মন্ডলীর শিক্ষাদানের পরিচর্যা কাজ
মন-পরিবর্তন বা রূপান্তরের সময় একটি পরিবর্তন ঘটে। রূপান্তরিত ব্যক্তির নতুন চাহিদা এবং অগ্রাধিকার থাকে—এই পরিবর্তন এতই অনন্য যে বাইবেল তাকে একটি নতুন সৃষ্টি হিসেবে বর্ণনা করে। (২ করিন্থীয় ৫:১৭)
কিন্তু, কিছু জিনিস সময়সাপেক্ষ, রূপান্তরিত ব্যক্তি মোটেই অবিলম্বে বুঝতে পারে না যা কীভাবে তার জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে খ্রিষ্টীয় নীতি প্রয়োগ করতে হবে। তাকে আগে নীতিগুলি শিখতে হবে, তারপর সে সেগুলি প্রয়োগের উপায়গুলি দেখবে।
এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আত্মিক পরিপক্কতার একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। নতুন রূপান্তরিত ব্যক্তি খ্রিষ্টে একজন শিশু।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ১ করিন্থীয় ৩:১-২ পড়বে। এই পদগুলি অনুযায়ী, একজন নতুন রূপান্তরিত ব্যক্তির সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ইব্রীয় ৫:১৩-১৪ পড়বে। এই পদগুলিতে দুধ সম্পর্কে কী বলা হয়েছে? মাংস কী? আত্মিক পরিপক্কতার একটি বৈশিষ্ট্য কী?
এই কোর্সের প্রথমদিকে, আমরা মহান নিযুক্তি (Great Commission)-র বিষয়ে দেখেছিলাম যে দায়িত্ব যিশু মন্ডলীকে দিয়েছেন। এটা নিয়ে আরো একবার আলোচনা করা যাক।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য মথি ২৮:১৮-২০ পড়বে। এই অংশে, যিশু সুসমাচার প্রচারের বাইরে কোন দায়িত্বটি দিয়েছেন?
মহান নিযুক্তি প্রদানের আগে, যিশু বলেছিলেন যে স্বর্গে এবং পৃথিবীতে সমস্ত কর্তৃত্ব তাঁর কাছে রয়েছে। এরপর তিনি মন্ডলীকে লোকেদের তাঁর কর্তৃত্বের আনুগত্যে নিয়ে আসার দায়িত্ব দেন।
তিনি তাঁর শিষ্যদের কেবল সুসমাচার প্রচার নয়, বরং সেই সমস্ত কিছু শেখানোর কথা বলেছিলেন যা তিনি তাদের আজ্ঞা হিসেবে দিয়েছিলেন। সুসমাচার প্রচার কেবল কাজের প্রথম অংশ। রূপান্তরিতদেরকে যিশুর সমস্ত আদেশ মানতে শেখানোই হল শিষ্যত্বের প্রক্রিয়া। শিষ্যত্বে ব্যর্থ হওয়া সুসমাচার প্রচারে ব্যর্থ হওয়ার মতোই গুরুতর।
মন্ডলীর শিক্ষাদানের পরিচর্যা কাজটি হল রূপান্তরিতদের আত্মিক পরিপক্কতায় নিয়ে আসা।
ইফিষীয়তে আমাদের বলা হয়েছে যে ঈশ্বর বিশ্বাসীদেরকে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে পরিচর্যা কাজের বিশেষ ভূমিকায় লোকেদের আহ্বান করেছেন, যাতে সেই বিশ্বাসীরা আর শিশু অবস্থায় না থাকে (ইফিষীয় ৪:১১-১৪)। তাদের আত্মিক পরিপক্কতায় পৌঁছানোর ফলাফল হল তত্ত্বজ্ঞানের প্রতি স্থায়িত্ব।
একজন পাস্টার শিষ্যত্বের কাজের জন্য বিশেষভাবে দায়বদ্ধ। পৌল তিমথিকে বলেছেন, “আমি না আসা পর্যন্ত প্রকাশ্যে শাস্ত্র পাঠ, প্রচার ও শিক্ষাদানে নিজেকে নিযুক্ত রাখো” (১ তিমথি ৪:১৩)। তিনি প্রাথমিকভাবে তিমথির ব্যক্তিগত অধ্যয়নের কথা বলেননি; তিনি পরিচর্যার বিষয়ে বলেছিলেন। তিমথির পরিচর্যার মূল বিষয়বস্তু ছিল শাস্ত্রপাঠ এবং বিশ্লেষণ, আত্মিক নির্দেশনা প্রদান, এবং খ্রিষ্টীয় তাত্ত্বিক মতবাদের শিক্ষাদান। একজন পাস্টারের অন্যতম যোগ্যতা হল তাকে শিক্ষাদানে সক্ষম হতে হবে (১ তিমথি ৩:২)।
যেহেতু শিক্ষালাভ আত্মিক গঠনের একটি অংশ, তাই শিক্ষাদান হল শিষ্যত্বের কাজের একটি অংশ। শিক্ষকেরা মন্ডলীতে গুরুত্বপূর্ণ, এবং মন্ডলীকে অবশ্যই সর্বদাই শিক্ষকদের গড়ে তোলার কাজ করে যেতে হবে।
“আর বহু সাক্ষীর উপস্থিতিতে তুমি আমাকে যেসব বিষয় বলতে শুনেছ, সেগুলি এমন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের হাতে অর্পণ করো, যারা অন্যদের কাছে সেগুলি শিক্ষা দিতে সমর্থ হবে” (২ তিমথি ২:২)। এই আদেশটি পৌল তিমথিকে দিয়েছিলেন, যা মূলত একজন অভিজ্ঞ সুসমাচার প্রচারক এবং পাস্টারের একজন তরুণ পরিচর্যাকারীকে দেওয়া আদেশ। পৌল আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না যে বিশ্বাস কেবল প্রচারের মাধ্যমেই বাহিত হবে। প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিশেষ প্রচেষ্টার সাথে প্রশিক্ষিত হতে হবে এবং অন্যদেরকে প্রশিক্ষণ দানের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যদি এই ধরনের প্রশিক্ষণ মন্ডলীতে প্রচার করার মাধ্যমে সম্পন্ন না হয়, তাহলে এই বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের আলাদাভাবে বা ছোটো দলে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
[1]অনেক কিছুই শেখানোর আছে। কোন পাস্টারের কাছে এই সবকিছু করার সময় আছে, বিশেষ করে যেখানে সবাই একই সময়ে একই নির্দেশের জন্য প্রস্তুত নয়? ইফিষীয় ৪:১১ বলে না, “তিনি একজন পালক দিয়েছেন” (কেবল একজন ব্যক্তি এবং কেবল একটিই ভূমিকা)। পরিবর্তে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ভূমিকা রয়েছে এবং সেগুলি পূরণ করার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিরা রয়েছেন। ঈশ্বর শিক্ষকদের আহ্বান করেন, তাদের শিক্ষাদানের ক্ষমতা দেন এবং মন্ডলীর মাধ্যমে তাদের শিক্ষাদানের পরিচর্যার জন্য সুসজ্জিত করে তোলেন।
“যিশুর পরিকল্পনার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল এমন ব্যক্তিদের তালিকাভুক্ত করা যারা তাঁর জীবনের সাক্ষ্য বহন করতে পারবে এবং পিতার কাছে তাঁর ফিরে যাওয়ার পর তাঁর কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।”
- রবার্ট কোলম্যান (Robert Coleman,
The Master’s Plan)