জর্জ ওয়াশিংটন কার্ভার (George Washington Carver) ১৮৬০ সালের কাছাকাছি সময়ে আমেরিকায় দাসত্বপ্রথায় জন্মগ্রহণ করেন। দাসত্বপ্রথা বিলুপ্তির পর, তিনি শিক্ষা লাভ করতে চেয়েছিলেন। সেই সময়ে কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের জন্য শিক্ষা সহজলভ্য ছিল না, কিন্তু একজন দয়ালু মহিলা তাকে বলেছিলেন, “তোমাকে যতটা সম্ভব শিখতে হবে, তারপর বিশ্বের কাছে ফিরে যেতে হবে এবং তোমার জ্ঞান মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।” জর্জ প্রার্থনা করেছিলেন, “প্রভু, আমাকে মহাবিশ্বের গোপন রহস্য দেখাও,” এবং বলেছিলেন যে ঈশ্বর তাকে উত্তর দিয়েছিলেন, “তুমি মহাবিশ্বের গোপন রহস্য বোঝার জন্য খুবই ছোটো।” তখন জর্জ প্রার্থনা করেছিলেন, “তাহলে প্রভু, আমাকে চিনাবাদামের গোপন রহস্য দেখাও,” এবং বলেছিলেন যে ঈশ্বর তাতে সম্মতি দিয়েছিলেন। চিনাবাদাম গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি অনেক দরিদ্র কৃষকের প্রধান ফসল ছিল। জর্জ জানতেন যে চিনাবাদাম থেকে আরো পণ্য উদ্ভাবন করলে চিনাবাদাম ফসলের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। জর্জ চিনাবাদাম থেকে ৩০০টি সম্ভাব্য পণ্য এবং মিষ্টি আলু থেকে ১০০টি পণ্য আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি টাস্কেগি ইনস্টিটিউটে (Tuskegee Institute) ৪৭ বছর ধরে কৃষিবিদ্যার শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং কৃষকদের নতুন পদ্ধতি শেখানোর উপায় খুঁজে বের করেছিলেন, যা তাদের জমি উন্নত করতে এবং আরো ভালো ফসল পেতে সহায়তা করেছিল। জর্জ ওয়াশিংটন কার্ভার ছিলেন একজন মহান আশীর্বাদস্বরূপ, কারণ তিনি ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখেছিলেন এবং তার আস্থা ছিল যে ঈশ্বরের সৃষ্টি, সঠিকভাবে পরিচালিত হলে, মানবজাতির জন্য বিরাট কল্যাণ বয়ে আনতে পারে।
পরিবেশতত্ত্ব হল জীবিত প্রাণীরা একে অপরের সাথে এবং তাদের পরিবেশের সাথে কীভাবে সম্পর্কিত তার অধ্যয়ন।
প্রকৃতির উপর মানুষের কর্তৃত্ব
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য আদি পুস্তক ১:১, ২৬-২৮ পদ পড়বে।
পৃথিবীর প্রতি মানুষের দায়িত্ব এই সত্যের উপর ভিত্তিশীল যে ঈশ্বর পৃথিবীকে তাঁর প্রশংসার জন্য সৃষ্টি করেছেন (গীত ১৪৮) এবং মানুষকে এর উপর ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্ট মানুষ হিসেবে, আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী শাসন করার জন্য সৃষ্টি হয়েছি। গীতরচক লিখেছেন, “তুমি তাদের স্বর্গদূতদের চেয়ে সামান্য ছোটো করেছ এবং তাদের গৌরব ও সম্মানের মুকুটে ভূষিত করেছ।তোমার হাতের সকল সৃষ্টির উপর তাদের কর্তৃত্ব দিয়েছ; এসব কিছু তাদের পায়ের নিচে রেখেছ” (গীত ৮:৫-৬)। পৃথিবীতে মানুষের একটি বিশেষ ভূমিকা আছে। তারা পশু নয়। ঈশ্বর মানুষকে পৃথিবী এবং সেখানে বসবাসকারী সমস্ত পশুদের উপর কর্তৃত্বের পদে রেখেছেন।
ঈশ্বর আদম ও হবাকে পৃথিবীতে বংশবৃদ্ধি করতে এবং পূর্ণ করতে বলেছিলেন। তিনি তাদের পৃথিবীকে বশীভূত করতে বলেছিলেন। পৃথিবীকে বশীভূত করার প্রক্রিয়া তাদের বংশধরদের দ্বারা অব্যাহত থাকবে। পৃথিবীকে বশীভূত করার কাজের মধ্যে রয়েছে অনুসন্ধান, নতুন অঞ্চলে বসতি, খনিজ আবিষ্কার ও ব্যবহার, গৃহপালিত পশুপালন এবং প্রযুক্তির বিকাশ।
ঈশ্বর যখন পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন তখন সবকিছুই ভালো ছিল। মানুষের এদেন উদ্যানের যত্ন নেওয়ার কাজটি (আদি পুস্তক ২:১৫) প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে উপভোগ্য কাজ ছিল। পাপ সংঘটিত হওয়ার পর, প্রকৃতি অভিশাপের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল এবং মানুষের কাজ কঠিন হয়ে পড়েছিল (আদি পুস্তক ৩:১৭-১৯)। পৃথিবীর আসল উত্কর্ষতা আর নেই (রোমীয় ৮:১৮-২৩), কিন্তু এটি এখনো তার আশ্চর্যজনক ডিজাইনে ঈশ্বরের মহিমা প্রদর্শন করে।
মহাপ্লাবনের পর, ঈশ্বর বলেছিলেন যে মানুষ পশুদের খেতে পারে (আদি পুস্তক ৯:৩)। ঈশ্বর মোশিকে যে বিধান দিয়েছিলেন তাতে কিছু প্রাণী খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু নতুন নিয়ম আমাদের বলে যে এখন আমরা খাদ্যের জন্য উপযোগী যেকোনো প্রাণীই খেতে পারি (মার্ক ৭:১৯, ১ তিমথি ৪:৪)। পশুদের এমন কোনো অধিকার নেই যা তাদেরকে মানুষের সাথে সমান স্তরে রাখে।
সম্পদ ব্যবস্থাপনায় মানুষের দায়িত্ব
মানুষকে পৃথিবীর উপর কর্তৃত্ব করার অধিকার দেওয়া হলেও (আদি পুস্তক ১:২৮), তারাই সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব নয়। সকল মানুষই ঈশ্বরের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। পৃথিবী এবং তার উৎপাদিত ফসল এখনও ঈশ্বরেরই অধিকার।
► শিক্ষার্থীরা গ্রুপের জন্য গীত ২৪:১ এবং গীত ৫০:১০-১১ পদ পড়বে।
ঈশ্বর পৃথিবীর মালিক। ঈশ্বর পৃথিবীকে তাঁর মহিমা প্রকাশ করার জন্য (গীত ১৯:১), মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য (আদি পুস্তক ১:২৯), এবং তাদের বসবাসের জন্য একটি মনোরম স্থান হিসেবে ডিজাইন করেছেন। তিনি চান যেন আমরা পৃথিবী এবং এর উৎপাদিত জিনিস উপভোগ করি। আমাদের পৃথিবীকে উপাসনা করা উচিত নয়, কারণ এটি ঈশ্বরের হাতের কাজ (রোমীয় ১:২৫)। আমাদের পৃথিবীকে ধ্বংসাত্মক উপায়ে শোষণ করাও উচিত নয়।
কখনো কখনো মানুষ জমি থেকে সুবিধা নেয়, আবার একই সাথে জমি ধ্বংসও করে। মানুষ খনিজ পদার্থ উত্তোলন করে, কিন্তু জমিকে অকেজো এবং নোংরা রেখে যায়। মানুষ কখনো কখনো একটি এলাকা থেকে সমস্ত গাছ কেটে ফেলে, ফলে বৃষ্টির জলে সমস্ত ভাল মাটি ধুয়ে যায়। কখনো কখনো মানুষ খাবারের জন্য এত পরিমাণে বন্য প্রাণী শিকার করে যে এলাকায় আর কোনো প্রাণী অবশিষ্ট থাকে না। মানুষ নদীতে আবর্জনা ফেলে দেয় যতক্ষণ না জল ব্যবহারের জন্য আর থাকে না।
ঈশ্বর পৃথিবীকে উৎপাদনশীল হওয়ার জন্য ডিজাইন করেছেন। মানুষের ভূমিকে এমনভাবে ব্যবহার করা ভুল যা এটিকে ধ্বংস করে। ভূমির ধ্বংসাত্মক ব্যবহারে ঈশ্বর অসম্মানিত হন।
ঈশ্বর পৃথিবীকে হাজার হাজার বছর ধরে বহু প্রজন্মের মানুষের সেবা করার জন্যই বিন্যস্ত করেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত করার জন্য আমাদের দায়িত্ববোধ থাকা উচিত। যে ব্যক্তি দ্রুত লাভের জন্য জমি ধ্বংস করে, সে তার প্রতিবেশী এবং পরবর্তী প্রজন্মকে ভালোবাসে না।
আপনার কি ভাবতে ভালো লাগবে যে আজ থেকে ২০ বছর পর কেউ আপনার সন্তানদের কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নেবে? অবশ্যই না। তবুও মানুষ তাদের সন্তানদের বসবাসের পরিবেশ ধ্বংস করে তাদের নিজেদের সন্তানদের থেকেই ছিনিয়ে নিচ্ছে। যদি আপনার নিজের সন্তান নাও থাকে, তবুও আপনার অন্যদের সন্তানদের কথা চিন্তা করা উচিত যারা একদিন জমির উত্তরাধিকারী হবে।
অনেকেই তাদের মালিকানাধীন জমির ব্যাপারে যত্নবান, কিন্তু তারা সরকারি জমির ব্যাপারে কোনো চিন্তা করে না। বিশ্বাসীদের পরিবেশের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ স্থাপন করা উচিত, কারণ আমরা জানি এটি ঈশ্বরের, এবং আমরা আমাদের প্রতিবেশী এবং পরবর্তী প্রজন্মের কথা চিন্তা করি।
কখনো কখনো মানুষ ভাবে, “এই জমি আমার নয়, তাই আমি আমার আবর্জনা এখানে ফেলে যেতেই পারি”, অথবা “আমি সব গাছই কেটে ফেলতে পারি, এমনকি খুব ছোটো গাছগুলোও।”
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য দ্বিতীয় বিবরণ ২২:৬ পদ পড়বে।
পৃথিবীর যে অংশে দ্বিতীয় বিবরণের পুস্তকটি লেখা হয়েছিল, সেখানে এমন কিছু পাখি ছিল যাদের বাসায় থাকাকালীন অবস্থায় সহজেই ধরা যেত। মানুষ যদি সবসময় মা, ডিম বা বাচ্চা নিয়ে যেত, তাহলে শীঘ্রই সেই পাখিগুলোর অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যেত। ঈশ্বর তাদের বলেছিলেন মা-পাখিটিকে ছেড়ে দিতে যাতে প্রজাতিটি ধ্বংস না হয়। বর্তমান সময়ে, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নিয়ম একই রকম হবে না, তবে পদটি আমাদের বলে যে আমাদের সরকারি জমির সম্পদ সংরক্ষণে সতর্ক থাকা উচিত।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাদর
ঈশ্বর যখন গাছপালা সৃষ্টি করেছিলেন, তখন তিনি কেবল শাকসবজি এবং ফলই সৃষ্টি করেননি, তিনি ফুল এবং অনেক সুন্দর জিনিসও সৃষ্টি করেছিলেন। এটি আমাদের বলে যে ঈশ্বর কেবল জমির ব্যবহারিক ব্যবহারের বিষয়ে চিন্তা করেন তা নয়; তিনি সৌন্দর্যেরও যত্ন নেন (লূক ১২:২৭)। ঈশ্বর মানুষের বসবাসের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ প্রদানের জন্য প্রকৃতির সৌন্দর্য সৃষ্টি করেছেন।
পাহাড়, মরুভূমি, নদী, সমভূমি এবং বন-জঙ্গল - সবকিছুরই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আছে। কিছুক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট স্থানে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিরা সেই এলাকার সৌন্দর্য সত্যিই দেখতে পায় না, কারণ এটি তাদের কাছে সাধারণ বিষয়।
► কল্পনা করুন যে আপনি একজন শিল্পী। কল্পনা করুন যে আপনি একটি সুন্দর ছবি আঁকার জন্য অনেক সময় ব্যয় করেছেন এবং তারপর এটি আপনার বন্ধুকে দিয়েছেন। তারপর একদিন যখন আপনি তার সাথে দেখা করতে গেলেন, তখন আপনি দেখতে পেলেন যে ছবিটি নষ্ট হয়ে মেঝেতে পড়ে আছে যার উপর বহু লোকের পায়ের ছাপ রয়েছে। আপনার কেমন লাগবে?
অনেক বসতি আছে যেখানে লোকেরা তাদের সমস্ত আবর্জনা মাটিতে যত্রতত্র ফেলে দেয়। তারা নিজেদের উঠোন পরিষ্কার করে, কিন্তু অন্যত্র আবর্জনা ফেলে রাখে। তাদের পাড়ার রাস্তাঘাট আবর্জনায় ভরা থাকে।
► এই লোকেদের কী বোঝার প্রয়োজন?
আমাদের অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়া স্থানগুলির প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত, যা তাদের জন্যও এবং আমাদের নিজেদের জন্যও মঙ্গলসাধন করবে।
► একটি মন্ডলী তার পারিপার্শ্বিক এলাকায় পরিবর্তন আনার জন্য কী করতে পারে?
পশুদের ব্যবহার
পশুরা মানুষের থেকে আলাদা। তারা ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে তৈরি নয়। অতএব, তারা অমর আত্মার অধিকারী নয় (উপদেশক ৩:২১) এবং তাদের কোনো মানবাধিকার নেই।
ঈশ্বর মানুষকে পশু খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন, যার অর্থ হল খাদ্যের জন্য বন্য প্রাণী শিকার করা এবং খাদ্যের জন্য গৃহপালিত পশু পালন করা বৈধ।
মানব ইতিহাসের বেশিরভাগ সময় ধরেই পোষার জন্য বা কাজ সম্পন্ন করার জন্য পশু রাখা মানবসমাজে খুবই প্রচলিত ছিল।
► মানুষ পশুদের সাথে কেমন আচরণ করে তা নিয়ে ঈশ্বর কী চিন্তা করেন?
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য হিতোপদেশ ১২:১০ পদ পড়বে।
এই পদটি আমাদের বলে যে ধার্মিক ব্যক্তিদের অন্যতম ভালো বৈশিষ্ট্য হল যে তারা তাদের পোষ্য প্রাণীদের উত্তম যত্ন নেয়। নিষ্ঠুরতা হল এক দুষ্ট ব্যক্তির চরিত্র।
কোনো ব্যক্তির কোনো পোষ্য প্রাণী থাকলে, তার নিশ্চিত করা উচিত যে প্রাণিটির জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, জল, এবং থাকার জায়গা আছে। যারা তাদের পোষ্য প্রাণীদের প্রয়োজনের ব্যাপারে নজর রাখে না বা যত্ন নেয় না, তারা ভুল কাজ করছে।
মনে রাখবেন যে সকল প্রাণীই ঈশ্বরের (গীত ৫০:১০-১১)। তারা সকলেই ঈশ্বরের দ্বারা পরিকল্পিত এবং সৃষ্ট। তিনি তাদের প্রচুর বৈচিত্র্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তিনি খাদ্য এবং কাজের জন্য মাত্র কয়েকটিই তৈরি করতে পারতেন, কিন্তু তিনি পোকামাকড় এবং জীবের অতিক্ষুদ্র রূপ ছাড়াও হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণী তৈরি করেছেন। প্রাণীদের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঈশ্বরের আশ্চর্যজনক সৃজনশীলতা প্রদর্শিত হয়।
কিছু প্রাণী তাদের মালিকদের প্রতি আনুগত্য এবং কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করতে সক্ষম। তারা মানুষের মনোযোগ উপভোগ করে এবং প্রতিক্রিয়া জানাতে শেখে। তারা অনেক কিছু শেখার জন্য যথেষ্ট বুদ্ধিমান। এটা স্পষ্ট যে ঈশ্বর তাদের মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য তৈরি করেছেন। ঈশ্বর প্রাণীদের মধ্যে মানুষের প্রতি বিশেষ সম্মানবোধ দিয়েছেন (আদি পুস্তক ৯:২)।
ঈশ্বর প্রাণীদের এমন বুদ্ধিমত্তা এবং প্রকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন যা মানুষকে প্রত্যুত্তর জানাতে পারে। তাদের অত্যাচার করার অর্থ হল ঈশ্বরের উদ্দেশ্যগুলিকে অসম্মান করা। এটির সাথে বলা যায় যে, কেউ যদি কোনো পশুকে আঘাত করে আনন্দ পায় তাহলে তার কিছু সমস্যা আছে এবং সে একজন বিকৃতবুদ্ধি ব্যক্তি।
শাস্ত্রে বহুবার একজন মেষপালকের দৃষ্টান্ত ব্যবহার করা হয়েছে। দায়ূদ ইস্রায়েলের রাজা হওয়ার আগে একজন মেষপালক ছিলেন। দায়ূদ ঈশ্বরকে একজন মেষপালকের সাথে তুলনা করে গীত ২৩ লিখেছিলেন। দায়ূদ উপলব্ধি করেছিলেন যে, যেভাবে একজন মেষপালক তার মেষেদের যত্ন নেয়, সেইভাবে ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের যত্ন নেন। নতুন নিয়মে, পাস্টারদের মেষপালকের সাথে তুলনা করা হয়েছে (১ পিতর ৫:২ এবং আরো অন্যান্য)। এই তুলনার কোনো মানেই থাকত না যদি না ঈশ্বর আশা করতেন যে মানুষও তাদের পশুদের যত্ন নেবে।
দায়ূদের মেষপালের যত্ন নেওয়া ছিল মানুষের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণের অংশ। ঠিক একইভাবে, ঈশ্বর আমাদেরকে যে ভূমি এবং পশুপাখির দায়িত্ব দিয়েছেন তার যত্ন নেওয়া আমাদেরকে মানুষের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করবে।
সবুজের গুরুত্ব
কেবল যেসব জায়গায় জল বা ভালো মাটির অভাব থাকে সেই এলাকাগুলি ছাড়া, সবুজ রং হল প্রকৃতিতে সবচেয়ে সাধারণ রং। এটি আমাদের চোখের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক রং।
শহরে বসবাসকারী অনেক মানুষ শহর থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে সতেজ বোধ করে।
অনেক শহরের পরিবেশে প্রায় গাছের কোনো চিহ্নমাত্র নেই। বেশিরভাগ জমি কংক্রিট বা পীচের রাস্তা দিয়ে ঢাকা। কিছু সোসাইটি শহরগুলিতে পার্ক এবং অন্যান্য সবুজ এলাকা তৈরির চেষ্টা শুরু করেছে। প্রতিটি সম্প্রদায়ের মানুষের একসাথে কাজ করে গাছ লাগানোর এবং সবুজায়নের জায়গা তৈরি করা উচিত। মানুষের আনন্দ উপভোগ করার জন্য এবং বিশেষ করে শিশুদের খেলার জন্য সবুজ এলাকা সংরক্ষণ করা উচিত। পরিবারগুলি গাছপালা প্রতিপালনের মাধ্যমে তাদের উঠোন এবং বাড়িতে নিজস্ব সবুজ স্থান তৈরি করতে পারে।
খ্রিষ্টীয় পরিবেশবিদ্যার স্বাতন্ত্র্যতা সমূহ
এই অধ্যায়ের শুরুতে পরিবেশতত্বের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
► কেন বিশ্বাসীদের পরিবেশের যত্ন নেওয়া উচিত?
কিছু মানুষ মনে করে যে দূষণ রোধ করে আমরা পৃথিবীকে বাঁচাতে পারি। আমরা মানুষরা এটিকে বাঁচাতে পারি না, যদিও যতদিন সম্ভব এটিকে সংরক্ষণ করার জন্য আমাদের ভূমিকা পালন করা উচিত। বিশ্বাসীরা জানে যে আমরা শেষ পর্যন্ত এই মহাবিশ্বের পতনকে বিপরীতমুখী করতে পারব না। কিন্তু, অবশেষে ঈশ্বর পৃথিবীকে পুনর্নবীকরণ করবেন (প্রকাশিত বাক্য ২১:১)। অতএব, আমরা জানি যে আমরা পৃথিবীকে বাঁচাতে পারব না।
কিছু লোক বিশ্বাস করে যে মানুষ পশুর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, এবং আমাদের পশুদের সম্মান করা উচিত কারণ তাদের অধিকার আমাদের অধিকারের সমান। বিশ্বাসীরা জানে যে ঈশ্বর মানুষকে পৃথিবীর উপর কর্তৃত্ব দিয়েছেন। আমরা জানি যে মানুষ পশুদের থেকে আলাদা, কারণ আমরা ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে অনন্যভাবে সৃষ্ট এবং আমাদের এক অনন্ত আত্মা রয়েছে। অতএব, মানবাধিকারের সাথে তুলনীয় অধিকার পশু-পাখিদের নেই।
বিশ্বাসীরা এই পৃথিবীর যত্ন নেয় কারণ
১। এটি ঈশ্বরের অধিকারভুক্ত।
২। এই পৃথিবীর যত্ন নেওয়ার জন্য ঈশ্বর মানুষকে একটি দায়িত্ব দিয়েছেন।
৩। আমরা পরবর্তী প্রজন্মের মানুষদের যত্ন নিই।
► আপনার সমাজের কোন সাধারণ অভ্যাসগুলি দেখায় যে মানুষের পরিবেশ সম্পর্কে ধারাবাহিকভাবে খ্রিষ্টীয় ধারণা নেই?
► শিক্ষার্থীদের চোখ বন্ধ করতে বলুন এবং মন্ডলী প্রাঙ্গন থেকে বের হওয়ার সময় তারা সর্বদা যা দেখে তা বর্ণনা করতে বলুন। মন্ডলী-গৃহের সামনের জায়গাটি কেমন দেখাচ্ছে? মাটিতে কি আবর্জনা আছে? জায়গাটি কি এমন দেখাচ্ছে যেন কেউ এর যত্ন নেয়? কার সেই জায়গাটির যত্ন নেওয়া উচিত? মন্ডলীর সদস্যেরা কীভাবে এটি পরিবর্তন করতে পারে তা বর্ণনা করুন। কেন তাদের এই জায়গাটির যত্ন নেওয়ার কথা বিবেচনা করা উচিত? তাদের যত্ন অন্যদের উপর কী প্রভাব ফেলতে পারে? শিক্ষার্থীরা তাদের বাড়ির আশেপাশের জায়গাগুলি সম্পর্কে একইভাবে ভাবতে পারে।
গ্রুপে আলোচনার জন্য
► আপনার কোন অভ্যাসগুলি পরিবর্তন করা উচিত?
► আপনার মন্ডলী কীভাবে দৃষ্টান্ত এবং শিক্ষার মাধ্যমে তার সমাজ-সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারে?
► আপনার সম্প্রদায়ের লোকেরা যদি সহযোগিতা করে তাহলে কীভাবে সেই এলাকার পরিবেশ উন্নত করা সম্ভব?
প্রার্থনা
স্বর্গস্থ পিতা,
সৌন্দর্য এবং সম্পদের এক পৃথিবী তৈরি করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। তোমার তৈরি পৃথিবীর যত্ন নেওয়ার দায়িত্বে আমাদের উপর আস্থা রাখার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই।
তোমার অপূর্ব সৃষ্টিকে মর্যাদাদানের মাধ্যমে জীবনযাপন করতে আমাদের সাহায্য করো। আমাদেরকে সাহায্য করো যেন আমরা পৃথিবীর সম্পদ ও সৌন্দর্য রক্ষায় একসাথে কাজ করতে পারি।
আমেন
৮ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) এই পাঠে আপনি যে সত্য শিখলেন তার কারণে আপনার অভ্যাসগুলি পরিবর্তন করার পরিকল্পনা বর্ণনা করে একটি অনুচ্ছেদ লিখুন।
(২) আপনার সমাজের ভুল কাজগুলি বর্ণনা করে একটি পৃষ্ঠার মধ্যে লিখুন। এরপর বর্ণনা করুন যে আপনি কীভাবে কাউকে বুঝিয়ে বলবেন যে কেন এই কাজগুলি বদলানো উচিত। নির্দিষ্ট শাস্ত্রীয় পদ এবং বাইবেলভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আপনার যুক্তিকে দৃঢ় করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.