওয়ার জন্য এবং এক অর্থপূর্ণ ও আনন্দপূর্ণ জীবনযাপন করার জন্য একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর প্রতিদিন বাইবেল অধ্যয়ন করা উচিত।
১ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) প্যাসেজ অ্যাসাইনমেন্ট: প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নীচে তালিকাভুক্ত শাস্ত্রাংশগুলির একটি বরাদ্দ করা হবে। পরবর্তী ক্লাস সেশনের আগে আপনাকে এই শাস্ত্রাংশটি পড়তে হবে এবং সেখানে এই পাঠের বিষয়ে কি বলা হয়েছে সে সম্বন্ধে আপনাকে একটি অনুচ্ছেদ লিখতে হবে।
গীতসংহিতা ১১৯:৩৩-৪০
গীতসংহিতা ১১৯:১২৯-১৩৬
হিতোপদেশ ৩০:৫-৬
মথি ৫:১৭-১৯
২ তীমথিয় ৩:১৫-১৭
২ পিতর ৩:১৫-১৬
প্রকাশিত বাক্য ২২:১৮-১৯
(২) পরীক্ষা: আপনি ১ নং পাঠটির উপর একটি পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী ক্লাস শুরু করবেন। প্রস্তুতির সময় পরীক্ষার প্রশ্নগুলি ভালোভাবে অধ্যয়ন করুন।
(৩) শিক্ষাদানের অ্যাসাইনমেন্ট: এই কোর্সের সময় কমপক্ষে তিনবার, আপনি ক্লাসে নেই এমন লোকদের একটি পাঠ বা পাঠের অংশ শেখাবেন। এই শিক্ষাটি মন্ডলীর কোন একটি ক্লাসে, একটি গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন গ্রুপে, একটি পারিবারিক সমাবেশে বা অন্য কোন পরিবেশে করা যেতে পারে। এসব সুযোগগুলি তৈরি করতে এবং আপনার ক্লাস লিডারকে রিপোর্ট করার দায়িত্ব আপনার।
(৪) মনে রাখবেন, পরের ক্লাসের প্রস্তুতির জন্য সর্বদা পরের পাঠটি পড়তে হবে।
১ নং পাঠের পরীক্ষা
(১) সাধারণ প্রকাশ বা প্রত্যাদেশ কি?
(২) কোন দুটি রূপে ঈশ্বর বিশেষ প্রকাশ বা প্রত্যাদেশ দিয়েছেন?
(৩) বিশেষ প্রকাশ কোন তিনটি কাজ করে যা সাধারণ প্রকাশ করতে পারে না?
(৪) বাইবেল নিজের বিষয়ে কী দাবি করে?
(৫) ছয়টি কারণের তালিকা করুন যে কারণে আমরা জানি যে বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য।
(৬) কেন বাইবেল শিক্ষা, তিরস্কার, সংশোধন এবং ধার্মিকতায় প্রশিক্ষণের জন্য উপযোগী বা লাভজনক? (২ তীমথিয় ৩:১৬)
(৭) বাইবেল অনুপ্রেরণার কি বর্ণনা দেয় যে কারণে আমারা আশ্বস্ত হতে পারি যে লেখকদের ভুল করা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল?
(৮) ঈশ্বর ব্যবহৃত অনুপ্রেরণার চারটি পদ্ধতির তালিকা তৈরী করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.