বাইবেলভিত্তিক সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্ব
বাইবেলভিত্তিক সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্ব
Audio Course Purchase

Search Course

Type at least 3 characters to search

Search through all lessons and sections in this course

Searching...

No results found

No matches for ""

Try different keywords or check your spelling

results found

Lesson 16: প্রকৃত শিষ্য

1 min read

by Stephen Gibson


যিশুকে অনুসরণ করা

► যিশুর শিষ্য হওয়া বলতে কী বোঝায়?

কিছু লোক মনে করে যে একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী হল একজন ভালো মানুষ। আবার কেউ কেউ মনে করে যে খ্রিষ্টবিশ্বাসী হওয়ার মানে হল কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশ্বাস করা। এদের মধ্যে অনেকেরই কাছে, বিশ্বাস তাদের জীবনে খুব একটা পার্থক্য করে না।

অন্যেরা সত্যের কাছাকাছি থাকে। তারা জানে যে রূপান্তরের একটি সময় থাকা আবশ্যিক, যখন একজন ব্যক্তি খ্রিষ্টবিশ্বাসী হয়। তারা বিশ্বাস করে যে এটি তখন ঘটেছিল যখন একজন ব্যক্তি কোনো একটি মুহূর্তে বিশ্বাস করেছিল যে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। অনেকে বিশ্বাস করে যে একজন সত্যিকারের রূপান্তরিত ব্যক্তি রূপান্তরিত হওয়ার পরে যা-খুশি করলেও তার স্বর্গের নিশ্চয়তা আছে।

এটা সত্য যে রূপান্তর প্রকৃত হতে হবে। এটা সত্য যে ক্ষমা বিশ্বাসের উত্তর হিসেবে অনুগ্রহ দ্বারা প্রদত্ত হয়। এটা সত্য যে একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী ঈশ্বরের বাধ্য হয়ে জীবনযাপন করে। কিন্তু যিশুর একজন শিষ্য হওয়ার অর্থ কেবল এইটুকুই নয়।

আমরা দেখতে পাই যে ঠিক কী ঘটে যখন বিশ্বাসের মুহূর্তকে খ্রিষ্টবিশ্বাসী হওয়ার একমাত্র মাপকাঠি করা হয় - এটি নীতি-বিরোধিতা (antinomianism)-র দিকে নিয়ে যায়, যা শিক্ষা দেয় যে ঈশ্বরের আদেশ একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর জন্য বাধ্যতামূলক নয়। অনুগ্রহ বিনামূল্যে হওয়ার পরিবর্তে, এটি একটি কাল্পনিক অনুগ্রহে পরিণত হয় যা পাপকে ন্যায্য বলে দাবী করার ভান করে।

যে মন্ডলীগুলি কাল্পনিক অনুগ্রহের বিজ্ঞাপন দেয় তাদের এমন কিছু সদস্য রয়েছে যারা মন্ডলীতে আসে কিন্তু প্রকাশ্য পাপের জীবন যাপন করে। তাদের যাজক এবং অন্যান্য নেতারা সংগঠনের সদস্যদের চেয়ে তুলনামূলক ভালো জীবন যাপন করেলও তাদের পাপপূর্ণ অভ্যাস থাকতে পারে। তারা বলে যে ঈশ্বরের প্রতি সম্পূর্ণ আনুগত্য দ্বারা জীবনযাপন করার প্রয়োজন নেই কারণ আমরা অনুগ্রহে পরিত্রাণ পেয়ে গেছি। মানুষকে খ্রিষ্টের আজ্ঞার আনুগত্যে নিয়ে আসা – মন্ডলীকে দেওয়া খ্রিষ্টের এই কর্মভার তারা হারিয়ে ফেলেছে। মন্ডলীর বিশেষ কাজ হল অবিশ্বাসীদের ঈশ্বরের পবিত্র উপাসকে পরিণত করা, এবং এটি ছাড়া মন্ডলীর অস্তিত্বের আর কোনো উত্তম কারণ নেই।

এমনকি যেসব মন্ডলী ঈশ্বরের বাধ্য হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বজায় রাখে সেখানে কিছু লোক রয়েছে যারা অন্যমাত্রায় ত্রুটিতে জীবন যাপন করে। তারা তাদের জীবনকে সেই প্রয়োজনীয়তাগুলির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ করেছে যেগুলিকে তারা সঠিক বলে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাদের মধ্যে খ্রিষ্টসাদৃশ্য আত্মা নেই। তারা কঠোর এবং ক্ষমা করতে পারে না। তারা নম্র এবং সদয়ভাবে ক্ষমা চাইতে পারে না। তারা দ্রুত অন্যদের বিচার করে। খুব কম মানুষের প্রতিই তাদের আস্থা আছে। তারা কখনোই তাদের নিজেদের ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে না। তাদের কাছে প্রতিটি সমস্যার উত্তর আছে এবং যারা তাদের সাথে একমত নয় তাদের প্রতি কোনো সম্মান নেই। হারিয়ে যাওয়া আত্মাকে জেতার জন্য তাদের মধ্যে কোনো উদ্যম নেই, কিন্তু তারা তাদের মতামত রক্ষার জন্য যথেষ্ট উদ্যমী। তারা নিজেদের নিয়ে সন্তুষ্ট, এবং তারা পরিবর্তনের কোনো পরিকল্পনা করে না।

এই সমস্ত লোকেরা কি সত্যিই যিশুকে জানে এবং তাঁর মতো হতে চায়?

একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী হওয়ার অর্থ হল যিশুর একজন শিষ্য হওয়া।

[1]একজন শিষ্য হওয়ার অর্থ কী? খ্রিষ্টের বাধ্য হওয়া? নিশ্চিতভাবেই এটি অন্তত এই বিষয়টিকে বোঝায়। মহান নিযুক্তি (Great Commission)-র সময়, যখন যিশু প্রেরিতদেরকে সর্বত্র গিয়ে শিষ্য তৈরি করতে বলেছিলেন, তখন তিনি তাদেরকে সেই নতুন শিষ্যদের সেই সমস্ত আদেশ মান্য করা শেখানোর আদেশ দিয়েছিলেন যা তিনি তাদেরকে আজ্ঞা হিসেবে দিয়েছিলেন (মথি ২৮:১৯-২০)। যিশুর আদেশ পালন করাই কেবল শিষ্য হওয়ার অর্থ নয়।

ইহুদি রব্বি বা গুরুদের শিষ্যরা তাদের সাথে জীবনের সহভাগিতা করেছিল, কেবল তাদের শিক্ষাই নয়, তাদের জীবনধারাও শিখেছিল। তারা তাদের মনোভাব এবং অগ্রাধিকার শিখেছিল।

যখন যিশু শিষ্যদের আহ্বান করেছিলেন, “এসো এবং আমাকে অনুসরণ করো,”[2] – তিনি এটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন। তিনি এখনও সুসমাচারের মাধ্যমে শিষ্যদের আহ্বান করছেন।

কীভাবে একজন ব্যক্তি শিষ্য হয়ে ওঠে?

প্রথমে, আপনাকে অবশ্যই তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে – আপনি যদি তাঁকে বিশ্বাস না করেন তাহলে আপনার কাছে তাঁকে অনুসরণ করার কোনো কারণ নেই।

আপনি যে দিকে যাচ্ছেন তা পরিবর্তন করতে হবে। কেউ যিশুর অনুসারী হিসেবে শুরু করে না - আমরা আমাদের নিজস্ব পথে চলতে শুরু করি। আপনাকে নিজের পথের পরিবর্তে যিশুকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তার মানে হল আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে আপনার নিজের পথে কিছু ভুল আছে। এটি অনুতাপের সাথে শুরু হয় অনুসরণ - আপনি আপনার পাপের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে তাঁকে অনুসরণ করতে পারবেন না। আপনি যদি আপনার পাপ ত্যাগ করার জন্য যথেষ্ট দুঃখিত না হন তবে আপনি এখনও নিজের পথে চলেছেন।

আপনি তাঁর ক্ষমা অনুভব করুন এবং তাঁর সাথে সম্পর্ক শুরু করুন। আপনি তাঁকে আরও জানতে শুরু করুন এবং তাঁর মতো হতে চান।

► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য মথি ১৬:২১-২৫ পড়বে।

তাঁর শিষ্যদের সাথে এই কথোপকথনে, যিশু তাঁর আসন্ন মৃত্যুর বর্ণনা করেছিলেন। যিশুর কথায় পিতর হতবাক হয়ে গেছিলেন। পিতরের কোনোভাবেই দুঃখকষ্ট এবং মৃত্যুকে যিশুর জন্য উপযুক্ত বলে মনে হয়নি। তিনি যিশুর সাথে তর্ক করতে শুরু করেছিলেন, তাঁকে মৃত্যুর চিন্তা প্রত্যাখ্যান করতে উত্সাহিত করার চেষ্টা করেছিলেন।

যিশু পিতরকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন যে সে ঈশ্বরের বিষয়গুলি বুঝতে পারেনি। যিশু বলেছিলেন যে তাঁর শিষ্য হতে হলে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করতে হবে, ক্রুশ তুলে নিতে হবে এবং তাঁকে অনুসরণ করতে হবে। এর অর্থ ছিল নিজের মৃত্যুকে মেনে নেওয়া। তিরস্কারটি ছিল স্ব-তৃপ্তি, আত্মমগ্নতা এবং আত্মরক্ষার স্বাভাবিক মানবিক প্রবণতার মতো বিষয়গুলির বিরুদ্ধে যা সত্যিকারের শিষ্যত্বকে প্রতিরোধ করে।

► কেন মানুষের সত্ত্বা স্বভাবতই শিষ্যত্বের প্রতিরোধী?

শিষ্যরা দুঃখকষ্ট ও মৃত্যুকে নিজেদের জন্য উপযুক্ত হিসেবে দেখেনি। তারা একটা সময় পর্যন্ত পুরোপুরি বুঝতে পারেনি যে তাঁকে অনুসরণ করার অর্থ কী। ক্ষমা পাওয়ার জন্য আপনার কিছু মূল্য দিতে হবে না, কিন্তু খ্রিষ্টকে অনুসরণ করার জন্য আপনার সবকিছু খোয়াতে হবে। তাঁকে অনুসরণ করার ফলে ক্রমাগত হৃদয়ে অনুসন্ধান, নম্রতা এবং পরিবর্তন আসে।

► বিবৃতিটি বর্ণনা করুন, “খ্রিষ্টকে অনুসরণ করার জন্য আপনার সবকিছু খোয়াতে হবে।”

ক্রুশ তুলে নেওয়া মানে ঈশ্বরের সাথে অনন্ত জীবনের জন্য এক ধরনের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা। এটা নিজের মৃত্যু, নিজের সর্বস্বের মৃত্যু। এটি কেবল বাহ্যিক সমর্পণ নয়, এটি হৃদয়ের মাধ্যমে হয়। এটি একটি নম্রতা যেটিকে যিশু তাঁর রাজ্যে প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সেই প্রথম শিষ্যদের মতো, আজকে অনেকেই শিষ্য হওয়ার অর্থ কী তা বোঝে না। মন্ডলী এমনও লোকেদের অনুগ্রহের প্রস্তাব দেয় যারা অনুতাপ করেনি। এটি সঠিক পথে রূপান্তরিত হওয়া শুরু করে না বা যা হতে চলেছে তার জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করে না। এটি প্রকৃত খ্রিষ্টীয় জীবনযাপন থেকে এতটাই আলাদা যে এটি সেই একই পথ নয়।

ডিট্রিচ বনহোফার (Dietrich Bonhoeffer) ছিলেন একজন জার্মান পাস্টার যাকে অ্যাডলফ হিটলারের শাসনকালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি তাঁর দ্য কস্ট অফ ডিসাইপলশিপ বইতে এই লাইনগুলি লিখেছেন।

মূল্যবান অনুগ্রহ হল মাঠে লুকানো সম্পদের মতো; এর জন্য একজন মানুষ আনন্দের সাথে যাবে এবং তার যা কিছু আছে তা বিক্রি করে দেবে। এটি একটি মহামূল্য মুক্তো যা কিনতে একজন ব্যবসায়ী তার সমস্ত পণ্য বিক্রি করে দেবে। এটি খ্রিষ্টের রাজত্বের শাসন, যার জন্য একজন মানুষ তার চোখ উপড়ে ফেলবে যা তার হোঁচট খাওয়ার কারণ হয়; এটি যিশু খ্রিষ্টের আহ্বান যেখানে শিষ্য তার জাল ফেলে দিয়ে তাঁকে অনুসরণ করে... এই ধরনের অনুগ্রহ ব্যয়বহুল কারণ এটি আমাদেরকে অনুসরণ করতে আহ্বান করে।

তাঁকে অনুসরণ করার মানে হল তাঁর মতো হওয়া। এটি হল নিজের কাছে মৃত হওয়া, কারণ তিনি নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সম্পর্পিত করেছিলেন। এটা কেবল কিছু ভুল কাজ করা ছেড়ে দেওয়া নয়, কিন্তু যিশু হলে সেগুলি করতেন না বলে সেগুলি ছেড়ে দেওয়া। যিশু তাঁর বিশুদ্ধতা, সহানুভূতি, দয়া এবং ক্ষমাতে যা করবেন আমরা সেটাই করার চেষ্টা করি।

আমাদের হৃদয় যখন কোনোকিছুর বিরোধিতা করে, তখন এমন নয় যে আমরা শুধু সেটাই করি যা সঠিক। আমরা আমাদের হৃদয় তাঁর মতো করতে চাই। তিনি কাউকে ঘৃণা করতেন না। এমন লোক ছিল যারা তাঁর শত্রু হওয়ার পথ বেছে নিয়েছিল, কিন্তু তিনি কারোর শত্রু ছিলেন না। এমনকি ক্রুশেও তিনি ক্ষমা করেছিলেন।

তাঁর প্রকৃত অনুসারীরা বিদ্বেষপূর্ণ নয়। তাদের সাথে যারা দুর্ব্যবহার করে তাদের প্রতিও ভালো আচরণ করে। তারা আশীর্বাদ করে এবং অভিশাপ দেয় না। তারা তাদের ক্ষমা সীমাবদ্ধ করে না। তারা তাদের ব্যক্তিগত অধিকার ছেড়ে দেয় এবং পরিবর্তে সেবা করে।

এই আত্মসমর্পণ থেকে দূরে থাকার কোন জায়গা নেই। যে তার আত্মাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে সে এটি হারাবে—যে এটি সমর্পণ করে সে এটি রক্ষা করবে (মার্ক ৮:৩৫)।

► এমন কোন উপায়ে আমরা মানুষকে পরিত্রাণে আহ্বান করতে পারি যা তাদেরকে শিষ্যত্বের জন্য প্রস্তুত করবে?


[1]

“যিশু খ্রিষ্ট আমাদেরকে দুনিয়ার কেন্দ্র থেকে বিচ্যুত হওয়ার জন্য জোর দেন যেখানে অন্য কোনো দেবতা আগে রাজত্ব করেছিল, এবং সিংহাসন দখল করেছিল। এটি আনুগত্যের আমূল পরিবর্তন যা রূপান্তর গঠন করে, বা অন্তত সেটি শুরু করে। তারপর একবার খ্রিষ্ট তার সঠিক স্থানটি গ্রহণ করলে, অন্য সব কিছুর স্থানান্তর শুরু হয়।”

- Lausanne Committee for World Evangelization, The Willowbank Report

[2]মথি ৪:১৯, মথি ৯:৯, মথি ১৬:২৪, মথি ১৯:২১, যোহন ১:৪৩