একটি ইভাঞ্জেলিকাল মন্ডলী হল এমন একটি মণ্ডলী যেটি কেবল বিশ্বাসের মাধ্যমে অনুগ্রহ দ্বারা পরিত্রাণের শাস্ত্রীয় সুসমাচারের শিক্ষা দেয়। খ্রিষ্টের আত্মবলিদানের সাথে আমরা অতিরিক্ত কোনো ভালো কাজ যোগ করলেও তা আমাদের পরিত্রাণের যোগ্য হতে সাহায্য করতে পারে না।
সত্য সুসমাচার প্রচার করাই হল একটি ইভাঞ্জেলিক্যাল মন্ডলীর অগ্রাধিকার কারণ যারা সুসমাচারের বিশ্বাস করে, তারা জানে যে এটি অন্য যেকোনো কিছুর থেকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সুসমাচার হল মন্ডলীকে দেওয়া ঈশ্বরের একটি বিশেষ সম্পদ যেটিকে সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।
এমন কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বেশিরভাগ ইভাঞ্জেলিকাল মন্ডলীর বৈশিষ্ট্য:
১। ইভাঞ্জেলিকালরা সম্পূর্ণরূপে বাইবেলের কর্তৃত্বে বিশ্বাস করে। বাইবেলের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করলে তা সুসমাচারকে বিশ্বাসের অযোগ্য করে তোলবে।
২। ইভাঞ্জেলিকালরা খ্রিষ্টবিশ্বাসের ঐতিহাসিক, ভিত্তিমূলক ধর্মতত্ত্বে বিশ্বাস করে। এই মতবাদ বা তত্ত্বগুলি অস্বীকার করা মূলত সুসমাচার বিরুদ্ধতা। উদাহরণস্বরূপ, ভ্রান্ত-ধর্মবিশ্বাসগুলি (cults) খ্রিষ্টের ঈশ্বরত্ব অস্বীকার তারা এটিও অস্বীকার করে যে তাঁর প্রায়শ্চিত্তের কাজ পরিত্রাণের জন্য যথেষ্ট, এবং পরিবর্তে তারা কাজের সুসমাচার প্রচার (gospel of works) করে।
৩। ইভাঞ্জেলিকাল মন্ডলী ব্যক্তিগত আত্মিক অভিজ্ঞতার উপর জোর দেয়। এই বৈশিষ্ট্যটি বিদ্যমান কারণ তারা ব্যক্তিগত রূপান্তর এবং সচেতন বিশ্বাসে বিশ্বাস করে। এই বিশ্বাসের কারণে, ইভাঞ্জেলিকালরা অবিশ্বাসীদের কাছে সুসমাচার প্রচারে এবং বিশ্বাসীদের আত্মিক গঠনের উপর জোর দেয়।
► আপনারমন্ডলীকীভাবেএইবৈশিষ্ট্যগুলিপ্রকাশকরে? এছাড়াও কি অন্যকোনো বৈশিষ্ট্য আছেযাসুসমাচারেরঅগ্রাধিকারকেতুলেধরে?
সুসমাচারের কেন্দ্রীয়তা
সুসমাচার মন্ডলীকে তার উদ্দেশ্য প্রদান করে। যে মন্ডলী সুসমাচারকে তার অগ্রাধিকার হিসেবে গুরুত্ব দেয়া না, তারা ঈশ্বরের নির্দেশিত উদ্দেশ্য ভুলে গেছে।
আমরা মথি ২৮:১৮-২০-তে দেওয়া মহান নিযুক্তি অধ্যয়ন করেছি। মন্ডলীর প্রাথমিক মিশন কী?
[1]সুসমাচার যেখানেই প্রচারিত হয় সেখানেই মন্ডলী গড়ে ওঠে। ইতিহাস জুড়ে সুসমাচার প্রচারের স্থানে এমন অনেক প্রকৃত মন্ডলী পাওয়া যায়। প্রেরিতদের সময় থেকে মন্ডলীর ঐতিহ্য কোনো প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিকতায় না, বরং বিশ্বস্তভাবে সুসমাচার প্রচারের ধারাবাহিকতায় পাওয়া যায়।
মন্ডলী দ্বারা গড়ে ওঠা সমস্ত প্রতিষ্ঠানের সুসমাচারের অগ্রাধিকার পালন করা আবশ্যক। উদাহরণস্বরূপ, পাস্টারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কর্মসূচী এমন হওয়া উচিত যা তাদেরকে মন্ডলীকে সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্বের উদ্দেশ্য সাধনে নেতৃত্ব দেওয়ার কাজে প্রস্তুত করে তুলবে।
প্রতিষ্ঠানগুলির নিজস্ব অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকার এবং মূল মিশন ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। সুসমাচারের উপর জোর দেওয়া সবসময় প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারসাধনের দিকে চালিত করে।
মন্ডলী বিশ্বাসের ধারা, আরাধনার পদ্ধতি, খ্রিষ্টীয় জীবন যাপন, এবং মন্ডলীর নীতি গড়ে তোলে; কিন্তু সুসমাচারের উপর জোর দেওয়া সর্বদাই পরম্পরার সংস্কারসাধনের দিকে চালিত করে।
“খ্রিষ্টের কর্তৃত্ব এবং মন্ডলীর বিশ্ব মিশনের মধ্যে একটি সরাসরি সংযোগ রয়েছে। মথির বিবরণে উল্লেখিত মহান নিযুক্তিতে (Great Commission) বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এটি সঠিক কারণ স্বর্গে পিতা ঈশ্বর দ্বারা সমস্ত কর্তৃত্ব ঈশ্বর পুত্রকেও দেওয়া হয়েছে, যেখানে মন্ডলীর দায়িত্ব হল সমস্ত জাতিকে শিষ্য করা।”
- জে. হারবার্ট কেন (J. Herbert Kane,
“The Work of Evangelism”)
সুসমাচারের অগ্রাধিকার হারিয়ে ফেলার কিছু উদাহরণ
উদাহরণ ১
যেহেতু মন্ডলী সুসমাচার প্রচারের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কাজ করে, তাই প্ল্যান বানানো, টিম তৈরি করা, প্রোগ্রাম বিন্যাস করা, এবং সহায়তা খোঁজা জরুরি। মন্ডলী মূলত বিভিন্ন দৈনন্দিন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। প্রায়শই, আত্মিক উদ্দীপনার সময়ে প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয় যখন মন্ডলীর মিশন পূরণের জন্য মানুষ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় এবং মন্ডলী অনুপ্রাণিত হয়।
প্রতিষ্ঠানগুলির প্রয়োজন আছে। একটি প্রতিষ্ঠান হল কেবল মানুষ এবং সম্পদের দীর্ঘমেয়াদী সংগঠন। প্রতিষ্ঠান ছাড়া, কোনো মন্ডলীভবন, কোনো বিদেশী মিশন, বাইবেল বা অন্য কোনো সাহিত্যের প্রকাশনা, কোনো খ্রিষ্টীয় স্কুল বা শিক্ষামূলক প্রোগ্রাম, এবং পরিচর্যার জন্য কোনো আর্থিক সহায়তা থাকবে না। এমনকি স্থানীয় মন্ডলী এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেটির অস্তিত্ব থাকবে না যদি না একদল মানুষ এতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়।
একটি প্রতিষ্ঠান সফল হলে, লোকসংখ্যা এবং বড় বাজেট সহ এটি বড় হতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি টিকিয়ে রাখতে অনেক পরিশ্রম ও খরচ করতে হয়। কখনো কখনো যারা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন তারা মনে করতে শুরু করেন যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাই তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য পূরণের চেয়ে প্রতিষ্ঠানকে চালু রাখাই তাদের প্রধান কাজ বলে তারা মনে করেন।
যদিও প্রতিষ্ঠানগুলি প্রয়োজনীয়, তাই তাদের অবশ্যই নিজেদেরকে সর্বদা সুসমাচারের অগ্রাধিকার দ্বারা মূল্যায়ন এবং সংস্কার করা উচিত।
উদাহরণ ২
যেহেতু পরিচর্যার কাজ থেকে অর্থ উপার্জনের সম্ভাবনা আছে, তাই অনেক লোকই পরিচর্যাকে ব্যবসার মত চালাতে শুরু করেছে। পরিচর্যার খরচ চালানোর জন্য কোনো মিনিস্ট্রি যদি জিনিসপত্র বিক্রি করে তা ভুল নয়, এবং কোনো মিনিস্ট্রির আর্থিক সহায়তা চাওয়াও ভুল নয়। তবে, যদি কোনো ব্যক্তি সুসমাচারের অগ্রাধিকারের চেয়ে অর্থ দ্বারা বেশি অনুপ্রাণিত হয়, তাহলে তার অন্তর ভুল পথে চলছে এবং তার কাজ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে না (১ পিতর ৫:১-২, ২ পিতর ২:৩)।
শিমোন এমন একজন ব্যক্তি ছিলেন যিনি আত্মিক বরদান চেয়েছিলেন যাতে তার সামাজিক মর্যাদা বাড়ে এবং আর্থিক দিক থেকে লাভ হয়, কিন্তু প্রেরিত তাকে বলে যে তার হৃদয় ভুল দিকে চালিত হচ্ছে (প্রেরিত ৮:১৮-২৩)।
► একজন পাস্টার তার মন্ডলীকে বিক্রি করতে চাইলে সেখানে ভুলটা কী? একটি মন্ডলী কী – এই ব্যাপারে তার ধারণায় কী ভুল রয়েছে?
উদাহরণ ৩
অন্য ধর্মের পরস্পর বিরোধী বিশ্বাস এবং অনুশীলনের সাথে খ্রিষ্টধর্মের সংমিশ্রণ হল সমন্বয়বাদ (Syncretism)। নতুন নিয়মের সময়কাল থেকে সমন্বয়বাদের একটি উদাহরণ হল শমরীয় ধর্ম (Samaritan religion)। যে বিদেশীরা মূর্তিপূজা করত তারা ইস্রায়েলের ভূখণ্ডে চলে গিয়েছিল এবং তাদের মূর্তিপূজার সাথে ইস্রায়েলের ধর্ম মিশ্রিত করেছিল; যিশু বলেছিলেন যে তারা জানত না তারা কীসের পূজা করে (যোহন ৪:২২)।
সমন্বয়বাদের আরেকটি উদাহরণ হল হাইতি দেশের ইতিহাস। যখন হাইতি ফরাসী দেশের উপনিবেশ ছিল, তখন সেখানে আফ্রিকার ক্রীতদাসদের খ্রিষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত করা হত। তারা তাদের পুরনো ধর্মগুলিকে রোমান ক্যাথলিকবাদের সাথে মিশ্রিত করেছিল। বহু হাইতিবাসী এখনও ভুডুর মতো কালোজাদু বা আত্মার উপাসনা করে, যদিও সেইসাথে খ্রিষ্টীয় চিহ্নসমূহ এবং খ্রিষ্টীয় সাধুদের নামও ব্যবহার করে।
কিছু কিছু সময় সমন্বয়বাদ ঘটে কারণ খ্রিষ্টধর্ম এমন একটি দেশ বা জাতির সাথে সংযুক্ত ছিল যা অন্য দেশকে শাসন করেছিল। লোকজন শাসক দেশকে সন্তুষ্ট করতে বাধ্য হত, ফলত তারা শাসকের ধর্মীয় আচার গ্রহণ করলেও নিজেদের মূল বিশ্বাস অব্যাহত রাখত।
► খ্রিষ্টধর্ম এবং অন্যান্য ধর্মের মধ্যে কী কী মিশ্রণ আপনি দেখেছেন?
জাগতিক উদ্দেশ্য সমন্বয়বাদের কারণ হতে পারে। যদি মানুষ মনে করে যে সুসমাচার গ্রহণ করলে তারা আর্থিক সুবিধা, রাজনৈতিক প্রভাব, বা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছ থেকে কোনো সাহায্য পেতে পারে, তাহলে তারা সত্যিকারের রূপান্তর ব্যতীত খ্রিষ্টধর্মকে বাহ্যিকভাবে গ্রহণ করতে পারে। তারপর, তারা নিজেদের পুরনো বিশ্বাস এবং কাজকর্ম অব্যাহত রাখে এবং নিজেদেরকে খ্রিষ্টীয় নামে আখ্যাত করে। মানুষকে ভুল উদ্দেশ্যের দিকে চালনা করতে পারে এমন কোনোকিছুর প্রচার ব্যতীত যদি মন্ডলী সুসমাচার ছড়িয়ে দিতে পারে, তবে তা সর্বাপেক্ষা ভালো।
খ্রিষ্টধর্মকে অনেকক্ষেত্রেই একটা বিদেশী ধর্ম হিসেবে দেখা হয় কারণ বিদেশী মিশনারীরাই সুসমাচার নিয়ে এসেছে। সেজন্য খ্রিষ্টধর্মকে প্রতিটি সংস্কৃতিতে রোপণ করা এবং সেই সংস্কৃতিতে প্রচলিত একটি রূপ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে একটি বিদেশী ধর্ম হিসেবে অবিরত দেখা উচিত নয়। তবে, মিশনারী এবং সুসমাচার প্রচারকদের জন্য এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে কোন সংস্কৃতির বিবরণ খ্রিষ্টধর্মের সাথে খাপ খায় না। এই বিচক্ষণতা একটি প্রক্রিয়া যেখানে স্থানীয় বিশ্বাসীদের সহায়তা আবশ্যক এবং এটি দ্রুত শেষ করা যাবে না।
উদাহরণ ৪
কিছু কিছু সময় কোনো ধর্মকে একটি দেশের প্রতিষ্ঠিত ধর্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, কোনো কোনো দেশে, বেশিরভাগ মানুষ মুসলিম। আবার অন্য কিছু দেশে, বেশিরভাগ মানুষ রোমান ক্যাথলিক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়। বহু সংখ্যক মানুষ তাদের ধর্মের নৈতিক ভিত্তি অনুসরণ করে না এবং কেবল আনুষ্ঠানিকভাবেই তাদের ধর্মীয় রীতি পালন করে; কিন্তু তারা নিজেদেরকে সেই ধর্মের অনুসারী বলে থাকে।
বহু মানুষ নিজেদের খ্রিষ্টবিশ্বাসী বলে কারণ তাদের সামাজিক বৃত্তে সমস্ত ভালো মানুষেরা খ্রিষ্টবিশ্বাসী হিসেবেই বিবেচিত। তারা আসলে অন্তর থেকে অনুতপ্ত নয়। তারা তাদের নিজস্ব নৈতিকতার মান অনুসরণ করে চলে।
সুসমাচার হল অনুতাপ করার এবং খ্রিষ্টের কাছে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান। যিশু বলেছেন যে একজন ব্যক্তি ততক্ষণ তাঁর শিষ্য হতে পারে না যতক্ষণ না সে আত্মকেন্দ্রিকতাকে বলি দিচ্ছে এবং একজন সত্যিকারের অনুসরণকারী হয়ে উঠছে (লুক ৯:২৩)।
একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর সংজ্ঞা কখনোই একটি পাপময় জগতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠাকে প্রকাশ করে না। একটি সমাজের সাধারণত নৈতিকতা সবসময়ই খ্রিষ্টীয় নৈতিকতার চেয়ে নিচে অবস্থান করে, এবং একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী সর্বদাই জগতের বিপরীত।
আমরা কখনোই প্রত্যাশা করতে পারি না যে সকল বিশ্বাসীই সমস্ত ধর্মতত্ত্বে সম্মত হবে। বিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে, যদিও তারা প্রত্যেকেই বাইবেলকে মতবাদের জন্য তাদের কর্তৃপক্ষ হিসেবে গ্রহণ করে।
কিছু কিছু সময় মন্ডলী সেইসব ধর্মতত্ত্বগুলির উপর জোর দেয় যেগুলি তাদেরকে অন্যান্য মন্ডলী থেকে পৃথক করে, কিন্তু সেই মতবাদগুলি খ্রিষ্টবিশ্বাসের ভিত্তিমূলক ধর্মতত্ত্বগুলির মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়। একটি মন্ডলীর কখনোই বলা উচিত নয় যে অন্যান্য মন্ডলী যথার্থ খ্রিষ্টীয় নয়, যদি সেই মন্ডলীগুলি অপরিহার্য সুসমাচার প্রচার করে থাকে।
একটি মন্ডলীর কখনোই অন্য মন্ডলীদের সাথে লড়াই করে নিজ পরিচয় প্রতিষ্ঠা করা উচিত নয়। এটির প্রথমে নিজেকে সুসমাচারের সাথে স্থাপন করা উচিত, তারপর একদল প্রতিশ্রুত সদস্যদের ফেলোশিপ গঠন করে প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত।
► কোন ভিত্তিতে একটি মন্ডলী অপর একটি মন্ডলীকে সত্যিকারের খ্রিষ্টীয় হিসেবে গ্রহণ করবে?
উদাহরণ ৬
এমনকি একটি সত্য ধর্মতত্ত্বকে এতটাই জোর দেওয়া যেতে পারে যে এটি অন্য সত্যের বিপরীত বলে মনে হতে পারে। অনুগ্রহের উপর জোর দিতে গিয়ে, একটি মন্ডলী ঈশ্বরের আনুগত্যের প্রয়োজনীয়তাকে কমিয়ে দিতে পারে। রূপান্তরের মুহুর্তের উপর জোর দিতে গিয়ে, একটি মন্ডলী শিষ্যত্বের প্রক্রিয়াটি ভুলে যেতে পারে। একজন ব্যাকস্লাইডারের প্রতি ঈশ্বরের বিশ্বস্ততার উপর জোর দেওয়ার সময়, মন্ডলী ধর্মভ্রষ্টতা হওয়ার (apostasy) বিপদ সম্বন্ধে সাবধান করতে ব্যর্থ হতে পারে। আত্মিক বরদানকে সম্মান দিতে গিয়ে, মন্ডলী গভীর আত্মিকতা এবং খ্রিষ্টীয় চরিত্রকে অবহেলা করতে পারে।
সময়ের সাথে সাথে ধর্মতত্ত্বে ভারসাম্যহীনতা দেখা যায় এবং এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব রয়েছে। যেকোনো শিক্ষা যা (১) পাপের বিষয়ে অসতর্কতা সৃষ্টি করে, (২) পরিত্রাণের আশ্বাসের সম্ভাবনা কেড়ে নেয়, (৩) যে ব্যক্তি সুসমাচারে সাড়া দিতে চায়, তার পথে অতিরিক্ত অসুবিধা সৃষ্টি করে, অথবা (৪) সুসমাচারকে গোপন করে– তা এমন একটি শিক্ষা হিসেবে বিবেচিত যা তত্ত্বগতভাবে ভারসাম্যহীন।
ঐতিহাসিক পুনর্জাগরণসমূহ এবং সংস্কারসমূহ
মন্ডলীর ইতিহাসে এরকম বহুবারই দেখা গেছে যে বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলি সুসমাচারের প্রতি তাদের দায়িত্ব ভুলে গেছে। সুসমাচারের চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় প্রাতিষ্ঠানিকতা, অযৌক্তিক আপোষ (syncretism), এবং ধর্মতত্ত্বের ভারসাম্যহীনতার মত ভুল দেখা গেছে। যেখানে লিডারদের আত্মিক উদাহরণস্বরূপ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে তারা ভুল উদ্দেশ্য, ভুল চরিত্র, এবং জাগতিক জিনিসের প্রতি আগ্রহ প্রদর্শন করেছিল।
ঈশ্বর কিছু কিছু সময় মন্ডলীতে বড় কোনো রিভাইভ্যাল বা উদ্দীপনা পাঠিয়েছেন। দীর্ঘমেয়াদী এবং ফলপ্রসূ রিভাইভ্যালের তিনটি দিক আছে।
১। ঈশতাত্ত্বিক পুনর্জাগরণ বা সংস্কার (theological reformation) যখন একটি উপেক্ষিত আত্মিক সত্য পুনরুদ্ধার করা হয়।
২। আত্মিক পুনর্নবীকরণ (spiritual renewal) যখন অধিক প্রার্থনা, আন্তরিক উপাসনা, এবং একাধিক রূপান্তর হয়।
৩। নতুন পরিচর্যা পদ্ধতি (new ministry methods) পাওয়া যখন মন্ডলী সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্বের নতুন পথ খুঁজে পায়।
প্রোটেস্টান্ট রিফর্মেশন (১৫০০ শতকে গোটা ইউরোপ জুড়ে) ছিল কেবলমাত্র বিশ্বাসের মাধ্যমেই অনুগ্রহ দ্বারা পরিত্রাণের সুসমাচারের একটি পুনরুদ্ধার। হাজার হাজার মানুষ রূপান্তরের অভিজ্ঞতা লাভ করেছিল। সাধারণত মানুষের ভাষায় শাস্ত্রীয় বই অনুবাদ করার হয়েছিল এবং সকলের জন্য তা সহজলভ্য করা হয়েছিল।
অ্যানাব্যাপ্টিস্টরা (Anabaptists) (১৫০০-এর দশকে এবং পরবর্তীকালে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে) চিন্তান্বিত ছিল কারণ এই রিফর্মেশনের অনেক অনুসারীরা মনে করেছিল যে সঠিক মতবাদে বিশ্বাস করাই পরিত্রাণের জন্য যথেষ্ট। অনেক লোক সুসমাচারের সত্যতা স্বীকার করার দাবি করেছিল কিন্তু রূপান্তরিত হওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের ছিল না। অ্যানাব্যাপ্টিস্টরা ব্যক্তিগত রূপান্তরের উপর জোর দিয়েছিল।
পায়েটিস্ট (Pietists) (জার্মানিতে ১৬০০ দশকের শেষের দিকে) ব্যক্তিরা শিষ্যত্বের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিল। তারা খ্রিষ্টীয় পরিপক্কতার ক্ষেত্রে বিশ্বাসীদের প্রশিক্ষণের জন্য স্মল গ্রুপ মিনিস্ট্রি এবং সিস্টেম তৈরি করেছিল।
জন ওয়েসলি (John Wesley)-র পরিচর্যা দিয়েই মেথডিস্ট রিভাইভ্যাল (ইংল্যান্ডে ১৭০০ দশকের শেষের দিকে) শুরু হয়েছিল। চার্চ অফ ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ যাজকই অস্বীকার করেছিলেন যে পরিত্রাণের ব্যক্তিগত নিশ্চয়তা সম্ভব ছিল। ওয়েসলি প্রচার করেছিলেন যে প্রত্যেক ব্যক্তিই জানতে পারে যে খ্রিষ্টে তার একটি জীবন্ত বিশ্বাস আছে এবং পবিত্র আত্মায় তার পরিত্রাণের একটি নিশ্চয়তা আছে।
► আপনি আপনার সমাজে কোন মহান সত্যটির উপর জোর দিতে চান?
উপসংহার
বড় এবং ছোটো (স্থানীয় মন্ডলী সহ) বহু খ্রিষ্টীয় প্রতিষ্ঠান, সুসমাচারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে শুরু হয়েছিল। সময়ের সাথে সাথে, তাদের মধ্যে অনেকেই সেই অগ্রাধিকার থেকে দূরে সরে গেছে।
মন্ডলীর সেই সক্রিয়তা পুনরায় গড়ে তোলার জন্য, আমাদের কোনো অদ্ভুদ নতুন ধর্মতত্ত্বের বা নতুন কোনো উদ্ঘাটনের প্রয়োজন নেই। আমাদের যা প্রয়োজন তা হল সুসমাচারের অগ্রাধিকারের ইভাঞ্জেলিকাল আদর্শগুলি পুনরুদ্ধার করা।
৫ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
আপনি পরবর্তী ক্লাসটি ৫ নং পাঠের উপর একটি পরীক্ষা নিয়ে শুরু করবেন। প্রস্তুতির সময় পরীক্ষার প্রশ্নগুলি ভালো করে অধ্যয়ন করুন।
৫ নং পাঠের পরীক্ষা
(১) ইভাঞ্জেলিকাল মন্ডলীর তিনটি বৈশিষ্ট্য কী কী?
(২) যে ছয়টি উপায়ে একটি মন্ডলী সুসমাচারের অগ্রাধিকার হারিয়ে ফেলে সেগুলি কী কী?
(৩) একটি ভারসাম্যহীন মতবাদের চারটি চিহ্ন কী কী?
(৪) দীর্ঘমেয়াদী রিভাইভালের তিনটি দিক কী কী?
(৫) নিম্নলিখিত প্রতিটির উপর একটি করে সত্য বিবৃতি লিখুন:
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.