অব্রাহাম লিংকন (Abraham Lincoln) একটি দোকানে কাজ করতেন। একদিন তিনি উপলব্ধি করেন যে তিনি একজন ক্রেতাকে সঠিক টাকা ফেরত দেননি। সেই মহিলাটি ইতিমধ্যেই দোকান থেকে চলে গিয়েছিল। তিনি সেই দোকান থেকে বেশ কয়েক পথ দূরে একটি গ্রামে থাকতেন, এবং অব্রাহাম জানতেন যে তার সাথে সেই মহিলাটির দ্রুত দেখা হওয়ার কোনো সুযোগও নেই। যদিও টাকার পরিমাণটা খুবই কম ছিল, তাও তিনি চিন্তিত ছিলেন যে মহিলাটির সেটি প্রয়োজন থাকতে পারে। তিনি এটিও নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন যে সেই মহিলা যেন কোনোভাবেই না ভাবেন যে অব্রাহাম ইচ্ছাকৃত তাকে কম টাকা ফেরত দিয়েছেন। সেদিন দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে, অব্রাহাম সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সেই দীর্ঘ পথ হেঁটে যান। সেই পরিস্থিতিতে এবং অন্য সব সময়েই তার এই সচেতন মানসিকতার জন্য তার বন্ধুরা তাকে “সৎ অ্যাবি” (“অনেস্ট অ্যাবি”) বলে ডাকত। পরবর্তীকালে তিনি একজন আইনজীবী হন, এবং তারপর সরকারের সাথে যুক্ত হন। তার সততা সম্মানীয় ছিল, এবং শেষ পর্যন্ত তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন।
ঈশ্বরের প্রকৃতি
বাইবেল আমাদের জানায় যে ঈশ্বর মিথ্যা বলতে পারেন না (তীত ১:২, ইব্রীয় ৬:১৮)। তাঁর প্রকৃতি সর্বদাই সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অপরিবর্তনশীল (যাকোব ১:১৭)। এমন নয় যে ঈশ্বর কেবল তখনই সত্য বলেন যখন তা কোনো সুবিধা প্রদান করে। তিনি ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য মিথ্যা বলেন না। আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে ঈশ্বরের বাক্য সম্পূর্ণভাবে সত্য এবং নির্ভরযোগ্য। তাঁর সত্য আমাদেরকে সুরক্ষা প্রদান করে (গীত ৪০:১১, গীত ৯১:৪)।
► যদি আপনি ঈশ্বরকে সর্বদা সত্য বলার জন্য বিশ্বাস না করেন তাহলে তাঁর সাথে আপনার সম্পর্ক কীভাবে প্রভাবিত হবে?
ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্কের জন্য সত্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ভেবে দেখুন। ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর প্রতি সম্পূর্ণরূপে নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা যদি তাঁকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস না করতাম, তাহলে আমরা তা করতে পারতাম না।
ঈশ্বরের সত্যের মাপকাঠি
ঈশ্বর চান যে আমরা যেন সর্বদা সত্যিকথা বলি। যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলে, সে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক নয় (হিতোপদেশ ১২:২২)।
মাঝে মাঝে লোকেরা আদালতে কেস জেতার জন্য মিথ্যা বলে। অর্থবান ব্যক্তিরা অন্যদের থেকে সম্পত্তি নেওয়ার জন্য মিথ্যা বলার উদ্দেশ্যে একজন বিচারককে টাকা দিতে পারে (যাকোব ২:৬)। ধনী ব্যক্তিরা ন্যায়বিচার এড়ায় এবং মিথ্যা প্রতিষ্ঠার জন্য ঘুষ দিয়ে নির্দোষ লোকদের দোষী সাব্যস্ত করে (যাকোব ৫:১, ৬)।
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া পাপ, এমনকি যদি আপনি মনেও করেন যে আপনার কারণটিই সঠিক। বাইবেল মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বারণ করেছে এবং কোনোরকম ব্যতিক্রমকেও অনুমতি দেয় না (যাত্রা পুস্তক ২০:১৬; হিতোপদেশ ৬:১৬-১৯, হিতোপদেশ ১৪:২৫, হিতোপদেশ ১৯:৫, ৯)। অনেকেই মনে করে যে মিথ্যা বলার মাধ্যমে যদি ভালো কিছু করা যায় এবং ক্ষতি না হয়, তাহলে তারা মিথ্যা বলতে পারে, কিন্তু বাইবেলে সেই বিকল্প দেওয়া হয়নি। শাস্ত্রে আমাদের কখনোই বলা হয়নি যে এমন কিছু সময় আছে যখন আমাদের মিথ্যা বলা উচিত।
বিশ্বাসীদের কোনোরকম ব্যতিক্রম ছাড়াই সত্য বলা উচিত। আমাদের সম্পর্কের জন্য সত্য অপরিহার্য (ইফিষীয় ৪:২৫)।
ইফিষীয় ৪:১৫ বলে যে আত্মিক পরিপক্কতায় বৃদ্ধির জন্য সত্য বলা অপরিহার্য।
কলসীয় ৩:৯ মিথ্যা বলা হল পাপময় জীবনের অংশ যা আমরা ত্যাগ করেছি।
ঈশ্বর মিথ্যাবাদীদের বিচার ও দোষীসাব্যস্ত করবেন। মিথ্যাবাদীরা ঈশ্বরের বিধানে দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত ভয়ানক পাপীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত (১ তিমথি ১:১০, প্রকাশিত বাক্য ২২:১৫)। সমস্ত মিথ্যাবাদী আগুনের হ্রদে নিক্ষিপ্ত হবে (প্রকাশিত বাক্য ২১:৮)। মিথ্যাবাদীরা ঈশ্বরের শহরে প্রবেশ করবে না (প্রকাশিত বাক্য ২১:২৭)।
ব্যবসা এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যের প্রয়োগ
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য হিতোপদেশ ১১:১ পদ পড়বে।
এই পদটি এমন দাঁড়িপাল্লার কথা বলছে যা ওজন করে কিছু বিক্রি করার জন্য ব্যবহৃত হয়, যেমন ফল, শাকসবজি বা মাংস। কিছু ক্ষেত্রে লোকেদের থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার জন্য ভুল ওজন দেওয়ার দাঁড়িপাল্লা তৈরি করা হয়। এই পদটি বলে যে ঈশ্বর অসাধুতাকে ঘৃণা করেন।
কোনো ব্যক্তির কোনো জিনিসের অবস্থা সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে বা তার ত্রুটি লুকিয়ে রেখে বিক্রি করা অন্যায়। বেশি দামে বিক্রি করার জন্য আপনি কত টাকা দিয়ে কিনেছেন তা কাউকে বলার সময় মিথ্যা বলা অন্যায়।
অর্থ প্রদান এড়াতে কোনো ব্যক্তির কখনোই এমন কোনোকিছুতে নিজের নাম স্বাক্ষর করা ঠিক নয় যা সত্য নয়। কোনো ব্যক্তিরই লাভের জন্য লোকেদের প্রতারণা করতে তার নিয়োগকর্তাকে সহায়তা করা ঠিক নয়।
► আপনি কত রকমের অসততা দেখেছেন?
পবিত্র বাইবেল বলছে যে দুষ্ট ব্যক্তিরা ধার করে কিন্তু ফেরত দেয় না (গীত ৩৭:২১, হিতোপদেশ ৩:২৮)। কিছু লোক ঋণ নেয় এবং ঋণ পরিশোধের কোনো বাধ্যবাধকতা বোধ করে না। বাইবেল বলে যে আমাদের নিশ্চিত করা উচিত যে আমরা অন্যদের কাছে যে ঋণ করেছি তা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছি না (রোমীয় ১৩:৭-৮)।
সততা মানে হলো আপনি আপনার প্রতিশ্রুতি এবং অঙ্গীকার রক্ষা করেন। গীত ১৫ অধ্যায় ঈশ্বরের সাথে ভালো সম্পর্কের অধিকারী ব্যক্তিকে বর্ণনা করে। এই ধরণের ব্যক্তির একটি বৈশিষ্ট্য হল যে সে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে, এমনকি যদি তা তার জন্য ব্যয়বহুলও হয় (গীত ১৫:৪)।
যখন কোনো ব্যক্তি তার নিয়োগকর্তার জন্য যতটা কাজ করা প্রয়োজন তা না করে, তাও একপ্রকার অসততাই হয় (ইফিষীয় ৬:৫-৬)।
একজন শ্রমিকের পক্ষে তার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে জিনিসপত্র চুরি করা অন্যায় (তীত ২:৯-১০)।
কোনো জিনিসের দাম তার প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বেশি বলে মিথ্যা রসিদ দেওয়া অন্যায়। কোনো কর্মচারী বা এজেন্টের নিজের জন্য কিছু টাকা সরিয়ে রাখার জন্য যদি সে কোনো জিনিসের দাম সম্পর্কে মিথ্যা বলে, তা অন্যায়।
একজন নিয়োগকর্তা যদি তার কর্মচারীদের প্রতিশ্রুত বেতন আটকে রাখে, তা অন্যায় (যাকোব ৫:৪)।
অন্যের ভুল করে হারিয়ে ফেলা জিনিস রাখা অন্যায়। যদি সম্ভব হয় তবে আপনার সেটি তার মালিকের কাছে ফেরত দেওয়া উচিত (দ্বিতীয় বিবরণ ২২:১)।
যদি আপনি অন্য কারোর (যেমন একজন নিয়োগকর্তা বা মিনিস্ট্রির) সম্পদ তত্ত্বাবধান করেন, তাহলে অনুমতি না পেলে নিজের জন্য টাকা বা জিনিসপত্র ব্যবহার করা অন্যায়।
সততার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক প্রতিকূলতার একটি উদাহরণ
কিছু কিছু সম্প্রদায়ে মানুষ একজন প্রধানের তত্ত্বাবধানে থাকে। লোকেরা প্রধানের প্রতি অনুগত থাকে এবং প্রধানের কাছ থেকে তাদের সকল প্রয়োজনে সাহায্য করার আশা করে। এই ধরণের সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষেরই খুব বেশি ব্যক্তিগত সম্পত্তি থাকে না। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ, যেমন জমি, সম্প্রদায়ের অধিকারভুক্ত থাকে। নেতাদের দায়িত্ব হল সকলের কল্যাণের জন্য সম্পদ ম্যানেজ করা। যখন একজন ব্যক্তির কোনো প্রয়োজন হয়, তখন সে মনে করে যে তার সম্প্রদায়ের সম্পদ থেকে তার যা প্রয়োজন তা নেওয়ার অধিকার তার আছে।
গিরধারীর জন্ম জঙ্গলের এক গ্রামে। তার পরিবার এবং তাদের আশেপাশের পরিবারগুলি গ্রামের জমিতে ফসল চাষ করত। তারা তাদের যাবতীয় সংস্থান জঙ্গল থেকেই সংগ্রহ করতেন। তাদের কারোরই ব্যক্তিগত জমি ছিল না, এমনকি যে জমিতে তাদের বাড়ি ছিল, সেটিও তাদের নিজস্ব জমি ছিল না। সমস্যায় পড়লে পরিবারগুলি একে অপরকে সাহায্য করত। প্রধান ছিলেন গ্রামের সকলের পিতৃতুল্য ব্যক্তি। লোকেরা আশা করত যে তিনি তাদের চাহিদার প্রতি যত্নবান হবেন।
যুবক বয়সে গিরধারী গাছের কাঠ কাটার একটি কোম্পানিতে চাকরি পায়। সে নিজের গ্রাম ছেড়ে তার কর্মক্ষেত্রের কাছাকাছি থাকতে শুরু করেছিল। সে প্রতি মাসে বেতন পেত। কিন্তু কিছু কিছু সময়ে তার কাছে পর্যাপ্ত খাবার থাকত না, কারণ সে বেতনকে বাজেট অনুযায়ী ব্যবহার করার সাথে অভ্যস্থ ছিল না। সে আশা করেছিল যে মালিক তার খাবারের জোগান দেবেন, কিন্তু সে আশ্চর্য হয়েছিলে যখন মালিক বলেছিলেন যে বেতনের টাকা থেকে সবকিছু কেনা গিরধারীর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যখন গিরধারীর বোনের ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন হয়, তখন গিরধারী মালিকের কাছে তার জন্য টাকা চেয়েছিল। মালিক সাহায্য না করায় গিরধারী রেগে গিয়েছিল। গিরধারী ভেবেছিল মালিকেরই উচিত তার সমস্যা সমাধানে তাকে সাহায্য করা, কিন্তু মালিক জানিয়ে দেন যে গিরধারীর জন্য তার একমাত্র দায়িত্ব হল তাকে বেতন দেওয়া। গিরধারী যখন চাকরি ছেড়ে দেয়, তখন সে গ্রামে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু সরঞ্জাম চুরি করেছিল, কারণ তার মনে হয়েছিল যে মালিক তাকে যথেষ্ট সাহায্য করেননি।
পরে গিরধারী তার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে শহরে চলে আসে এবং একটি বড় মুদির দোকানে চাকরি পায়। গিরধারী তার মালিককে তার সন্তানের স্কুলের মাইনে দিতে বলেছিল, কিন্তু সেই মালিক তা করেননি। কিছু কিছু সময়ে গিরধারীর কাছে পরিবারের প্রয়োজনীয় সবকিছু কেনার জন্য পর্যাপ্ত টাকা থাকত না। যেহেতু সে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করার একটি দোকানে কাজ করত, তাই সে ভেবেছিল যে তাকে দোকান থেকে তার পরিবারের জন্য খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত। সে জানত যে মালিক তাতে রাজি হবে না, তাই সে গোপনে খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যেত।
কিছু কর্মচারী নিয়োগকর্তার দায়িত্বের সীমা বোঝে না। তারা মনে করে যে নিয়োগকর্তা তাদের সকল চাহিদার জন্য দায়বদ্ধ। তারা তাদের কাজের জন্য বেতন ছাড়াও তার কাছে বিভিন্ন ধরণের সাহায্য চায়। যদি তিনি তাদের যা প্রয়োজন তা না দেন, তাহলে তারা চুরি করাকে ন্যায্য বলে মনে করে, কারণ তারা মনে করে যে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি তার কাছে প্রাপ্য।
► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য তীত ২:৯-১৪ পদ পড়বে।
এই পদগুলি আমাদের বলে যে একজন কর্মচারী তার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চুরি করবে না। ১০ পদ বলে যে সততা খ্রিষ্টের শিক্ষাকে সুন্দর করে তোলে। পরবর্তী কয়েকটি পদ বর্ণনা করে যে একজন ব্যক্তি যদি অনুগ্রহের দ্বারা রূপান্তরিত হয় তবে সে কীভাবে জীবনযাপন করে।
নির্ভরযোগ্যতা
সততা কেবল টাকা-পয়সা এবং সম্পত্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
কল্যাণ তার সহকর্মীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে সে সকাল ৮টায় তার সাথে দেখা করবে। কিন্তু, সে দেরিতে ঘুমিয়েছিল এবং জলখাবার খেতে সময় নিয়েছিল, এবং এক ঘণ্টারও বেশি দেরি করে এসেছিল। সে তার সহকর্মীকে বলেছিল যে তার ড্রাইভার দেরি করে এসেছিল। সহকর্মী অবাক হয়নি। কল্যাণের সমস্ত বন্ধু জানে যে সে কখনো তার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখে না।
কল্যাণ দুইদিক থেকে অসৎ ছিল:
১। সে তার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখেনি।
২। সে তার দেরিতে আসার কারণ সম্পর্কে মিথ্যা বলেছিল।
যখন আপনি বলেন যে আপনি কোনো কাজ করবেন অথবা কোনো জায়গায় থাকবেন, তখন কি লোকেরা আপনাকে বিশ্বাস করতে পারে? যখন আপনি এমন কথা বলেন তখন কি আপনি নিজেকে বিশ্বাস করেন? যখন আপনি কিছু প্রতিশ্রুতি দেন, তখন আপনি তা পূরণ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা করার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। কিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তা রক্ষা করার কোন প্রচেষ্টা না করা অন্যায়াচরণ।
যদি আপনি কোনো প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার ক্ষমা চাওয়া উচিত। আপনার ব্যর্থ হওয়ার কারণ সম্পর্কে আপনার মিথ্যা বলা উচিত নয়।
আপনার নিজের ভুলের জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের অন্য কাউকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়। আপনার টিম আপনাকে আর বিশ্বাস করবে না যদি তারা জানে যে আপনি ভুলগুলির ব্যাপারে মিথ্যা বলবেন।
একজন বিশ্বাসযোগ্য লিডার এমন কিছু বলে মানুষকে তার ধারণা অনুসরণ করতে বাধ্য করে না যা সত্য নয়। স্টিফেন কোভে (Stephen Covey) লিখেছেন যে “নেতৃত্ব হল এমনভাবে ফলাফল অর্জন করা যা আস্থাকে অনুপ্রাণিত করে।”[1]
[1]Stephen M. R. Covey. The Speed of Trust: The One Thing That Changes Everything. (New York: Free Press, 2006).
সম্পর্কজনিত বিষয়
অনেকে মনে করে যে বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনের কাছে মিথ্যা বলা ভুল, কিন্তু অন্যান্য শ্রেণীর লোকেদের কাছে মিথ্যা বলা যেতে পারে। কিছু লোক তাদের নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে টাকা বা জিনিসপত্র চুরি করে, কারণ তারা মনে করে যে তারা বেশি বেতন পাওয়ার যোগ্য। কিছু লোক ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে, বিশেষ করে ধনী বিদেশীদের কাছ থেকে চুরি করে। কিছু লোক ভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী বা সামাজিক শ্রেণীর লোকেদের সাথে অসাধু লেনদেন করে।
যিশু বলেছেন যে আমাদের প্রতিবেশীদেরকে আমাদের নিজেদের মতো করেই ভালোবাসা উচিত (মার্ক ১২:৩১)। মনে করে দেখুন, একজন শাস্ত্রবিদ যিশুকে প্রশ্ন করেছিলেন, “আমার প্রতিবেশী কে?” (লূক ১০:২৯)। শাস্ত্রবিদ চেয়েছিলেন যিশু আমাদের কোন শ্রেণীর লোকেদের ভালোবাসতে হবে তা নির্দিষ্ট করে দিক, তাই যিশু উত্তম শমরীয়ের কাহিনীটি বলেছিলেন (লূক ১০:৩০-৩৭)। কাহিনীটি ভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর দু’জন ব্যক্তির সম্পর্কে যারা প্রথমবার মিলিত হয়েছিল। তাদের কোনো পূর্ববর্তী সম্পর্ক ছিল না, এবং তাদের জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। শমরীয় ব্যক্তিটি সর্বহারা ব্যক্তিটিকে সাহায্য করেছিল, যদিও সে তার সঙ্গে কোনো সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল না। এই কাহিনীতে যিশু যে বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন তার মধ্যে একটি হল যে কোনো ব্যক্তিকেই আমাদের ভালোবাসা থেকে বাদ দেওয়া উচিত নয়।
আমরা নির্ধারণ করার কেউ নই যে কোন ব্যক্তি আমাদের সততার যোগ্য। এমন নয় যে আমরা কেবল নির্বাচিত লোকেদের প্রতি সততা বজায় রেখে চলব। এমনকি আমরা যদি মনেও করি যে আমাদের অসততার কারণে কোনো ব্যক্তির ক্ষতি হবে না, তবুও আমরা সৎ হয়েই ঈশ্বরকে খুশি করতে চাই (প্রেরিত ২৪:১৬, এছাড়াও ফিলিপীয় ১:১০, ২ করিন্থীয় ৫:৯ দেখুন)।
আপনি কেমন ধরণে মানুষ হতে চান? ঈশ্বর আপনাকে কেমন ধরণের মানুষ হিসেবে দেখতে চান?
কেউ হয়ত আপনার ভদ্রতার যোগ্য নাও হতে পারে, কিন্তু ঈশ্বর চান যেন আপনি একজন ভদ্র ব্যক্তি হন। কেউ হয়ত আপনার সততার যোগ্য নাও হতে পারে, কিন্তু ঈশ্বর চান আপনি একজন সৎ ব্যক্তি হন। কেউ হয়ত আপনার ভালোবাসার যোগ্য নাও হতে পারে, কিন্তু ঈশ্বর আপনাকে তখনও ভালোবাসতেন যখন আপনি তার যোগ্য ছিলেন না, এবং ঈশ্বর চান আপনি একজন প্রেমময় ব্যক্তি হন।
► শিক্ষার্থীরা গ্রুপের জন্য ১ পিতর ২:২১-২৩ এবং ১ পিতর ৩:৮-১২ পদ পড়বে।
অন্যের চরিত্র দিয়ে আপনার নিজের চরিত্র নির্ধারণ করবেন না। কেউ আপনাকে মিথ্যা কথা বলতেই পারে, কিন্তু আপনার মিথ্যাবাদী হওয়া উচিত নয়। কেউ আপনার থেকে চুরি করতেই পারে, কিন্তু আপনার চোর হয়ে ওঠা উচিত নয়। কেউ আপনার প্রতি অভদ্র আচরণ করতে পারে, কিন্তু আপনার সবসময়েই সেই ব্যক্তি হয়ে থাকা উচিত যে সম্মানের সাথে আচরণ করে।
বাস্তব জীবনের দৃষ্টান্ত
এই বিভাগের সমস্ত দৃষ্টান্তই সত্য ঘটনা, কিন্তু নাম এবং বিবরণ পরিবর্তন করা হয়েছে। এইগুলি চুরি করা বা মিথ্যা কথা বলা বা দুটোরই উদাহরণ।
ক্লাস লিডারের জন্য নোট: নিশ্চিত করুন যে শিক্ষার্থীরা প্রতি দৃষ্টান্তে কী ঘটেছে তা বুঝতে পারছে। শিক্ষার্থীদেরকে ব্যাখ্যা করতে বলুন যে কেন দৃষ্টান্তে উল্লিখিত কাজটি ভুল।
১। জীতেন একটি কারখানায় চাকরি করত। সে প্রায়দিনই ক্লিনিং করার বিভিন্ন উপকরণ, সরজ্ঞাম, এবং ছোটোখাটো জিনিস বাড়িতে নিয়ে যেত, কারণ সে জানত যে কারখানাটি এগুলি আবার দেবে।
২। পরেশ একটা বড়ো কোম্পানিতে ট্রাক-ড্রাইভার হিসেবে চাকরি করত। কোন কোন সময় যখন যে কোম্পানির ট্রাক চালিয়ে নিয়ে যেত, সে রাস্তার ধারে একটা সাইনবোর্ড দেখতে পেত যেখানে লেখা ছিল, “আমরা ডিজেল কিনি।” সে মাঝে মাঝে থামত এবং তাদের কাছে ট্রাক থেকে কিছুটা পরিমাণ ডিজেল বিক্রি করত, কারণ সে জানত যে কোম্পানি জানতে পারবে না যে অল্প পরিমাণ তেল বের করে নেওয়া হয়েছে।
৩। ইন্দ্রানী যে অফিসে চাকরি করত, সেখানে তাকে বিশ্বাস করে অফিসের জন্য কম্পিউটার সামগ্রী কিনতে দেওয়া হয়েছিল। সে বিলে বেশি টাকা লেখার জন্য দোকানের সেলসম্যানকে ঘুষ দিয়েছিল যাতে সে কিছুটা টাকা রাখতে পারে।
৪। একটা বড়ো শহরের একটা পার্কে একজন ব্যক্তি খারাপ হয়ে যাওয়া লাইট বালব্ বিক্রি করত। যারা সেগুলি কিনত তারা জানত যে সেগুলি কাজ করে না। তারা এগুলি কিনে তাদের অফিসে নিয়ে যেত যেখানে তারা ভালো বালব্গুলি চুরি করত এবং পুরোনো খারাপ বালব্গুলি লাগিয়ে দিত।
৫। অমৃত একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। একদিন এক ছাত্রের বাবা তার কাছে এসে তার ছেলেকে বীজগণিতে ভালো নম্বর দেওয়ার দাবি জানায়। তিনি অমৃতকে টাকা দেন। অমৃত বীজগণিত শিক্ষককে ছাত্রটিকে ভালো নম্বর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
৬। অনির্বাণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। তার বেতন কম ছিল। তিনি তার ক্লাসকে বলেছিলেন যে পরীক্ষাটি খুবই কঠিন হবে এবং তার কাছ থেকে উত্তর লেখা পৃষ্ঠাটি না কিনে কোনো শিক্ষার্থীই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে পারবে না।
৭। অর্ণব ছিলেন একটি সরকারি স্কুলের প্রিন্সিপাল। একদিন তার বন্ধু প্রবীর, যিনি একটি মিশন সংস্থার জন্য কাজ করতেন, জানতে চান যে মিশন সংস্থাটি স্কুলবাড়িটির কিছু ঘর ভাড়া নিতে পারে কিনা। অর্ণব একটি নির্ধারিত ভাড়া বলেছিলেন এবং প্রবীর প্রতি মাসে অর্ণবকে সেই টাকাটা দিতেন। অর্ণব টাকাটা রেখে দিতেন এবং কখনো এই অতিরিক্ত আয়ের কথা কর্তৃপক্ষকে জানাননি।
৮। প্রবীর একটি মিশন সংস্থায় কাজ করতেন যাদের ক্লাসরুমের জন্য কিছু জায়গা ভাড়া নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। প্রবীর তার বন্ধু অর্ণববের কাছে যান, যিনি একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল ছিলেন। তারা ভাড়ার দামে একমত হন, তারপর প্রবীর মিশনকে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত টাকার কথা বলেন। প্রতি মাসে প্রবীর অর্ণববের কাছে টাকা পৌঁছে দিতেন কিন্তু অতিরিক্ত টাকাটা নিজের জন্য রাখতেন।
৯। শেখর একটি মিনিস্ট্রির জন্য কাজ করতেন যাদের একটি নতুন বিল্ডিংয়ের প্রয়োজন ছিল। সেই মিনিস্ট্রি শেখরকে তাদের জন্য বিল্ডিং তৈরি করে দেবে এমন একটি কন্সট্রাকশন কোম্পানির খোঁজ করতে বলেছিল। শেখর একাধিক কন্সট্রাকশন কোম্পানির সাথে কথা বলেছিল। যে কোম্পানিটি সঠিক খরচ বলেছিল তাদের নির্বাচন করার পরিবর্তে, সে এমন একটি কোম্পানিকে নির্বাচন করেছিল যারা তাকে মিনিস্ট্রি থেকে পাওয়া টাকা থেকে কিছু অংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
১০। ব্রজেনের গাড়ির লাইসেন্স নেওয়ার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু সে জানত যে কিছু লাইট কাজ করছিল না বলে এটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে না। সে তার গাড়িটি লাইসেন্সিং বিভাগে নিয়ে যায় এবং সেখানে দেখতে পায় যে তাদের গাড়ি পরীক্ষা এবং লাইসেন্স পাওয়ার লাইনে প্রচুর ভিড়। গেটের কাছে একজন লোক তাকে বলে যে, কিছু পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে সে কোনোরকম পরীক্ষা ছাড়াই দ্রুত লাইসেন্স পেতে পারে। ব্রজেন সেই অর্থ দেয় এবং দ্রুত লাইসেন্স নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।
১১। সিদ্ধার্থ পার্কিং থেকে তার গাড়ি নিতে এসেছিল। পার্কিং অ্যাটেনডেন্ট তাকে পার্কিংয়ের ভাড়া জানায়। সিদ্ধার্থ অ্যাটেনডেন্টকে কম টাকা দেয় কিন্তু তার পার্কিং টিকিটটি অন্য গ্রাহককে দেওয়ার জন্য রেখে দেওয়ার অনুমতি দেয় যাতে অ্যাটেনডেন্ট সিদ্ধার্থের দেওয়া টাকাটি নিজের জন্য রাখতে পারে।
১২। অনিতা পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে পড়াশোনা করেনি। পরীক্ষার দিন ক্লাসে এসে সে পড়াশোনায় ভালো এক বন্ধুর পাশে বসে যাতে তার থেকে টুকে লিখতে পারে।
১৩। ইমরান একটি বড়ো সরকারি খামারের জন্য লাঙল টানার জন্য একটি ট্র্যাক্টর চালাত। সে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে চাইত। সে লাঙলটি তুলেছিল যাতে এটি গভীরভাবে খনন না করে, যা তাকে ট্র্যাক্টরটি দ্রুত চালাতে সাহায্য করেছিল। ক্ষেতটি প্রস্তুত বলেই মনে হয়েছিল, কিন্তু সঠিকভাবে চাষ না করায় ভালো ফসল জন্মায়নি।
১৪। পাস্টার মৃন্ময়কে একটি মিশন সংস্থা একটি মন্ডলীর পালক হিসেবে পাঠিয়েছিল। মিশন সংস্থাটি তাকে মাসিক বেতন পাঠাত। যেহেতু পাস্টার মৃন্ময় চেয়েছিলেন যে মন্ডলীও তাকে বেতন দিক, তাই তিনি তার মন্ডলীর লোকেদের বলেছিলেন যে মিশন সংস্থাটি তাকে কোনোরকম সাহায্য পাঠায় না।
১৫। ইলোরার বাড়িতে এক চোর এসে টাকা চুরি করেছিল। যখন সে তার বন্ধুদের এই কথা জানায়, তখন সে বলেছিল যে চোর অন্যান্য জিনিসও নিয়ে গেছে যদিও চোরটি তা করেনি। তার বন্ধুরা সহানুভূতি প্রকাশ করেছিল এবং তাকে সেই সবকিছু কেনার জন্য টাকা দিয়েছিলো যা তারা চুরি হয়ে গেছে বলেই জানত।
১৬। জয়ন্ত একটি ছোটো গ্রামের প্রধান ছিলেন। তিনি গ্রামের মন্ডলীর একজন নেতাও ছিলেন। তার গ্রামের লোকেরা আদিবাসী, অশিক্ষিত এবং দরিদ্র ছিল, কিন্তু গ্রামের অনেক জমি ছিল। শহরের ব্যবসায়ীরা কৃষি প্রকল্পের জন্য জমি কিনতে চেয়েছিল। জয়ন্ত গ্রামের সমস্ত জমি বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে শহরে নিজের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন।
১৭। প্রতি বছর সুন্দরবন কমিউনিটি চার্চ একজন মাকে “বর্ষসেরা মা” হিসেবে সম্মানিত করার জন্য নির্বাচিত করে। তারা রত্নাকে নির্বাচিত করেছিল এই কারণে নয় যে সে একজন মায়ের ভালো উদাহরণ ছিল, বরং এর কারণ ছিল যে তারা জানত যে মন্ডলীর জন্য সে অর্থ প্রদান করবে। তারা তাকে সম্মানিত করার পর, রত্না মন্ডলীর প্রপার্টির নতুন গেট কিনতে অর্থ দান করেছিল। পরের বছর, মন্ডলী রত্নাকে আবার “বর্ষসেরা মা” হিসেবে নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নেয়, যদিও সে অন্য শহরে চলে গিয়েছিল।
১৮। বিক্রম একটি মিনিস্ট্রিতে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করত। প্রতি সন্ধ্যায় সে একটি নিরাপদ স্থানে পার্ক করার জন্য গাড়িটিকে নিয়ে যেত। কিছু কিছু সময়ে গাড়িটি পার্ক করার আগে সে ওই গাড়িতে অন্য যাত্রীদের পরিষেবা দিত বা তার নিজের খরিদ্দারদের মালপত্র বহন করত।
জাতীয়স্তরে অসততার ফলস্বরূপ একটি দুঃখজনক ঘটনা
কাহিনীটি কাল্পনিক, কিন্তু এটি বিভিন্ন জায়গায় কী ঘটে তা বর্ণনা করেছে।
বোরোল (Borol) শহরের বিশ্বাসীরা জানতে পেরেছিল যে পাশের জেলাতে এক বিশাল জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে। সেই জেলার লোকেরা ইবান (Ibanese) নামে একটি প্রাচীন গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ইবানীয়রা আদিম ঘরে বসবাস করত, যাদের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা বা শিক্ষার খুব বেশি সুযোগ ছিল না। অনেকের কাছে পর্যাপ্ত খাবারও ছিল না, এবং কেউ কেউ অনাহারেও ছিল।
বোরোল বিশ্বাসীরা ইবানিজদের সাহায্য করার জন্য অর্থ প্রদান করা শুরু করেছিল। তারা অন্যান্য কাউন্টির মন্ডলীগুলিতে চাঁদা চাইতে প্রতিনিধিদের পাঠিয়েছিল।
বোরোলের বিশ্বাসীরা ইবানিজদের কাছে ট্রাক ভর্তি খাবার পাঠাতে শুরু করেছিল। খাবার বিতরণের জন্য তারা ইবানিজ মন্ডলীর লিডারদের উপর নির্ভরশীল ছিল।
ইবানিজ লিডাররা তাদের লোকজনের কাছে খাবার বিক্রি করার জন্য একটা বাজার স্থাপন করেছিলেন। কেবল যাদের কাছে টাকা ছিল, তারাই খাবার কিনতে পারত, তাই এর কোনোটিই ক্ষুধার্ত মানুষদের কাছে পৌঁছাত না। মন্ডলীর লিডাররা এবং তাদের বন্ধুরা লাভের অংশ রেখে দিত। কিছু খাবার অন্য কাউন্টিতে বিক্রি করার জন্য পাঠাতো যেখানে লোকেদের আরো বেশি দাম দেবার ক্ষমতা ছিল।
বোরোল বিশ্বাসীরা জোর দিয়েছিল যে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এমন লোকদের কাছে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করতে হবে। ইবানিজ মন্ডলীর লিডাররা বিতরণের জন্য একটি বাজেট তৈরি করেছিল যার মধ্যে ড্রাইভারসহ ট্রাক ভাড়া এবং সাহায্যের জন্য লোকেদের অর্থ প্রদান করা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা স্বাভাবিক দামের চেয়ে বেশি দাম নির্ধারণ করেছিল এবং অতিরিক্ত অর্থ নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিল। যখন বোরোল বিশ্বাসীরা খরচের রিপোর্ট চেয়েছিল, তখন ইবানিজরা মিথ্যা রিপোর্ট লিখেছিল।
বোরোল বিশ্বাসীরা যখনই অসৎ কর্মকাণ্ডের কথা জানতে পেরেছিল, তখনই তারা হতাশ এবং নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিল। তারা সাহায্যের জন্য অন্যান্য ইবানিজ লিডারদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করত কিন্তু একই সমস্যায় পড়ত। অনেক বোরোল বিশ্বাসী দান করা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিছুজন ক্রমাগত দান করেই যেত। বোরোল থেকে আসা সহায়তার কারণে কিছু ইবানিজ পাস্টারের খুব শীঘ্রই ভালো বাড়ি-গাড়ি হয়ে গিয়েছিল। অন্যান্য পাস্টাররা তাদের ঈর্ষা করতে এবং বোরোল নিবাসী দাতাদের সাথে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করত। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশিরভাগ ক্ষুধার্ত মানুষই কখনোই সাহায্য পায়নি।
শেষ উদাহরণ
ওয়ারেন বাফেট (Warren Buffet) ছিলেন বার্কশায়ার হ্যাথওয়ে (Berkshire Hathaway) নামক একটি কোম্পানির প্রধান কার্য নির্বাহক। তিনি ম্যাকলেন ডিস্ট্রিবিউশন (McLane Distribution) নামে একটি কোম্পানি কিনতে চেয়েছিলেন যার মালিক ছিল ওয়ালমার্ট (Walmart)। এই হস্তান্তরের মূল্য ছিল ২৩ বিলিয়ন ডলার। সাধারণত এই লেনদেনের জন্য কয়েক মাস ধরে পরিদর্শনের প্রয়োজন হয় যাতে একজন ক্রেতা সবকিছু পরীক্ষা করতে পারে। বাফেট ওয়ালমার্টের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেছিলেন এবং একটি মিটিংয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। সম্পত্তি এবং অন্যান্য সম্পদ ঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি অন্য কাউকে পাঠাননি। তিনি পরে বলেছিলেন, “আমরা জানতাম যে সবকিছু ঠিক তেমনই হবে যেমনটি ওয়ালমার্ট বলেছিল, এবং তাই-ই হয়েছিল।” এই বিশাল চুক্তিটি দ্রুত সম্পন্ন হয়েছিল কারণ লিডাররা একে অপরকে বিশ্বাস করেছিলেন।[1]
এবার আগের দৃষ্টান্তগুলিতে বর্ণিত ব্যক্তিদের কথা ভাবুন। তাদের কেউই এই ধরণের চুক্তি করতে সক্ষম হবে না, কারণ তারা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সবকিছুই পরীক্ষা করতে হবে, যার জন্য অনেক সময় এবং ব্যয় প্রয়োজন হবে।
[1]Stephen M. R. Covey. The Speed of Trust: The One Thing That Changes Everything. (New York: Free Press, 2006), 15
গ্রুপে আলোচনার জন্য
► আপনার সমাজ-সংস্কৃতিতে এমন কোন কোন অসৎ অভ্যাস আছে যা মানুষের পক্ষে এড়িয়ে চলা কঠিন?
► কোন অভ্যাসটি আপনার পরিবর্তন করা উচিত?
প্রার্থনা
স্বর্গস্থ পিতা,
ধার্মিকতা এবং সত্যের ঈশ্বর হওয়ার জন্য আমরা তোমার প্রশংসা করি। আমাদের প্রতি সর্বদা সত্যনিষ্ঠ থাকার জন্য আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাই।
আমাদের জন্য তোমার সততার যে মাপকাঠি রয়েছে তা অনুসরণ করতে আমাদেরকে সাহায্য করো। আমাদেরকে সাহায্য করো যেন আমরা যা বলি এবং করি তার সবকিছুতে সততার নীতি প্রয়োগ করতে পারি।
আমাদের পিতা হওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ যিনি আমাদের সব চাহিদা পূরণ করেন এবং আমাদের নির্দেশনা প্রদান করেন। আমাদের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে আমরা তোমাকে বিশ্বাস করতে চাই।
আমেন
১০ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) নিচের প্রতিটির উপর একটি করে অনুচ্ছেদ লিখুন:
ঈশ্বরের চরিত্র (সত্য) এবং আমাদের জন্য ঈশ্বরের মাপকাঠির (সততা) মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করুন। ব্যাখ্যা করুন কেন ঈশ্বর চান যে আমরা সমস্ত কথায় এবং আমাদের সমস্ত আচরণে সৎ হই।
বাইবেল সততার ব্যাপারে কী বলে তা সংক্ষেপে লিখুন। আপনার সংক্ষিপ্ত বিবরণে অন্তত তিনটি শাস্ত্রীয় পদ লিখুন।
অন্যদের সাথে আপনার সম্পর্কে অসততা/সততা কীভাবে প্রভাব ফেলে তা অন্তত চারটি উপায়ে বর্ণনা করুন।
(২) সততা সম্পর্কে একটি বাইবেলভিত্তিক উপস্থাপনা প্রস্তুত করুন যা আপনি আপনার সংস্কৃতির কিছু লোকের সাথে শেয়ার করতে পারেন। ঈশ্বরের মাপকাঠির জন্য বাইবেলের একটি উদাহরণ দিন, তারপর নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এটি প্রয়োগ করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.