(১) বাইবেল যখন “জগৎ” সম্পর্কে কথা বলে, তখন তার অর্থ কী তা বুঝতে পারবে।
(২) কোনো ব্যক্তির জীবনের কোন কোন ক্ষেত্রে জগতের মূল্যবোধগুলি প্রভাবিত করে তা উপলব্ধি করতে পারবে।
(৩) কীভাবে এবং কেন একজন বিশ্বাসীর ভাবনা-চিন্তা একজন অবিশ্বাসীর থেকে অবশ্যই আলাদা হওয়া উচিত তা বর্ণনা করতে পারবে।
(৪) একজন বিশ্বাসীর কাছে অখণ্ডতার জীবন যাপন করার অর্থ কী তা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
(৫) প্রকাশ করবে যে খ্রিষ্টীয় সত্য জীবনের পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
জন ক্রিসোস্তম, অখণ্ডতার প্রচারক
জন ক্রিসোস্তম (John Chrysostom, ৩৭০-এর দশক)[1], ছিলেন একজন ধার্মিক পাস্টার যিনি তার পরাক্রমী এবং বাগ্মী প্রচারের কারণে “স্বর্ণ-মুখ” বা “দ্য গোল্ডেন মাউথ” হিসেবে সুপরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। তিনি সাধারণ মানুষের কাছে ভীষণ প্রিয় ছিলেন এবং পূর্ব রোম সাম্রাজ্যের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রচারক হয়ে উঠেছিলেন। ৩৯৮ সালে তাকে ১,০০,০০০ সদস্যের জাতীয় মন্ডলীর পাস্টার এবং প্রবীণতম অধিনায়ক (প্যাট্রিয়ার্ক) হিসেবে কাজ করার জন্য রাজধানী শহর কনস্ট্যান্টিনোপলে (আধুনিক ইস্তাম্বুল, তুরস্ক) নিয়ে যাওয়া হয়।
জন তার আপসহীন চরিত্রের জন্য পরিচিত ছিলেন। তিনি কেবল ধনী ব্যক্তিদের জন্য নয়, সমগ্র শহরের চাহিদা পূরণের জন্য তার পদাধিকার ব্যবহার করেছিলেন। তিনি দরিদ্রদের খাবার দিয়েছিলেন, হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন এবং বিধবা মহিলাদের সাহায্য করেছিলেন। তিনি এশিয়া মাইনরে বিশপদের তাদের দুর্নীতি ও আর্থিক অব্যবস্থাপনার মোকাবিলা করেছিলেন এবং তাদের ভোগবিলাস ও অনৈতিকতার বিরুদ্ধে প্রচার করেছিলেন। তিনি কনস্ট্যান্টিনোপলের সমাজের উচ্চ শ্রেণীকে সতর্ক করেছিলেন যে থিয়েটারে উপস্থিত হওয়া তাদেরকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে। তিনি থিয়েটারে উপস্থিতিকে একটি মারাত্মক ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার সাথে তুলনা করেছিলেন। জন বলেছিলেন,
আপনি যদি থিয়েটারে একজন নির্লজ্জ নারীকে দেখেন, যে অনাবৃত মাথা এবং সাহসী মনোভাব নিয়ে মঞ্চে চলাফেরা করে, সোনালী জরির পোশাক পরে, তার কোমল কামুকতাকে প্রকাশ্যে উজ্জীবিত করে, অনৈতিক গান গায়, নাচে অশালীনভাবে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রদর্শন করে এবং নির্লজ্জ বক্তৃতা করে... আপনি কি সাহস করে বলতে পারেন যে তখন আপনার মধ্যে মানবিক সত্তার কিছুই ঘটবে না? ...থিয়েটার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে এবং সবাই চলে যাওয়ার অনেক পরে, সেই ছবিগুলি তখনও আপনার আত্মার সামনে ভেসে ওঠে, তাদের কথা, তাদের আচরণ, তাদের দৃষ্টি, তাদের হাঁটা, তাদের অবস্থান ... তাদের অশুচি অঙ্গ - এবং আপনার ক্ষেত্রে, আপনি এই সবকিছুকে হাজার ক্ষত দিয়ে ঢেকে বাড়িতে ফিরে যান! কিন্তু একা নয়—সেই বেশ্যা নারীও আপনার সঙ্গে যায়—যদিও প্রকাশ্যে এবং দৃশ্যমানভাবে নয়...কিন্তু আপনার অন্তরে, আপনার বিবেকে, এবং সেখানেই সে ব্যাবিলনীয় চুল্লি জ্বালায়...যেখানে আপনার বাড়ির শান্তি, আপনার হৃদয়ের পবিত্রতা, আপনার দাম্পত্য সুখ পুড়ে যাবে!
ধনী নাগরিকদের উদ্দেশ্যে জন সতর্ক করেছিলেন,
আলমারিগুলি পোশাক দিয়ে ভরিয়ে রাখা এবং ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি ও আমাদের সাদৃশ্যে সৃষ্ট মানুষকে নগ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে এবং ঠান্ডায় কাঁপতে বাধ্য করা – যেখানে তারা নিজেদেরকে সোজা করে ধরে রাখতে পারে না – হল মূর্খতা এবং জনসমক্ষে উন্মাদনা... আপনি বিশাল চেহারার এবং হৃষ্টপুষ্ট ব্যক্তি, আপনি গভীর রাত পর্যন্ত মদ্যপানের উৎসব করেন, এবং একটি উষ্ণ, নরম বিছানায় ঘুমান। এবং আপনি কি একবারও চিন্তা করেন না যে কীভাবে আপনাকে ঈশ্বরের উপহারের অপব্যবহারের হিসাব দিতে হবে... কারণ আমাদের ধন-সম্পদ প্রভুর, যেভাবেই হোক আমার তা সংগ্রহ করি কিনা। এই কারণেই প্রভু আপনাকে আরও কিছু দিয়েছেন; তা অপচয় করার জন্য নয়... কিন্তু যাদের প্রয়োজন আছে, তাদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য।
জন ক্রিসোস্তম-কে শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণ সাগরের (Black Sea) পূর্ব উপকূলে নির্বাসিত করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি যাত্রাপথেই মারা যান (৪০৭ খ্রিষ্টাব্দে)। তার শেষ কথা ছিল, “সকল বিষয়ে ঈশ্বরের মহিমা হোক। আমেন।”
[1]Gerald L. Sittser. Water from a Deep Well. (Downers Grove: InterVarsity Press, 2007), 135
জগৎ সম্পর্কে বাইবেলভিত্তিক ধারণা
যোহন ১৭ অধ্যায় হল ক্রুশারোপণের ঠিক আগে যিশুর তাঁর শিষ্যদের জন্য প্রার্থনা। এটি তাঁর শিষ্যদের প্রতি তাঁর মহান প্রেম এবং উদ্বেগকে প্রকাশ করে। তিনি বলেছেন যে তিনি তাদের জন্য প্রার্থনা করছেন যারা পরবর্তীকালে প্রেরিতদের বার্তা বিশ্বাস করবে (২০ পদ), সুতরাং, আজকের দিনের বিশ্বাসীরাও তাতে অন্তর্ভুক্ত ছিল ।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য যোহন ১৭:১৪-১৮ পদ পড়বে।
যিশু যখন বলেছিলেন যে তিনি এই জগতের নন তখন তিনি কী বোঝাতে চেয়েছিলেন? আমরা জানি যে, এই পৃথিবীতে তাঁর উদ্ভব হয়নি; তিনি হলেন ঈশ্বরের পুত্র, যিনি স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে এসেছিলেন৷ তবে, তিনি যখন বিবৃতিটি দিয়েছিলেন যে তিনি এই জগতের নন, তখন তিনি এই কথা বলছিলেন না যে তিনি এই পৃথিবীর বাইরে কোথাও থেকে এসেছেন। তিনি বলেছিলেন যে তাঁর শিষ্যরাও জগতের ছিলেন না, যেমন তিনি ছিলেন না। যিশু সেইসব মানুষের সম্পর্কে কথা বলছিলেন যারা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছে, মানব পিতামাতার কাছে জন্মগ্রহণ করেছে এবং তাদের নিজের দেশের নাগরিক হিসেবে বেড়ে উঠেছে।
তাহলে যিশু কী বোঝাতে চেয়েছিলেন যখন তিনি বলেছিলেন যে তাঁর শিষ্যরা এই জগতের নয়? আমাদের বুঝতে হবে যে বাইবেল যখন জগতের উল্লেখ করছে, তখন এটি আসলে কী বলছে।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ইফিষীয় ২:১-৩ পদ পড়বে।
এই পদগুলি আমাদের দেখায় যে জগতের মতো জীবনযাপন করা আসলে শয়তানের পরিচালনা অনুসরণ করার অনুরূপ। এছাড়াও, আমরা দেখি যে জগতের লোকেরা তাদের পাপময় আকাঙ্খা অনুসরণ করে, এবং তারা ঈশ্বরের ক্রোধ ভোগ করবে। বিশ্বাসীরা নতুন জীবন লাভ করেছে এবং তারা আর এই জগতের মতো জীবন যাপন করে না।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ১ যোহন ২:১৫-১৭ পদ পড়বে।
১ যোহনে জগতকে একটি মন্দ সত্তা হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। এটিকে ভালোবাসা উচিত নয়, এবং এর জিনিসগুলিও ভালোবাসার জন্য নয়। ভুল আকাঙ্খা এবং উদ্দেশ্যগুলি জাগতিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত। পাপপূর্ণ কামনাকে জগতের কামনা বলা হয়।
শয়তানকে বলা হয় এই জগতের অধিপতি (যোহন ১৬:১১)। এর অর্থ এই নয় যে এই জগৎ বৈধভাবে তার অধিকারের অধীন; সে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতা, এবং জগতের লোকেরা তাকে অনুসরণ করে। সে ইতিমধ্যেই দোষীসাব্যস্ত হয়েছে, এবং যারা তাকে অনুসরণ করতে থাকে তারাও দোষীসাব্যস্ত হবে।
এই জগতের বন্ধু হওয়ার অর্থ হল ঈশ্বরের শত্রু হওয়া (যাকোব ৪:৪)।
এই পৃথিবী লক্ষ লক্ষ প্রাকৃতিক, পতিত লোকের সমন্বয়ে গঠিত, তারা ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন এবং তাদের মধ্যে যা মিল রয়েছে তা দ্বারা ঐক্যবদ্ধ। প্রথমত, তারা ভুল অভিলাষ বা আকাঙ্খার অধিকারী। তারা বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তার চেয়ে বিশ্বের জিনিসগুলিকে বেশি পছন্দ করে। ১ যোহন ২:১৫-১৬ বলছে, “জগৎকে... ভালোবেসো না … কারণ এ জগতের সমস্ত বিষয়—শারীরিক অভিলাষ, চোখের অভিলাষ ও জীবনের অহংকার—পিতা থেকে নয়, কিন্তু জগৎ থেকে আসে।”
দ্বিতীয়ত, তাদের ভুল অভিলাষ তাদেরকে ভুল আচরণের দিকে নিয়ে যায়; এটি এমন একটি জীবনধারা যা মূলত ন্যায়বিচার এবং করুণার পরিবর্তে নিজেদেরকে সন্তুষ্ট করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে (আমোষ ৫:১১-১৫; ২১-২৪)। তারা তাদের নিজেদের পথে চলে, তারা যা চায় তা দাবি করে, এবং নিজেরাই নিজেদের জন্য ঠিক এবং ভুল নির্ধারণ করে। যদিও তাদের ধর্মের অনেক রূপ আছে, তবুও যারা জগতের তারা সকলেই নিজেদেরকে (মানবিক বুদ্ধি, মানবিক প্রজ্ঞা, মানবিক ক্ষুধা, মানবিক মঙ্গলভাব, মানবিক শক্তি) তাদের উপাসনার কেন্দ্র করে তুলেছে (রোমীয় ১:২৫)। তারা ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে প্রতিরোধ করে এবং জীবনের এমন একটি দর্শনে বিশ্বাস করে যেটি তারা যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটিকে ন্যায্যতা দেয়। তারা জানতে চায় না কোনটা সঠিক এবং তারা তা করতে চায় না। তারা যা চায় তাই করে, তারপর সেটিকে সঠিক বলে ব্যাখ্যা করার একটি উপায় খোঁজে।
খ্রিষ্টবিশ্বাসী নয় এমন মনোবিজ্ঞানীরা এবং জাগতিক পরামর্শদাতারা মানুষকে অনুতাপ না করে এবং ঈশ্বরের ক্ষমা না পেয়ে তাদের অপরাধের সমাধান করতে সাহায্য করার চেষ্টা করে। জগতের দার্শনিকরা বেঁচে থাকার এমন একটি উদ্দেশ্য বর্ণনা করার চেষ্টা করে যা ঈশ্বরকে জড়িত করে না। জগতের বিজ্ঞানীরা সবকিছুর একটি উত্স ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করার সময়ে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করে। জগতের রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মীরা পাপের স্বাভাবিক, নেতিবাচক পরিণতি প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করে এবং অস্বীকার করে যে পাপই আসল সমস্যা। জগতের ফ্যাশন ডিজাইনাররা এমন পোশাক তৈরি করে যা কামুক এবং মনোযোগ আকর্ষণ করে। জগতের বিনোদনকারীরা পাপ, নৈতিকতা এবং ধর্ম নিয়ে রসিকতা করে। জগতের পাস্টাররা এমন এক ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন যিনি পাপ সহ্য করেন এবং আপনার ধনী হওয়া, সুখী হওয়া এবং ভালো আত্মসম্মান থাকা নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন।
কলসীয় ২:৮ আমাদের সতর্ক করে যে আমরা যেন দর্শন এবং প্রতারণা দ্বারা, বিশ্বের উপাদান দ্বারা প্রতারিত না হই। একজন ঠগ শিল্পী মিথ্যা ধারণা বিক্রি করে কাউকে লুট করে। লোকেদেরকে ভুল ধারণার প্রতি আবদ্ধ করার মাধ্যমে, জগৎ লোকেদের কাছ থেকে ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক, আত্মিক উপকারিতা এবং স্বর্গকে কেড়ে নেয়।
এই জগতের দর্শন এবং নিয়ন্ত্রক প্রেরণাগুলি জগতের লোকেদের জীবনধারায় প্রদর্শিত হয়। জাগতিক কথাবার্তা, আচার-আচরণ, পোশাক-আশাক, আমোদ-প্রমোদ, আচার-আচরণ সবই তাদের অন্তরের পাপময়তার বহিঃপ্রকাশ।
খ্রিষ্টের অনুসরণকারীরা তাদের সমাজের নৈতিকতাকে অনুসরণ করতে পারে না। খ্রিষ্টের অনুসরণকারীরা তাদের সমাজের থেকে আলাদা।
সমস্ত সংস্কৃতি এই সত্তাটির দ্বারাই গঠিত হয় যাকে পবিত্র বাইবেল জগৎ বলে সম্বোধন করেছে। একটি জায়গায় মানুষের বিভিন্ন প্রজন্ম একটি সংস্কৃতি বিকাশ করে। তারা নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি এবং স্থিতিশীল পরিবারব্যবস্থার মতো একাধিক ভালো জিনিস চায়, কিন্তু তারা সেই জিনিসগুলিকে একটি পার্থিব দর্শন এবং ঈশ্বরের বাক্যের বশ্যতা স্বীকার না করে নিজেদেরকে খুঁজে পাওয়ার দৃঢ় সংকল্পের সাথে অনুসরণ করে। এর অর্থ হল খ্রিষ্টের অনুসারীরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণরূপে অনুসরণ করতে পারে না। এটি ঠিক যে কিছু সংস্কৃতি অন্যদের তুলনায় বাইবেলের নীতি দ্বারা বেশি প্রভাবিত, কিন্তু এই বিশ্বের কোনো জাতির সংস্কৃতিই সম্পূর্ণরূপে খ্রিষ্টীয় নয়।
► আমরা এতক্ষণ যা অধ্যয়ন করলাম তার ভিত্তিতে, যিশুর শিষ্যরা “এই জগতের” নয় – এর অর্থ কী?
বিশ্বাসীরা পাপপূর্ণ ইচ্ছা এবং উচ্চাকাঙ্খা অনুসরণ করে না। তারা সর্বোপরি ঈশ্বরকে খুশি করতে চায়। তাদের আকাঙ্খা ও ভালোবাসা রূপান্তরিত হয়েছে, এবং ক্রমাগত তা হয়ে চলেছে (ফিলিপীয় ১:৯-১১)। ঈশ্বরের বিধান তাদের হৃদয়ে লেখা হয়েছে (যিরমিয় ৩১:৩৩)। ঈশ্বরের আদেশ বিশ্বাসীদের জন্য বোঝাস্বরূপ নয়, বরং এটি আনন্দদায়ক (১ যোহন ৫:১-৩, গীত ১৯:৭-১১)। বিশ্বাসীদের শাশ্বত অগ্রাধিকার আছে (মথি ৬:৩৩)। তাদের আচরণ দেখায় যে তারা প্রলোভনকে প্রতিহত করতে চায় এবং পাপের উপর বিজয়ী হয়ে জীবন যাপন করতে চায়।
বিশ্বাসীরা জগতের লোকেদের মতো একই জিনিস আগ্রহী না হওয়ার কারণে জগতের লোকেরা তাদেরকে অদ্ভুত বলে মনে করে (১ পিতর ৪:৪)। যিশু বলেছিলেন যে জগৎ সেই ব্যক্তিকে ঘৃণা করে যে আত্মিকভাবে ভিন্ন (যোহন ১৭:১৪)। যারা জগতের অন্তর্গত নয় তাদের প্রতি এই জগত বিরূপ। তারা বোঝে না, তারা ধার্মিকতাকে ঘৃণা করে এবং তারা তাদের নিজেদের পাপের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়। তাই যিশু বলেছিলেন, “এই জগতে তোমরা সংকটের সম্মুখীন হবে” (যোহন ১৬:৩৩)। সাধু পৌল বলেছেন, “খ্রীষ্ট যীশুতে যারা ভক্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে চায়, তারা নির্যাতিত হবেই” (২ তিমথি ৩:১২)।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য ২ করিন্থীয় ৬:১৪-১৮ পদ পড়বে।
বাইবেল বিশ্বাসীদেরকে জগৎ থেকে স্বতন্ত্র হতে বলে। এই স্বাতন্ত্র্যতার বিষয়টি একজন ব্যক্তির মনোভাবের সাথে শুরু হয়, যেমনটি পর্বতের উপরে যিশুর দেওয়া উপদেশে শেখানো হয়েছিল। এখানে তিনি বিশ্বাসীর মনোভাবকে অহংকারহীনতা, পাপের জন্য দুঃখবোধ, নম্রতা, ধার্মিকতা, করুণা, হৃদয়-শুদ্ধি, শান্তি এবং নিপীড়ন সহ্য করার ইচ্ছা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। স্বতন্ত্র মনোভাবের ফলে স্বতন্ত্র আচরণ হবে। উদাহরণস্বরূপ, বিশ্বাসীরা এমন অংশীদারিত্ব গঠন করতে পারে না যার জন্য তাদেরকে ভুল জিনিসগুলি করতে হবে। ঈশ্বর এমন একজন ব্যক্তিরই পিতা হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে জগৎ থেকে আলাদা হবে। মনে রাখবেন, আমরা একটি পদে দেখেছি যেখানে বলা হয়েছে যে জগতের বন্ধু হওয়া হল ঈশ্বরের শত্রু হওয়া (যাকোব ৪:৪)।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য মথি ৫:১৩-১৬ পদ পড়বে।
জগৎ থেকে স্বতন্ত্র এবং পৃথক হওয়ার অর্থ এই নয় যে বিশ্বাসীদের সমাজ থেকে আলাদা হয়ে তাদের নিজস্ব সম্প্রদায় গঠন করতে হবে। যিশু বলেছিলেন যে তিনি এমন প্রার্থনা করছেন না যে তাঁর শিষ্যদের এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে (যোহন ১৭:১৫)। তিনি আরও বলেছিলেন যে তাঁর শিষ্যরা জগতের জন্য লবণ এবং আলো হবে, যার অর্থ তাদের অবশ্যই সমাজে উপস্থিত এবং দৃশ্যমান হতে হবে। বিশ্বাসীদের সরকারে এবং সম্প্রদায়ের কাজে অংশগ্রহণ করা উচিত, কিন্তু সচেতন থাকতে হবে যেন সেই অংশগ্রহণে তারা কোনো ভুলের সাথে সমঝোতা না করে।
জেরাল্ড সিটসার (Gerald Sittser)- এর থেকে আমরা জানতে পারি যে প্রথম শতকের খ্রিষ্টবিশ্বাসে বিষয়টি কেমন ছিল:
এথেনীয় দার্শনিক অ্যারিস্টাইডস (Aristides), যিনি... দ্বিতীয় শতাব্দীতে বসবাস করতেন, তিনি বেশ কিছু গুণাবলী তালিকাভুক্ত করেছেন যা খ্রিষ্টবিশ্বাসীদেরকে বাকিদের থেকে আলাদা করে। তিনি উল্লেখ করেছেন, খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা আদর্শপরায়ণ [তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতি বিশ্বস্ততা], সত্যবাদিতা, সন্তুষ্টি, বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, প্রতিবেশীদের প্রতি ভালোবাসা, পবিত্রতা, নিপীড়নের মুখে ধৈর্য, এবং অপরিচিতদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করত। তারা বিধবা ও অনাথদের দেখাশোনা করত। তারা ক্রীতদাসদের সাথেও অসাধারণ সদয় আচরণ করত। “যেকোনো পুরুষ ও নারী ক্রীতদাস… তারা তাদের প্রতি তাদের ভালোবাসার কারণে খ্রিষ্টবিশ্বাসী হতে রাজি হতো। যদি তারা খ্রিষ্টবিশ্বাসী হতো, তারা কোনো ভেদাভেদ ছাড়াই ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে উঠত।”[1]
[1]Gerald L. Sittser. Water from a Deep Well. (Downers Grove: InterVarsity Press, 2007), 54
একটি খাঁটি বিশ্বাস
যাকোবের পত্রটি দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করে যে খ্রিষ্টীয় বিশ্বাস জীবনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যাকোব বলেছেন যে যারা ঈশ্বরের বাক্য শোনে কিন্তু তা পালন করে না, তারা নিজেদেরকে ঠকাচ্ছে (যাকোব ১:২২)। কিছু কিছু ব্যক্তি বেশি খ্রিষ্টীয় সত্য জানার কারণে নিজেদেরকে অন্যদের থেকে বেশি ভালো বলে মনে করে–যদিও তারা তা পালন করে না–কিন্তু এটি সত্য নয়।
যাকোব বলেছেন যে কিছু কিছু ব্যক্তি ধার্মিক হয়, কিন্তু তাদের ধর্ম মূল্যহীন। ঈশ্বর মানুষের সেই ধর্মে আনন্দিত হন যে ধর্ম অন্যদের প্রয়োজন পূরণ করে এবং তাদেরকে পবিত্র রাখে, এবং জগৎ দ্বারা কলুষিত হয় না (যাকোব ১:২৭)।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য যাকোব ২:১৪-২৬ পদ পড়বে।
এমন অনেকে আছে যারা বলে যে যেহেতু কাজের দ্বারা নয়, কিন্তু বিশ্বাসের দ্বারা আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি, তাই আচরণ গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা মনে করে যে একজন ব্যক্তির আচরণ এবং জীবনধারা অবিশ্বাসীর মতো হলেও, তার পক্ষে বিশ্বাস রক্ষা করা সম্ভব। যাকোবের পত্রের এই অংশটি এমন লোকেদের উদ্দেশ্যেই কথা বলে।
যাকোব বলেছেন যে বিশ্বাস যথেষ্ট নয়; এমনকি মন্দ আত্মারাও সঠিক বিশ্বাস সম্পর্কে সচেতন, কিন্তু তারা ঈশ্বরের সাথে একটি সঠিক সম্পর্কে নেই (১৯ পদ)। যে ব্যক্তি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে কিন্তু ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে না, সে এমন ব্যক্তির মতো যে সুসমাচার শোনে কিন্তু অনুতাপ করে না।
২১ এবং ২৪ পদ বিশ্লেষণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বলা হয়েছে যে অব্রাহাম কাজের দ্বারা ধার্মিক বলে গণ্য হয়েছিলেন, এবং একজন ব্যক্তি কাজ এবং বিশ্বাস – উভয়ের দ্বারা ধার্মিক বলে গণ্য হয়। এটিকে অন্যান্য শাস্ত্রীয় অংশগুলির বিরোধী বলে মনে হতে পারে যেগুলি বিশেষভাবে জোর দেয় যে একজন ব্যক্তি কাজের দ্বারা নয়, কিন্তু কেবল বিশ্বাস দ্বারাই পরিত্রাণ পায় (ইফিষীয় ২:৮-৯, গালাতীয় ২:১৬, রোমীয় ৩:২৮)। “ধার্মিকগণিত হওয়া” কথাটির দ্বারা যাকোব বলেননি যে একজন ব্যক্তি বিশ্বাস এবং কাজ দ্বারা পরিত্রাণ পায়, বরং তিনি বলেছেন যে একজন ব্যক্তিকে বিশ্বাস এবং কাজ দ্বারা পরিত্রাণপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে দেখানো হয়। সে তার কাজের দ্বারা পরিত্রাণ পায়নি, কিন্তু যদি সে এক ধার্মিক জীবনযাপন না করে, তার মধ্যে পরিত্রাণের বিশ্বাসও আর নেই। যাকোব বলছেন যে যদি একজন ব্যক্তির বিশ্বাসের সাথে মেলে এমন জীবন না থাকে, তাহলে তার বিশ্বাস মৃত (২৬ পদ)।
যাকোব বলেছেন যে ঠিক যেমন একটি গাছের পক্ষে দু’ধরণের ফল ধারণ করা সম্ভব নয়, বা একটি ঝর্ণার পক্ষে দু’ধরণের জল দেওয়া সম্ভব নয়, তেমনই একজন ব্যক্তির আশীর্বাদের কথা এবং অভিশাপের কথা – দুটোই বলতে সক্ষম হওয়া উচিত নয় (যাকোব ৩:৯-১২)। একজন ব্যক্তির আচরণ তার খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকা আবশ্যক।
অখণ্ডতার ধারণা
রোমীয় ২:২১-২৪-এ পৌল সেইসকল ইহুদিদের ব্যাপারে কথা বলেছেন যারা নিজেদেরকে শাস্ত্র জানার কারণে অইহুদিদের থেকে মহান মনে করত, যদিও তারা তা মান্য করত না। তিনি প্রশ্ন করেছেন, “তুমি চুরি না করার শিক্ষা দাও, কিন্তু তুমি কি চুরি করো?” তিনি বলেছেন, “তুমি বিধানের জন্য গর্ব করে থাকো, অথচ নিজে কি বিধান ভেঙে ঈশ্বরের অবমাননা করছ?” এটি সত্য যে তারা নিজেদেরকে ধার্মিক মানুষ হিসেবে উন্নীত করেছিল অথচ তাদের চরিত্র উত্তম ছিল না, সেই কারণে পরজাতীয়রা ঈশ্বর এবং শাস্ত্র সম্পর্কে নিন্দাজনক কথা বলতে চালিত করেছিল।
যদি একজন ব্যক্তির মধ্যে অখণ্ডতা থাকে তবে তার আচরণ তার বিশ্বাসের সাথে মেলে। উদাহরণস্বরূপ, একজন সৎ ব্যক্তি তার সমস্ত আচরণ এবং কথাবার্তায় সততাকে একীভূত করবে। যে ব্যক্তি বলে সে সৎ, কিন্তু অসৎ কাজ করে, তার মধ্যে অখণ্ডতা নেই।
অখণ্ডতা শব্দটি একজন ব্যক্তির চরিত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে। কিছু ভাষায় এই শব্দটি অন্যান্য বিষয় যেমন একটি বিল্ডিংয়ের কাঠামো বর্ণনা করতেও ব্যবহৃত হয়।
► আপনার কি মনে হয় যে, একটি বিল্ডিংয়ের কাঠামোর অখণ্ডতা রাখার অর্থ কী?
একটি বিল্ডিংয়ের টিকে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে অবশ্যই এটির নিজের ভার এবং এর ভেতরে যা কিছু ক্রিয়াকলাপ চলে তার ভার বহন করতে হবে। যদি এটি ধসে পড়ে, মানুষ আহত হতে পারে এবং সম্পত্তি নষ্ট হতে পারে, এবং বিল্ডিংটির মূল্য নষ্ট হবে। একটি বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে অখণ্ডতা অর্থ হল শক্তিশালী নির্মাণের নীতিগুলি সমগ্র কাঠামো জুড়ে ব্যবহৃত হওয়া।
বিল্ডিংটির দীর্ঘকাল দাঁড়িয়ে থাকতে পারা বিল্ডিংটির জন্যই ভালো। যে ব্যক্তি একটি বাড়ি তৈরি করে, সে আশা করতে পারে যে এটি তার জন্য সারাজীবন দাঁড়িয়ে থাকবে। সরকারী বা বড় বড় ব্যবসার জন্য বিল্ডিংগুলির জন্য বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় এবং আশা করা যেতে পারে যে এটি কয়েক প্রজন্মের জন্য টিকে থাকবে।
যদি একটি বিল্ডিং হেলতে বা ধসে পড়তে শুরু করে, তবে এটির মূল কারণ হল অখণ্ডতার অভাব। কিছু ক্ষেত্রে একটি বিল্ডিং ভূমিকম্প দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এবং যদি এটি তারপরেও দাঁড়িয়ে থাকে, তবে তা নিরাপদ অবস্থায় নেই। এতে অখণ্ডতা নেই।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল্ডিং নির্মাণ শুরু করার আগে, একটি ব্লুপ্রিন্ট তৈরী হয়, যেটি হল সমগ্র বিবরণসহ একটি অঙ্কন। এটি হল বিল্ডিংটি দাঁড়িয়ে থাকার জন্য কীভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী হবে সে সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ। বিল্ডিংয়ের অংশগুলি অবশ্যই সংযুক্ত এবং পারস্পরিক সমর্থনকারী হতে হবে।
যখন নির্মাতা নির্মাণ করছেন, তখন তার সেই পরিকল্পনাটি অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি যদি কাঠামোর প্রয়োজনীয় অংশগুলি বাদ দিয়ে খরচ কমানোর চেষ্টা করেন, তবে বিল্ডিংটি নিরাপদ হবে না।
► একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে অখণ্ডতার অধিকারী হওয়ার অর্থ কী?
যিশু একটি বিল্ডিংয়ের অখণ্ডতার দৃষ্টান্ত ব্যবহার করেছেন। তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈশ্বরের কথা শোনে এবং মান্য করে, সে সেই ব্যক্তির মতো যে একটি পাথরের উপর তার বাড়ি তৈরি করে। ঝড় এলে সেই বাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। যে ব্যক্তি ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করে না, সে এমন ব্যক্তির মতো যে বালির উপর তার বাড়ি তৈরি করে (মথি ৭:২৪-২৭)। শুধু সত্য শোনা এবং জানাই যথেষ্ট নয়।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য যাকোব ১:২২-২৫ পদ পড়বে।
যাকোব বলেছেন যে লোকেরা ঈশ্বরের বাক্য শুনেও সেই অনুযায়ী কাজ না করলে তারা নিজেদেরকে প্রতারিত করে। তিনি এমন ব্যক্তিদের উল্লেখ করছেন যারা মনে করে তারা ভালো, কারণ তারা বাইবেলের সত্য জানে যদিও তারা সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে এটি মেনে চলে না। এইরকম লোকেদের মধ্যে অখণ্ডতা নেই।
যাকোব বলেছেন যে, আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্য পড়ি তখন আমাদের এমন লোকদের মতো হওয়া উচিত নয় যারা আয়নায় তাকায়, কিন্তু আমরা যা দেখি তার কারণে কোনো পরিবর্তন হয় না। ঈশ্বরের সত্য রূপান্তরকারী। আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্যের দিকে তাকাই তখন আমরা আমাদের দোষগুলি দেখতে পাই, এবং আমাদের উচিত ঈশ্বরের আত্মাকে ঈশ্বরের সত্যের সাথে আমাদের চরিত্র এবং আচরণ পরিবর্তন করার অনুমতি দেওয়া ।
অখণ্ডতার জীবনধারায় প্রদর্শিত হয়। বিশ্বাসীরা যখন বুঝতে পারে যে, কোনো মনোভাব বা আচরণ ঈশ্বরের সত্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, তখন তাদের নিজেদের নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা উচিত নয়।
ফলের পরীক্ষা
যিশু বলেছেন অনেক মিথ্যা ভাববাদী আসবে। এরা এমন লোক যারা ধর্মীয় নেতৃত্বের মর্যাদা চায় বা পরিচর্যার ব্যবসা করতে চায়, কিন্তু তাদের খ্রিষ্টীয় চরিত্র নেই। তিনি বলেছেন, আমরা তাদের ফল দ্বারা তাদের চিনতে পারি (মথি ৭:১৫-১৮)। ফল বলতে সাফল্য বোঝায় না। পরিবর্তে, ফল হল গাছের চরিত্রের স্বাভাবিক প্রকাশ। একজন ব্যক্তির ফল হল তার অন্তর্নিহিত চরিত্রে তার জীবনের প্রদর্শন। যদি একজন ব্যক্তি আত্মার ফল বহন না করে (গালাতীয় ৫:২২-২৩, ১ করিন্থীয় ১৩), বা পাপের জীবন যাপন করে, তবে তার পাপপূর্ণ চরিত্র রয়েছে এবং সে একজন সত্যিকারের আত্মিক লিডার নয় (১ করিন্থীয় ৬:৯-১০, ২ করিন্থীয় ১১:১৩-১৫)।
প্রেরিত পিতর বলেছেন যে বিশ্বাসীদের অতীতের আকাঙ্খাগুলির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত নয়, বরং তারা যা কিছু করে, সবকিছুতে তাদের পবিত্র হওয়া উচিত (১ পিতর ১:১৪-১৫)।
ভালো ফল মানে এই নয় যে একজন ব্যক্তি তার আচরণে সমস্ত খ্রিষ্টীয় নীতিগুলিকে কীভাবে পুরোপুরি প্রয়োগ করতে হয় তা বোঝে। আমরা সবাই ঈশ্বরের সত্য শেখার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। একটি বাগানে কাজ করা একটি শিশু ভুলভাবে ভুল গাছপালা উপড়াতে পারে। আন্তরিক ভুলের জন্য ঈশ্বর আমাদের বিচার করেন না। তবে, অনুগ্রহ একজন ব্যক্তিকে তার পাপের অনুতাপ করতে অস্বীকার করা থেকে অব্যাহতি দেয় না। সাধু যোহন আমাদের বলেন যে একজন ব্যক্তি তখনই শুদ্ধ হয় যখন সে আলোতে চলে, সত্য অনুসারে জীবনযাপন করে (১ যোহন ১:৭)।
নেতৃত্বে অখণ্ডতা
লিডাররা এমন সব সিদ্ধান্ত নেন যা অন্যদের নিতে হয় না। একজন লিডারের দায়িত্ব এবং সুযোগ প্রলোভনের জন্য অনেক সুযোগ তৈরি করে দেয়। একজন লিডারের সিদ্ধান্তগুলি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেগুলি বহু লোককে প্রভাবিত করে।
একজন মিনিস্ট্রি লিডারের মনে রাখা উচিত যে তাকে যিশুর উদাহরণ অনুসরণ করে, ঈশ্বর এবং লোকেদের সেবা করার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। তার লক্ষ্য অবশ্যই এমন একজন সেলিব্রিটি হওয়া উচিত নয়, যাকে অন্যেরা প্রশংসা করে এবং সেবা করে।
কোন মণ্ডলীতে যদি এমন অনেক লোক থাকে, যারা ঈশ্বরের আন্তরিক উপাসক নয়, তাহলে তারা পারফরম্যান্সের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার জন্য উপাসনার পরিষেবাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। এই লোকেরা আধ্যাত্মিক বিষয়গুলির চেয়ে প্রতিভাকে বেশি সম্মান করে। তারা চায় যে, প্রকৃত আত্মিক লিডারদের পরিবর্তে ভালো পারফর্ম করতে পারে এমন ব্যক্তিরা উপাসনার কাজে নেতৃত্ব দিক। তারা কামুক পারফর্ম্যান্স দ্বারা বিনোদিত হয়। তারা অরূপান্তরিত সঙ্গীতশিল্পীদের ভাড়া করতে চায় যারা ডিস্কোতে বাজাতে ইচ্ছুক এবং উপাসনায় অংশগ্রহণের জন্য অযোগ্য। পাস্টারকে অবশ্যই মন্ডলীর উপাসনাকে রক্ষা করতে হবে, যাতে এটি প্রকৃত উপাসকদের আকৃষ্ট করে এবং তাদের সেবা করে।[1]
► কোনো ব্যক্তি যদি রবিবার সকালে মন্ডলীতে আসে এবং শনিবার রাতে ডিস্কোতে দেখা সেই একই মিউজিশিয়ানকে এখানে দেখে, মন্ডলী সম্পর্কে তার কী ধারণা তৈরি হবে?
একজন লিডার নিজেকে নৈতিকতার স্বাভাবিক নিয়ম থেকে মুক্ত মনে করতে প্রলুব্ধ হতে পারে। কিছু পাস্টার তাদের মন্ডলীতে বিভিন্ন পুরুষ বা মহিলাদের সাথে ভুল সম্পর্ক বজায় রাখে, ঠিক যেমন তাদের সমাজে থাকা জাগতিক নেতারা করে থাকেন। কিছু মন্ডলী পাস্টারদের মর্যাদার কারণে তাদের অনৈতিক আচরণকে ভুলভাবে সহ্য করে।
একজন পাস্টার এটি বিশ্বাস করতে প্রলুব্ধ হতে পারেন যে তিনিই মন্ডলীর মালিক। তিনি যদি এইভাবে চিন্তা করেন, তা হলে তিনি লোকেদেরকে তার প্রতি আনুগত্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন পদে নিযুক্ত করেন, এই কারণে নয় যে তারা কোনো কাজ ভালোভাবে করবে। এই ধরনের পাস্টার আত্মীয়দের পক্ষপাতিত্ব করেন এবং তিনি বেছে নিতে চান তার পরে কে মন্ডলীর উত্তরাধিকারী হবে। তিনি মন্ডলীতে তার সমর্থকদের পাপ এবং ভুল ঢেকে দেন। তিনি মন্ডলীর অর্থ এবং সম্পত্তিকে এমনভাবে ব্যবহার করেন যেন সেগুলি তার নিজের।
মন্ডলীর সাক্ষ্য
মন্ডলী কলুষিত হতে পারে যখন এটি অখণ্ডতার প্রয়োজনীয়তা পূরণে ব্যর্থ হয়। মন্ডলী যখন জাগতিক আকাঙ্খা পূরণে লিপ্ত হয়ে ওঠে, তখন তারা এমন লিডারদের গ্রহণ করে যাদের মানসিকতা জাগতিক। তারা তাদের ধর্মীয় লিডারদের পাপ সহ্য করে। এমনকি খাঁটি বিশ্বাসীরাও পাপী লিডারদের অনুসরণ করতে পারে, কারণ তারা অখণ্ডতা এবং ভালো ফলের প্রয়োজনীয়তা বোঝে না। যখন এমন ঘটে, তখন জগতের লোকেরা মন্ডলীর নিয়ন্ত্রণ দখল করে এবং ফলস্বরূপ, মন্ডলী তার সাক্ষ্য হারায়।
পিতর সতর্ক করেছেন যে ভণ্ড আত্মিক লিডাররা মন্ডলীকে ব্যবসায়ে পরিণত করবে (২ পিতর ২:৩)। যখন মন্ডলী তার সমাজে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, তখন জাগতিক মানসিকতাসম্পন্ন লোকেরা মন্ডলীতে মর্যাদা পেতে আগ্রহী হয়। তারা উপাসনার এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানের ধরনগুলি শিখেছে, কিন্তু তারা তাদের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়নি এবং খ্রিষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণ পায়নি। ভালো ধর্মতত্ত্ব দ্বারা পরিচালিত না হওয়া একটি মন্ডলী এই ভণ্ড নেতাদের চিনতে ব্যর্থ হয়।[2]
যখন মন্ডলী তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যতা হারায়, তখন কী ঘটে তা বোঝানোর জন্য যিশু লবণের উদাহরণ ব্যবহার করেছিলেন (মথি ৫:১৩)। যে লবণ তার লবণত্ব হারিয়েছে, সেটি বালি বা কাঁকরের চেয়ে কোনো অংশে আলাদা নয়।
যখন মন্ডলী নিজেই সমাজের মতো হয়ে যায়, তখন মন্ডলী আর কোনোভাবেই সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে না।
যখন মন্ডলী জাগতিক বিন্যাস অনুসরণ করে এবং বাইবেলের সত্যকে অনুসরণ করে না, তখন জগত মন্ডলীকে উপহাস করে।
[1]খ্রিষ্টীয় উপাসনার পূর্ণ অন্বেষণের জন্য, Shepherds Global Classroom-এর খ্রিষ্টীয় উপাসনার ভূমিকা নামক কোর্সটি দেখুন, যা https://www.shepherdsglobal.org/courses থেকে প্রাপ্য।
[2]২ পিতর ২ অধ্যায় এবং যিহূদা’র পত্র ভণ্ড আত্মিক নেতাদের বিষয় নিয়ে লেখা।
ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করা
থিওলজি বা ঈশতত্ত্ব হল আমাদের খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের পদ্ধতি, যার মধ্যে ঈশ্বর, মানবতা, পাপ, খ্রিষ্ট এবং পরিত্রাণের তত্ত্ব রয়েছে। ঈশ্বর সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস হল অন্য সমস্ত বিশ্বাসের ভিত্তি।
ঈশ্বর যখন নিজেকে প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর প্রকাশের প্রথম উদ্দেশ্য ছিল তিনি কেমন ঈশ্বর তা প্রকাশ করা। ঈশ্বর নিজেকে প্রাথমিকভাবে পবিত্র বলে বর্ণনা করেছেন। পবিত্রতার জন্য হিব্রু শব্দ (কাদোশ) পুরাতন নিয়মে ৬০০ বারের বেশি উল্লিখিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ভাববাদী যিশাইয় বারংবার ঈশ্বরকে “ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতম” বলে উল্লেখ করেছেন৷ ঈশ্বরের পবিত্রতা ছিল উপাসনার মূল বিষয়বস্তু (গীত ৯৯:৩, ৫)। ঈশ্বরের লোকেরা কেবল তাঁর শক্তির জন্য নয়, বরং তাঁর পবিত্রতার জন্যই তাঁর উপাসনা করত।
ঈশ্বর নিজেকে প্রেম হিসেবেও প্রকাশ করেছেন। পুরাতন নিয়মের সবচেয়ে প্রধান অংশ হল যাত্রাপুস্তক ৩৪:৬-৭ যেখানে মোশি এবং ইস্রায়েলের কাছে ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ করেছেন। সেখানে ঈশ্বর নিজেকে বর্ণনা করেছেন, “...করুণাময় ও অনুগ্রহকারী ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর, প্রেম ও বিশ্বস্ততায় সমৃদ্ধ, হাজার হাজার জনের প্রতি প্রেম প্রদর্শনকারী, এবং দুষ্টতা, বিদ্রোহ ও পাপ ক্ষমাকারী। তবুও অপরাধীকে শাস্তি না দিয়ে তিনি ছেড়ে দেন না …” ঈশ্বরের পবিত্রতা এবং ভালোবাসাকে একসাথে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ঈশ্বরের প্রকৃতি বর্ণনা করার জন্য প্রায়শই ব্যবহৃত একটি শব্দ হল “পবিত্র-প্রেম”। কারণ ঈশ্বর পবিত্র, তিনি আমাদের মধ্যে পবিত্রতা দাবি করেন; ঈশ্বর প্রেম কারণ তিনি আমাদের জন্য পবিত্র হওয়ার পথ তৈরি করেছেন, ঠিক যেমন তিনি পবিত্র৷
ঈশ্বরের পবিত্রতা দেখিয়েছিল যে মানুষ প্রথমে অনুগ্রহের দ্বারা রূপান্তরিত না হয়ে ঈশ্বরের সেবা ও উপাসনা করার উপযুক্ত নয়। ভাববাদী যিশাইয় দেখেছিলেন যেসব পাপীদের কাছে তিনি প্রচার করেছিলেন তাদের সাথে তার কিছু মিল রয়েছে—তাঁর হৃদয় বিশুদ্ধ ছিল না (যিশাইয় ৬:৫)। “অশুচি ওষ্ঠাধরবিশিষ্ট” একটি অপবিত্র হৃদয় থেকে আসা ভুল কথা এবং কর্মের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। এই অপবিত্রতা যিশাইয়কে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকার ক্ষেত্রে অযোগ্য করে তুলেছিল। যিশাইয় তাঁর অবস্থাকে ন্যায্য প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেননি, এমনকি ঈশ্বরও করেননি। ঈশ্বর অনুগ্রহের সাথে ভাববাদীর স্বীকারোক্তিতে সাড়া দিয়েছিলেন; সহ্যক্ষমতার অনুগ্রহ নয়, কিন্তু শুদ্ধকরণ এবং রূপান্তরকারী অনুগ্রহ (যিশাইয় ৬:৬-৭)।
ইস্রায়েলের ঈশ্বর মিথ্যা দেবতাদের থেকে আলাদা ছিলেন এবং তাঁর জন্য একটি ভিন্ন ধরণের উপাসনার প্রয়োজন ছিল। গীত ২৪ অধ্যায়ে রাজা দায়ূদ সেই ব্যক্তির বর্ণনা করেছেন যাকে প্রভুর উপস্থিতিতে আসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঈশ্বর কাকে উপাসক হিসেবে গ্রহণ করেন? “সে, যার হাত পরিষ্কার ও হৃদয় নির্মল” (গীত ২৪:৪)। সবাই ঈশ্বরের উপাসক হিসেবে গৃহীত হয় না। একজন উপাসক কেবল একজন সাধারণ ব্যক্তি নয় যে তার দু’হাত তোলে এবং আবেগ অনুভব করে। একজন পাপী ব্যক্তি এটির যোগ্য নয়।[1]
ঈশ্বর বলেছিলেন যে, তাঁর উপাসকদের পবিত্র হওয়ার বিষয়ে তাঁর চাহিদার ভিত্তি হল তাঁর নিজস্ব পবিত্রতা। “তোমরা পবিত্র হও, কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমি পবিত্র” (লেবীয় পুস্তক ১৯:২, লেবীয় পুস্তক ১১:৪৪-৪৫, লেবীয় পুস্তক ২০:২৬, লেবীয় পুস্তক ২১:৮)। ঈশ্বর প্রাচীন প্রাচ্যের দেবতা বা পরবর্তী গ্রীক ও রোমান পুরাণের দেবতাদের মতো ছিলেন না। সেই দেবতাদের সম্পর্কিত পৌরাণিক কাহিনীগুলি তাদেরকে দুর্নীতিগ্রস্ত, প্রতারক এবং নিষ্ঠুর হিসেবে বর্ণনা করে। এই দেবতাদের মধ্যে মানবতার সমস্ত চরিত্রগত ত্রুটি ছিল। দেয়ালের ছায়ার মতো, এগুলি ছিল মানুষের প্রতিমূর্তির অতিরঞ্জিত বিকৃতি। এই দেবতাদের নৈতিক মান বা চরিত্রের কোনো মাপকাঠির প্রয়োজন ছিল না, এবং তাদের উপাসকরা ছিল দুষ্ট এবং নিষ্ঠুর।
ইস্রায়েলের ঈশ্বর মানুষের প্রতিমূর্তির কোনো প্রক্ষিপ্ত ছবি নয়। তিনি কাল্পনিক নন, বরং তিনি নিজেকে মানুষের কাছে প্রকাশ করেছেন। তিনি আলাদা, এবং এজন্যই তাঁর উপাসকদের অবশ্যই আলাদা হতে হবে।
ঈশ্বরের মান নতুন নিয়মে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে: “কিন্তু যিনি তোমাদের আহ্বান করেছেন, তিনি যেমন পবিত্র, তোমরাও তেমনই সমস্ত আচার-আচরণে পবিত্র হও। কারণ লেখা আছে, ‘তোমরা পবিত্র হও, কারণ আমি পবিত্র’” (১ পিতর ১:১৫-১৬)। আচরণ এমন একটি শব্দ যা আমাদের জীবনের প্রতিটি অংশের মনোভাব এবং ব্যবহারকে বোঝায়। ঈশ্বর চান না যে তাঁর উপাসকরা কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র হবে বা তাদেরকে কেবল “পবিত্র” বলা হবে, বিশেষত যখন তারা প্রকৃতপক্ষে পবিত্র নয়। তিনি আশা করেন যে তাঁর উপাসকরা প্রকৃতপক্ষে পবিত্র জীবন যাপন করবে।
আমাদের মনোভাব এবং আচরণ দেখায় যে আমরা ঈশ্বর সম্বন্ধে কী ভাবি এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের কেমন সম্পর্ক রয়েছে। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন যে, যে সকল ইহুদিরা ঈশ্বরের বিধান পেয়ে গর্বিত ছিল, তারাই তা ভঙ্গ করে ঈশ্বরকে অসম্মান করেছিল। তাদের আচরণের কারণে, লোকেরা তাদের সম্পর্কে এবং তাদের ঈশ্বর সম্পর্কে মন্দ কথা বলেছিল (রোমীয় ২:২৩-২৪)।
আপনি কোন ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করেন? মানুষ আপনার ঈশ্বর সম্পর্কে কী মনে করে? আপনি যদি চান যে লোকেরা জানুক যে ঈশ্বর পবিত্র এবং তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়, তবে আপনাকে তাদের কাছে প্রকাশ করতে হবে যে আপনিও সেইরকম।
সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ শিক্ষাদানের জন্য মন্ডলীগুলির তাদের পাস্টারদের প্রয়োজন। একজন পাস্টারের কখনোই মৌলিক বা প্রাথমিক ধর্মতত্ত্বকে অবহেলা করা উচিত নয়। প্রতিটি প্রজন্ম এবং সমস্ত নতুন রূপান্তরিত ব্যক্তিদের এটি শুনতে হবে। এমনকি পরিপক্ক বিশ্বাসীদেরও মনে করিয়ে দিতে হবে। পাস্টারের প্রচারগুলি উত্তেজনা তৈরির জন্য কেবল আবেগপূর্ণ, গতিশীল পরিবেশনা হওয়া উচিত নয়। তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের সম্বন্ধে বর্ণনা করতে হবে, এবং বর্ণনা করতে হবে যে, কিভাবে খ্রিষ্টীয় জীবন সমস্ত বিষয়ে বাইবেলে বর্ণিত ঈশ্বরের ধারণার সাথে মিলে যাওয়া উচিত।
সমাজ ও সংস্কৃতিকে রূপান্তরিত করার দায়িত্ব হল মন্ডলীর, তবে এটি কেবল তখনই ঘটবে যখন ঈশ্বর সম্পর্কে বাইবেলভিত্তিক ধারণা আমাদের জীবনের বিবরণে প্রয়োগ করা হয়।
[1]প্রকৃত উপাসনার পূর্ণ অন্বেষণের জন্য, Shepherds Global Classroom-এর খ্রিষ্টীয় উপাসনার ভূমিকা নামক কোর্সটি দেখুন, যা https://www.shepherdsglobal.org/courses থেকে প্রাপ্য।
গ্রুপে আলোচনার জন্য
► এই পাঠের কোন ধারণাগুলি আপনার কাছে নতুন ছিল? আপনি কীভাবে খ্রিষ্টীয় জীবনযাত্রার প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার পরিকল্পনা করছেন?
► আপনার সংস্কৃতিতে মন্ডলীগুলিতে কোন ধারণাটিকে সাধারণত উপেক্ষিত বলে আপনি মনে করেন? আপনি কীভাবে আপনার পরিচিত কাউকে সেই ধারণাটি ব্যাখ্যা করবেন?
প্রার্থনা
স্বর্গস্থ পিতা,
আমি এমন একটি জীবন দিয়ে তোমাকে সম্মান করতে চাই যা তোমার চরিত্রের সাথে মেলে। আমি এমন একটি বিশ্বে তোমার প্রতিনিধিত্ব করতে চাই যা তোমার কাছে সমর্পিত নয়।
আমার জীবনকে তোমার সত্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করো। আমাকে সেই সবকিছু পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক হতে সাহায্য করো যা একজন বিশ্বাসীর জীবনের অংশ হওয়া উচিত নয়।
তোমার ক্ষমতাপ্রদানকারী আত্মা এবং রূপান্তরে সক্ষম অনুগ্রহের জন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানাই।
আমেন
১ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) একটি পার্থিব মূল্য সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লিখুন যা সাম্প্রতিক অতীতে আপনার চিন্তাভাবনা বা আচরণকে প্রভাবিত করেছে। তারপর শাস্ত্রের এমন দু’টি অংশ খুঁজে বের করুন যা জীবনের এই অংশটিকে নির্দেশ করে এবং সেগুলি লিখে রাখুন। আপনি কীভাবে এই শাস্ত্রীয় অংশগুলির বাধ্য হয়ে জীবনযাপন শুরু করতে পারেন সে সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লিখুন।
(২) তীত ২:১১-১৪ পদ অধ্যয়ন করুন। এই অংশটির উপর ভিত্তি করে খ্রিষ্টীয় অখণ্ডতা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত প্রেজেন্টেশন তৈরি করুন। কেন বাইবেলের সত্যগুলি জীবনের সমস্ত ক্ষেত্র জুড়ে প্রয়োগ করতে হবে তা ব্যাখ্যা করার জন্য এই অংশটি ব্যবহার করুন। পরবর্তী ক্লাসের শুরুতে এই প্রেজেন্টেশনটি সকলের সামনে উপস্থাপন করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.