ড. রবার্টসন ম্যাককুইলকিন দীর্ঘ ১২ বছর জাপানে একজন মিশনারি হিসেবে কাজ করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি কলম্বিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-র প্রেসিডেন্ট হন। তিনি লেখন, বক্তা, এবং শিক্ষাবিদ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তার স্ত্রী মিউরিয়েল আলজাইমার বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে ভুগছিলেন। যখন মিউরিয়েলের অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছায় যেখানে তার ক্রমাগত সেবা-শুশ্রষা প্রয়োজন ছিল, ড. ম্যাককুইলকিন সেই সময়ে তার স্ত্রী’র দেখাশোনা করার জন্য ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্টের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি বলেছিলেন যে তাদের বিয়ের সময়ে যে প্রতিজ্ঞাটি করেছিলেন তা তিনি পালন করছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্টের পদ ধরে রাখার চেয়ে তার স্ত্রী’র সেবা-যত্ন করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ঈশ্বরের বিবাহের প্রতিষ্ঠান
ঈশ্বরের সৃষ্ট প্রথম পুরুষ এবং নারীর জন্য তিনি বিবাহ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য আদি পুস্তক ২:২১-২৪ পদ পড়বে। এই পদগুলি আমাদেরকে বিবাহ সম্পর্কে কী জানায়?
ঈশ্বর বিবাহকে ঠিক সেইভাবে তৈরি করেছিলেন যেমনটা মানুষের প্রয়োজন ছিল। এটি মানব প্রকৃতির জন্যই তৈরি করা হয়েছিল। ঈশ্বর যা কিছু ডিজাইন করেন এবং যা কিছু তিনি চান, তিনি সর্বদা আমাদের জন্য সর্বোত্তম চান (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:২৪)। ঈশ্বর জানেন যে বিবাহের জন্য তাঁর পরিকল্পনা প্রতিটি স্বামী বা স্ত্রীকে সর্বোত্তম মানসিক, সম্পর্কগত এবং আত্মিক মঙ্গল প্রদান করবে।
বিবাহকে ঈশ্বরের চরিত্র এবং তাঁর সম্পর্কের প্রতিফলন হিসেবেও ডিজাইন করা হয়েছে। পিতা ঈশ্বর, পুত্র ঈশ্বর এবং পবিত্র আত্মা ঈশ্বর সর্বদা একে অপরের সাথে সম্পর্কে ছিলেন এবং সর্বদা থাকবেন। প্রত্যেকেই নিজ ভূমিকায় অনন্য, কিন্তু ত্রিত্বের সকল ব্যক্তি স্থায়ীভাবে এক, এবং এক সারংশের অধিকারী।। ত্রিত্বের ব্যক্তিদের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে, আমরা ঐক্য, ঘনিষ্ঠতা, বিশ্বস্ততা এবং অবিচল প্রেম দেখতে পাই। বাইবেলের বিবাহ এই অপূর্ব সম্পর্কের অনুকরণে গড়ে উঠেছে। ঈশ্বরের পরিকল্পনা হল প্রতিটি স্বামী এবং স্ত্রী তাদের প্রেমে বিশুদ্ধ এবং জীবনের জন্য একে অপরের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।
ঈশ্বর বলেছেন যে বিবাহে একজন পুরুষ এবং একজন নারী তাদের বাবা-মা’কে ছেড়ে একসাথে মিলিত হয়। বিবাহ দু’জন মানুষকে এমন একটি বন্ধুত্ব এবং অংশীদারিত্বের মধ্যে স্থাপিত করে যা অন্য যেকোনো মানব সম্পর্কের চেয়ে শক্তিশালী এবং ঘনিষ্ঠ।
বিবাহ কেবল দু’জন মানুষের সীমিত অংশীদারিত্বে একসাথে থাকা নয়। তাদের জীবন এমনভাবে যুক্ত করা হয়েছে যে এক অর্থে তারা একই ব্যক্তির মতো। এটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যক্তিত্বের বিলুপ্তি নয়, বরং একটি বিশেষ ঐক্য।
বিবাহের স্থায়িত্ব
ঈশ্বর বিবাহকে স্থায়ী করার জন্য ডিজাইন করেছেন। বিবাহের মাধ্যমে, একজন পুরুষ এবং একজন নারী যতদিন জীবিত থাকবে, ততদিন একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়।
বাইবেলে ফরিশীদের সাথে কথোপকথনে বিবাহ সম্পর্কে যিশুর বলা কথাগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য মথি ১৯:৩-৮ পদ পড়বে।
যিশু বলেছেন যে ঈশ্বর বিবাহকে স্থায়ী করতে চেয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছেন বিবাহবিচ্ছেদ এমন ব্যক্তিদের জন্য প্রবর্তিত হয়েছিল যারা ঈশ্বরকে অনুসরণ করে না।
অনেক কারণে ঈশ্বর বিবাহকে স্থায়ী করার জন্য ডিজাইন করেছিলেন, যার মধ্যে কয়েকটি আমরা আগের বিভাগে আলোচনা করেছি। বিবাহ স্থায়ী হওয়ার আরেকটি কারণ হল সন্তানদের জন্য। ঈশ্বরের বিবাহ পরিকল্পনার প্রতি আনুগত্য সন্তানদের লালন-পালনের জন্য সর্বোত্তম পরিবেশ তৈরি করে। বাবা-মায়েরা যখন তাদের বিবাহ এবং পরিবারে ঈশ্বরের নীতিগুলি মেনে চলার মাধ্যমে ঈশ্বরকে সম্মানিত করে, তখন তারা ঈশ্বরীয় সন্তানদের লালন-পালন করতে সক্ষম হবে (মালাখি ২:১৫)।
ঈশ্বর মানুষের জীবনকে এমনভাবে ডিজাইন করেছেন যে শিশুদের প্রাপ্তবয়স্ক হতে বেশ কয়েক বছর সময় লাগে। এই সময়ে, শিশুরা সুরক্ষা, ভরণপোষণ এবং প্রশিক্ষণের জন্য বাবা-মায়ের উপর নির্ভরশীল থাকে। এটি এক বা দুই বছরের মধ্যে পরিণত হয়ে যাওয়া প্রাণীদের থেকে আলাদা। মানুষের পরিপক্ক চরিত্র বিকাশের জন্য আরো সময় প্রয়োজন। ঈশ্বর পরিবারকে সন্তান লালন-পালনের মাধ্যম হিসেবে তৈরি করেছেন। সমাজের অনেক সমস্যা বিশ্বস্ত বাবা-মায়ের অভাব থেকে আসে।
বিবাহের জন্য মানুষকে একে অপরের কাছে তাদের পুরো জীবন উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। প্রতিটি সংস্কৃতিরই নিজস্ব রূপ এবং অনুষ্ঠান রয়েছে যা দেখায় যে বিবাহ একটি গুরুতর অঙ্গীকার। এই আচার-অনুষ্ঠানটি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া পুরুষ এবং নারীর জনসমক্ষে ঘোষণা করার একটি উপায় যে তারা সারাজীবনের জন্য এই অঙ্গীকার করছে।
বেশিরভাগ সরকারই বিবাহের নথি সংরক্ষণ করে রাখে। বিবাহ সম্পর্কিত আইন মূলত সম্পত্তির মালিকানা, সন্তানদের হেফাজত, এবং উত্তরাধিকারকে প্রভাবিত করে।
এখানে বিবাহের শপথের একটি উদাহরণ দেওয়া হল যা অধিকাংশ বিবাহে ব্যবহৃত হয়ে থাকে:
এই উপাসনায় উপস্থিত ব্যক্তিগণকে সাক্ষী মানিয়ে বলিতেছি যে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে ও প্রভু যীশুর খ্রীষ্টের নামে, আমি তোমাকে আমার বিবাহিত স্বামী/ভার্যা বলিয়া গ্রহণ করিতেছি। অদ্য হইতে মৃত্যু পর্যন্ত সুখে দুঃখে, সম্পদে বিপদে স্বাস্থ্য ও পীড়ায়, তোমাকেই ভালোবাসিব ও তোমার ভরণপোষণ সেবা করিব।[1]
রোমান্টিক অনুভূতি সবসময় স্থির থাকবে না। বিবাহ কখনোই এমন কোনো ব্যক্তিগত অনুভূতির উপর ভিত্তি করে হতে পারে না যা পরিবর্তনশীল। বিবাহের শপথের অর্থ হল একজন পুরুষ এবং নারী যতদিন জীবিত থাকবে, ততদিন একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ থাকবে, এবং সেই প্রতিশ্রুতি কোনো শর্তের উপর নির্ভর করে না।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ২ করিন্থীয় ৬:১৪-১৮ পদ পড়বে।
এই পদগুলি আমাদের জানায় যে, একজন বিশ্বাসী যদি একজন অবিশ্বাসীদের সাথে খুব বেশি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত থাকে তাহলে তার অঙ্গীকার বাধাগ্রস্ত হয়। ঠিক যেমন একজন বিশ্বাসী শয়তানের উপাসনাকারী ব্যক্তির সাথে উপাসনা করতে পারে না, তেমনি সে অবিশ্বাসীদের জীবনধারা এবং অগ্রাধিকার অনুসরণ করতে পারে না। এই সতর্কবাণী ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব সহ বিভিন্ন ধরণের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।
বিবাহ হল সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মানবিক সম্পর্ক। একজন বিশ্বাসীর এমন কাউকে বিয়ে করার কথা ভাবাও উচিত নয় যে একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিশ্বাসী নয় (১ করিন্থীয় ৭:৩৯, ২ করিন্থীয় ৬:১৪-১৮)। একজন অবিশ্বাসীর সাথে বিবাহিত একজন বিশ্বাসী ব্যক্তি সন্তান লালন-পালন এবং জীবনযাত্রার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক দুঃখ এবং অনেক বাধার সম্মুখীন হবে।
যদি স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েই বিশ্বাসী হয়, কিন্তু ভিন্ন মন্ডলী থেকে এসে থাকে, তাহলে তাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তারা গুরুত্বপূর্ণ আত্মিক বিষয়গুলিতে একমত। বিয়ের পর তাদের একই স্থানীয় মন্ডলীর অংশ হওয়ার পরিকল্পনা করা উচিত।
► কেন একটি বিবাহ কেবল ভালোবাসার বিবৃতি দিয়ে নয়, বরং শপথ বা প্রতিজ্ঞা দিয়ে শুরু হয়?
ঈশ্বরের নৈতিক মাপকাঠি
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ইব্রীয় ১৩:৪ পদ পড়বে।
এই পদটি আমাদের জানায় যে বিবাহকে অত্যন্ত সম্মান করা উচিত। যৌনতাজনিত পাপ হল বিবাহের প্রতি অসম্মান। ঈশ্বর যৌন অনৈতিকতার বিচার করবেন।
যৌনতাজনিত পাপের মধ্যে রয়েছে কামপূর্ণ কল্পনা, অবৈধ যৌনতা, ব্যভিচার, সমকামী কার্যকলাপ এবং পর্নোগ্রাফির ব্যবহার। কামপূর্ণ কল্পনা হল স্বেচ্ছায় এমন কারো সাথে যৌন কার্যকলাপ কল্পনা করা যিনি আপনার স্বামী/স্ত্রী নন। অবৈধ যৌনতা হল বিবাহিত নয় এমন ব্যক্তিদের মধ্যে যৌন কার্যকলাপ। ব্যভিচার হল এমন যৌন কার্যকলাপ যার মধ্যে এমন একজন ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত যিনি অন্য কারো সাথে বিবাহিত। সমকামী কার্যকলাপ হল একই লিঙ্গের মানুষের মধ্যে যৌন কার্যকলাপ। পর্নোগ্রাফির মধ্যে রয়েছে এমন সমস্ত লেখা, ছবি এবং ভিডিও যা নগ্নতা বা যৌন কার্যকলাপ দেখিয়ে যৌন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার জন্য পরিকল্পিত হয়েছে। এই সমস্তই বৈবাহিক সম্পর্কের লঙ্ঘন।
মনে রাখবেন—প্রতিটি মাংসিক ক্ষুধা যা আমাদের প্রলুব্ধ করে তা হল এমন একটি চাহিদার শোষণ যা ঈশ্বর আরো ভালোভাবে পূরণ করতে পারেন। ঈশ্বরীয় যৌনতার একমাত্র প্রেক্ষাপট হল বৈবাহিক যৌনতা। অবৈধ যৌনতা... তাৎক্ষণিকভাবে মিষ্টি, কিন্তু এটি এমনকিছু যা আমাদের আত্মিক ক্ষুধাকে বিষাক্ত করে তুলবে যতক্ষণ না আমরা এমনকিছু কামনা করছি যা শেষ পর্যন্ত আমাদের ধ্বংস করবে। অবৈধ যৌনতা আমাদের জীবনে পবিত্রতা, ধার্মিকতা এবং ঈশ্বরের উপস্থিতির প্রতি আমাদের সংবেদনশীলতা হ্রাস করা ছাড়া আর কিছুই করবে না।[1]
বহু অনুচ্ছেদেই, হিতোপদেশ সতর্ক করেছে যে যৌন অনৈতিকতা একজন ব্যক্তির জীবনকে ধ্বংস করে এবং মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায় (উদাহরণস্বরূপ, হিতোপদেশ ২:১৬-১৯ এবং হিতোপদেশ ৬:২৪-২৯, ৩২-৩৩)।
রবার্টসন ম্যাককুইলকিন (Robertson McQuilkin) লিখেছেন যে মানব যৌনতার জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যগুলি
...মানসিকভাবে প্রায় ততটাই লঙ্ঘিত হয় যতটা তারা এই কাজের মাধ্যমে হবে। তিনি কেবল পুরুষ ও নারীকে সৃষ্টি করেননি; তিনি তাদের একে অপরের জন্য বিবাহের এক ঘনিষ্ঠ, স্থায়ী বন্ধনে সৃষ্টি করেছিলেন, এমন এক একত্ব যা তাঁর নিজস্ব প্রকৃতির অনুকরণে তৈরি হয়েছিল। এই উচ্চ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য, ঘনিষ্ঠতা অবশ্যই স্বতন্ত্র এবং প্রতিশ্রুতি-স্থায়ী হতে হবে, নয়তো এটি একত্ব নয়। বিশ্বস্ততা হল মনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বতন্ত্র ঘনিষ্ঠতা, স্থায়ী প্রতিশ্রুতি এবং পারস্পরিক বিশ্বাস প্রথমে মনের মধ্যেই লঙ্ঘিত হয়।[2]
► শিক্ষার্থীরা গ্রুপের জন্য ১ করিন্থীয় ৬:৯-১১, ১৫-২০ এবং মথি ৫:২৭-৩০ পদ পড়বে।
প্রতিটি সমাজেরই নারী-পুরুষের সম্পর্কের সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এই সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গির মান বাইবেলের নৈতিকতার মাপকাঠির চেয়ে নিম্নমানের। অনেক সংস্কৃতিতে কেবল একটি সুশৃঙ্খল সমাজ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় নিয়ম রয়েছে। খারাপ পরিণতি বা কেলেঙ্কারি এড়াতে যথেষ্ট সাবধানতার সাথে পরিচালিত হলে তারা যৌনতাজনিত পাপকেও সহ্য করে নেয়। বাইবেলের নীতিগত মান ভিন্ন।
দুঃখের বিষয় হল, কিছু মন্ডলী বাইবেলের নীতির পরিবর্তে তাদের সংস্কৃতির নীতি অনুসরণ করে। তারা এমন ব্যক্তিদের শাস্তি দেয় যাদের পাপ সুস্পষ্ট এবং অসতর্ক হয়ে উঠেছে, কিন্তু তারা একই পাপ সেই ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সহ্য করে নেয় যারা আরো সতর্ক।
এই পদগুলি আমাদের জানায় যে যারা এই পাপগুলি করছে তারা বিশ্বাসী নয় এবং তারা স্বর্গে যাবে না। করিন্থীয় মন্ডলীর বিশ্বাসীদের মধ্যে কেউ কেউ অতীতে এই পাপগুলি করেছিল কিন্তু সেগুলি থেকে রক্ষা পেয়েছিল।
যেকোনো মতবাদ যা বিশ্বাসী বলে দাবি করা কোনো ব্যক্তিকে এই পাপগুলির যেকোনো একটি করার ক্ষেত্রেও ছাড় দেয় তা একটি মিথ্যা মতবাদ। যদি কোনো ব্যক্তি নিজেকে খ্রিষ্টের অনুসারী বলে দাবি করে এবং যৌনতাজনিত পাপ করে, তাহলে শাস্ত্র অনুযায়ী মন্ডলী তাকে মন্ডলী থেকে অপসারণ করতে এবং তাকে বিশ্বাসী হিসেবে বিবেচনা না করতে বাধ্য (১ করিন্থীয় ৫:১১-১৩)।
আচার-আচরণের ক্ষেত্রে মন্ডলীর লিডারদের একটি ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত। যখন কোনো মন্ডলী উপাসনাকারীদের অশালীন পোশাক পরতে বা মন্ডলীতে কামুক নৃত্যের অনুমতি দেয়, তখন তারা বোঝায় যে ভুল যৌন আকাঙ্খা স্বাভাবিক। তারা বোঝায় যে যৌনতাজনিত পাপ গুরুতর ব্যাপার নয়।
সমাজের পোশাকের ধরণ থেকে বোঝা যায় যে, যদি কোনো ব্যক্তি যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি করার জন্য শরীর প্রদর্শন করা পোশাক না পরে, তাহলে সে ‘সুসজ্জিত’ নয়। মন্ডলীর সদস্যরা মাঝে মাঝে এই ভুলের মধ্যে পড়ে, বিশেষত বিশেষ অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে। তারা মনে করে যে তারা তাদের সমাজের ফ্যাশন অনুসরণ করে পোশাক না পরলে তারা ভালো পোশাক পরেনি। মন্ডলীকে অবশ্যই শিক্ষা দিতে হবে যে এটি ভুল। একজন বিশ্বাসীর অন্যদের মধ্যে ভুল আকাঙ্খা জাগিয়ে তুলতে চাওয়া উচিত নয়। ১ তিমথি ২:৯-১০ পদ আমাদের জানায় যে বিশ্বাসীদের এমনভাবে পোশাক পরা এবং আচরণ করা উচিত যাতে অন্যেরা তাদের দেখে বুঝতে পারে যে তারা সতর্ক, বিশুদ্ধ জীবনযাপন করছে এবং পাপ করতে অনিচ্ছুক বা অন্যদের পাপ করাতে অনিচ্ছুক। খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের নিজেদেরকে সম্মানজনক পোশাকে, শালীনতা ও আত্মসংযমের সাথে সজ্জিত করা উচিত।
পাপীর জন্য সাহায্য
গালাতীয় ৬:১ পদ বলে যে পাপ করা সদস্যকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করার দায়িত্ব মন্ডলীর। এর অর্থ এই নয় যে পাপ করার পরে একজন ব্যক্তির পরিচর্যার পদে বহাল রাখা উচিত অথবা তাকে দ্রুত পরিচর্যার পদে ফিরিয়ে আনা উচিত। পুনরুদ্ধারের অর্থ হল মন্ডলীর সহভাগিতা এবং যত্নে পুনরায় গ্রহণ করা। যদি সদস্যটি সত্যিই অনুতপ্ত হয়, তাহলে ঈশ্বর এবং মন্ডলীর দ্বারা সে ক্ষমা পাবে। মন্ডলীর তাকে এই বিজয় বজায় রাখতে এবং আত্মিকভাবে শক্তিশালী হতে সাহায্য করার জন্য আত্মিক দায়বদ্ধতা প্রদান করা উচিত।
যদি কোনো অবিবাহিত মেয়ে গর্ভবতী হয়, তাহলে মন্ডলীর তাকে আত্মিক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা না করে মন্ডলীর সহভাগিতা এবং যত্ন থেকে বিতাড়িত করা উচিত নয়। যদি সে অনুতপ্ত হয় এবং আত্মিক জবাবদিহিতার কাছে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে সে ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়। তার পাপ সেই কাজে জড়িত পুরুষটির পাপের চেয়ে নিকৃষ্ট নয়। কখনো কখনো মেয়েটির সাথে কেবল এই কারণে কঠোর আচরণ করা হয় কারণ তার পাপের ফলাফল এতটাই দৃশ্যমান।
কিছু সমাজে, অবিবাহিত মেয়ের গর্ভধারণের কারণে লজ্জিত বাবা-মায়েরা তাদের পরিবারের সম্মান রক্ষা করার জন্য গর্ভস্থ শিশুটিকে হত্যা করতে বাধ্য করে। কিন্তু হত্যা করা কখনো কোনো কারণই উপযুক্ত নয় (যাত্রা পুস্তক ২০:১৩)। প্রতিটি অজাত শিশুই ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে সৃষ্ট (আদি পুস্তক ৯:৬, গীত ১৩৯:১৩-১৪)। মেয়েটির শিশুটিকে অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে, ভালোবাসতে হবে এবং যত্ন সহকারে লালন-পালন করতে হবে।
মন্ডলী হল বিশ্বাসের একটি পরিবার। মন্ডলীর পক্ষে কেবল পাপের নিন্দা করাই যথেষ্ট নয়। মন্ডলীকে অবশ্যই তার সদস্যদের যত্ন নিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, পাপপূর্ণ কার্যকলাপের দ্বারা আর্থিকভাবে উপার্জনকারী একজন ব্যক্তির বিকল্প আর্থিক সহায়তা বিকাশের জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে।
একটি বাস্তব পরিস্থিতি...
বেশ কিছু মেয়ে একটি বড় মন্ডলীর সাথে যুক্ত ছিল এবং কয়্যারে গান গাইত। তাদের পরিবার দরিদ্র ছিল। মেয়েগুলি তাদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য অর্থ উপার্জনের জন্য পুরুষদের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মন্ডলীর কী করা উচিত?
► পাপপূর্ণ জীবনধারা ত্যাগ করতে লোকেদের সাহায্য করার জন্য আপনার মন্ডলীর কী করা উচিত?
পর্ণোগ্রাফি
পর্নোগ্রাফির হল এমন সমস্ত লেখা, ছবি এবং ভিডিও যা নগ্নতা বা যৌন কার্যকলাপ দেখিয়ে যৌন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
ইন্টারনেটের কারণে বিশ্বজুড়ে পর্নোগ্রাফি খুবই সহজলভ্য হয়ে উঠছে। প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার পর্নোগ্রাফিকে এমন লোকেদের জন্য একটি প্রলোভন হিসেবে তুলে ধরেছে যাদেরকে খ্রিষ্টীয় নীতিগুলি কীভাবে এই বিষয়ে প্রয়োগ করতে হয় তা শেখানো হয়নি। অনেক পরিণত পাস্টার এবং লিডাররা কখনো এই প্রলোভনের মুখোমুখি হননি কারণ তারা যখন ছোট ছিলেন তখন ইন্টারনেট সহজলভ্য ছিল না। তারা হয়তো বুঝতেই পারছেন না যে তরুণ প্রজন্ম কীসের মুখোমুখি হচ্ছে।
পর্নোগ্রাফি মন্দ কারণ এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে একজন ব্যক্তি অবৈধ যৌনতা, ব্যভিচার এবং বিভিন্ন ধরণের যৌন বিকৃতির কল্পনা করে আনন্দ পায়। পাপপূর্ণ আকাঙ্খা থাকা একজন ব্যক্তির কাছে এটি আকর্ষণীয়। পর্নোগ্রাফি একজন ব্যক্তিকে এমন অনৈতিক কাজগুলিকে আমন্ত্রণ জানায় এবং আনন্দ পেতে সাহায্য করে যেগুলিকে ঈশ্বর দোষীসাব্যস্ত করেন।
পর্নোগ্রাফি আসক্তিকর। যে ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি ব্যবহার করে সে এর তীব্র চাহিদা অনুভব করে। এটি ছাড়া বেঁচে থাকার কথা সে কল্পনাও করতে পারে না। তার কাছে মনে হয় পর্নোগ্রাফি থেকে যে কল্পনা সে পায় তা ছাড়া জীবন শূন্য এবং নীরস হয়ে পড়বে। অন্যান্য যেকোনো আসক্তির মতো, এই আকাঙ্খা গ্রাসকারী হয়ে ওঠে এবং ব্যবহারকারী তার জীবনের ভালো জিনিসগুলিকে ত্যাগ করতে শুরু করে।
পর্নোগ্রাফি প্রগতিশীল। ব্যবহারকারীর এমন উপাদানের প্রয়োজন হয় যা ক্রমশ স্পষ্ট এবং বিকৃত হয়ে উঠবে। সে এমন কল্পনায় আনন্দ পেতে শুরু করবে যা তাকে আগে বীতশ্রদ্ধ এবং ভীত করে তুলত।
পর্নোগ্রাফি ক্ষতিকারক। ব্যবহারকারী স্বাভাবিক সম্পর্ক উপভোগ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। তার আকাঙ্খা এতটাই অপ্রাকৃতিক হয়ে ওঠে যে সেগুলি কখনোই সন্তুষ্ট হতে পারে না। সে অন্যদের নির্যাতনের প্রতি অসংবেদনশীল হয়ে পড়ে।
পাস্টারদের এবং বাবা-মায়েদের অবশ্যই তরুণদেরকে আসক্তির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করতে হবে। প্রলোভন প্রতিরোধ করার জন্য পরিপক্কতার অভাব থাকলে বাবা-মায়েদের কখনোই তাদের সন্তানদেরকে ইন্টারনেটে অবাধ ব্যবহারের অধিকার দেওয়া উচিত নয়। পর্নোগ্রাফি ব্যবহারের প্রলোভনের সাথে লড়াই করছে এমন কোনো ব্যক্তির নিয়মিতভাবে একজন বিশ্বস্ত, ধার্মিক ব্যক্তির কাছে জয় বা ব্যর্থতার রিপোর্ট দেওয়া উচিত। এই পরিপক্ক বিশ্বাসীর সাথে নিয়মিত সংযোগ সংগ্রামরত ব্যক্তিকে পবিত্রতার প্রতি অঙ্গীকার বজায় রাখতে এবং ধারাবাহিকভাবে বিজয় অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে।
► পর্নোগ্রাফির আসক্তি থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য আপনার কোন অভ্যাসগুলি সুপারিশ করা উচিত? মন্ডলী এক্ষেত্রে কীভাবে সাহায্য করতে পারে?
সমকামী ক্রিয়াকলাপ
কিছু কিছু সমাজব্যবস্থা যারা বাইবেলের কর্তৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করে, তারা বিবাহের বাইবেলভিত্তিক বর্ণনাকেও প্রত্যাখ্যান করে। তারা বলে যে মানুষ সমলিঙ্গের সম্পর্ক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন।
বাইবেল সমকামী ক্রিয়াকলাপকে দোষীসাব্যস্ত করে।
► গ্রুপ এই পদগুলি দেখবে – রোমীয় ১:২৬-২৭, ১ তিমথি ১:১০, এবং ১ করিন্থীয় ৬:৯-১০।
বাইবেলের এই তিনটি প্যাসেজে সমকামী আচরণকে সবচেয়ে খারাপ ধরণের পাপের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যারা এই পাপগুলি অনুসরণ করে, তারা ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে প্রত্যাখ্যান করে।
কিছু লোক দাবি করে যে তাদের স্বাভাবিকভাবেই সমকামী প্রবণতা রয়েছে। তারা বলে যে তাদের আচরণের জন্য তাদের দোষ দেওয়া উচিত নয়, কারণ তারা নিজেরা এই ইচ্ছা পোষণ করার সিদ্ধান্ত নেয়নি।
বাইবেল শিক্ষা দেয় যে প্রতিটি ব্যক্তি পাপ করার একটি স্বাভাবিক প্রবণতা অনুসরণ করে (যিশাইয় ৫৩:৬)। ঈশ্বর আমাদের নিজেদের ইচ্ছাকৃত পাপের জন্য অনুতপ্ত হতে বলেছেন (যিশাইয় ৫৫:৭)। যেহেতু আমরা পাপপূর্ণ স্বভাব নিয়ে জন্মগ্রহণ করি, তাই আমাদের স্বাভাবিক আকাঙ্খাগুলিকে আমাদের পরিচালিত করার কাজে নির্ভরযোগ্য হতে পারে না। একজন ব্যক্তির ব্যভিচার করার, হিংস্র হওয়ার, অথবা চুরি করার তীব্র স্বাভাবিক প্রবণতা থাকতে পারে, কিন্তু স্বাভাবিক তাগিদের অর্থ এই নয় যে ইচ্ছাটি সঠিক।
[1]Gary Thomas, Sacred Marriage (Grand Rapids, MI: Zondervan, 2000), 210
[2]Robertson McQuilkin, An Introduction to Biblical Ethics (2nd edition), (Wheaton, IL: Tyndale House Publishers, Inc., 1995), 216
আত্ম-যৌনতা
যৌন আকাঙ্খার কারণে, কিছু অবিবাহিত ব্যক্তি হস্তমৈথুন করে। হস্তমৈথুন হল যৌন আনন্দের জন্য বা যৌন উত্তেজনা দূর করার জন্য নিজের যৌনাঙ্গকে উত্তেজিত করা।
পর্নোগ্রাফি ব্যবহার করা বা স্বেচ্ছায় যৌনতাজনিত কল্পনা করা পাপ (মথি ৫:২৭-২৮, মথি ১৫:১৯-২০)। বাইবেল হস্তমৈথুনকে অনৈতিক বলে নির্দিষ্টভাবে নিন্দা করে না। তবে, আত্ম-যৌনতা বা নিজের সাথে যৌন আচরণ কামুক চিন্তাভাবনা, পর্নোগ্রাফি ব্যবহার এবং ব্যভিচারের দিকে পরিচালিত করতে পারে।
এছাড়াও হস্তমৈথুন করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়, কারণ এটি আসক্তিকর: আপনি যত বেশি মাত্রায় এটি করবেন, তত বেশি আপনার মনে হবে যে আপনাকে এটি করতেই হবে।
বাধ্যতামূলক হস্তমৈথুন প্রায়শই আরো গভীর সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে, যেমন মানসিক বা সম্পর্কের সমস্যা থাকা, অথবা অতীতে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া।
► শিক্ষার্থীরা গ্রুপের জন্য ১ করিন্থীয় ৬:১২-১৩, ১৮-২০ এবং ১ থিষলনীকীয় ৪:১-৮ পদ পড়বে।
ঈশ্বর স্বামী-স্ত্রী’কে আবেগগত ও আত্মিকভাবে একত্রিত করতে সাহায্য করার জন্য বিবাহে শারীরিক ঐক্য ডিজাইন করেছেন (১ করিন্থীয় ৪:১৬-২০, মালাখি ২:১৫)।
অনেকেই... ধরে নেয় যে হস্তমৈথুন তাদের বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অবিবাহিত থাকার সময়কালটি সামলাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, তারা বুঝতে ব্যর্থ হয় যে যখন এই অভ্যাসটি স্বভাবে পরিণত হবে, তখন এটি ভবিষ্যতে বৈবাহিক যৌনতার সৌন্দর্য এবং ঘনিষ্ঠতাকে সমস্যার মুখে ফেলতে পারে।
আত্ম-যৌনতা এমন একটি যৌন অভিজ্ঞতা প্রদান করে যা যৌনতার অপরিহার্য উদ্দেশ্যকে এড়িয়ে যায়: শারীরিক ও মানসিকভাবে দু’জনের মিলন এক দেহে পরিণত হওয়া...। বিবাহের ক্ষেত্রে সুস্থ, স্বাভাবিক যৌন কার্যকলাপের বিকল্প হিসেবে হস্তমৈথুন ব্যবহার করা উচিত নয়।[1]
একজন অবিবাহিত ব্যক্তির জীবনে যদি হস্তমৈথুন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে তার কী করা উচিত? এমনকি যদি কেউ কেবল যৌন উত্তেজনা দূর করার জন্য হস্তমৈথুন করে থাকে, তবুও এটি এড়িয়ে চলাই ভালো, কারণ বর্তমান যে প্রলোভনগুলি বিদ্যমান রয়েছে এবং আত্ম-যৌনতা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যৌনতার যে উদ্দেশ্যগুলি আছে তা পূরণ করে না।
যদি তাদের জীবনে কোনো ধরণের অনৈতিকতা থেকে থাকে, তাহলে তাদের সেই পাপ স্বীকার করতে হবে এবং ত্যাগ করতে হবে। তাদের নিয়মিত এবং ঘন ঘন তাদের জয় এবং ব্যর্থতার হিসাব একজন ধার্মিক বয়স্ক পরামর্শদাতার কাছে দেওয়া উচিত যিনি তাদের জন্য প্রার্থনা করবেন এবং পরামর্শ দেবেন।
যদি হস্তমৈথুন মানসিক বা সম্পর্কের সমস্যা হয়, অথবা অতীতের যৌন নির্যাতনের ফলে হয়, তাহলে একজন পেশাদার খ্রিষ্টবিশ্বাসী কাউন্সেলরের পরামর্শ নেওয়া উপযুক্ত।
খ্রিষ্টের একজন অনুসারী নিম্নলিখিত বিষয়গুলি দ্বারা সাহায্য পেতে পারে:
১। যিশু যে যত্নশীল, এই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী হওয়া (গীত ১৩৯:১-৩, ১ পিতর ৫:৬-১০)। তিনি আপনার বিশ্বাস, আপনার শারীরিক চাহিদা, এবং আপনার পবিত্রতার প্রতি যত্নশীল। তাঁর মানব জীবনে, তিনি সেই সমস্ত দৈহিক এবং মানসিক প্রলোভনগুলিকে বিজয়ীভাবে অতিক্রম করেছিলেন যা আমরা সম্মুখীন হই, এবং আমাদের বিজয়ী হওয়ার জন্য যে অনুগ্রহ প্রয়োজন তা তাঁর কাছে আছে (ইব্রীয় ৪:১৪-১৬)।
২। শয়তানের মিথ্যাকে বিশ্বাস না করা (যোহন ৮:৪৪)। শয়তান আপনাকে বলতে পারে যে যিশু আপনার ব্যাপারে পরোয়া করেন না বা যে যৌন চাহিদাটি আপনার কাছে খুব হতাশাজনক তা যিশু আপনার কাছ থেকে সরিয়ে নেবেন (১ পিতর ৫:৭-৮)। যৌন আকাঙ্খা থাকার কারণে শয়তান আপনাকে পাপী বলে দোষী সাব্যস্ত করতে পারে (প্রকাশিত বাক্য ১২:১০)।
৩। স্বয়ং যিশুর উপর মনোনিবেশ করা এবং তিনি কে তার জন্য তাঁর আরাধনা করা (গীত ১০৫:৩-৪)। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শয়তান আপনার বিশ্বাস এবং ঈশ্বরের সাথে আপনার সম্পর্কে নষ্ট করতে চাইবে (যোহন ১০: ১০)। কিন্তু এই পরীক্ষার জন্য যিশুর উদ্দেশ্য হল যাতে আপনার বিশ্বাস শক্তিশালী হয়, এবং আপনি আরো ভালোভাবে তাঁকে মহিমান্বিত করতে সক্ষম হবেন (১ পিতর ১:৫-৯)। যখন আপনি যিশুর আরাধনা করার দিকে মনোযোগ দেবেন, তখন তিনি আপনাকে সাহায্য করার জন্য উপস্থিত থাকবেন (গীত ৪৬:১)।
৪। ঈশ্বরের বাক্য ধ্যান করা (গীত ১১৯:৯)। ঈশ্বরের বাক্য পড়া, শোনা, এবং ধ্যান করা আপনাকে প্রলোভনের সময়ে বিজয়ী হতে সাহায্য করবে। যখন যিশু প্রলোভিত হয়েছিলেন, তিনি বিজয়লাভের জন্য শাস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন (মথি ৪)। আমাদেরকেও তাই করতে হবে।
৫। অন্তত একজন পরিপক্ক এবং ধার্মিক ব্যক্তির কাছে দায়বদ্ধ থাকা (গালাতীয় ৬:২)। বিশ্বাসের যাত্রায় আপনার চেয়ে আরো এগিয়ে থাকা কোনো ব্যক্তির (আপনার সমলিঙ্গের) সাথে খোলামেলা আলোচনা করা এবং তার কাছে সৎ থাকা অবিশ্বাস্যভাবে সহায়ক হবে। তারা আপনার জন্য প্রার্থনা করতে এবং আপনাকে পরামর্শ দিতে সক্ষম হবেন। আপনার সংগ্রাম সম্পর্কে তাদের সাথে কথা বলা আপনাকে পবিত্রতা বজায় রাখতে এবং আপনার বিশ্বাসে উৎসাহিত থাকতে সাহায্য করবে।
৬। অন্যদের পরিচর্যা করা এবং তাদের চাহিদার উপর মনোযোগ দেওয়া (ফিলিপীয় ২:৩-৫)। অন্যদের সেবা করে আপনার নিজের চাহিদা এবং আকাঙ্খা সম্পর্কে অতিরিক্ত উদ্বেগের বিরুদ্ধে লড়াই করুন।
৭। ঈশ্বরের নির্ধারিত সময়ে একজন ধার্মিক ব্যক্তির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া (হিতোপদেশ ৫:১৫, ১৮-১৯)।
[1]Dr. Tim Clinton and Dr. Diane Langberg, The Quick-Reference Guide to Counseling Women, (Grand Rapids, MI: Baker Books, 2011), 185
বিবাহের পূর্বে নৈতিক পবিত্রতার সাথে ঈশ্বরকে সম্মান করার নীতিসমূহ
যুবক-যুবতীরা বিয়ের আগে প্রবল প্রলোভনের মুখোমুখি হয়। তাদের এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে তাদের এমন একজন জীবনসঙ্গী প্রয়োজন যে বিশ্বস্ত হবে।[1] তাদের এমন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের কথা বিবেচনা করা উচিত নয় যে বিবাহ ছাড়াই স্বল্পমেয়াদী আনন্দ পেতে চায়। তাদের এমন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের কথা বিবেচনা করা উচিত নয় যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিশ্বাসী নয় (১ করিন্থীয় ৭:৩৯)। তাদের কেবল এমন কাউকে বিবেচনা করা উচিত যে একজন বিশ্বস্ত বিবাহসঙ্গী এবং একজন ভালো বাবা অথবা মা হবে।
একজন যুবক বা যুবতী যে একটি সুন্দর বিবাহ করতে চায়, তাকে খ্রিষ্টের একজন বিশ্বস্ত, নিবেদিতপ্রাণ অনুসারী হতে হবে যাতে সঠিক ধরণের ব্যক্তি আকৃষ্ট হয় (হিতোপদেশ ৩:৪-৮)। একজন ব্যক্তি তার উপযুক্ত আচরণ এবং শালীন পোশাকের মাধ্যমে ভালো চরিত্র প্রদর্শন করে (১ তিমথি ২:৯-১০)। যারা বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তিদের সাথে অসতর্ক আচরণ করে, তারা বোঝায় যে তারা মন্দ আকাঙ্খার উপর ভিত্তি করে সম্পর্ক স্থাপন করতে ইচ্ছুক (১ তিমথি ৪:১-৭)। যে ব্যক্তি এমন পোশাক পরে যা মন্দ আকাঙ্খা জাগিয়ে তোলে, সে ভুল ধরণের ব্যক্তিকে আকর্ষণ করে (হিতোপদেশ ৭)।
ঈশ্বর যুবক-যুবতীদের আচরণ, পোশাক এবং সম্পর্ক পছন্দের ক্ষেত্রে নির্দেশনা প্রদানের জন্য বাবা-মা, পাস্টার এবং অন্যান্য খ্রিষ্টবিশ্বাসী লিডারদের দিয়েছেন। যুবক-যুবতীরা যখন ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্যে এই লিডারদের কাছে আত্মসমর্পণ করবে, তখন তারা ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ আশীর্বাদ পাবে এবং অনেক ক্ষতি ও প্রলোভন থেকে রক্ষা পাবে।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ১ পিতর ৫:৫ এবং ইব্রীয় ১৩:১৭ পদ পড়বে।
সন্তান এবং যুবক-যুবতীদের দায়িত্ব হল তাদের বাবা-মা এবং আত্মিক কর্তৃত্বের বিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের কাছে বশ্যতাস্বীকার করা। এই লিডারদের দায়িত্ব হল তরুণদের প্রলোভনের উপর বিজয়ী হয়ে জীবনযাপন করতে সাহায্য করা।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য রোমীয় ১৩:১৪ এবং ১ করিন্থীয় ১০:১৩ পদ পড়বে।
ঈশ্বর বিশ্বাসীদেরকে তাদের সামর্থ্যের বাইরে প্রলোভনের পরিস্থিতিতে পড়তে দেন না, এবং যদি তারা ইচ্ছুক হয় তাহলে তা থেকে পালাতে পারে। প্রলোভন থেকে পালানোর দায়িত্ব তরুণদের নিজেদের (২ তিমথি ২:২২)। তবে, বাবা-মায়েদের উচিত তাদের সন্তানদের যতটা সম্ভব অপ্রয়োজনীয় প্রলোভনের সম্মুখীন হওয়া থেকে বিরত রাখা। বাবা-মায়েরা অন্তত তিনটি উপায় এটি করতে পারেন:
(১) সন্তানদের কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়, তাদের কার সাথে থাকা উচিত এবং কোথায় যাওয়া উচিত সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়ার মাধ্যমে (ইফিষীয় ৬:১-৪)।
বাবা-মায়েদের তাদের সন্তানদেরকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে দেওয়া উচিত নয় যেখানে তাদের পরিপক্কতা তাদের প্রলোভন থেকে রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট হবে না। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন যুবক এবং যুবতী একাকী কোনো প্রাইভেট জায়গায় থাকে, তাহলে তারা সম্ভবত ভুল আচরণের জন্যই প্রলুব্ধ হবে।
(২) প্রলোভনের ক্ষেত্রগুলিতে তাদের তরুণসন্তানদের জবাবদিহি করার মাধ্যমে।
(৩) তরুণদের বাইবেলের উপদেশ দেওয়ার মাধ্যমে।
বাবা-মায়েদের তাদের তরুণ সন্তানদেরকে বাইবেলের নীতিগুলো মাথায় রেখে পরিস্থিতি বিবেচনা করতে শেখানো উচিত (হিতোপদেশ ৪:১-৯, হিতোপদেশ ৭:১, ৪-৫)। তাদের উচিত তারা যে বিপদগুলি দেখছে সেই সম্পর্কে তাদের সন্তানদের সাথে কথা বলা। তাদের সন্তানদেরকে বিভিন্ন পছন্দ বা সিদ্ধান্ত বিবেচনা করতে সাহায্য করা উচিত যা তাদের নিতে হবে। তারা তাদের সন্তানদের আগে থেকেই ভাবতে সাহায্য করতে পারে যে কীভাবে প্রলোভন এড়ানো যায় এবং প্রলোভনের সময়ে তাদের কী করতে হবে।
বাইবেলের নীতিসমূহ রক্ষা করার ক্ষেত্রে মন্ডলীকে অবশ্যই তার সংস্কৃতি থেকে পৃথক থাকতে হবে। অনেক সংস্কৃতি যৌন পাপকে গুরুতর বলে মনে করে না। তারা আশা করে যে তরুণ অবিবাহিতরা বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করবে। মন্ডলীর কোনোমতেই পাপের সাথে আপস করা উচিত নয়। মন্ডলীর এটি ধরে নেওয়া উচিত নয় যে তরুণদের মধ্যে যৌন পাপ স্বাভাবিক। ঈশ্বর বলেন যে যারা অসচ্চরিত্র, খ্রিষ্টের রাজ্যে তাদের কোনো উত্তরাধিকার নেই।
► শিক্ষার্থীরা গ্রুপের জন্য ইফিষীয় ৫:৩-৭ এবং ইব্রীয় ১৩:৪ পদ পড়বে।
বিয়ের আগে যখন সম্পর্কের যে সময়কাল থাকে তা যৌন সম্পর্ক শুরু হওয়ার সময় নয়। বরং এটি এমন একটি সময় যখন সেই পুরুষ এবং নারী নিশ্চিত করে যে তারা অনুরূপ আত্মিক এবং বাইবেলভিত্তিক অগ্রাধিকারে বিশ্বাসী। এটি এমন একটি সময় যখন তারা একে অপরের প্রতি এমন একটি বোধগম্যতা গড়ে তোলে যা তাদেরকে একে অপরের প্রতি স্থায়ীভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার জন্য যথেষ্ট বিশ্বাস করতে সক্ষম করে। যদি তারা একে অপরের চরিত্রের ক্ষেত্রে এই বিশ্বাসে আসতে না পারে, তাহলে তাদের সম্পর্কটি শেষ করা উচিত এবং বিয়ে করা উচিত নয়।
কিছু সমাজের মানুষ বেশ দেরি করে বিয়ে করে কারণ তাদের সংস্কৃতিতে বিবাহকে একটি বিস্তারিত এবং ব্যয়বহুল অনুষ্ঠান হিসেবে দেখে। অনেক সময়, দম্পতিরা বছরের পর বছর একসাথে থাকে এবং বিয়ে বিলম্বিত করার সময়ে সন্তান ধারণ করে। কিছু দম্পতির ক্ষেত্রে, তাদের বিবাহের ব্যয় দীর্ঘকাল ধরে তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে, কারণ তারা তাদের সর্বস্ব বিবাহ অনুষ্ঠানের জন্য ব্যয় করে এবং এমনকি টাকা ধারও করে। মন্ডলী এমন একটি বিশ্বাসের সম্প্রদায় হওয়া উচিত যা বিবাহের একটি ভিন্ন আদর্শ বা রূপ প্রদান করে। খ্রিষ্টীয় বিবাহ এমন একজন পুরুষ এবং নারীর জন্য যারা একে অপরের প্রতি এবং ঈশ্বরের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, এবং সেখানে এমন কোনো মারাত্মক খরচের প্রয়োজন নেই যা বিবাহকে বিলম্বিত করে বা দম্পতির ভবিষ্যতকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
► সমাজে প্রচলিত বৈবাহিক রীতিনীতি থেকে খ্রিষ্টীয় বিবাহের আলাদা হওয়ার কিছু উপায় কী কী হতে পারে?
[1]হিতোপদেশ ৩১:১১-১২, ১ তিমথি ৩:১১-১২, মালাখি ২:১৪-১৬, হিতোপদেশ ২:১৬-১৭ দেখুন।
যারা কখনো বিবাহ করে না
বেশিরভাগ মানুষের জন্যই বিবাহ হল ঈশ্বরের পরিকল্পনা। তবে, প্রেরিত পৌল কিছু কারণ বর্ণনা করেছেন যে কারণগুলির জন্য লোকেরা বিয়ে নাও করতে পারে। ১ করিন্থীয় ৭:২৬ পদে তিনি “বর্তমান সংকট”-এর কথা উল্লেখ করেছেন—জীবনের কঠিন পরিস্থিতি যার মধ্যে তাড়নাও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তিনি বলেছেন যে এইরকম পরিস্থিতিতে বিয়ে না করাই ভালো হতে পারে।
একই প্যাসেজে (১ করিন্থীয় ৭:৩২-৩৫) বলা হয়েছে যে একজন অবিবাহিত ব্যক্তির একটি বিশেষ সুবিধা রয়েছে। অবিবাহিত ব্যক্তি তার স্বামী/স্ত্রী’র যত্ন নেওয়ার চিন্তা ছাড়াই ঈশ্বরের সেবায় মনোনিবেশ করতে পারে। যখন একজন ব্যক্তিকে বিবাহিত না হয়েও পরিচর্যা কাজে মনোনিবেশ করার জন্য ঈশ্বর দ্বারা আহুত হয়, তখন সে তার পরিচর্যা কাজে উল্লেখযোগ্যভাবে কার্যকর এবং আশীর্বাদপ্রাপ্ত হতে পারে।
ঈশ্বরের একজন ব্যক্তিকে অবিবাহিত থাকার জন্য বেছে নেওয়ার অন্যান্য কারণও থাকতে পারে (মথি ১৯:১০-১২)। আমাদের ধরে নেওয়া উচিত নয় যে এটি একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। আমাদের ধরে নেওয়া উচিত নয় যে প্রতিটি অবিবাহিত ব্যক্তির কারোর সাথে মিলিত হওয়া প্রয়োজন। আমাদের ধরে নেওয়া উচিত নয় যে সুখ এবং পরিপূর্ণতা কেবল বিবাহের উপরেই নির্ভর করে (গীত ১০৭:৯)।
যে ব্যক্তি অবিবাহিত, তাকে অবশ্যই মানসিক এবং শারীরিক চাহিদার কারণে ভুল সম্পর্ক তৈরি করা এড়াতে সতর্ক থাকতে হবে। যে ব্যক্তি ঈশ্বরের প্রতি সম্পূর্ণরূপে নিবেদিতপ্রাণ, তিনি তাকে আনন্দ এবং তৃপ্তি দেন ।
বিবাহের জন্য বাইবেলভিত্তিক নির্দেশনাসমূহ
► একসাথে ১ পিতর ৩:১-৭ এবং ইফিষীয় ৫:২২-৩৩ পড়ুন। এই আলোচনা চলাকালীন পুরো গ্রুপ পরীক্ষার জন্য এই প্যাসেজগুলি খুলে রাখবে।
পুরুষকে বলা হয়েছে সে যেন তার স্ত্রীকে সেইভাবে ভালোবাসে যেমন খ্রিষ্ট মন্ডলীকে ভালবেসেছেন। যিশু নিজেকে মন্ডলীর জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। স্বামীকে তার স্ত্রী’র চাহিদা পূরণের জন্য তার নিজস্ব সুবিধা, আরাম এবং আকাঙ্খা ত্যাগ করতে হবে। ১ পিতর ৩:৭ বলে যে তার স্ত্রী’র সাথে মানিয়ে নেওয়ার মানসিকতায় বসবাস করা উচিত, যার অর্থ হল স্ত্রীকে বোঝার জন্য তার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। স্ত্রীর চাহিদা বোঝার জন্য তাকে অনুসন্ধান করা উচিত।
এই প্যাসেজে নারীকে “দুর্বলতর সঙ্গী” বলা হয়েছে। একজন স্ত্রী’র তার স্বামীর কাছ থেকে বিবেচনার প্রয়োজন। স্বামীর কেবল তাকে শারীরিক ক্ষতি থেকে নয়, বরং উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ থেকেও রক্ষা করা উচিত।
স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি বশ্যতা স্বীকার করতে এবং তাকে সম্মান করতে বলা হয়েছে। স্ত্রীকে স্বামীর নেতৃত্ব গ্রহণ করতে হবে, এমনকি যদি স্বামী বিশ্বাসী নাও হয়। যদি সে এটি করে, তাহলে তার পরিত্রাণ না পাওয়া স্বামীর বিশ্বাসী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
এই পদগুলিতে কীভাবে আদেশগুলি দেওয়া হয়েছে তা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। স্বামীকে তার স্ত্রী’র উপর কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে বলা হয়নি। স্ত্রীকে তার স্বামীর বাধ্য হতে বলা হয়েছে, কিন্তু স্বামীকে তাকে বাধ্য করতে বলা হয়নি। তাকে তার স্ত্রীকে ভালোবাসতে এবং তার যত্ন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ত্যাগ স্বীকার করতে বলা হয়েছে। একইভাবে, স্ত্রীকে তার স্বামীর কাছ থেকে যত্ন দাবি করতে বলা হয়নি; তাকে স্বামীকে সম্মান করতে বলা হয়েছে।
স্বামীর তার নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখা নয়, বরং প্রেমময় যত্ন প্রদান করাই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। স্ত্রী’র নিজের যত্ন দাবি করা নয়, বরং তার স্বামীকে সম্মান করাই অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।
স্বামীকে সতর্ক করে প্রেরিত বলেছেন যে, যদি সে তার স্ত্রী’র সঠিকভাবে যত্ন না নেয়, তাহলে তার প্রার্থনা ব্যাহত হবে। এটি আমাদের জানায় যে, বিবাহিত জীবনে আমাদের আচরণ ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলে।
প্রেরিত যোহন বলেছেন যে যদি কেউ তার ভাইকে না ভালোবাসে, তাহলে সে ঈশ্বরকেও ভালোবাসে না (১ যোহন ৪:২০)। একইভাবে, পৌল এবং পিতরের কথা থেকে আমরা দেখতে পাই যে, যে পুরুষ তার স্ত্রী’র যত্ন নেয় না, সে ঈশ্বরকে ভালোবাসে না, যেমনটা তার করা উচিত। যে নারী তার স্বামীকে সম্মান করে না, সে ঈশ্বরকে সম্মান করে না, যেমনটা তার করা উচিত।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ১ করিন্থীয় ৭:১-৫ পদ পড়বে।
এই পদগুলি আমাদের জানায় যে বিবাহের একটি উদ্দেশ্য হল যৌন আকাঙ্খা পূরণ করা। স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরের কাছে নিজেদের সমর্পণ করেছে এবং তাদের নিজস্ব শরীরের মালিকানার দাবি ত্যাগ করেছে। এর অর্থ হল একজন বিবাহিত ব্যক্তির কেবল যখন ইচ্ছা তখনই যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার আশা করা উচিত নয়, বরং তার স্বামী বা স্ত্রীর আকাঙ্খার প্রতিও প্রতিক্রিয়াশীল হওয়া উচিত। এই পদগুলি আমাদের বলে না যে একজন ব্যক্তি স্বামী বা স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সন্তুষ্টি দাবি করতে পারে। পরিবর্তে, পদগুলি একে অপরের চাহিদার প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল হতে বলছে।
এই প্যাসেজটি আমাদের জানায় যে বিবাহিতদের একে অপরকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। উপবাসের সাথে অল্প সময়ের জন্য যৌনতা থেকে বিরত থাকা বৈধ, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী বিচ্ছেদ অতৃপ্ত আকাঙ্খার কারণে প্রলোভনের কারণ হবে। কখনো কখনো দম্পতিরা কয়েক মাস বা তার বেশি সময় ধরে আলাদা থাকা বেছে নেয়, কারণ তারা দূরবর্তী স্থানে কাজ করতে বা পড়াশোনা করতে যায়। এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে, তাদের বিবেচনা করা উচিত যে এই জাতীয় পরিকল্পনা ঈশ্বরের পরিকল্পনার সাথে মানানসই কিনা। দীর্ঘ বিচ্ছেদের কারণে তারা সমস্যায় পড়তে পারে।
বিবাহের একটি উদ্দেশ্য হল এমন পরিবার তৈরি করা যা তাদের সদস্যদের ভরণপোষণ জোগায়।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ১ তিমথি ৫:৮ পদ পড়বে।
এই পদটি এমন একটি প্যাসেজে এসেছে যেখানে মন্ডলীর সদস্যদের একে অপরের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। একজন ব্যক্তির প্রথম দায়িত্ব হল তার নিজের পরিবার। একজন বাবা-মায়ের নিশ্চিত করা উচিত যে তার সন্তানের চাহিদা, যেমন আশ্রয়, খাদ্য, পোশাক এবং শিক্ষা, প্রদান করা হচ্ছে। একজন বাবা-মায়ের এই দায়িত্ব অন্যদের উপর ছেড়ে না দিয়ে বরং তাদের সাধ্যমতো ব্যবস্থা করা।
গ্রুপে আলোচনার জন্য
এই পাঠের বিষয়গুলি নিয়ে অনেক আলোচনা করা যেতে পারে।
শিক্ষার্থীদের তাদের নিজেদের পরিস্থিতিতে এই পাঠের শাস্ত্রীয় নীতিগুলি প্রয়োগ করার চেষ্টা করা উচিত।
► বিবাহ সম্পর্কে কোন সত্যটি বেশিরভাগ মানুষই ভুলে যায়?
► জগতের প্রলোভনের সাথে লড়াই করা তরুণ-তরুণীদের মন্ডলী কীভাবে সাহায্য করতে পারে?
► (সানডে স্কুলের বাইরে) শিশুদের খ্রিষ্টকে অনুসরণ করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রতিকূলতা মোকাবিলায় মন্ডলীর লোকেরা কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারে?
প্রার্থনা
স্বর্গস্থ পিতা,
বিবাহ নিয়ে তোমার চমৎকার পরিকল্পনার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে তোমার ইচ্ছার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে আমাকে সাহায্য করো। খ্রিষ্টীয় বিশ্বস্ততার একটি ভালো উদাহরণ হতে আমাকে সাহায্য করো। অন্যদের তোমার ইচ্ছা অনুসরণ করতে উৎসাহিত করতে আমাকে সাহায্য করো।
আমাকে সাহায্য করো যেন পরিবার, ইয়ুথ এবং শিশুদের বিশ্বাস এবং বাধ্যতায় দৃঢ় হতে সাহায্য করার জন্য মন্ডলীর সাথে সহযোগিতা করতে পারি।
তোমার আশীর্বাদধন্য সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
আমেন
পাঠ ৭ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) যদি আপনি অবিবাহিত হন, তাহলে আপনার বিবাহপূর্ব সম্পর্ক এবং আপনার ভবিষ্যতের বিবাহের জন্য ঈশ্বরের নীতিগুলি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে দু’টি অনুচ্ছেদ লিখুন। যদি আপনি বিবাহিত হন, তাহলে আপনার বিবাহের জন্য ঈশ্বরের নীতিগুলি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে দু’টি অনুচ্ছেদ লিখুন।
(২) এই পাঠ থেকে এক বা একাধিক বিষয় বেছে নিন, এবং আপনার সমাজে একজন ব্যক্তি কীভাবে শাস্ত্রীয় নীতিগুলি প্রয়োগ করবেন তা একপাতার মধ্যে বর্ণনা করে লিখুন।
উদাহরণসমূহ:
আপনার সমাজে বিয়ের পরিকল্পনা করছে এমন একজন পুরুষ এবং একজন নারীর মধ্যে একটি খ্রিষ্টীয় সম্পর্কের বর্ণনা দিন।
আপনার সমাজে বিবাহের প্রতি বিশ্বস্ততা প্রদর্শন করতে চাওয়া একজন পুরুষ বা নারীর আচরণ বর্ণনা করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.