রোমীয় ৬ অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হল পাপের কর্তৃত্ব থেকে উদ্ধার। অনুতাপ এবং বিজয়লাভ বোঝার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে, পাপ কী।
► পাপ কী?
বাইবেল সাধারণত পাপপূর্ণ কাজগুলিকে বলে ইচ্ছাকৃত (১ যোহন ৩:৪-৯, যাকোব ৪:১৭)। একজন ব্যক্তি যখন উদ্দেশ্যমূলকভাবে এবং জেনেশুনে ঈশ্বরের অবাধ্য হওয়া বেছে নেয়, তখন তা হয় ইচ্ছাকৃত পাপ।
ঈশ্বরের পরম নিয়মের কিছু অসচেতন বা দুর্ঘটনাজনিত লঙ্ঘন আছে যা ইচ্ছাকৃত পাপের মতো ঈশ্বরের সাথে আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করে না। আমরা যখন আলোতে চলি (আমরা যে সত্য জানি, সেই সত্য অনুযায়ী জীবনযাপন করি), আমরা সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ হয়েছি (১ যোহন ১:৭) এবং আমাদের এই ভয়ে থাকার দরকার নেই যে অজানা লঙ্ঘনগুলি আমাদেরকে ঈশ্বরকে থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।
এই অনুচ্ছেদটি মূলত ইচ্ছাকৃত পাপের কথা বলছে, যা বিশ্বাসকে নাশ করে এবং ঈশ্বরের সাথে একজনের সম্পর্কের ক্ষতি করে।
৪র্থ পর্বে রোমীয় ৬-৮ অধ্যায়ের বিষয়বস্তু হল যারা ধার্মিক রূপে গণিত হয়েছে তাদের পবিত্রকরণ।
এই পর্যায়ে পর্যন্ত, পৌল আরোপিত (imputed) ধার্মিকতা সম্পর্কে কথা বলেছেন। এটি হল সেই ধার্মিকতা যা একজন বিশ্বাসীর জীবনে তার পূর্ববর্তী পাপের স্থানে দেওয়া হয়েছে। এরপর তিনি প্রদত্ত (imparted) বা প্রদান করা ধার্মিকতার সম্পর্কে কথা বলা শুরু করেছেন। প্রদত্ত ধার্মিকতাও ধার্মিকরূপে গণিত হওয়া (justification)-র সময়ে অনুগ্রহ দ্বারা দান করা হয় এবং এর অর্থ হল যে সেই বিশ্বাসী পাপের কর্তৃত্ব থেকে মুক্ত হয়ে প্রকৃতভাবে ধার্মিক হয় এবং একটি পবিত্র জীবন যাপন করার জন্য পবিত্র আত্মা দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হয়। অতএব, বিশ্বাসীকে কেবল পবিত্র বলে গণ্য করা হয় না, বরং তাকে পবিত্র করে তোলা হয়; এটিকে পবিত্রকরণ (sanctification) বলা হয়।
এই পাঠে আমরা রোমীয় ৬ অধ্যায়টি অধ্যয়ন করব, যার বিষয়বস্তু হল পাপের উপর বিজয়।
৬ অধ্যায়ের মূল পয়েন্ট
বিশ্বাসী পাপের দাসত্ব থেকে মুক্ত এবং তাকে অবশ্যই পাপের ওপর বিজয়ীভাবে এবং ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্যে জীবন যাপন করতে হবে, যাতে সে পুনরায় পাপের নিয়ন্ত্রণে না ফিরে যায়।
৬ অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ
রোমীয় ৬ অধ্যায়টি হল বহু মানুষের মধ্যে থাকা একটি ভুল ধারণার প্রত্যুত্তর: ভুল ধারণাটি হল যে, অনুগ্রহের কারণে বিশ্বাসীদের ঈশ্বরের আইনের প্রতি অনুগত জীবন যাপনের প্রয়োজন নেই। এটি ভুলটি অনুগ্রহ সম্পর্কে একটি ভুল বোঝাবুঝির ওপর ভিত্তিশীল। দু’টি প্রকল্পিত বা অনুমানমূলক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা এবং তার উত্তর দিয়ে পৌল এই ভুলটির প্রত্যুত্তর করেছেন (৬:১, ১৫)।
কিছু ব্যক্তি ৫:২০ পদ পড়ে যুক্তি দেয় যে আমাদের ক্রমাগত পাপ করা উচিত, যাতে আমরা আরো অনুগ্রহ পেতে পারি (৬:১)। তাদের মানসিকতা অনেকটা এরকম যে যেহেতু আমাদের পাপের নথি আরোপিত ধার্মিকতার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে গেছে, তাই আমরা পাপ করা অব্যাহত রাখলেও কোনো ব্যাপার নয়।
আরেকটি যুক্তি আছে যেখানে কিছু কিছু লোক মনে করে যে বিশ্বাসীদের ঈশ্বরের আইনের প্রতি আনুগত্যে জীবন যাপন করার প্রয়োজন নেই। আমরা অনুগ্রহ দ্বারা গৃহিত হয়েছি, আমাদের কাজের দ্বারা নয়। এটাই হল কারণ যার জন্য তারা ভুলবশত মনে করে যে আমরা যা করি তা গুরুত্বপূর্ণ নয় (৬:১৫)।
পৌল দৃঢ়ভাবে অনুমানমূলক এই দু’টি প্রশ্নের যুক্তিকেই প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি একটি ব্যাখ্যা দ্বারা প্রত্যুত্তর দিয়েছেন যে কেন পাপের উপর বিজয় এত গুরুত্বপূর্ণ।
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ৬ অধ্যায় পড়তে হবে।
পদের টীকাভাষ্য
(৬:১) এখানে প্রেরিত একটি প্রশ্ন করেছেন যা কেউ করতে পারে শুনে যে অনুগ্রহ পাপের চেয়ে অধিক মাত্রায় উপচে পড়েছে। কেউ কেউ ভাবতে পারে যে পাপ তার ফলাফলগুলিতে আসলে ভালোই কারণ, এটি অধিক অনুগ্রহের রাস্তার তৈরি করে। এই ধারণাটির অর্থ হবে যে আমরা অসচেতনভাবে পাপে জীবন যাপন করার জন্য স্বাধীন।
(৬:২) প্রেরিত বেশ আপত্তিসহ প্রশ্নটিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এরপর তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে আমাদের পক্ষে ক্রমাগত পাপে জীবন যাপন করা সম্ভব নয়, কারণ আমরা পাপের কাছে মৃত।
(৬:৩-৫) আমরা আর পাপ করি না কারণ আমরা খ্রিষ্টের মৃত্যু এবং পুনরুত্থানে তাঁর সাথে ঐক্যবদ্ধ। যেমন রোমীয় ৫:১৫-১৯ ব্যাখ্যা করেছে, যিশু আমাদের সকলের জন্য পরিত্রাণের কার্য সম্পন্ন করেছেন। বিশ্বাস দ্বারা আমরা তাঁর সাথে সংযুক্ত হই, যাতে ঈশ্বরের অনুগ্রহ যেমন খ্রিষ্টের প্রতি হয়েছে তেমনই আমদের প্রতিও উপচে পড়ে।
যিশু একবারই পাপের জন্য মরেছেন, এবং তারপর ঈশ্বরের জন্য জীবন যাপন করেছেন। যিশুর মৃত্যু হয়েছিল আমাদের পাপের জন্য, তাঁর নিজের পাপের জন্য নয়, কিন্তু পয়েন্ট হল যে পাপের বিষয়টি শেষ হয়ে গেছে। বিশ্বাস দ্বারাই, আমরা তাঁর সাথে মরেছি এবং জীবিত হয়েছি; যেন পাপের সাথে আমাদের সব সম্পর্কও শেষ হয়ে যায়।
বাপ্তিষ্ম হল যিশুর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের একটি পুনঃনাট্যায়ন (reenactment), যা আমাদের অংশগ্রহণের প্রতীক।
(৬:৬) পুরনো সত্তা (old self) মন-পরিবর্তনের আগে পাপময় জীবনকে প্রতিনিধিত্ব করে। (এই পাঠের পরবর্তী বিভাগে পুরনো সত্তার ধারণাটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে।) পাপের জীবন সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে গেছে, ফলস্বরূপ আমরা আর কোনোমতেই পাপের দাস নই।
পাপের প্রতি কী ঘটেছে সেই বিষয়ে এই প্যাসেজে ব্যবহৃত শব্দগুলি লক্ষ্য করুন: এটি মৃত, ক্রুশারোপিত, এবং বিনাশপ্রাপ্ত। এই শব্দগুলি পাপের উপর সমগ্র বিজয়কে তুলে ধরে।
(৬:৭-১১) এই পদগুলির মূল বক্তব্য এই যে বিশ্বাসীর ওপর পাপের নিয়ন্ত্রণ শেষ হয়ে গেছে। দৃষ্টান্ত হল মৃত্যু। যে ব্যক্তি মৃত সে পাপ থেকে মুক্ত, এবং আমাদেরকে একটি আত্মিক অভিজ্ঞতা লাভ করতে হয় যা মৃত্যুর মতো।
পুনরুত্থানের পর, যিশুকে আবার মরতে হয়নি এবং তিনি ক্রমাগত মৃত্যুবরণ করছেন না। তিনি মৃত্যুর সাথে সব সম্পর্ক মিটিয়ে দিয়েছেন। আমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পাপে মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং এটির সাথে সমস্ত সম্পর্ক শেষ করতে হবে এবং এটি থেকে মুক্ত হতে হবে। পাপের মৃত্যু সমাপ্ত হতে হয়, তারপর আমরা ঈশ্বরের জন্য জীবন যাপন করি।
রোমীয় ৬:১-২৩ পদে পৌলের বর্ণনা অনুযায়ী পাপে খ্রিষ্টের মৃত্যু, তাঁর সমাধি, এবং পরবর্তী পুনরুত্থানের সাথে খ্রিষ্টবিশ্বাসীর সম্মিলন খ্রিষ্টবিশ্বাসীদেরকে পাপের ক্ষমতা এবং দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছে। তাকে পাপে মৃত (রোমীয় ৬:২) এবং তা থেকে মুক্ত (রোমীয় ৬:৭) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পাপে মৃত হওয়ার অর্থ হল আর কোনোমতেই পাপের কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণের অধীনে না থাকা। বিশ্বাস দ্বারা, একজন বিশ্বাসীকে আবশ্যিকভাবে নিজেকে পাপে মৃত, কিন্ত যিশু খ্রিষ্টে ঈশ্বরে জীবিত হিসেবে গণ্য বা বিবেচনা করতে হবে (রোমীয় ৬:১১)। এর অর্থ হল, একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীকে সেই সবকিছুর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা লাভ করতে হবে যা ঈশ্বর তার সম্পর্কে সত্য বলে ঘোষণা করেছেন। সে পাপকে তার দেহে আর রাজত্ব করতে দেবে না (রোমীয় ৬:১২), বা সে তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলিকে অধার্মিকতার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করবে না (রোমীয় ৬:১৩ক)। বরং, তাকে নিজেকে জীবন্ত বলি হিসেবে, পবিত্র, ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্যরূপে উপস্থাপন করতে হবে (রোমীয় ১২:১), এবং তার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে ধার্মিকতার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে (রোমীয় ৬:১৩, ১৯)।[1]
রোমীয় ৬:১১-তে, গণ্য বা বিবেচনা করা হল একটি একাউন্টিং-এর শব্দ। এটি হল সত্যকে নিশ্চিত করা। এটি কোনো কোনো ছলনার বিবৃতি নয়। প্রেরিত বিশ্বাসীদেরকে যা সত্যি নয় তা বলতে বলছেন না। একজন বিশ্বাসীর উপলব্ধি করা উচিত যে সে এতটাই পরিপূর্ণভাবে পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছে যেন সে মৃত, এবং তার পাপের কর্তৃত্ব থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতায় জীবন যাপন করা বেছে নেওয়া উচিত।
► নিজেকে পাপের প্রতি মৃত মনে করার অর্থ কী?
এই অধ্যায়ের অবশিষ্ট অংশটি পাপের উপর বিজয় গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার আরেকটি কারণ ব্যাখ্যা করে। আমরা পাপের দাস নই, কিন্তু ঈশ্বরের দাস। আপনি উভয়ের সেবা করতে পারবেন না। আপনি যখন পাপের দাস ছিলেন, আপনি কোনো ধার্মিকতা করেননি (৬:২০)। এখন আপনি পাপ থেকে মুক্ত এবং ঈশ্বরের দাস; অতএব, আপনি পবিত্রতায় বাস করছেন (৬:২২)।
(৬:১২-১৩) এখানে আমরা একটি বৈপরীত্য দেখি। যদি আমাদের পাপের উপর বিজয় না থাকে, তাহলে পাপ আমাদের উপর কর্তৃত্ব করবে। বিশ্বাসীরা পাপময় ইচ্ছা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। আপনার দেহকে ভুল কাজের জন্য ব্যবহার করার অর্থ হল এটিকে পাপের কর্তৃত্বের কাছে সমর্পণ করা। পরিবর্তে, আপনার দেহ ঈশ্বরের এবং তা ঈশ্বরের জন্যই ব্যবহৃত হওয়া উচিত।
(৬:১৪) আইনের অধীনে থাকার অর্থ হল ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্যতার জন্য আইনের প্রতি আনুগত্যের উপর নির্ভরশীল হওয়া। পরিত্রাণের অনুগ্রহহীন ব্যক্তিকে কাজের ভিত্তিতে বিচার করা হয়। যেহেতু অনুগ্রহ ছাড়া কেউ পাপের ওপর বিজয়ী হতে পারে না, তাই আইনের অধীনে থাকার অর্থ হল দোষীসাব্যস্ত হওয়া এবং পাপের কর্তৃত্বের অধীনে থাকা। অনুগ্রহের অধীনে থাকার অর্থ হল ঈশ্বরের কাছে গ্রহণযোগ্যতার জন্য অনুগ্রহের উপর নির্ভরশীল হওয়া। অনুগ্রহের অধীনে থাকা ব্যক্তি পাপের কর্তৃত্বের অধীনে থাকে না। আইনের অধীনে বা অনুগ্রহের অধীনে থাকা বলতে পুরাতন নিয়মে বা নতুন নিয়মে থাকা বোঝায় না।
► আইনের অধীন থাকার অর্থ কী তা শিক্ষার্থীদের তাদের নিজেদের ভাষায় পুনরায় ব্যাখ্যা করতে বলুন।
(৬:১৫) এখানে প্রেরিত একটি প্রশ্ন করেছেন যেটি আমরা পাপের অধীনে নই–এই কথাটি শুনে কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে: “বিধানের অধীন নই বলে কি আমরা পাপ করে যেতে পারি?” সেই ব্যক্তি ভাবছে যে যদি আমাদের আনুগত্য দ্বারা ঈশ্বরের কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা সম্পন্ন না হয়, তাহলে আনুগত্য প্রয়োজনীয় নয়। পৌল দৃঢ়ভাবে প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন।
পৌল সরাসরি ব্যাখ্যা করেননি যে কেন অনুগ্রহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা নিজে থেকে চালিয়ে যাওয়া পাপকে আচ্ছাদিত করে না। পরিবর্তে, তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে একজন ব্যক্তি পাপের কর্তৃত্বের অধীনে থাকলে কোনোমতেই ঈশ্বরের দাস হতে পারে না।
(৬:১৬) ঈশ্বর এবং পাপ – একসাথে উভয়ের পরিচর্যা করা অসম্ভব, কারণ আপনি তারই দাস যাকে আপনি মেনে চলেন। যদি আপনি পাপকে মান্য করেন, তাহলে পাপ আপনার প্রভু, যার মানে হল ঈশ্বর আপনার প্রভু নন। যেমন প্রেরিত পিতর বলেছেন যে মানুষের উপরে যা প্রভুত্ব করে, মানুষ তারই দাস (২ পিতর ২:১৯)। পাপের দাস না হয়ে আপনি পাপের কাছে সমর্পণ করতে পারেন না।
(৬:১৭-১৮) বিশ্বাসীরা পাপের ক্ষমতা থেকে উদ্ধার পেয়েছে এবং এখন তারা ধার্মিকতার পরিচর্যা করছে। তারা সুসমাচারের বাধ্য হয়ে এই উদ্ধারের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। পুনরায়, এটি বলা হয়েছে যে ধার্মিকতার পরিচর্যার জন্য তাদের পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়া প্রয়োজনীয় ছিল।
সমগ্র অধ্যায়টি পাপে আবদ্ধ হওয়া এবং বিজয়ে জীবন যাপন করার একটি সম্পূর্ণ বৈসাদৃশ্যকে তুলে ধরে। এখানে কোথাও প্রকাশ করা হয়নি যে একজন বিশ্বাসীর পক্ষে পাপের ক্ষমতার অধীনে থাকা এবং একজন পাপীর পক্ষে পাপ করা অব্যাহত রেখে ধার্মিক হওয়া সম্ভব। পৌল আরো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে পারতেন যে এরকম কোনো উপায় খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।
(৬:১৯) তিনি বলেছেন যে তিনি এটিকে সাধারণ মানুষের [সহজ] ভাষায় ব্যাখায় করছেন যাতে তারা বুঝতে পারে। আগে তারা পাপের কাছে সমর্পণ করেছিল, যা তাদেরকে পাপের আরো গভীর স্তরে নিয়ে গিয়েছিল। এখন, তাদেরকে তাদের কাজে ধার্মিক হতে হবে, যা পবিত্রতার জন্য প্রয়োজনীয়। একজন ব্যক্তি সঠিক কাজ করে পবিত্র হতে পারে না, কিন্তু যদি সে সঠিক কাজ না করে তবে সে পবিত্র নয়।
► আপনি কীভাবে একই সময়ে ঈশ্বরের পরিচর্যা করা এবং পাপের জীবন যাপন করার অসম্ভাব্যতাকে ব্যাখ্যা করবেন?
(৬:২১-২৩) পাপ ভালো কিছু উৎপন্ন করে না, বরং সাধারণভাবে মৃত্যুতে সবকিছু শেষ করে। পাপী মৃত্যু উপার্জন করে; মৃত্যুই হল পাপের বেতন। কোনো বিশ্বাসী অনন্ত জীবন উপার্জন করে না, কারণ সম্ভাব্য কোনো পদ্ধতিতেই সে এটি উপার্জন করতে পারে না; সে এটিকে অনুগ্রহের উপহার হিসেবে গ্রহণ করে।
[1]এই অনুচ্ছদটি লিখেছেন ড. অ্যালান ব্রাউন (Dr. Allan Brown)।
পরিত্রাণের ব্যক্তিগত নিশ্চয়তার ভিত্তি
কেউ কেউ মনে করে যে একজন ব্যক্তি যে মুহূর্তে খ্রিষ্টকে গ্রহণ করেছে, সেই মুহূর্তেই তার পরিত্রাণ নিশ্চিত হয়ে গেছে, এমনকি যখন তার জীবনধারা সম্পূর্ণভাবে তার সেই দাবির বিপরীত।[1] এমনকি যখন পরিত্রাণের দাবি জীবনে রূপান্তরিত হয়নি; এমনকি যখন অনুতাপ এবং রূপান্তরের কোনো ফল দেখা যায় না; এবং এমনকি যখন কোনো ব্যক্তি যিশুর সত্যিকারের শিষ্য হতে অস্বীকার করে, সে মিথ্যাভাবে পরিত্রাণের দাবি করতে পারে। এটি একটি মারাত্মক প্রতারণা এবং অনেক শাস্ত্রাংশ দ্বারা এটির বিরোধিতা করা হয়েছে।
তাই এসো রক্ত সিঞ্চনের দ্বারাঅপরাধী বিবেক থেকে আমাদের হৃদয়কে শুচিশুদ্ধ করে এবং নির্মল জলে আমাদের দেহ ধুয়ে বিশ্বাসের পূর্ণ নিশ্চয়তায় সরল হৃদয়ে ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হই (ইব্রীয় ১০:২২)।
যে পরিত্রাণ অন্তিমকালে প্রকাশিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, যা প্রভুর আগমনের সময় পর্যন্ত বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের পরাক্রমের দ্বারা সুরক্ষিত রয়েছে (১ পিতর ১:৫)।
এই প্যাসেজগুলি থেকে আমরা শিখি যে পরিত্রাণ সম্পর্কে বাইবেলের নিশ্চয়তা বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল:
পরিত্রাণের নিশ্চয়তা বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল যা বোঝায় – “পূর্ণ আশ্বাস।” সুসমাচারের একটি সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারার দ্বারা নিশ্চয়তা শুরু হয় (১ করিন্থিয় ১৫:৩-৪)। কলসীয় ২:২ পদেও এই একই “বোধশক্তির ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণতা লাভ”-এর কথা বলা হয়েছে। আমাদের পরিবর্তে খ্রিষ্টের প্রতিস্থাপক মৃত্যুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে কেবল অনুগ্রহ দ্বারা পরিত্রাণ সিদ্ধ হয় (ইফিষীয় ২:৮-৯)। পরিত্রাণের দাবি পাপহীন পরিপূর্ণতা নয় (কেউই এটির যোগ্য হবে না) বা সর্বদা পরিত্রাণ লাভের অনুভূতি নয়, বরং পরিত্রাণের দাবি হল আমরা ব্যর্থ হলেও যেন খ্রিষ্টের যোগ্যতা এবং পরিত্রাণের কাজ সম্পন্ন করার উপর অবিচল আস্থা অব্যাহত থাকে। বিশ্বস্ততার জন্য একটি আবেগ প্রকৃত পরিত্রাণের বিশ্বাস অনুসরণ করবে।
পরিত্রাণের নিশ্চয়তা আন্তরিক বিশ্বাস – “একটি সত্য হৃদয়”-এর ওপর নির্ভরশীল। একজন খাঁটি রূপান্তরিত ব্যক্তি হল সে যার হৃদয় “অপরাধী বিবেক থেকে শুচিশুদ্ধ হয়েছে” (ইব্রীয় ১০:২২)। শান্তি এবং প্রেম দ্বারা দোষ এবং লজ্জা অপসারিত এবং প্রতিস্থাপিত হয়েছে। একজন খাঁটি রূপান্তরিত ব্যক্তি হল সেই ব্যক্তি যার দেহ “নির্মল জলে ধোওয়া হয়েছে”, কারণ পুরনো বিষয় সব অতীত হয়েছে এবং সবকিছু নতুন হয়েছে (২ করিন্থিয় ৫:১৭)। একজন খাঁটি রূপান্তরিত ব্যক্তি হল সেই ব্যক্তি যে ক্ষমা পাওয়ার জন্য এবং মুক্তি পাওয়ার জন্য তার সকল দোষ এবং পাপ স্বীকার করে (মথি ৬:১২, যাকোব ৫:১৬)।
নিশ্চয়তা জীবন্ত বিশ্বাসের ওপর শর্তযুক্ত – “বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের পরাক্রমের দ্বারা সুরক্ষিত” এই ধারণাটি দুর্গ বা কেল্লার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মতো। ঈশ্বরের ঐশ্বরিক শক্তি আমাদেরকে রক্ষা করে, নিরাপদ রাখে, এবং বিজয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এটি খ্রিষ্টের পরিশুদ্ধ রক্তের শক্তি এবং তাঁর পুনরুত্থানের শক্তি যেটিতে আমরা সেই বিশ্বাসের দ্বারা উপযুক্ত হই যা আমাদের আত্মাকে অনন্ত জীবনের জন্য সংরক্ষিত রাখে। একমাত্র প্রকৃত রক্ষাকারী বিশ্বাস হল সেই বিশ্বাস যা অধ্যবসায় করে; সেই বিশ্বাস যা নিরন্তর খ্রিষ্টে এবং ক্রুশে তাঁর সমাপ্ত কাজের ওপর বিশ্বাস রাখে। বিশ্বাস কোনো কাজ নয়, বরং এটি হল পরিত্রাণের জন্য একটি শর্ত। ইব্রীয় পুস্তকের লেখক এটিকে এইভাবে লিখেছেন: “বিশ্বাস ছাড়া ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা অসম্ভব” (ইব্রীয় ১১:৬)।
অনেকেই মনে করে যে পরিত্রাণের প্রতি কোনো দাবি সংযুক্ত করা হল আইনবাদ (legalism), কিন্তু যিশু এবং নতুন নিয়মের প্রত্যেক লেখক অবিরত বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন।
যদি তোমরা আমার বাক্যে অবিচল থাকো, তাহলে তোমরা প্রকৃতই আমার শিষ্য (যোহন ৮:৩১)।
যদি তোমরা বিশ্বাসে অবিচল থাকো, প্রতিষ্ঠিত ও সুদৃঢ় থেকে সুসমাচারের মধ্যে যে প্রত্যাশা আছে, তা থেকে বিচ্যুত না হও (কলসীয় ১:২৩)।
কিন্তু আমার ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাসের দ্বারাই জীবিত থাকবে,যদি সে পিছিয়ে পড়ে আমি তার প্রতি প্রসন্ন হব না (ইব্রীয় ১০:৩৮)।
বিশ্বাস ও সৎ বিবেক আঁকড়ে ধরে রাখতে পারো। কেউ কেউ এসব প্রত্যাখান করায়, তাদের বিশ্বাসের নৌকার ভরাডুবি হয়েছে (১ তিমথি ১:১৯)।
পরিত্রাণের নিশ্চয়তা বর্ণনা করে জন ওয়েসলি (John Wesley) বলেছেন,
আমার স্বাচ্ছন্দ্য কোনো মতামতের উপর নয়, যা একজন বিশ্বাসী তার পরিত্রাণ হারাতে পারে বা না পারে, গতকাল আমার মধ্যে কোনো শ্রমের দ্বারা তৈরি করা কিছুর স্মরণে নয়; বরং আজ যা আছে তার উপর, খ্রিষ্টে ঈশ্বর সম্পর্কে আমার বর্তমান জ্ঞানের উপর সেই স্বাচ্ছন্দ্য আছে যা আমাকে স্বয়ং তাঁর সাথে পুনর্মিলিত করছে; আমি এখন যিশু খ্রিষ্টের মুখে ঈশ্বরের মহিমার আলো দেখছি; তিনি যেমন আলোতে আছেন তেমন আলোতে জীবন যাপন করে এবং পিতা ও পুত্রের সহভাগিতা করছি। আমার আনন্দের বিষয় হল যে আমি অনুগ্রহের মাধ্যমে প্রভু যিশু খ্রিষ্টে বিশ্বাস করতে পারি, এবং পবিত্র আত্মা আমার আত্মার সাথে সাক্ষ্য দেয় যে আমি ঈশ্বরের সন্তান।[2]
► পূর্ববর্তী বিভাগগুলির সমস্ত ধারণা থেকে, আপনি কীভাবে বর্ণনা করবেন যে একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী একটি জীবন্ত বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে পরিত্রাণের একটি আশ্বাস বা নিশ্চয়তা পেতে পারে?
[2]John Wesley, “Serious Thoughts Upon the Perseverance of the Saints”, in The Works of John Wesley: Letters, Essays, Dialogs and Addresses Vol. X, (Grand Rapids, MI: Zondervan) 295. এছাড়াও অনলাইনে উপলব্ধ: https://archive.org/details/worksofjohnwesle0010wesl/
পুরনো সত্তা (old self)
প্রেরিতদের পত্রগুলিতে পুরনো সত্তা কথাটি তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে। তিনবারই এটি পৌলের দ্বারা ব্যবহৃত হয়েছে। তাঁদের প্রেক্ষাপটে এই তিনটি উল্লেখের মধ্যে তুলনা করে আমরা এই কথাটি কী অর্থ প্রকাশ করেছে তা দেখতে পারি।
কলসীয় ৩:৯
কলসীয় ৩:৯-১০ক বলে, “পরস্পরের কাছে মিথ্যা কথা বোলো না, কারণ তোমরা তোমাদের পুরোনো সত্তাকে তার কার্যকলাপসহ পরিত্যাগ করে নতুন সত্তাকে পরিধান করেছ”। পৌল বলেছেন যে এই সকল বিশ্বাসীরা ইতিমধ্যেই পুরনো সত্তাকে পরিত্যাগ করেছে। তিনি বলেননি যে তারা ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ পবিত্র হয়ে গেছে, কারণ কলসীয় ৩ অধ্যায়ের বেশিরভাগ অংশই তাদেরকে পবিত্রতায় আহ্বান জানাচ্ছে।
এর আগে তিনি কলসীয় বিশ্বাসীদের বলেছেন, “তাহলে তোমরা... সেই স্বর্গীয় বিষয়সমূহে মনোনিবেশ করো। তোমরা... স্বর্গীয় বিষয়ে মনোযোগী হও। কারণ তোমাদের মৃত্যু হয়েছে এবং এখন তোমাদের জীবন খ্রীষ্টের সঙ্গে ঈশ্বরে নিহিত আছে” (কলসীয় ৩:১-৩)। তিনি আরো বলেছেন, “তাই তোমাদের সমস্ত পার্থিব প্রবৃত্তিকে নাশ করো—অনৈতিক যৌনাচার, অশুদ্ধতা, ব্যভিচার, কামনাবাসনা...” (৩:৫)। ৩:৬ বলে যে এই সমস্ত জিনিস ঈশ্বরের বিচার নিয়ে আসবে, এবং ৩:৭ বলে যে এই বিশ্বাসীরা আগে এই কাজগুলিই করত। পৌল দাবি করেছেন তাদেরকে তাদের জীবনে এই সবকিছু পরিত্যাগ করতে হবে। এই বক্তব্য দ্বারা বোঝা যায় যে তাদের এই সবকিছুকে মৃত্যুতে পতিত করা উচিত।
এরপর তিনি তাদেরকে কিছু বিষয় পরিত্যাগ করতে বলেছেন: ক্রোধ, রোষ, বিদ্বেষ ও পরনিন্দা, এবং মুখে অশ্লীল ভাষা উচ্চারণ করা (৩:৮)। এগুলি খ্রিষ্টীয় জীবনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তারপর আমরা এই বিবৃতিতে আসি যে তাদের এই সবকিছু করা উচিত কারণ তারা ইতিমধ্যেই পুরনো সত্তাকে তার কার্যকলাপসহ সরিয়ে দিয়েছে।
তিনি তাদেরকে পবিত্র বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে (৩:১২), তারপর সম্পর্কের মধ্যে খ্রিষ্টসদৃশতার আহ্বান জানিয়ে (৩:১৩), তারপর তাদের প্রেম পরিধান করার কথা বলে, যা সবকিছুকে নিখুঁত সাদৃশ্যে একত্রিত করে (৩:১৪), উন্নতি সাধনের কথা বলেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে এটি বোঝা যায় যে পুরনো সত্তা সেই পুরনো জীবন ছিল যা রূপান্তরের সময় অপসারিত হয়েছিল। তারা এটি করার কারণে পৌল বিশ্বাস করেছিলেন যে তারা পূর্ণ পবিত্রতায় উন্নতিসাধন করতে পারে।
ইফিষীয় ৪:২২
এই পদটি এমন একটি অংশে আসে যেটি কলসীয়র একটি পদের সাথে সমান্তরাল। ৪:১৭-১৯ পদে তিনি অইহুদী বা বিধর্মীদের জীবনধারা ব্যাখ্যা করেছেন; তারপর ৪:২০-তে তিনি একজন বিশ্বাসীর জীবনের সাথে এটির তুলনা করেছেন। ৪:২১-২৪ “খ্রিস্টকে শেখা” (৪:২০) এবং তাঁকে শোনা এবং তাঁর দ্বারা শিক্ষালাভের (৪:২১) অর্থ প্রকাশ করে। এই জিনিসগুলির মধ্যে পুরনো সত্তাকে ত্যাগ করা এবং নতুন সত্তাকে পরিধান করা অন্তর্ভুক্ত। এটি তাদের রূপান্তরিত হওয়ার সময় যা ঘটেছিল তার অংশ ছিল।
ইফিষীয়র এই অনুচ্ছেদটি কলসীয় ৪ অধ্যায়ের অনুরূপ একটি প্যাটার্ন বা ধরণ অনুসরণ করে। পুরানো সত্তাকে ত্যাগ করা সুসমাচারের অংশ যা তারা ইতিমধ্যে শিখেছে – এই বিবৃতিটির পরে, পৌলের প্রথম আদেশ হল যে তাদেরকে মিথ্যাকে ত্যাগ করতে হবে। তিনি ক্রোধ, কলুষিত কথাবার্তা এবং বিদ্বেষের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি তাদের দয়ালু এবং ক্ষমাশীল হতে বলেছেন। পুরনো সত্তা ইতিমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে – এই বিবৃতিটির পরে এই সমস্ত বিষয় কলসীয় পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পুরনো সত্তা এমন কিছু নয় যা থেকে বিশ্বাসীদের এখনো পরিত্রাণ পেতে হবে, কিন্তু এমন কিছু যা মন-পরিবর্তনের সময়ই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারা তখনও সম্পূর্ণরূপে পবিত্র ছিল না, এবং পৌল তাদেরকে তাদের জীবনে সম্পূর্ণ পবিত্রতার জন্য আহ্বান করেছিলেন যা তারা পুরনো সত্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের শুরু করার প্রস্তুতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
রোমীয় ৬:৬
এই অংশে পৌল অবিশ্বাসী এবং বিশ্বাসীর মধ্যে একটি বড় বৈসাদৃশ্য তুলে ধরেছেন। এই অধ্যায়ের মূল বিষয় হল যিশুর অনুসরণকারীদের নিশ্চিত করা যে তার কাছে পাপের ওপর বিজয় রয়েছে। বিশ্বাসী পাপের ওপর বিজয়ী হয়ে জীবন যাপন করতে পারে তা প্রমাণ করার জন্য তিনি একটি কারণ দিয়েছিলেন যেটি হল পুরনো সত্তাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে। “কারণ আমরা জানি যে, আমাদের পুরোনো সত্তা তাঁর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছে যেন আমাদের পাপদেহ শক্তিহীন হয় এবং আমরা আর পাপের ক্রীতদাস না থাকি।” তিনি স্পষ্টতই বলছেন যে বিশ্বাসী এমন কিছুর কারণে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে যা ইতিমধ্যেই রূপান্তরের সময় সম্পন্ন হয়েছে৷
উপসংহার
পুরনো সত্তা কথাটির অর্থ কী? পুরনো সত্তা হল পাপের আত্ম-কেন্দ্রিক জীবন যা একজন বিশ্বাসী তার রূপান্তরের সময়ে ত্যাগ করে।
নতুন মন-পরিবর্তিত ব্যক্তির তবুও এমন কিছু আচরণ এবং মনোভাব রয়ে গেছে যা নতুনের তুলনায় পুরনো স্বভাবের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই কারণেই পৌল বিশ্বাসীদেরকে তাদের জীবনে আরো সংশোধন করতে বলেছেন যা তাদের পুরনো সত্তার প্রত্যাখ্যানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। তিনি বলেছেন, “যেহেতু তোমরা পাপের পুরনো জীবন ত্যাগ করেছেন, তাই তোমাদের এমন কোনো আচরণ বন্ধ করতে হবে যা ধার্মিকতার নতুন জীবনের সাথে মানানসই নয়।”
আমাদের পবিত্রতার জন্য যিশুর বন্দোবস্ত
রোমীয় ৬:১-১০ পদে আমাদের ব্যক্তিগত পবিত্রতার জন্য যিশুর ব্যবস্থার বিষয়ে আমাদেরকে বলা হয়েছে।[1] যখন আমরা নতুন জন্ম লাভ করেছিলাম, আমরা খ্রিষ্টের স্থান পেয়েছিলাম। তিনি যা কিছুর জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং পুনরুত্থিত হয়েছিলেন তা তাঁর মধ্যে আমাদের হয়ে ওঠে। এর মানে হল যে পাপের ওপর সমগ্র বিজয়লাভের জন্য সমস্ত সম্পদ খ্রিষ্টে আমাদের জন্য রয়েছে।
খ্রিষ্টের সাথে আমাদের একতার কারণে, যা কিছু তাঁর প্রতি ঘটেছিল তা আমাদের প্রতিও ঘটেছে। যখন তিনি মারা গিয়েছিলেন, তখন আমরাও মারা গিয়েছিলাম। যখন তিনি পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, আমরাও তাঁর মধ্যে পুনরুত্থিত হয়েছিলাম। খ্রিষ্টের সাথে এই জীবন্ত ঐক্যের কারণে, পাপের সাথে বিশ্বাসীর একটি সম্পূর্ণ নতুন সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এখন পাপের কাছে মৃত। আমরা পাপের কাজের পাশাপাশি পাপের নীতি – উভয়ের কাছেই মৃত। এটি হল পাপের সাথে আমাদের অবস্থানগত সম্পর্ক।
খ্রিষ্টের সাথে আমাদের মিলনের কারণে আমরা এখন জীবনের নতুনত্বে চলছি, কারণ আমরা তাঁর পুনরুত্থিত জীবনের সহভাগিতা করি।
খ্রিষ্টের সাথে আমাদের মিলনের কারণে, তাঁর ক্রুশবিদ্ধকরণ আমার ক্রুশবিদ্ধকরণ হয়ে ওঠে। যেহেতু তাঁর মৃত্যু পাপের শক্তিকে পরাজিত করেছিল, আমরা আর আমাদের জীবনে এর শক্তির কবলে থাকি না।
গণ্য বা বিবেচনা (consider) করার অর্থ কী? (রোমীয় ৬:১১)। এইক্ষেত্রে, এটি একটি হিসাবশাস্ত্রে (bookkeeping) ব্যবহৃত শব্দ। এটির মানে হল যা আছে তার দায়িত্ব নেওয়া। গ্রীক শব্দটি নতুন নিয়মে ১১বার ব্যবহৃত হয়েছে, যদিও বিভিন্ন অনুচ্ছেদে, এটি বিভিন্ন শব্দে অনুবাদ করা হয়েছে। এখানে এটি “খ্রিষ্টের প্রায়শ্চিত্ত ও পুনরুত্থানে পাপ থেকে প্রদত্ত মুক্তি এবং ঈশ্বরের সাথে মিলনের বিশ্বাস দ্বারা অধিকার”-কে নির্দেশ করে৷[2] ক্রিয়াপদটি বোঝায় যে আমাদেরকে ইতিমধ্যে যা সত্য তা বিশ্বাস করতে হবে: আমরা পাপের কাছে মৃত।
আমি যে পাপের জন্য মৃত এবং খ্রিষ্ট যিশুতে ঈশ্বরের কাছে জীবিত সেই সত্যের কাছে দায়বদ্ধ থাকার জন্য আমাকে কী করতে হবে? বিশ্বাসের দ্বারা আমি আমার হৃদয়ের জন্য সত্য হিসেবে ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করি। আমি ঈশ্বরের অব্যর্থ এবং অভ্রান্ত বাক্যের কর্তৃত্বে ঘোষণা করছি যে আমি সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি এবং আমার প্রভু খ্রিষ্ট যিশুতে ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণরূপে জীবিত হয়েছি।
স্বেচ্ছায় যিশু খ্রিষ্টের প্রেমের দাস হিসেবে, আমি স্বেচ্ছায় সেই সমস্ত মনোভাব এবং কাজ পরিত্যাগ করি যা পুরনো জীবনের বৈশিষ্ট্য ছিল। যিশুর কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ একটি আনন্দ! এবং খ্রিষ্টের সাথে আমার সম্পর্কের ফলস্বরূপ, আমি অনন্ত জীবন পেয়েছি।
উপসংহার
আমরা দেখেছি পাপের নিয়ন্ত্রক শক্তি থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পাওয়া আমাদের রক্তের কেনা বিশেষাধিকার। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, এটা ঈশ্বরের আদেশ যে আমরা বিজয়ী হব।
[3]এই সত্যটি হয়তো আপনি আগে কখনো উপলব্ধি করেননি। ঈশ্বর আপনাকে রক্ষা করেছেন এবং আপনি জীবনের নতুনত্বে হাঁটছেন; কিন্তু আপনি দেখতে পাচ্ছেন যে পাপ এখনো আপনার জীবনে প্রদর্শিত হচ্ছে। আপনি কিছুতেই এটা চান না! কিন্তু ভিতরে এমন কিছু আছে যা নিজের মতো করে প্রকাশিত হতে চায়। যদি এমন হয়, সেক্ষেত্রে পৌলের আদেশ অনুসরণ করে নিজেকে আপনি পাপের কাছে মৃত (৬:১১) এবং ঈশ্বরের কাছে নিজের সমর্পণ (৬:১৩) বিবেচনা করুন।
সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাঁকে দিয়ে দিন! আপনি যদি এটি করেন, তাহলে তিনি আপনাকে পাপের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থেকে মুক্ত জীবনযাপন করতে সক্ষম করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঈশ্বর যা বলেন তা বিশ্বাস করুন এবং বিশ্বাসের দ্বারাই পাপ থেকে আপনার স্বাধীনতা দাবি করুন।
► খ্রিষ্টের সাথে একতা বা মিলনের অর্থ কী? আপনি খ্রিষ্টের সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে আপনি আপনার জীবনে কী আশা করতে পারেন?
[1]এই বিভাগটি লিখেছেন ড. অ্যালান ব্রাউন (Dr. Allan Brown)।
[2]W.T. Purkiser, Exploring Christian Holiness, Vol. 1, (Kansas City, Beacon Hill Press), 138
“আমরা যখন রোমীয় ৬-৮ অধ্যায় অধ্যয়ন করি তখন আমরা আবিষ্কার করব যে, স্বাভাবিক খ্রিষ্টীয় জীবনযাপন করার শর্তগুলি চার ভাগে বিভক্ত। তারা হল (১) জানা, (২) মূল্যবিচার করা, (৩) নিজেদেরকে ঈশ্বরের কাছে উপস্থাপন করা এবং (৪) আত্মায় চলা, এবং তাদেরকে এই ক্রমেই সাজানো হয়েছে।"
- ওয়াচম্যান নী (Watchman Nee)
স্বাভাবিক খ্রিষ্টীয় জীবন (The Normal Christian Life)
কীভাবে বিজয়ের জীবন যাপন করতে হয়
আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন যে পাপের উপর সম্পূর্ণ বিজয়ে জীবন যাপন করা সত্যিই সম্ভব কিনা? ঈশ্বর অনুগ্রহ সক্ষম করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা প্রলোভনে আমাদের দুর্বলতার জন্য ক্ষতিপূরণের চেয়ে বেশি:
মানুষের কাছে সাধারণভাবে যেমন ঘটে থাকে, তা ছাড়া অন্য কোনো প্রলোভন তোমাদের প্রতি ঘটেনি। আর ঈশ্বর বিশ্বস্ত। তোমরা যা সহ্য করতে পারো, তার অতিরিক্ত কোনো প্রলোভনে তিনি তোমাদের পড়তে দেবেন না। কিন্তু তোমরা যখন প্রলোভিত হও, তিনিই তোমাদের রক্ষা পাওয়ার পথও করে দেবেন, যেন তার মধ্যেও তোমরা দাঁড়িয়ে থাকতে পারো। (১ করিন্থীয় ১০:১৩)
এই পদটি আমাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কথা বলে।
১। মানবতার জন্য প্রতিটি প্রলোভনই সাধারণ। এটি আমাদের মানবতার জন্যই আসে এবং কিছু মানবিক দুর্বলতাকে আক্রমণ করে। এর মানে হল যে আপনার কষ্টভোগগুলি একেবারেই আপনার জন্য অনন্য নয়।
২। ঈশ্বর আমাদের সীমা জানেন। তিনি বোঝেন যে আমরা কতটা সহ্য করতে পারি। আমরা সত্যিই জানি না যে আমরা কতটা সহ্য করতে পারি, কিন্তু তিনি জানেন।
৩। ঈশ্বর আমাদের কাছে প্রলোভনগুলিকে সীমিত করেন কারণ তিনি চান আমরা বিজয়ে জীবন যাপন করি। কিছু লোক ধারণা করে নেয় যে প্রলোভন সাধারণত আমাদের ক্ষমতার বাইরে থাকবে কারণ আমরা মানুষ। তারা মনে করে যে ক্রমাগত বিজয় অসম্ভব, কিন্তু এই পদটি অনুযায়ী তা অসম্ভব নয়।
৪। আমাদের বিজয়ে জীবন যাপন করার জন্য যা প্রয়োজন তা ঈশ্বর আমাদের প্রদান করেন। তিনি বেরনোর পথ প্রস্তুত করে দেন।
সুতরাং এই পদটি থেকে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি যে ঈশ্বর চান আমরা যেন বিজয়ে জীবন যাপন করি। বিশ্বাসের প্রত্যুত্তর হিসেবে বিজয়ী জীবন যাপনের জন্য অনুগ্রহ প্রদান করা হয়েছে।
কারণ ঈশ্বর থেকে জাত প্রত্যেক ব্যক্তি জগৎকে জয় করে। আমাদের জয় এই যে, আমাদের বিশ্বাসই জগতকে পরাস্ত করেছে। (১ যোহন ৫:৪)।
ধন্য সেই ব্যক্তি, যে পরীক্ষার মধ্যেও ধৈর্য ধরে, কারণ পরীক্ষা সহ্য করলে সে জীবনমুকুট লাভ করবে, যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ঈশ্বর তাদের দিয়েছেন, যারা তাঁকে ভালোবাসে (যাকোব ১:১২)।
যদি আমরা বুঝতে পারি যে এটি কীভাবে ঘটে যে একজন বিশ্বাসী কখনো কখনো প্রলোভনের দ্বারা পরাজিত হয়, তবে আমরা কীভাবে এটি প্রতিরোধ করতে পারি তা বুঝতে পারি। একজন ব্যক্তি যে প্রলোভনে পতিত হয়, সে সাধারণত নিজেকে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়।
এই পদ্ধতিটি যাকোব ১:১৪-১৫ পদে বর্ণনা করা হয়েছে: “কিন্তু প্রত্যেক মানুষ তার নিজের কামনাবাসনার দ্বারা আকর্ষিত হয়ে প্রলোভনে পড়ে ও কুপথে চালিত হয়। পরে, সেই কামনা পূর্ণগর্ভ হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং...”
জন ওয়েসলি (John Wesley) লক্ষ্য করেছিলেন যে পাপের পদক্ষেপগুলি সাধারণত নিম্নলিখিতভাবে ঘটে।
১। একটি প্রলোভন আসে (জগত, মাংসিক ইচ্ছা বা মন্দতা থেকে)।
২। পবিত্র আত্মা বিশ্বাসীকে সাবধান হওয়ার সতর্কতা প্রদান করেন।
৩। সেই ব্যক্তি প্রলোভনের দিকে মনোযোগ দেয় এবং আকর্ষণ বাড়তে থাকে। (এই পদ্ধতিটিতে এটাই হল সেই জায়গা যেখানে ব্যক্তিটি প্রথম ভুলটি করে।)
৪। পবিত্র আত্মা কষ্ট পান, ব্যক্তির বিশ্বাস দুর্বল হয়ে পড়ে, এবং ঈশ্বরের প্রতি তার ভালোবাসা শীতল হতে শুরু করে।
৫। পবিত্র আত্মা তীব্রভাবে তিরস্কার করেন।
৬। ব্যক্তিটি পবিত্র আত্মার আর্তনাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং প্রলোভনকারীর আকর্ষণীয় স্বর শোনে।
৭। মন্দ আকাঙ্খা শুরু হয় এবং তার হৃদয়কে পরিপূর্ণ করে; বিশ্বাস এবং প্রেম মুছে যায়; সে বাহ্যিক পাপ করতে প্রস্তুত হয়।
আমাদের কখনোই ধারণা করে নেওয়া উচিত নয় যে প্রত্যেক ব্যক্তির অভিজ্ঞতাই সর্বদাই এই প্যাটার্ন বা ধারাটি অনুসরণ করবে। কখনো কখনো লোকজনকে কোনো পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে না গিয়ে হঠাৎ করেই একটি প্রলোভনের কাছে সমর্পণ করতে দেখা যায়।
যেহেতু প্রলোভন আমাদের মনোযোগ ধরে রাখার সময় তার শক্তি বাড়ায়, তাই যে বিশ্বাসী পাপের ওপর বিজয় বজায় রাখার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তাকে তার হৃদয়কে প্রতিষ্ঠিত করতেই হবে যাতে সে অবিলম্বে প্রলোভন প্রত্যাখ্যান করতে পারে। যে ব্যক্তি পাপের দিকে নিয়ে যাওয়া প্রলোভনকে চিনতে পারে কিন্তু এটিকে আটকাতে ইতস্তত বোধ করে, সে নিজেকে বড় বিপদের মধ্যে ফেলে। ইতস্তত করার মাধ্যমে, সে দেখায় যে তার হৃদয় ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য সম্পূর্ণভাবে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ নয়।
প্রলোভন হল আমাদের বিশ্বাসের প্রতি একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ প্রলোভন আমাদেরকে সেই মুহূর্তে ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্যই যে শ্রেষ্ঠ উপায় তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের সুযোগ করে দেয়।
► যদি কোনো বিশ্বাসী পাপের উপর বিজয়ী জীবন যাপন করা দেখতে না পায়, তাহলে এটির কারণ কী হতে পারে?
এটি সম্ভবত নিচের একটি বা একাধিক সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।
১। সে দেখতে পায় না যে ঈশ্বর আনুগত্য চান।
২। সে ঈশ্বরের অনুগ্রহ সক্ষম করার প্রতিজ্ঞা দেখতে পায় না বা বিশ্বাস করে না।
৩। সে ব্যক্তিগত শক্তির পরিবর্তে ঈশ্বরের সক্ষম অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করে না।
৪। সে পরিপূর্ণ, শর্তহীন বাধ্যতার পরিবর্তে নির্বাচিত আনুগত্যের দ্বারা ঈশ্বরের সেবা করে।
৫। সে ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী কাজ করার জন্য একক উদ্দেশ্যের অধিকারী হয়ে উঠতে অনুগ্রহ দ্বারা চায়নি (ফিলিপীয় ৩:১৩-১৫)।
৬। সে সেই আত্মিক নিয়মানুবর্তিতা বজায় রাখে না যা ঈশ্বরের সাথে তার বিশ্বাস-গঠনকারী সম্পর্ককে দৃঢ় রাখে।
৭। সে কোনো স্থানীয় মন্ডলীতে আত্মিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখে চলে না।
৮। সে নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের বাক্য নিয়ে ধ্যান করে না।
৯। সে তার জীবনে পবিত্র আত্মার রবের কোনো চেতনাই গড়ে তোলেনি।
তিনটি লোক একটি ড্রাইভারের চাকরির জন্য অ্যাপ্লাই করেছিল। প্রথমজন, সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল, “আমি এমন একজন দক্ষ চালক যে আমি যদি একটি পাহাড়ের খাদের কয়েক ফুট দুরত্বে খুব জোরে গাড়ি চালালেও আপনাকে চিন্তা করতে হবে না।” দ্বিতীয় ব্যক্তি আগেরজনকে ছাড়িয়ে যেতে চেয়েছিল, তাই সে বলেছিলে, “আমি এটির উপর না গিয়ে একটি খাদের কয়েক ইঞ্চি দুরত্বে খুব জোরে গাড়ি চালাতে পারি।” তৃতীয় আবেদনকারী ইতস্তত করল, তারপর নিয়োগকর্তাকে বলল, “আমি খাদের কাছে গিয়ে আপনার জীবনের ঝুঁকি নেব না।” কাকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে আপনার মনে হয়?
আমরা প্রলোভনের কতটা কাছে যেতে পারি তা দেখার চেষ্টা করা আমাদের উচিত নয়। ঈশ্বর আমাদেরকে ব্যক্তিগত নির্দেশিকা দিতে চান যা আমাদেরকে আমাদের দুর্বলতার ক্ষেত্র থেকে রক্ষা করবে। আমাদের শেখা উচিত কোনগুলি বিপদজনক, যেমন কিছু নির্দিষ্ট ধরণের বিনোদন, এবং আমাদের সেগুলি থেকে দূরে থাকা উচিত।
যদি একজন বিশ্বাসী ঈশ্বরের সাথে তার সম্পর্ক বজায় রেখে না চলে, তবে তার দ্রুত অনুতাপ করা উচিত, এবং সে আমাদের উকিল বা পক্ষসমর্থনকারী, যিশু খ্রিষ্টের মাধ্যমে পুনঃস্থাপিত হতে পারে (১ যোহন ২:১-২)। তার কোনো ভবিষ্যতের সময়ের জন্য অপেক্ষা করা উচিত নয় যেটিকে সে আরো বেশি উপযুক্ত বলে ভাবছে। যদি সে পুনঃস্থাপিত হতে চায়, পবিত্র আত্মা তাকে ইতিমধ্যেই সেই ইচ্ছা প্রদান করছেন এবং ঈশ্বরের সাথে তার সম্পর্কে তাকে ফিরিয়ে আনছেন। যদি তার অনুতাপ প্রকৃত হয়, সে সঙ্গে সঙ্গে পুনঃস্থাপিত হতে পারে।
ঈশ্বর ইতিমধ্যেই আমাদের পরিত্রাণের জন্য যিশুর আত্মবলিদানের মধ্যে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সাধন করে ফেলেছেন। আমাদের যে অনুগ্রহ অব্যাহত রাখতে হবে তা দিতে ব্যর্থ হয়ে তিনি সেই বিনিয়োগকে নষ্ট হতে দেবেন না।
জেনে রাখার এবং দাবি করার জন্য পাঁচটি সত্য
পাপের কাজের ওপর বিজয় একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর স্বাভাবিক অভিজ্ঞতা কারণ সে যিশুর মৃত্যু, সমাধি এবং পুনরুত্থানের মাধ্যমে পাপের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়েছে।[1] ঈশ্বরের অনুগ্রহের অজ্ঞতা, খ্রিষ্টের সাথে একত্রে থাকার ব্যর্থতা, ক্রমাগত নিজেকে পাপের কাছে মৃত এবং ঈশ্বরের কাছে জীবিত মনে করার ব্যর্থতা এবং ধার্মিকতার একটি উপকরণ হিসেবে ঈশ্বরের কাছে সম্পূর্ণরূপে এবং সিদ্ধান্তমূলকভাবে নিজের দেহকে উপস্থাপন করার ব্যর্থতা থেকে ক্রমাগত পাপ সাধিত হয়।
প্রত্যেক প্রকৃত বিশ্বাসী পাপের ওপর বিজয়ের অভিজ্ঞতা লাভ করতে চায়। আমাদের পাপ থেকে বাঁচানোর জন্য যিশু যে বেদনাজনক মূল্য দিয়েছিলেন তার কারণেই এমনটা হয়৷ এটির কারণ পাপের ধ্বংসাত্মক প্রকৃতি। যারা তর্ক করবে যে “যেহেতু অনুগ্রহ পাপের জন্য বৃদ্ধি পায়, তাহলে কেন পাপ করব না?”, তাদের জন্য পৌলের উত্তরটি খুবই দৃঢ়। “কোনোমতেই নয়!” তিনি ঘোষণা করেছেন (রোমীয় ৬:১-২)। ঈশ্বর পাপের জন্য একটি নিরাময় প্রদান করেছেন – এই কারণটি দেখিয়ে কেউ যদি পাপের রোগের প্রতি অসতর্ক মনোভাব রেখে চলে, তাহলে তা অনেকটা কেবল চিকিৎসাজনিত নিরাময় আবিষ্কার করা হয়েছে বলে HIV/AIDS, বা ক্যান্সারের প্রতি অসতর্ক মনোভাব অবলম্বন করার মতো বিষয় হবে। নিরাময় কাউকেই ব্যথা এবং অসুস্থতার সময় থেকে রেহাই দেবে না। কেউই এটির ক্ষতচিহ্ন থেকে রেহাই পাবে না। সুস্থ মানসিকতার কেউই বলবে না, “চলো আমরা অসুস্থ হই যাতে আমরা নিরাময় পেতে পারি।” যে কেউ পাপের ভয়াবহতা, পবিত্র ঈশ্বরের প্রতি পাপের আক্রমণাত্মকতা এবং পাপের নিরাময়ের জন্য দেওয়া বেদনাদায়ক মূল্যের প্রতি সজাগ বোধযুক্ত হয়েছে, সে কখনোই বলবে না, “চলো পাপ করি, কারণ অনুগ্রহ এটিকে ঢেকে দেবে!”
একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর পাপ থেকে মুক্তির অভিজ্ঞতা তার জ্ঞান (রোমীয় ৬:৩, ৬, ৯) এবং এই সত্যগুলির ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে:
(১) একজন পাপী ব্যক্তি হিসেবে আমার মৃত্যু হয়েছে।
পুরনো সত্তা, যে পুরনো মানুষ আমরা ছিলাম, তা আত্মিকভাবে যিশুর সাথে ক্রুশে মারা গেছে এবং তাঁর কবরে তাঁর সাথে সামাধিস্থ হয়েছে। যেহেতু একজন মৃত ব্যক্তি কোনোমতেই একজন দাস হিসেবে পরিচর্যা করতে পারে না, সেহেতু আমাদের ওপর পাপের প্রভুত্ব চূর্ণ হয়েছে। এই মৃত্যু ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে। আমাদের পুরনো পাপময় জীবনের মৃত্যু সেই মুহূর্তেই ঘটে গিয়েছিল যখন আমরা আমাদের জন্য খ্রিষ্টের মৃত্যুতে বিশ্বাস করেছিলাম, আমাদের পাপের জন্য অনুতাপ করেছিলাম, এবং তাঁর অনন্ত জীবনের উপহার গ্রহণ করেছিলাম।
রোমীয় ৬ থেকে এই বিবৃতিগুলি লক্ষ্য করুন:
“…আমরা পাপের পক্ষে মৃত, তাহলে কী করে আমরা আবার পাপে জীবনযাপন করব?” (৬:২)।
“…আমরা যারা খ্রীষ্ট যীশুতে বাপ্তাইজিত হয়েছি, আমরা সকলে তাঁর মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হয়েছি?” (৬:৩)।
“সেই কারণে আমরা মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তিষ্মের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে সমাধিপ্রাপ্ত হয়েছি…” (৬:৪)।
“যদি আমরা এভাবে তাঁর মৃত্যুতে তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে থাকি…” (৬:৫)।
“কারণ আমরা জানি যে, আমাদের পুরোনো সত্তা তাঁর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছে যেন আমাদের পাপদেহ শক্তিহীন হয় এবং আমরা আর পাপের ক্রীতদাস না থাকি।” (৬:৬)।
“কারণ যার মৃত্যু হয়েছে, সে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছে” (৬:৭)।
আজ অনেক বিশ্বাসীদের সমস্যা হল যে তারা তাদের ক্ষমতার অধীনে জীবন যাপন করে। অনেক বিশ্বাসীদেরকে ব্যর্থতাকে স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করার শর্ত দেওয়া হয়েছে। তারা মনে করে যে একটি বিজয়ী খ্রিষ্টীয় জীবন সম্ভব নয় এবং সেই ক্রমাগত পাপ আবশ্যিক। অন্যান্য বিশ্বাসীরা মনে করে মানুষের ব্যর্থতা সহ্য করার ক্ষমতা নেই। এই শিক্ষাটি বিশ্বাসের জন্যও ধ্বংসাত্মক এবং অনেককেই হতাশা বা ভন্ডামীর দিকে নিয়ে গেছে। ক্রুশে খ্রিষ্টের বিজয়ের অংশীদারিত্বের মাধ্যমে পৌল এটা স্পষ্ট করে দেন যে বিজয় আমাদের।
(২) একজন নতুন ব্যক্তি হওয়ার জন্য ঈশ্বর আমাকে যিশুর সাথে পুনরুত্থিত করেছেন।
যিশু তাঁর পুনরুত্থানের মাধ্যমে সমস্ত পাপকে জয় করেছেন। এটি হল সেই পুনরুত্থিত জীবন যা আমরা বিশ্বাস দ্বারা সহভাগিতা করতে এসেছি। বিশ্বাসের মাধ্যমেই, পাপের আর আমাদেরকে অধীনস্ত রাখার, অপমান করার, ক্ষতবিক্ষত করার বা মেরে ফেলার ক্ষমতা নেই। আমরা আত্মিকভাবে খ্রিষ্টের সাথে একটি নতুন বিজয়ী জীবনে উত্থিত হয়েছি।
“…যেন খ্রিস্ট যেমন পিতার মহিমার মাধ্যমে মৃতলোক থেকে উত্থিত হয়েছিলেন, তেমনই আমরাও এক নতুন জীবন লাভ করি।” (৬:৪)।
“…আমরা নিশ্চিতরূপে তাঁর পুনরুত্থানেও তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত হব।” (৬:৫)।
“কারণ আমরা জানি, খ্রীষ্টকে যেহেতু মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করা হয়েছিল, তিনি আর মরতে পারেন না; তাঁর উপরে মৃত্যুর আর কোনও কর্তৃত্ব নেই।” (৬:৯)।
“যে মৃত্যু তিনি বরণ করেছেন, পাপের সম্বন্ধে একবারেই তিনি চিরকালের জন্য সেই মৃত্যুবরণ করেছেন; কিন্তু তাঁর যে জীবন আছে তার দ্বারা তিনি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই জীবিত আছেন।” (৬:১০)।
“একইভাবে, নিজেদের তোমরা পাপের ক্ষমতার প্রতি মৃত, কিন্তু খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের উদ্দেশে জীবিত বলে গণ্য করো।” (৬:১১)।
“…মৃত্যু থেকেজীবিত মানুষরূপে নিজেদের ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করো…” (৬:১৩)।
(৩) আমি আত্মিকভাবে খ্রিষ্টের সাথে ঐকবদ্ধ।
কেবল আমার পুরনো জীবন তাঁর সাথে ক্রুশারোপিত হয়েছে তা নয়, এবং কেবল আমি তাঁর মতো একটি নতুন জীবন পেয়েছি তাও নয়; বরং আমি তাঁর মধ্যে, এবং তিনি আমার মধ্যে বাস করছেন! (গালাতীয় ২:২০ এবং যোহন ১৪-১৬ দেখুন।) যিশু প্রত্যেক বিশ্বাসীর কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেছেন যে ঈশ্বর পবিত্র আত্মা দ্বারা বিশ্বাসীদের মধ্যে বাস করা মনোনীত করেছেন। এই মিলন এবং বসবাসই পাপের ওপর বিজয় এবং পবিত্র জীবন যাপনের সম্ভব করে তোলে। এটিই বিশ্বাসীদের জন্য যিশুর বিশুদ্ধ, প্রেমময়, করুণাময়, সদয়, ক্ষমাশীল এবং পবিত্র জীবন গ্রহণ করা এবং যাপন করা সম্ভব করে তোলে।
“যদি আমরা এভাবে তাঁর মৃত্যুতে তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে থাকি, আমরা নিশ্চিতরূপে তাঁর পুনরুত্থানেও তাঁর সঙ্গে সংযুক্ত হব।” (৬:৫)।
“…আমাদের পুরোনো সত্তা তাঁর সঙ্গে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছে…” (৬:৬)।
“এখন যদি আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করেছি, আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা তাঁর সঙ্গে জীবিতও থাকব।” (৬:৮)।
যিশু যোহন ১৫ অধ্যায়ে তাঁর শিষ্যদেরকে এই মিলনের বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। খ্রিষ্টীয় জীবনে আমাদের সাফল্যের জন্য খ্রিষ্টের সাথে আত্মিক মিলন আবশ্যক!
(৪) ঈশ্বর আমাকে যে বিজয় দিয়েছেন তা আমাকে অবশ্যই বিশ্বাসের সাথে অর্জন করতে হবে।
একইভাবে, নিজেদের তোমরা পাপের ক্ষমতার প্রতি মৃত, কিন্তু খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের উদ্দেশে জীবিত বলে গণ্য করো। (৬:১১)।
গণ্য বা বিবেচনা করার অর্থ হল এটিকে সত্য হিসেবে মান্যতা দেওয়া যাতে আমরা আমাদের নিজেদের জীবনে এটির অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারি
এখানে পুরাতন নিয়ম থেকে একটি দৃষ্টান্ত দেওয়া হল যা সহায়ক হবে। আমাদের মনে আছে যে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের প্রতিজ্ঞার দেশের কেবল প্রতিশ্রুতিই দেননি, বরং বাস্তবে তাদের অধিকার করার অনেক আগেই এটি তাদেরকে দিয়েছিলেন। ৪০ বছর ধরে তারা মরুভূমিতে ঘুরে বেড়িয়েছিল, তাদের সমস্ত সম্ভাবনার নিচে জীবন যাপন করেছিল, কারণ তারা ভয় পেয়ে গিয়েছিল এবং ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু ঈশ্বর তাদের ভালোবেসেছিলেন এবং তাদেরকে উত্তরাধিকারে নিয়ে গিয়েছিলেন।
যিহোশূয় ১:৩ বলছে, “তোমরা যেখানে যেখানে পা রাখবে, সেই সেই স্থান আমি তোমাদের দেব, যেমন আমি মোশির কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম।” কয়েকটি পদ পরে ঈশ্বর আদেশ করেছেন, “তোমরা শিবিরের মধ্যে গিয়ে লোকদের বলো, ‘তোমাদের সঙ্গের পাথেয় খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করো। এখন থেকে তিনদিনের মধ্যে তোমরা জর্ডন নদী অতিক্রম করবে। তোমরা সেই দেশ অধিকার করবে, যে দেশ তোমাদের নিজস্ব অধিকারবলে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দিতে চলেছেন।’” (যিহোশূয় ১:১১)।
ঈশ্বরের লোকেদের, বিশ্বাসের দ্বারা, ঈশ্বরের দেওয়া দেশের অধিকারী হতে হয়েছিল। কনানের বাসিন্দাদের উপর বিজয়ের জন্য প্রদান করা হলেও, এবং একটি খুব বাস্তব অর্থে ইতিমধ্যেই তা সম্পন্ন হলেও, ইস্রায়েল কেবল অনুগত বিশ্বাসের মাধ্যমেই এই বিজয়টি অনুভব করতে পারত। খ্রিষ্ট যিশু আমাদের জন্য যে বিজয়লাভ করেছেন এবং প্রতিশ্রুতি ধারণ করেছেন তা বিবেচনার দ্বারা, বিশ্বাসের দ্বারা, নতুন নিয়মের বিশ্বাসীরা ঠিক একইভাবে বিজয়লাভ করতে পারে।
(৫) আমাকে অবশ্যই আমার দেহকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করতে হবে।
অতএব, তোমাদের নশ্বর দেহে পাপকে কর্তৃত্ব করতে দিয়ো না, তা না হলে, তোমরা তার দৈহিক কামনাবাসনার আজ্ঞাবহ হয়ে পড়বে। তোমাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে দুষ্টতার উপকরণরূপে পাপের কাছে সমর্পণ কোরো না, বরং মৃত্যু থেকে জীবিত মানুষরূপে নিজেদের ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করো এবং তাঁর কাছে তোমাদের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি ধার্মিকতার উপকরণরূপে সমর্পণ করো (রোমীয় ৬:১২-১৩)।
► বিভিন্ন ছাত্র ছাত্রী আগের বিভাগে উল্লিখিত পাঁচটি সত্যের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করবে।
যিনি তাঁর নিজ পুত্রকেও নিষ্কৃতি দেননি, কিন্তু আমাদের সকলের জন্য তাঁকে সমর্পণ করেছেন—তিনি কি তাঁর সঙ্গে সবকিছুই অনুগ্রহপূর্বক আমাদের দান করবেন না? (রোমীয় ৮:৩২)।
যিনি তোমাদের বিশ্বাসে হোঁচট খাওয়া থেকে রক্ষা করতে সমর্থ, ও যিনি তোমাদের নির্দোষরূপে ও মহা আনন্দের সঙ্গে তাঁর মহিমাময় উপস্থিতিতে উপস্থাপন করবেন, সেই একমাত্র ঈশ্বর, আমাদের পরিত্রাতা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে মহিমা, রাজকীয় প্রতাপ, পরাক্রম ও কর্তৃত্ব, সকল যুগের শুরু থেকে বর্তমানে ও যুগপর্যায়ের সমস্ত যুগেই হোক! আমেন। (যিহুদা ২৪-২৫)।
৬ নং পাঠের পর্যালোচনামূলক প্রশ্ন
(১) পাপ কী তা বোঝা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
(২) ইচ্ছাকৃত পাপের (willful sin) সংজ্ঞা কী?
(৩) রোমীয় ৬ অধ্যায়ে পৌল কোন ভুল ধারণার উত্তর দিয়েছিলেন?
(৪) পাপের কাছে মৃত হওয়ার অর্থ কী?
(৫) অনুগ্রহের অধীন হওয়ার অর্থ কী?
(৬) আইনের অধীনে থাকার অর্থ কী?
(৭) ঈশ্বর এবং পাপ উভয়ের পরিচর্যা করা অসম্ভব কেন?
(৮) পুরনো সত্তা (old self) কথাটির অর্থ কী?
৬ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) বিশ্বাসীর জন্য পাপের উপর বিজয় সম্ভব কিনা তা একটি পাতার মধ্যে ব্যাখ্যা করুন। ইচ্ছাকৃত পাপের একটি সংজ্ঞা লিখুন এবং ব্যাখ্যা করুন যে কেন পাপের সংজ্ঞা গুরুত্বপূর্ণ। পাপের উপর বিজয়ের সম্ভাবনার ক্ষেত্রে মানুষ যে আপত্তিগুলি করে থাকে, তার প্রত্যুত্তর করুন।
(২) আপনাকে আপনার উপদেশ পাঠগুলির তিনটি উপস্থাপনা শেষ করতে হবে।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.