► বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে আপনি কোন বিষয়গুলি সম্পর্কে চিন্তা করেন?
গুরুত্ব প্রদানের স্তর
ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে আলোচনা প্রায়ই প্রধান সত্যগুলির পরিবর্তে ছোটোখাটো প্রশ্নের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে। ভবিষ্যদ্বাণীর বিষয়গুলিও সব সমান গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা এই কোর্সে ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে সবকিছু আলোচনা করার চেষ্টা করব না।
মাঝে মাঝে লোকেরা চিন্তা করে যে পশুর চিহ্নটি দেখতে কেমন হবে, খ্রিষ্টারী (antichrist) কোন দেশ থেকে আসবে এবং দুজন সাক্ষি কে হবে। বাইবেল এই প্রশ্নগুলির স্পষ্ট কোন উত্তর দেয় না এবং সেগুলি নিয়ে তর্ক করাও উপযুক্ত নয়।
অন্যান্য বিষয় রয়েছে, যেগুলি বাইবেল বেশি ব্যাখ্যা করে। কিছু উদাহরণ হল, যিশু কি মহাক্লেশের শুরুতে ফিরে আসবেন কি না মাঝামাঝি অথবা শেষে আসবেন; এবং সহস্রাব্দ একটি আক্ষরিক ১,০০০ বছর হবে কি না। কিন্তু, এই মতবাদগুলি সুসমাচারের জন্য অপরিহার্য নয়। আপনার কখনই কারও সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করা উচিত নয় কারণ আপনি এই প্রশ্নগুলির একটিতে তার মতামতের সাথে একমত নন।
বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে কিছু প্রয়োজনীয় সত্য রয়েছে। এই সত্যগুলি এতটাই স্পষ্ট যে যারা বাইবেলকে বিশ্বাস করে, তারা সকলেই সেগুলি গ্রহণ করে। এই মতবাদগুলি খ্রিস্টীয় জীবনযাপন এবং খ্রিস্টীয় মতবাদের সমগ্র ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে। অন্তিম ঘটনাগুলি সম্পর্কে বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে যে চারটি সত্য প্রকাশ করা হয়েছে, আসুন আমরা সেগুলি দেখি।
যিশুর দৈহিক পুনরাগমন
যিশু দৃশ্যমানভাবে এই পৃথিবীতে ফিরে আসবেন। যদিও তিনি এখন পৃথিবীতে বিশ্বাসীদের সঙ্গে আধ্যাত্মিকভাবে উপস্থিত আছেন, তিনি তাঁর গৌরবান্বিত, সমস্ত পৃথিবীর দৃষ্টিতে উত্থিত আকারে ফিরে আসবেন। (পড়ুন প্রকাশিত বাক্য ১:৭)
► যিশু যখন ফিরে আসবেন তখন কী ঘটবে?
খ্রিষ্টের পুনরাগমন হবে পার্থিব ইতিহাসের চূড়ান্ত পরিণতি। জগতের রাজ্যগুলি খ্রিস্টের রাজ্যে পরিণত হবে। যারা তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত তারা পুরস্কৃত এবং সম্মানিত হবে। যারা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল তারাকে দমন করা হবে, এবং তার কাছে এমন ক্ষমতা থাকবে যা সমস্ত বিরোধিতাকে জয় করবে। (পড়ুন মথি ২৬:৬৪)। প্রত্যেক হাঁটু নত হবে এবং প্রত্যেক জিহ্বা স্বীকার করবে যে যিশুই প্রভু (ফিলিপীয় ২:১০-১১)।
[1]যে খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা মারা গিয়েছে, তারা খ্রিস্টের সঙ্গে শাসন করার জন্য পুনরুত্থিত হবে (২ তীমথিয় ২:১২)। প্রভু যখন আবির্ভূত হবেন তখন তারা এবং জীবিত বিশ্বাসীরা তাঁর সাথে দেখা করার জন্য উত্থিত হবেন (১ থিষলনীকীয় ৪:১৬-১৭)।
যিশুর প্রত্যাবর্তন হল সমস্ত খ্রিষ্টবিশ্বাসীর আশীর্বাদধন্য প্রত্যাশা (Blessed Hope)। (পড়ুন তীত ২:১৩)। তাঁর প্রত্যাবর্তন আমাদের জন্য কি অর্থ তা চিন্তা করুন: তাড়না, কষ্টভোগ ও দুঃখের অবসান; সাধু-সন্তদের সঙ্গে এবং খ্রিষ্টীয় প্রিয়জনদের সঙ্গে পুনর্মিলন; প্রমাণ যে আমাদের বিশ্বাস বৃথা যায়নি; স্বয়ং যিশুর দর্শন; এবং স্বর্গে প্রবেশ ও ঈশ্বরের সঙ্গে অনন্ত জীবনের পূর্ণতা। এগুলির কোনটিই তাঁর প্রত্যাবর্তনের সময়ের উপর নির্ভর করে না, কিন্তু শুধু এই বিষয়ের ওপর নির্ভর করে যে তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফিরে আসবেন।
যিশু বলেছিলেন যে, তিনি পরাক্রম ও গৌরব নিয়ে ফিরে আসবেন (মথি ২৪:৩০)। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আসবেন এবং তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য তাঁর লোকেদের নিয়ে যাবেন (যোহন ১৪:৩)। স্বর্গদূতেরা বলেছিল যে, তিনি একইভাবে ফিরে আসবেন যেভাবে তিনি স্বর্গে উঠেছিলেন (প্রেরিত ১:১১)। এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের চূড়ান্ত পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠা করার জন্য খ্রিষ্টের আগমনের জন্য অপেক্ষালীন সময়ে প্রেরিতেরা অনুতাপের প্রচার করেছিলেন। (পড়ুন প্রেরিত ৩:১৯-২১)। যিশু আবার ক্ষমতায় ও প্রতাপে এই পৃথিবীতে ফিরে আসবেন, এই বিষয়টি নতুন নিয়মে বার বার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।[2]
যদিও যিশুর দ্বিতীয় আগমনের আগে কিছু লক্ষণ রয়েছে, তবুও আমরা জানি না যে ঠিক কখন তিনি ফিরে আসবেন। বিশ্বাসীদের জন্য সবসময় যিশুর আগমনের প্রত্যাশা করা এবং সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করা ভাল। (পড়ুন মার্ক ১৩:৩৩-৩৭)
► যিশু কেন ফিরে আসবেন?
আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে অধিকাংশ মানুষ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে। সমস্ত সৃষ্টি পাপের অভিশাপে ভুগছে। রাজনৈতিক পদক্ষেপ, সামাজিক সংস্কার, উন্নত শিক্ষা অথবা সমৃদ্ধ অর্থনীতির দ্বারা পৃথিবী কখনোই পূর্ণতাপ্রাপ্ত হবে না। তা স্থাপন করতে যিশু হঠাৎ করেই তাঁর সৃষ্টিতে প্রত্যাবর্তনকারী রাজা হিসেবে আসবেন।
সমস্ত মানুষই পাপী, কিন্তু যদি তারা এখনই স্বেচ্ছায় ঈশ্বরের রাজ্যে যোগ দেয়, তাহলে তারা আসন্ন বিচার থেকে রেহাই পেতে পারে। যারা অনুতপ্ত ও বিশ্বাস করে, তাদের মধ্যে ঈশ্বরের রাজ্য ইতিমধ্যেই কাজ করছে (মার্ক ১:১৪-১৫, মার্ক ৯:১)। যিশুর প্রত্যাবর্তনে সেই রাজ্য সম্পূর্ণরূপে এবং প্রকাশ্যে আসবে।
► যেহেতু আমরা জানি যে যিশু ফিরে আসছেন তাহলে আমাদের কিভাবে জীবনযাপন করা উচিত?
আমাদের অবশ্যই প্রারম্ভিক খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের অগ্রাধিকারগুলি মনে রাখতে হবে। আমাদেরকে বিশ্বাস ধরে রাখতে (১ করিন্থীয় ১৬:১৩) এবং শেষ পর্যন্ত সহনশীল হতে বলা হয়েছে (মথি ২৪:১৩)। আমাদের সতর্ক করা হয়েছে যেন সুখভোগ এবং জগতের বিষয়গুলির মাঝে আমারা খ্রিস্টের আগমনের কথা ভুলে না যায় (লূক ২১:৩৪-৩৬)। যেহেতু এই জগতের বিষয়গুলি শেষ হয়ে যাবে, তাই আমরা অনন্ত মূল্যবোধ অনুযায়ী জীবনযাপন করি (২ পিতর ৩:১১-১৩)। আমাদের প্রত্যাশায় থাকতে বলা হয়েছে, আকাশের দিকে তাকিয়ে নয় বরং আধ্যাত্মিকভাবে সতর্ক থাকার মাধ্যমে, যাতে তাঁর আগমন আমাদের অপ্রস্তুত না করে (মার্ক ১৩:৩৩-৩৭)। আমরা পবিত্রতার জন্য প্রার্থনা করি এবং বিশুদ্ধ জীবন যাপন করি কারণ আমরা তাঁর মতো হতে চাই (১ যোহন ৩:৩)।
যারা বর্তমানে এমনভাবে জীবনযাপন করে যেন যিশু আসছেন না, তারা তাঁর ফিরে আসার জন্য প্রস্তুত থাকবে না। যিশুর আগমন হবে বজ্রপাতের মতো (মথি ২৪:২৭, ১ করিন্থীয় ১৫:৫২), এতই আকস্মিক যে তিনি আবির্ভূত হওয়ার পরে কারও কিছু পরিবর্তন করার সময় থাকবে না। ১ থিষলনীকীয় ৫:১-৬ পদ দেখায় যে, যারা অন্ধকারে রয়েছে, যারা এই জগতের জন্য বেঁচে আছে, তারা প্রভুর ফিরে আসার দ্বারা মর্মাহত হবে। তাদের কাছে তার প্রত্যাবর্তন হবে একটি চোরের অনুপ্রবেশের মতো। কিন্তু বিশ্বাসীদের জন্য তাঁর প্রত্যাবর্তন ভীতিজনক হবে না বরং তা বিবাহের কন্যার জন্য তার বরের আসার মতো প্রচুর আনন্দ নিয়ে আসবে (যোহন ১৪:২-৩)।
আমরা যিশুর আগমনের অপেক্ষা করি …
১। চিরন্তন অগ্রাধিকারগুলি বজায় রাখার দ্বারা।
২। পবিত্রতায় জীবনযাপন করার মাধ্যমে।
৩। প্রার্থনার মাধ্যমে নিজেদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে রক্ষা করে।
“খ্রিষ্টের বিদ্যালয়ে এমন কেউ এগিয়ে যায় নি যে আনন্দের সাথে মৃত্যু ও চূড়ান্ত পুনরুত্থানের দিনটির জন্য অপেক্ষা করে না। আসুন আমরা অধীর আগ্রহে প্রভুর আগমনের জন্য অপেক্ষা করি কারণ এটিই হল সবচেয়ে আনন্দের বিষয়। তিনি আমাদের কাছে মুক্তিদাতা হিসেবে আসবেন এবং তাঁর জীবন ও গৌরবের সেই আশীর্বাদপূর্ণ উত্তরাধিকারে আমাদের নিয়ে যাবেন।"
- জন ক্যালভিন-এর Institutes of the Christian Religion থেকে অভিযোজিত
[2]১ থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৬, ২ থিষলনীকীয় ১:৭, ১০, তীত ২:১৩, ইব্রীয় ৯:২৮, যাকোব ৫:৭-৮, ১ পিতর ১:৭, ১৩, ২ পিতর ১:১৬, ২ পিতর ৩:৪, ১২, ১ যোহন ২:২৮
সকল মানুষের দৈহিক পুনরুত্থান
আমরা জানি যে দেহের অনন্তকালীন মূল্য রয়েছে, কারণ বাইবেল সমস্ত মানুষের পুনরুত্থান সম্বন্ধে শিক্ষা দেয়। পুনরুত্থানের মতবাদটি অপরিহার্য। আমরা এটি জানি কারণ প্রেরিত পৌল ১ করিন্থীয় ১৫ অধ্যায়ের পুরোটাই এই মতবাদকে সমর্থন করার জন্য লিখেছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে পুনরুত্থানকে অস্বীকার করা হল সুসমাচারকে অস্বীকার করা। যদি পুনরুত্থান না থাকত, তাহলে যিশু পুনরুত্থিত হতে পারতেন না (১ করিন্থীয় ১৫:১৩)। যিশু যদি মৃত্যু থেকে না উঠতেন, তাহলে সুসমাচার সত্য হতে পারে না, এবং কেউই প্রকৃতপক্ষে পরিত্রাণ পায়নি (১ করিন্থীয় ১৫:১৭)।
প্রতিটি মানুষ পুনরুত্থিত হবে, কিন্তু সকলে একই সময়ে নয়। যিশুর প্রত্যাবর্তনের সময় তিনি সমস্ত খ্রিষ্টবিশ্বাসীকে গ্রহণ করবেন, যারা মারা গিয়েছে তাদের পুনরুত্থিত করবেন (১ থিষলনীকীয় ৪:১৬-১৭, প্রকাশিত বাক্য ২০:৬)। যারা তাদের পাপে মারা গিয়েছে, তাদের প্রথম পুনরুত্থানের জন্য গ্রহণ করা হবে না। তারা বিচারের জন্য পরবর্তী সময়ে উত্থাপিত হবে (প্রকাশিত বাক্য ২০:১৩)।
যিশুর মতো গৌরবান্বিত দেহে খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা পুনরুত্থিত হবে (১ যোহন ৩:২)। অপরিবর্তিত পাপীদের অন্য কোন প্রকারে উত্থাপিত করা হবে (যোহন ৫:২৮-২৯)।
► আপনি যদি বিশ্বাস না করেন যে দেহ পুনরুত্থিত হবে, তা হলে সেটা আপনার জন্য কোন পার্থক্য নিয়ে আসবে?
আমরা যে একদিন পুনরুত্থিত হব এই বিশ্বাস আমাদের জীবনধারাকে প্রভাবিত করে। যারা এই মতবাদকে অস্বীকার করে তাদের জীবন দেখে আমরা এই মতবাদের ব্যবহারিক প্রভাব দেখতে পারি। করিন্থের মণ্ডলীর কিছু লোক অস্বীকার করেছিল যে মানবদেহ পুনরুত্থিত হবে। যারা এই ভুল বিশ্বাস করত তারা দুটি অবস্থানে বিভক্ত ছিল।
[1]কেউ কেউ বলেন, “যেহেতু দেহকে উত্থিত করা হবে না, তাই আত্মাই মুখ্য। এর অর্থ হল যে, আমরা শরীরের সাথে যে পাপ করি তা গুরুতর নয়। এমনকি আমরা ব্যভিচারও করতে পারি, কারণ শরীর যেভাবেই হোক পরিত্যক্ত হবে।"
করিন্থীয়দের কারও কারও কাছে একটা স্লোগান ছিল, “পেটের জন্য খাদ্য এবং খাদ্যের জন্য পেট,” যার অর্থ হল শরীর অভিলাষের ইচ্ছাপূরণের বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়। পৌল তাদের বলেছিলেন যে দেহের অপব্যবহারের জন্য মানুষ বিচারিত হবে (১ করিন্থীয় ৬:১৩)। তিনি বলেনযে দেহটি প্রভুর জন্য, এবং ঈশ্বর যখন যিশুর দেহ উত্থাপন করবেন, তখন তিনি আমাদের দেহকেও উত্থাপন করবেন (১ করিন্থীয় ৬:১৪)।
অন্যরা বলেন, ‘যেহেতু দেহকে উত্থাপিত করা হবে না তাই এটি অবশ্যই মূল্যহীন ও মন্দ। আমাদের উচিত সমস্ত দৈহিক কামনা-বাসনাকে দমন করা, এমন কিছু খাওয়া উচিত নয় যা আনন্দদায়ক বা বিবাহকে উপভোগ্য করে তোলে।"
এই দুটি ভ্রান্তিই পুনরুত্থানকে অস্বীকার করার মাধ্যমে এসেছে। পুনরুত্থানকে অস্বীকার করা শরীরকে অবমূল্যায়ন করে। কিন্তু পুনরুত্থান সম্বন্ধে খ্রিষ্টীয় মতবাদ শরীরকে কদর করে।
► ১ করিন্থীয় ৬:১৪, ১৫, ১৯-২০ পড়ুন।
এই পদগুলি দেখায় যে খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের দেহ মূল্যবান, কারণ সেগুলি …
খ্রিষ্ট উত্থিত হয়েছেন, এবং মন্দ দূতদের নিক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
খ্রিষ্ট উত্থিত হয়েছেন, এবং স্বর্গদূতেরা আনন্দ করছে।
খ্রিষ্ট উত্থিত হয়েছেন, এবং জীবন মুক্ত হয়েছে।
খ্রিষ্ট উত্থিত হয়েছেন, এবং কবরকে মৃতশূন্য করা হয়েছে:
খ্রিষ্টের জন্য, মৃতদের মধ্য থেকে উত্থিত হয়ে,
যারা নিদ্রিত হয়েছিল তাদের নেতা ও পুনরুজ্জীবিতকারী হয়েছেন।
যুগপর্যায়ে তাঁর মহিমা ও পরাক্রম হোক। আমেন
- ক্রিসোস্টম-এর “Easter Homily”)
বিচার
যাদের নাম জীবনপুস্তকে নেই, তাদের জন্য বিচার দিবস সত্যিই পরিসমাপ্তি। এটা তাদের অস্তিত্বের শেষ নয়, কিন্তু তাদের বেছে নেবার সুযোগের শেষ। এরপর চিরকালের জন্য মানুষ তাদের সিদ্ধান্তের চিরস্থায়ী পরিণতি ভোগ করবে, যা কখনই বিপরীত দিকে চালিত করা সম্ভব হবে না।
এই বিচার আমাদের বেছে নেওয়াকে তার তাৎক্ষণিক ফলাফল অতিক্রম করে তাৎপর্যতা নিয়ে আসে। কিছু মানুষ মনে করে যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের কাজের ফলাফলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, ততক্ষণ পর্যন্ত চিন্তার কিছু নেই। তারা বিশ্বাস করতে চায় যে, তাদের পাপ মন্দ নয় যদি তা সত্যিই কোনো ক্ষতি না করে। প্রকৃতপক্ষে, সমস্ত পাপই ক্ষতি করে। কিন্তু, এমনকি যদিও তা এই জীবনে কোন ক্ষতি নাও আনে, তবুও বিচারের কারণে পাপ গুরুতর। ঈশ্বরের বাক্য বলে যে, মানুষ তাদের কাজের জন্য বিচারিত হবে। (পড়ুন ২ করিন্থীয় ৫:১০, রোমীয় ২:৬-১১)
বিচারের সময়, কিছু ব্যক্তিকে অনন্ত দণ্ডে এবং অন্যদের অনন্ত পুরস্কারের জন্য পাঠানো হবে। শাস্ত্র সেই অপরিবর্তিত পাপীদের জন্য বিচারের একটা দৃশ্য বর্ণনা করে, যারা তাদের পাপপূর্ণ কাজের দণ্ডাজ্ঞা পাবার জন্য পুনরুত্থিত হয়। (প্রকাশিত বাক্য ২০:১১-১৫ পদ দেখুন।) খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের জন্য আরেকটি বিচার রয়েছে, যেখানে তারা সেই কাজগুলির জন্য পুরস্কৃত হবে যেগুলির যোগ্য ও স্থায়ী ফলাফল ছিল। (পড়ুন ১ করিন্থীয় ৩:১৪-১৫)
বিচারের অর্থ হল যে একদিন পাপ আর থাকবে না। এমন এক পাপহীন জগৎ কল্পনা করা কঠিন, নেই কিন্তু একদিন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সমস্ত বিদ্রোহ শেষ হবে।
ঈশ্বর চান না যে, আমরা অবিরত ভয়ের মধ্যে বাস করি, বা ভয় আমাদের সঠিক জীবনযাপন করার উদ্দেশ্য হয়। কিন্তু আসন্ন বিচারের সচেতনতা আমাদের এক দায়বদ্ধতা প্রদান করে, যা আমাদের জীবনকে পরিচালনা করে।
এই বিষয়গুলি বোঝার জন্য আমাদের বিচার সম্বন্ধে জানতে হবে …
১। পাপের তাৎপর্য
২। ঈশ্বরের কাছে আমাদের জবাবদিহিতা
৩। আমাদের পছন্দগুলির গুরুত্ব
৪। সমস্ত পাপের পরিসমাপ্তি
ঈশ্বরের অনন্তকালীন রাজত্ব
কিছু দর্শনবিদ্যা ও ধর্ম অনুসারে, সময় চিরকাল চক্রাকারে চলে, যার কোন শুরু বা শেষ নেই, এবং এমন কোন ঘটনা নেই যা কোন বিষয়কে চিরতরের জন্য পরিবর্তন করে। কিন্তু বাইবেল অনুসারে, সময়ের একটি শুরু রয়েছে এবং ধারাবাহিক ঘটনাগুলি এক পরিণতির প্রতি অগ্রসর হচ্ছে। বাইবেল সৃষ্টির বিষয়ে, তারপর মানুষের দুঃখজনক পতন সম্বন্ধে, তারপর পরিত্রাণের পরিকল্পনা সম্বন্ধে বর্ণনা করে, যা ঈশ্বর মানব ইতিহাসের শত শত বছর ধরে কাজ করছেন।
আদিপুস্তক ৩ অধ্যায়ে আমরা পাপের শুরু খুঁজে পাই। প্রকাশিত বাক্যে পাপকে ঈশ্বরের অনন্ত নগর থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে (প্রকাশিত বাক্য ২১:২৭)। আদিপুস্তকে আমরা জীবনবৃক্ষের ক্ষতি এবং মৃত্যুর দণ্ডাদেশ দেখতে পাই (আদিপুস্তক ৩:২২-২৪)। প্রকাশিত বাক্যে আমরা জীবনবৃক্ষের পুনরুদ্ধার, জীবন পুস্তকের নাম এবং জীবন জলের এক নদীর আমন্ত্রণ দেখতে পাই (প্রকাশিত বাক্য ২২:১-২, ১৯)।
ঈশ্বরের সম্পূর্ণ ও অনন্ত রাজ্যের আগমন ঈশ্বরের পরিকল্পনাকে সাধন করবে। ঈশ্বর সর্বদাই তাঁর বিশ্বব্রহ্মান্ডের রাজা, কিন্তু মানুষের পতনের পর থেকে অধিকাংশ মানুষই ঈশ্বরের রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে। সেই বিদ্রোহ আকস্মিকভাবে শেষ হয়ে যাবে আর ঈশ্বর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই অনন্তকাল শাসন করবেন। ঈশ্বর যেমন চান তেমনই এই পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে নিখুঁতভাবে হবে, ঠিক যেমন স্বর্গ।
ত্রুটি এড়ান: পার্থিব মনোযোগ
পার্থিব জীবন যেন চিরকাল চলে এমনভাবে বেঁচে থাকার প্রবণতা মানুষের রয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করি, আমাদের সমস্যাগুলি সমাধান করি এবং এমন পরিবেশ তৈরি করি যা আমাদের সন্তুষ্ট করে। আমাদের অব্রাহামের মতো হওয়া দরকার যিনি তাঁবুতে বাস করা ও প্রায়শই স্থানান্তর করার সময় এক অনন্তকালীন গৃহ প্রত্যাশা করছিলেন (ইব্রীয় ১১:৮-১০, ১৪-১৬)। আমাদের রাখা দরকার যে, আমরা যে জিনিসগুলি নির্মাণ করি, আমাদের যে জিনিসগুলি রয়েছে এবং আমরা যে পরিস্থিতিগুলি তৈরি করি, সেগুলি সবই অস্থায়ী। আমাদের সেই বিষয়গুলির জন্য কাজ করা উচিত, যেগুলির চিরন্তন মূল্য রয়েছে।
যিশু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী ফিরে আসবেন, অতীতের বিশ্বাসীদের পুনরুত্থিত করবেন এবং সমস্ত বিশ্বাসীকে তাঁর রাজ্যে রাজত্ব করার জন্য নিয়ে যাবেন। প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কৃতকর্মের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করা হবে। তাকে হয় অনন্তকালীন পুরস্কার দেওয়া হবে অথবা অনন্ত দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। ঈশ্বরের রাজ্য সম্পূর্ণরূপে আসবে এবং ঈশ্বর অনন্তকাল রাজত্ব করবেন।
১৪ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) প্যাসেজ অ্যাসাইনমেন্ট: প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নীচে তালিকাভুক্ত শাস্ত্রাংশগুলির একটি বরাদ্দ করা হবে। পরবর্তী ক্লাস সেশনের আগে আপনাকে এই শাস্ত্রাংশটি পড়তে হবে এবং সেখানে এই পাঠের বিষয়ে কি বলা হয়েছে সে সম্বন্ধে আপনাকে একটি অনুচ্ছেদ লিখতে হবে।
দানিয়েল ২:৩১-৪৫
মথি ২৫:৩১-৪৬
১ করিন্থীয় ১৫:৫১-৫৮
২ পিতর ৩:১-১৪
প্রকাশিত বাক্য ২০:১১-১৫
(২) পরীক্ষা: আপনি ১৪ নং পাঠটির উপর একটি পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী ক্লাস শুরু করবেন। প্রস্তুতির সময় পরীক্ষার প্রশ্নগুলি ভালোভাবে অধ্যয়ন করুন।
(৩) শিক্ষাদানের অ্যাসাইনমেন্ট: আপনার ক্লাসের বাইরে শিক্ষা দেওয়ার সময়সূচি এবং রিপোর্ট করার কথা ভুলবেন না।
১৪ নং পাঠের পরীক্ষা
(১) বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীতে দেওয়া অন্তিম ঘটনাগুলি সম্পর্কে চারটি প্রয়োজনীয় সত্য কি কি?
(২) যিশু যখন ফিরে আসবেন তখন খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের কি হবে?
(৩) যিশুর আগমনের জন্য আমাদের কিভাবে অপেক্ষা করা উচিত?
(৪) পুনরুত্থানের মতবাদটি অপরিহার্য কেন?
(৫) কোন চারটি বিষয় বোঝার জন্য আমাদের বিচার সম্বন্ধে জানতে হবে?
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.