উইলিয়াম উইলবারফোর্স (William Wilberforce ১৭৫৯-১৮৩৩) ছিলেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একজন সদস্য যিনি একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন এবং ক্রীতদাসপ্রথা, শিশুশ্রম এবং দরিদ্রদের প্রতি দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিরোধিতা শুরু করেছিলেন। তিনি ২০ বছর ধরে এমন একটি আইন পাস করার জন্য কাজ করেছিলেন যা আফ্রিকা থেকে বন্দীদের ব্রিটিশ সাম্রাজ্য জুড়ে বিক্রি করার দাস-ব্যবসার অবসান ঘটাবে। তিনি প্রায়শই হতাশ হতেন যে অন্যরা এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করে না। একবার তিনি পার্লামেন্টের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশকে আইনটি সমর্থন করার জন্য রাজি করান, কিন্তু বিরোধীরা কিছু সদস্যকে থিয়েটারের টিকিট দিয়ে পার্লামেন্টের অধিবেশন এড়িয়ে যেতে বাধ্য করে এবং ফলস্বরূপ আইনটি পাস হয়নি। ১৮০৭ সালে একটি আইন দাসপ্রথার অবসান ঘটায়, কিন্তু দাসপ্রথা তখনও অবৈধ ছিল না। উইলবারফোর্স দাসপ্রথা সম্পূর্ণরূপে বিলোপের জন্য প্রচার চালিয়ে যান। ১৮৩৩ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বেশিরভাগ অংশে দাসপ্রথার অবসান ঘটে। আইনটি পাস হবে এমন খবর পাওয়ার মাত্র তিন দিন পর উইলবারফোর্স মারা যান।।
ভূমিকা
বিশ্বাসীদের তাদের সরকারের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিরাট বৈচিত্র্য রয়েছে। ইতিহাসের কিছু সময়ে এবং স্থানে একটি জাতীয় মন্ডলী ছিল যা সরকারের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেছিল। আবার, অন্য আরেকটি সময়কালে এবং স্থানে, সরকার মন্ডলীকে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে এবং তার উপর নির্যাতন চালিয়েছে। এমন কিছু দেশ আছে যারা মানুষকে স্বাধীনভাবে যেকোনো ধর্ম পালন করার অনুমতি দেয়, এবং তাদের সরকার দাবি করে যে তারা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করে না।
বিশ্বাসীদের এবং সরকারের মধ্যবর্তী সম্পর্ক অনেক কঠিন প্রশ্ন নিয়ে আসে। কিছু ক্ষেত্রে একটি স্থানে মন্ডলী সরকারের সাথে এমন একটি সম্পর্ক গড়ে তোলে যা বিশ্বের অন্যান্য অংশে সরকার আলাদা হওয়ার কারণে তা দেখা যায় না।
এই পাঠে খ্রিষ্টের একজন অনুসারীর প্রতিটি ক্ষেত্রে কী করা উচিত তার প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না অথবা ব্যাখ্যা করা হবে না, তবে আমরা সরকারের সাথে একজন বিশ্বাসীর সম্পর্কের ব্যাপারে বাইবেলের কিছু নীতি দেখব।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য রোমীয় ১৩:১-৭ পদ পড়বে। এই অনুচ্ছেদে আপনি সরকার সম্পর্কে কোন কোন বক্তব্য দেখতে পাচ্ছেন?
বাইবেল আমাদের বলে যে ঈশ্বর স্বয়ং মানব সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ঈশ্বর চান যে সরকার থাকুক, আর যে ব্যক্তি মানব সরকারকে মানতে অস্বীকার করে সে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছে (রোমীয় ১৩:১-২)।
► এই পদটি অনুযায়ী, সরকারের উদ্দেশ্য কী?
সরকারের একটি উদ্দেশ্য হল আইন প্রয়োগের মাধ্যমে মন্দ আচরণের শাস্তি দেওয়া (রোমীয় ১৩:৩)। শাসনকর্তা ঈশ্বরের সেবা করেন এবং আইন ভঙ্গকারীদের শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূরণ করেন (রোমীয় ১৩:৪)।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ১ তিমথি ২:১-২ পদ পড়বে।
আমাদের সরকারের লোকেদের জন্য প্রার্থনা করা উচিত যাতে আমরা শান্ত ও শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারি। এটি আমাদের বলে যে যখন একটি সরকার তার যা করা উচিত সেই অনুযায়ী কাজ করে, তখন এটি সমাজের শান্তি রক্ষা করে।
খ্রিষ্টীয় প্রভাব
► মথি ৫:১৩-১৬ পদ পড়ুন। যিশু আমাদেরকে লবণ এবং আলোর মতো হতে বলার মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
কিছু ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের ভোট দেওয়া বা সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হওয়া উচিত নয়, কারণ এই পৃথিবীর সরকারগুলি খ্রিষ্টীয় নীতি অনুযায়ী শাসন করে না। কিছু খ্রিষ্টবিশ্বাসী বিশ্বাস করে যে মন্ডলী একটি পৃথক সম্প্রদায় হওয়া উচিত যেটি সমাজে জড়িত হয় না কারণ সমাজ অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত।
ভাববাদী যিরমিয় সেইসব ইহুদিদের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন যাদেরকে তাদের নিজস্ব দেশ থেকে পৌত্তলিক সমাজে বসবাসের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারা স্বেচ্ছায় সেখানে যায় নি। ঈশ্বরে বিশ্বাসীদের যদি কখনো সমাজে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার কোনো কারণ থাকে, তাহলে তা অবশ্যই এই ইহুদিদের ছিল। তারা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেখানে ছিল, সমাজের ধর্ম ছিল পৌত্তলিক, সরকার ছিল নিপীড়ক এবং তাদের জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, এবং ইহুদিরা সেই দিনের অপেক্ষায় ছিল যেদিন তারা সেখান থেকে মুক্ত হতে পারবে।
কিন্তু এই লোকেদের জন্য ঈশ্বর ভাববাদীর কাছে কী বার্তা পাঠিয়েছিলেন তা দেখুন:
সেই সঙ্গে ওই নগরের শান্তি ও সমৃদ্ধির অন্বেষণ করো, যেখানে আমি তোমাদের নির্বাসিত করেছি। সদাপ্রভুর কাছে সেই নগরের জন্য প্রার্থনা করো, কারণ সেই নগরের সমৃদ্ধি হলে তোমরাও সমৃদ্ধ হবে। (যিরমিয় ২৯:৭)
এই পদে ব্যবহৃত হিব্রু শব্দ শালোম-এর অর্থ কেবল শান্তি নয়, বরং সেই আশীর্বাদ যা শান্তির সাথে সংযুক্ত। এটি ঈশ্বরের আশীর্বাদকে নির্দেশ করে। ঈশ্বরের এই উপাসকরা ঈশ্বরের আশীর্বাদগুলি তখনই দেখতে পাবে যখন তারা সেই আশীর্বাদগুলি এমন একটি পাপী সমাজের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করবে যারা সেই ঈশ্বর সম্পর্কে কিছুই জানত না এবং ঈশ্বরের লোকেদের তাড়না করেছিল!
যারা ঈশ্বরের সেবা করে, তাদের উচিত তাদের সমাজকে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে সম্মান করার জন্য প্রভাবিত করা যাতে তাদের সমাজ আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়। তাদের যে কেবল সুসমাচার প্রচার করাই উচিত—তা নয়, বরং প্রতিটি অবস্থা এবং প্রতিটি সিদ্ধান্তে ঈশ্বরের নীতিগুলি প্রয়োগ করা উচিত।
সরকার এবং সমাজ ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা গঠিত হওয়া উচিত। ঈশ্বরের প্রকাশিত সত্য থেকে নীতিতত্ত্ব (সঠিক কর্মের নিয়ম), নীতিতত্ত্ব থেকে রাজনীতি (ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার জন্য সরকার) এবং তারপর অর্থনীতি (সম্পদ ব্যবস্থাপনা) আসা উচিত। তাই সঠিক ক্রমটি হল সত্য, তারপর নীতিতত্ত্ব, তারপর রাজনীতি, তারপর অর্থনীতি।
১। শাস্ত্র
২। নীতিতত্ত্ব
৩। রাজনীতি
৪। অর্থনীতি
মানব সমাজের সাধারণ প্রবণতা হল এই ক্রমটি উল্টে দেওয়া। মানুষ তাদের ব্যক্তিগত অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দেয়, তারপর এমন নেতা এবং আইনকে সমর্থন করে যা তাদেরকে তারা যা চায় তাই দেবে, এমনকি যদি তাদের ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা হারাতেও হয়; তারপর তাদের নীতিতত্ত্বকে তাদের কাজের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে, তারপর তাদের আচরণকে অনুমোদন করার জন্য ধর্মকে সাজিয়ে তোলে। অতএব, তাদের স্বাভাবিক ক্রমটি হল অর্থনীতি, তারপর রাজনীতি, তারপর নীতিতত্ত্ব, তারপর ধর্ম।
১। অর্থনীতি
২। রাজনীতি
৩। নীতিতত্ত্ব
৪। ধর্ম
এই ধরণের ধর্ম ভুল নীতি দ্বারা এতটাই গঠিত হয়েছে যে এতে মারাত্মকভাবে সত্যের অভাব রয়েছে।
কেবল সমাজের পাপ প্রত্যাখ্যান করেই নয়, বরং সমাজ কেমন হওয়া উচিত তা ব্যাখ্যা এবং প্রদর্শন করার মাধ্যমে মন্ডলীর বাইবেলের সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো উচিত। বিশ্বাসীরা যদি সমাজের কী করা উচিত তা ব্যাখ্যা করতে এবং প্রদর্শন করতে না পারে, তাহলে বাইবেলের সত্য সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেদের এটি প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হতে দেখে আমাদের অবাক হওয়া উচিত নয়।
বিশ্বাসীদের কেবল তাদের সমাজের সমালোচনা করে যাওয়া উচিত নয়। বিশ্বাসীদের তাদের সমাজের অংশ হওয়া উচিত। বিশ্বাসীদের তাদের সম্প্রদায়ের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত হওয়া উচিত এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে কথা বলা উচিত। বিশ্বাসীদের তাদের সমস্ত আচরণে সর্বদা নীতিবান হওয়া উচিত, এবং এইভাবে অন্যদের ধার্মিকতার জন্য প্রভাবিত করা উচিত। তাদের সরকার এবং সংস্থাগুলিতে অংশগ্রহণ করা উচিত যা সমাজকে প্রভাবিত করে, যতক্ষণ না তারা খ্রিষ্টীয় নীতি লঙ্ঘন না করে তা করতে পারে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে তাদের এমন প্রার্থীদের ভোট দেওয়া এবং সমর্থন করা উচিত যারা খ্রিষ্টীয় চরিত্রের সবচেয়ে কাছাকাছি রয়েছে।
► শাস্ত্রীয় সত্যের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিবর্তে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মন্ডলীর উপর সমাজের চাপের একটি উদাহরণ দিন।
বিশ্বাসীবর্গ এবং মানব সরকারের বিধানসমূহ
ইতিহাস জুড়ে বিশ্বাসীরা যখন তাদের সরকার ভিন্ন নীতি অনুসরণ করে তখন খ্রিষ্টীয় নীতিগুলি কীভাবে অনুসরণ করতে হয় তা জানার জন্য কঠিন সংগ্রাম করেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব অতিমাত্রায় তীব্র হয় এবং বিশ্বাসীরা তাদের বিশ্বাসের জন্য কষ্ট ভোগ করে, কারণ তারা সরকারের চাহিদা পূরণ করতে পারে না।
বাইবেল আমাদেরকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর দিতে বলে (রোমীয় ১৩:৭, মথি ২২:২১)।
বাইবেল আমাদের দেশের আইন মেনে চলতে বলে (তীত ৩:১)। তবে, বাইবেল আমাদের আরো বলে যে যখন ঈশ্বরের আদেশ মানুষের আইনের সাথে বিপরীত হয়, তখন আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের বাধ্য থাকতে হবে (প্রেরিত ৫:২৯)।
সরকার হয়তো দাবি করতে পারে যে জনগণ অন্যায় কাজের জন্য সৈনিক হিসেবে লড়াই করবে। সরকার হয়তো অতিরিক্ত জনসংখ্যা কমানোর জন্য শিশুদের মেরে ফেলার দাবি জানাতে পারে। সরকার দাবি করতে পারে যে জনগণ কোনো জন-গোষ্ঠীর দাসত্বে সহযোগিতা করবে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যাগুলি উপাসনার সাথে সম্পর্কিত। খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা তাদের পরিবার বা উপজাতির দেবতাদের উপাসনা না করলে নির্যাতিত হতে পারে। যখন তাদের সরকার ভিন্ন ধর্মকে সমর্থন করে, তখন বিশ্বাসীরা নির্যাতিত হতে পারে।
কিছু দেশে সুসমাচার প্রচার এবং বাইবেলের শিক্ষাদানের বিরুদ্ধে আইন রয়েছে। বিশ্বাসীরা যখন সুসমাচার প্রচার করে তখন তারা নির্যাতিত হয়। কিছু দেশে সেইসব বাবা-মায়েরা শাস্তি পায় যারা তাদের সন্তানদের ঈশ্বর সম্পর্কে শিক্ষা দেয়।
আমাদের কাছে বাইবেলের এমন কিছু বিশ্বাসী মানুষের উদাহরণ রয়েছে যারা শাসকদের অন্যায্য আদেশ অমান্য করেছিল। প্রার্থনা করা অবৈধ ঘোষণা করা হলেও দানিয়েল প্রার্থনা চালিয়ে গিয়েছিলেন (দানিয়েল ৬:১০)। দানিয়েলের তিন বন্ধু রাজার মূর্তির উপাসনা করতে অস্বীকার করেছিল (দানিয়েল ৩:১৬-১৮)। ইস্রায়েলীয় ধাত্রীরা ফরৌণের অবাধ্য হয়েছিল যখন তিনি তাদের ইস্রায়েলীয় শিশুদের হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন (যাত্রাপুস্তক ১:১৭)।
ইতিহাস জুড়ে, সুসমচার যখন অবৈধ ছিল তখনও বিশ্বাসীরা তা প্রচার করেছে। বিশ্বাসীরা অবৈধভাবে জাতীয় সীমানা পেরিয়ে বাইবেল নিয়ে গেছে। বিশ্বাসীরা গোপনে উপাসনা করার জন্য একত্রিত হয়েছে। বিশ্বাসীরা—কোনো সহিংসতা ছাড়াই—গর্ভপাত করানো ক্লিনিকগুলি বন্ধ করেছে। বিশ্বাসীরা পালিয়ে আসা দাসদের সাহায্য করেছে।
বেশিরভাগ বিশ্বাসী শান্তিতে তাদের জীবনযাপন করতে পছন্দ করে এবং এই ধরনের সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হতে চায় না। তবে, যদি বিশ্বাসীরা কোনো নৈতিক দ্বিধাগ্রস্ততার সম্মুখীন হয়, তবে তাদের অবশ্যই সঠিক কাজটি করতে হবে, এমনকি যদি এর জন্য ত্যাগ স্বীকারও করতে হয়, তা করতে হবে। যদি তাদের অন্যায় প্রতিরোধ করার বা সুসমাচার শেয়ার করার সুযোগ থাকে, তা হলে তারা যখন সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা কাজ করবে কি করবে না, তখন এক গুরুতর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
► আপনি কি এমন কোনো আইনি দ্বিধা বর্ণনা করতে পারেন যা আপনার দেশে একজন বিশ্বাসীর ক্ষেত্রে ঘটতে পারে?
ঘুষ
একজন পাস্টার বিদেশে ভ্রমণ করছিলেন। তার কাছে যথাযথ কাগজপত্র ছিল, কিন্তু বেশ কয়েকবার পুলিশ তাকে থামিয়ে তার কাছে কিছু পরিমাণ টাকা চাইছিল। যদি তিনি তাদের টাকা না দিতেন, তাহলে তারা তার যাত্রায় দেরী করাত এবং তাকে সমস্যায় ফেলত।
► এই পরিস্থিতিতে পাস্টারের কী করা উচিত?
ঘুস হল কর্তৃত্বে থাকা ব্যক্তিকে কোনো কিছু অনুমোদন করাতে প্রভাবিত করার জন্য অর্থ প্রদান করা। এমন কিছু করার জন্য কাউকে ঘুষ দেওয়া ভুল যা তার করা উচিত নয় (দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:১৯)। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনো বিল্ডিং বা গাড়ি যথাযথ প্রয়োজনীয়তা পূরণ না করে, তাহলে সত্য নয় এমন কিছুতে স্বাক্ষর করার জন্য একজন পরিদর্শককে ঘুষ দেওয়া ভুল। অন্যায়ভাবে বিচার করার জন্য একজন বিচারক বা পুলিশকে ঘুষ দেওয়া অন্যায়।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর্তৃত্বে থাকা একজন ব্যক্তি তার যা করার কথা তা করার জন্য ঘুষ দাবি করে। সেক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি অর্থ প্রদান করছে সে কোনো ভুল করার জন্য তাকে অর্থ প্রদান করছে না। কর্মকর্তার পক্ষে এটি দাবি করা ভুল (লূক ৩:১৪), কিন্তু যে অর্থ প্রদান করছে তার হয়তো কোনো বিকল্প নেই। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে এমন কিছুর জন্য অনুমতি নেওয়া যা অনুমোদিত হওয়া উচিত, অথবা একজন নির্দোষ ব্যক্তির মুক্তি লাভ করার জন্য অনুমতি নেওয়া। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঘুষ ডাকাতির মতো হয়। ডাকাতি অন্যায়, কিন্তু আমরা ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করি না।
শাস্ত্রের প্রতি একটি সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি দেখায় যে যারা ঘুষ নেয় ঈশ্বর তাদের দোষীসাব্যস্ত করেন, কিন্তু যারা তা দিতে বাধ্য হয় তাদের প্রতি তিনি করুণাময় (যাত্রাপুস্তক ১৮:২১, যাত্রাপুস্তক ২৩:৮; দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১৭, দ্বিতীয় বিবরণ ১৬:১৯, দ্বিতীয় বিবরণ ২৭:২৫)। বিশ্বাসীদের কখনোই সুবিধা পাবার জন্য ঘুষ দেওয়া উচিত নয়, কিন্তু যখন তারা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দ্বারা তা দিতে বাধ্য হয়, তখন তারা দোষী হয় না।
► একটি ভুল ঘুষের উদাহরণ দিন?
সামরিক পরিষেবা
অনেক খ্রিষ্টবিশ্বাসী বিশ্বাস করে যে তাদের দেশের জন্য সৈনিক হিসেবে কাজ করা ভুল। তারা কিছু শাস্ত্রীয় বক্তব্যের উপর তাদের বিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করে। যিশু বলেছিলেন যে কেউ আমাদের এক গালে আঘাত করলে আমাদের আরেকটি গাল এগিয়ে দেওয়া উচিত (মথি ৫:৩৯)। যিশু বলেছিলেন যে তাঁর দাসেরা যুদ্ধ করে না, কারণ তাঁর রাজ্য এই জগতের নয় (যোহন ১৮:৩৬)। সাধু পৌল বলেছিলেন যে আমাদের অস্ত্র শারীরিক নয় (২ করিন্থীয় ১০:৪)। এই খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা বিশ্বাস করে যে অন্য মানুষের বিরুদ্ধে যে কোনো রকম সহিংসতা ভুল। তাদের অনেকেই এমন দেশে বাস করে যেখানে সরকার স্বাধীনতার অনুমতি দেয় না এবং বিশ্বাসীদের উপর অত্যাচার করে।
অন্যান্য খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা বিশ্বাস করে যে আমাদের সৈন্য হিসেবে নিজেদের দেশকে রক্ষা করতে ইচ্ছুক থাকা উচিত। শাস্ত্র বলে যে ঈশ্বর সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সরকার অন্যায়কারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে (রোমীয় ১৩:৪)। এটি সুস্পষ্ট যে ঈশ্বর একজন মানুষকে তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য তৈরি করেছিলেন, এবং তাই এটি স্বাভাবিক বলে মনে হয় যে পুরুষদের তাদের পরিবারগুলিকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য একজন সেনাবাহিনীর মতোই সংগঠিত করা উচিত। যখন একজন সৈনিক যোহন বাপ্তাইজককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে কীভাবে অনুতপ্ত হতে হবে, তখন যোহন তাকে ঘুষ নিতে বা ব্যক্তিগত সহিংসতা করতে বারণ বলেছিলেন, কিন্তু তাকে সেনাবাহিনী ছেড়ে দিতে বলেননি (লূক ৩:১৪)। যিশু যখন অন্য গাল ঘুরিয়ে দিতে বলেছিলেন, তখন তিনি বলেননি যে আমাদের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করা উচিত নয়, কিন্তু আমরা যেন আক্রমণাত্মক কর্মের প্রতিশোধ না নিই, যেমন মুখে চড় মারা। তিনি বলেছিলেন যে তাঁর দাসেরা তাঁর জন্য একটি পার্থিব রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করে না, কারণ তিনি এইভাবে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করবেন না। যদি সরকার ঈশ্বরের ধারণা হয়, এবং যদি একটি সরকার তার লোকেদের রক্ষা করে, তাহলে বিশ্বাসীদের তাদের সরকারকে তার দায়িত্ব পালনে সহায়তা করার জন্য সেবা করা উচিত।
মন্ডলীর ইতিহাসের বহু শতাব্দী ধরে, অনেক দেশের অনেক বিশ্বাসী সামরিক বাহিনীতে কাজ করেছে, এমনকি যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছে, কারণ তারা বিশ্বাস করত যে তাদের দেশকে মন্দ আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য তাদের অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিশ্বজুড়ে খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা সামরিক পরিষেবার বিষয়ে একমত নয়। একজন ব্যক্তির পক্ষে প্রার্থনাপূর্বক করে শাস্ত্র এবং যুক্তি বিবেচনা করা, এবং তারপর বিশ্বস্তভাবে তার দৃঢ়প্রত্যয় অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
► আপনার দেশের মন্ডলীগুলি সামরিক পরিষেবার প্রশ্নের উত্তর কীভাবে দেয়?
গ্রুপে আলোচনার জন্য
এই বিষয়গুলিতে বেশিরভাগ বিশ্বাসীদেরই দৃঢ় মতামত রয়েছে। এটা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে বিভিন্ন সময় এবং স্থানের খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা এই প্রশ্নগুলিতে একমত হয়নি। আমাদের অন্যদের মতামতের ভিত্তিতে তাদের উদ্দেশ্য বিচার করা এড়িয়ে চলা উচিত।
► আমাদের দেশে মন্ডলী এবং সরকারের মধ্যে প্রচলিত সম্পর্ককে আমরা কীভাবে মূল্যায়ন করব?? কিছু কি পরিবর্তন করা উচিত?
প্রার্থনা
স্বর্গস্থ পিতা,
সুরক্ষা এবং স্বাধীনতা প্রদানের জন্য সরকার গঠনের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। মানব সরকারের অপূর্ণতা সত্ত্বেও তোমার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে আমাকে সাহায্য করো।
অন্যদের সুরক্ষা এবং আমার সমাজকে প্রভাবিত করার দায়িত্ব পালনে আমাকে সাহায্য করো।
আমরা তোমার রাজ্যের পূর্ণ আগমনের অপেক্ষায় আছি।
আমেন
১২ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) বাইবেলে ঈশ্বর তাঁর লোকেদের জীবনে তাঁর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কাজ করার অনেক বিবরণ রয়েছে। হিতোপদেশ ২১:১ পদ বলে, “রাজার হৃদয় সদাপ্রভুর হাতে ধরা এমন এক জলপ্রবাহ যা তিনি তাদের সবার দিকে প্রবাহিত হতে দেন যারা তাঁকে সন্তুষ্ট করে।” অধ্যয়নের জন্য এই বিবরণগুলির মধ্যে একটি বেছে নিন:
আদি পুস্তক ৪১:১৪-৪৯, আদি পুস্তক ৪২:১-৩, আদি পুস্তক ৪৫:৪-৭
ইষ্টের ৪, ৭-৮
নহিমিয় ১-২
আপনার পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে লিখুন:
ঈশ্বরের লোকেদের জীবনে কী ঘটার প্রয়োজন ছিল?
ঈশ্বর তাঁর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একজন অধার্মিক শাসককে কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন?
ঈশ্বর তাঁর উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একজন ধার্মিক ব্যক্তিকে কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন?
(২) নিচের বিষয়গুলি থেকে একটি নির্বাচন করুন:
খ্রিষ্টীয় প্রভাব
খ্রিষ্টবিশ্বাসী এবং মানব আইন
ঘুষ
সামরিক পরিষেবা
এই পাঠে আপনার বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত শাস্ত্রপদগুলি দেখুন। এই বিষয়ে আপনার শাস্ত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি কী বলে মনে হয়, তা ব্যাখ্যা করে এক পৃষ্ঠা লিখুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.