বিভিন্ন ঈশতাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে মণ্ডলীতে বহু শতাব্দী ধরে বিতর্ক হয়েছে। সম্ভবত বাইবেলের অন্য যেকোনো পুস্তকের তুলনায় রোমীয়দের প্রতি পত্রটি বেশি ধর্মতত্ত্বের বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। এই পত্রটিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কিছু উদাহরণ এখানে দেওয়া হল।
যে ঈশতাত্ত্বিক প্রশ্নগুলির উত্তর রোমীয়দের প্রতি পত্রে দেওয়া হয়েছে
ক্লাস লিডারের জন্য নোট: প্রতিটি প্রশ্ন পড়ুন এবং বিভিন্ন সদস্যদের উত্তর দেওয়ার জন্য থামুন। গ্রুপের কোনো প্রশ্নে বেশি সময় ব্যয় করা উচিত নয় এবং সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করাও উচিত নয়। তালিকার উদ্দেশ্য হল এই প্রশ্নগুলি সম্পর্কে একাধিক মতামত রয়েছে তা দেখানো।
১। বিশ্বাস দ্বারা পরিত্রাণ পেতে একজন ব্যক্তিকে কি বিশ্বাস করতে হবে?
২। একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসী তার পরিত্রাণের জন্য কাজ করে না, এর মানে কি?
৩। ঈশ্বর কি কিছু মানুষকে রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং অন্যেদের রক্ষা করার পরিকল্পনা করেননি?
৪। কে পরিত্রাণ পাবে এবং কে নয় তা ঈশ্বর কিভাবে বেছে নেন?
৫। যারা কখনও সুসমাচার শোনেনি তাদের কী হবে?
৬। ঈশ্বর কিভাবে ন্যায়পরায়ণ হতে পারেন যদি তিনি কিছু পাপীকে ক্ষমা করেন এবং অন্যদের শাস্তি দেন?
৭। একজন বিশ্বাসী কি এখনও পাপী?
৮। বাস্তব জীবনে কি ধরনের আধ্যাত্মিক বিজয় সম্ভব?
৯। একজন বিশ্বাসীর পক্ষে কি তার পরিত্রাণ হারানো সম্ভব?
১০। ঈশ্বরের কি এখনও ইস্রায়েলের জন্য একটি পরিকল্পনা আছে?
রোমীয়দের প্রতি পত্রের উদ্দেশ্য
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ১:১১-১৫ এবং ১৫:২৪ পড়তে হবে। রোমে যেতে চাওয়ার জন্য পৌল কোন কারণগুলি উল্লেখ করেছিলেন?
এই পত্রের উদ্দেশ্য ছিল রোমান বিশ্বাসীদের কাছে পৌল এবং তার পরিত্রাণের ধর্মতত্ত্বকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, যাতে
১। বিশ্বাসীদের উত্সাহিত করার জন্য তিনি তাদের কাছে যেতে পারেন (১:১১-১২) এবং রোমে সুসমাচার প্রচার করতে (১:১৫) পারেন৷
২। তিনি তাদের সহযোগিতায় একটি নতুন মিশন কাজ শুরু করতে পারেন (১৫:২৪)।
পৌল ৪৭-৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সময়ে এজিয়ান সাগরের (Aegean Sea) আশপাশে সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। তিনি প্রায় ৫৭ খ্রিষ্টাব্দে[1] রোমীয় বিশ্বাসীদের কাছে পত্রটি লিখেছিলেন। তিনি যিরুশালেমে, তারপর রোমে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। পৌল স্পেনে মিশনারি প্রচেষ্টা শুরু করার জন্য রোমের মন্ডলীটিকে একটি ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন (১৫:২৪), যা ছিল পশ্চিমের প্রাচীনতম রোমীয় উপনিবেশ এবং বিশ্বের সেই অংশে সভ্যতার কেন্দ্র।
যেহেতু পৌল কখনও রোমে যাননি, সেই কারণে পত্রটি তার সফরের জন্য একটি ব্যক্তিগত পরিচয় এবং প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করেছিল। এটিই সম্ভবত রোমীয় ১৬ অধ্যায়ে ব্যাপক অভিবাদনের কারণ।
[2]পৌলের রোম সফর তার পরিকল্পনা মাফিক হয়নি। যিরুশালেমে তাকে গ্রেফতার করা হয়। যখন তার মনে হয়েছিল যে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন না, তখন তিনি সিজারের (Ceasar) কাছে আবেদন করেন। একটি বিপজ্জনক যাত্রার পর, যার মধ্যে একটি জাহাজ ডুবিও ছিল, তিনি প্রায় ৬০ খ্রিষ্টাব্দে একজন বন্দী হিসাবে রোমে পৌঁছেছিলেন। যদিও তিনি বন্দী ছিলেন, তিনি দর্শনার্থীদের গ্রহণ করতে এবং তাদেরকে ও তাদের মাধ্যমে পরিচর্যা করার স্বাধীনতা তার ছিলেন (প্রেরিত ২৮:৩০-৩১)। পৌল বলেছিলেন যে ঘটনাগুলি সুসমাচারের অগ্রগতির জন্য কাজ করছিল (ফিলিপীয় ১:১২)। এমনকি সিজারের পরিবারের লোকেরাও ধর্মান্তরিত হয়েছিল।
কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন যে, পৌল দুই বছর পর মুক্তি পেয়েছিলেন। স্পেনে যাত্রা করেছিলেন কিনা তা জানা যায়নি। আমরা জানি যে তাকে শেষ পর্যন্ত রোমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটি শহরে তার দ্বিতীয় সফর হতে পারে।
তার মিশনারি কাজের ভিত্তি হিসাবে পরিত্রাণের ধর্মতত্ত্ব ব্যাখ্যা করে, পৌল সমস্ত স্থান এবং সকল সময়ে মিশনারি কাজের ভিত্তি দেখিয়েছিলেন।
মিশনারি ট্রিপ শুরু করতে সাহায্য করার জন্য পৌলের অনুরোধের জবাবে স্বাভাবিকভাবেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠবে যে তারা তা কেন করবে। কেউ জিজ্ঞাসা করতে পারে, "কেন আপনিকেই যেতে হবে?" তাই পৌল সুসমাচার প্রচারের কাজের প্রতি তার উত্সর্গের কথা উল্লেখ করে চিঠিটি শুরু করেছিলেন (১:১)। পরে তিনি অইহুদীদের কাছে প্রেরিত হিসাবে তার বিশেষ আহ্বান এবং সাফল্য ব্যাখ্যা করেছিলেন (১৫:১৫-২০)।
কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারে, “কেন প্রত্যেকেরই সুসমাচার শোনার দরকার আছে? হয়তো এই বার্তাটি সর্বত্র প্রয়োজন নেই।” কিন্তু পৌল বিশ্বব্যাপী মানবজাতির জন্য সুসমাচারের কার্যকারিতা (১:১৪, ১৬, ১০:১২) এবং মিশনারি কাজের জরুরীতা (১০:১৪-১৫) ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে বার্তাটি বিশ্বের প্রতিটি ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য, এবং প্রতিটি ব্যক্তির এটি শোনার প্রয়োজন।
[1]এই তারিখগুলি পণ্ডিতদের মতামত, এবং আমরা জানি না যে সেগুলি সম্পূর্ণরূপে সঠিক।
“পৌলের মনে এই ইচ্ছা ছিল যে এই পত্রটিতে খ্রিষ্টের সুসমাচারের সমস্ত শিক্ষাকে সংক্ষিপ্তসারে বোঝা এবং সমগ্র পুরাতন নিয়মের একটি ভূমিকা প্রস্তুতি করা।“
- উইলিয়াম টিন্ডেল
“রোমীয়দের প্রতি পত্রের প্রস্তাবনা” (William Tyndale, “Prologue to Romans”)
প্যাসেজের অধ্যয়ন - রোমীয় ১ম পর্ব
এখন প্রথম প্যাসেজটি দেখুন – পৌলের শুভেচ্ছা এবং ভূমিকা
► একজন শিক্ষার্থীকে গ্রুপের জন্য রোমীয় ১:১-১৭ পড়তে হবে।
কাঠামোর বিষয়ে নোট
১:১-১৭ সুসমাচার বিস্তারের জন্য পৌলের আহ্বান এবং প্রেরণা বর্ণনা করে। এর পরে, ১:১৮-৩:২০ ব্যাখ্যা করে কেন সুসমাচার প্রয়োজনীয়, কারণ পাপীরা যারা অনুতাপ করেনি তারা ঈশ্বরের ক্রোধের অধীন। যাইহোক, ১:১৫-১৯ এই বিভাগগুলির মধ্যে একটি সীমান্ত তৈরি করে। এটি নিজেই একটি কেন্দ্রবিন্দু তৈরি করে সংক্ষিপ্তভাবে সুসমাচারকে প্রকাশ করে: পাপীরা দোষী কারণ তারা ভাল জানে এবং তাই, ক্রোধের অধীন; কিন্তু বিশ্বাসীরা উদ্ধারপ্রাপ্ত।
১:১-১৭ পদের মূল পয়েন্ট
পৌলকে আহ্ববান করা হয়েছিল এবং সুসমাচার বিস্তারের জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছিল, কারণ এটি বিশ্বাসকারীর জন্য পরিত্রাণের বার্তা।
১:১-১৭ পদের সারসংক্ষেপ
১:১-১৪ এর সবকিছুই ১:১৫ এর বিবৃতির দিকে নিয়ে যায়। ১:১৬-১৮ মূলত সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করে সুসমাচার কী এবং কেন প্রত্যেকেরই এটি প্রয়োজন। সুসমাচার হল সেই বার্তা যা জানায় যে ঈশ্বর ক্ষমা প্রদান করেছেন এবং মানুষরা বিশ্বাসের মাধ্যমে তা পেতে পারে। সমস্ত মানুষেরই এই বার্তার প্রয়োজন ,কারণ তারা ঈশ্বরের ক্রোধের অধীনে রয়েছে।
সম্পূর্ণ রোমীয় পুস্তকটি ১:১৬-১৮ পদের বিবৃতিগুলি ব্যাখ্যা করে।
পদের টীকাভাষ্য
(বন্ধনীতে দেওয়া অধ্যায় ও পদগুলি আলোচনা করা হয়েছে।)
(১:১) পৌল নিজের বিষয়ে তিনটি বিবৃতি দিয়েছেন।
তিনি যিশুখ্রিষ্টের দাস।
ঈশ্বরের আহ্বানে কারণে তিনি একজন প্রেরিত।
তাকে যে কাজের জন্য আহ্বান করা হয়েছে, তার জন্য তিনি সংরক্ষিত।
পৌল একজন ফরীশী ছিলেন, কিন্তু এখন তিনি সুসমাচারের পরিচর্যায় নিবেদিত। পৌলের রোমান নাগরিকত্ব ছিল, কিন্তু তিনি সেই সত্যটি তার আত্মপরিচয়ের অংশ হিসেবে উল্লেখ করেননি। এটা তাকে অধিকাংশ রোমান বিশ্বাসীদের সাথে যুক্ত করতে সাহায্য করত না। রোমে বসবাসকারী বেশিরভাগ লোকের নাগরিকত্ব ছিল না কারণ তারা বিদেশী বা দাস-দাসী ছিল। পৌল যদি তার নাগরিকত্বের কথা উল্লেখ করতেন, তাহলে সেটা তাকে রোমের উচ্চ শ্রেণীর সাথে যুক্ত করত; এর পরিবর্তে তার আধ্যাত্মিক ভূমিকা উল্লেখ করা আরও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
(১:২) সুসমাচার সম্পূর্ণ নতুন বিষয় ছিল না, কিন্তু পুরাতন নিয়মের ভাববাদীদের বার্তায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। রোমীয় ৪ অধ্যায় বিশেষভাবে দেখায় যে অব্রাহাম ও ডেভিড সুসমাচার বুঝতে পেরেছিলেন।
(১:৩-৪) তাঁর পার্থিব জীবনে, ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন দায়ূদের বংশধর, রাজবংশে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যা মশীহ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল।
খ্রিষ্ট হ'ল হিব্রু শব্দ মেসিয়াহ (Messiah)-র গ্রিক অনুবাদ।
প্রভু শব্দটি দেবত্বকে বোঝায়। ফিলিপীয় ২:১০-১১কে যিশাইয় ৪৫:২৩ এর সাথে তুলনা করে নতুন নিয়মের পত্রগুলিতে প্রভু শব্দটির তাৎপর্য বোঝা যায়। এটি এমন একজনকে বোঝায় যিনি অন্য সমস্ত কর্তৃপক্ষের উপরে সর্বোচ্চ। (এছাড়াও প্রেরিত ২:৩৬ দেখুন।)
প্রভু শব্দটি নতুন নিয়মের সুসমাচারগুলিতে একই অর্থ বহন করে না, যেখানে লোকেরা যিশুকে সম্মানের করণে "প্রভু" বলে ডেকেছিল, তিনি যে সত্যিই ঈশ্বর ছিলেন তা না বুঝেই।
নতুন নিয়মের পত্রগুলিতে, "যিশু খ্রিষ্ট আমাদের প্রভু" নামটি পরিচয়ের তিনটি বিবৃতি দেয়। এটি বলে যে তিনিই যিশু নামের ঐতিহাসিক ব্যক্তি, তিনি ইহুদি মশীহ এবং তিনিই ঈশ্বর।
পুনরুত্থান যিশুর ঈশ্বরত্ব প্রমাণ করেছিল। যোহন ১০:১৮ এ, তিনি দাবি করেছিলেন যে পুনরায় জীবন ফিরিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তার আছে। তিনি পুনরুত্থানকে সেই প্রজন্মের জন্য একটি চিহ্ন হিসাবে দিয়েছিলেন এবং পুনরুত্থানের সাক্ষীরা এটিকে সমস্ত প্রজন্মের জন্য একটি চিহ্ন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। যিনি ঈশ্বর নন তিনি নিজেকে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত করতে পারেন না; অথবা ঈশ্বর এমন একজন ব্যক্তিকে উত্থাপন করবেন না যিনি মিথ্যাভাবে নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেছিলেন, বিশেষ করে তাকে যিনি দাবি করেছিলেন যে পুনরুত্থান তার পরিচয় প্রমাণ করবে।
► অন্যান্য মানুষও মৃতদের মধ্য থেকে উত্থিত হয়েছে, কিন্তু তারা ঈশ্বর ছিল না। আপনি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন যে পুনরুত্থান যিশুর পরিচয় প্রমাণ করেছে?
(১:৫) সমস্ত জাতির মানুষদের খ্রিষ্টের আনুগত্যের অধীনে আনার উদ্দেশ্যে প্রেরিত হওয়ার আহ্বান এবং আধ্যাত্মিক দানগুলি দেওয়া হয়েছে। আধ্যাত্মিক দানগুলির একমাত্র যথাযোগ্য ব্যবহার হ'ল ঈশ্বরের কাজের জন্য। পরিচর্যা কাজের একমাত্র সঠিক উদ্দেশ্য হল খ্রিষ্টের নামের মহিমা। ব্যক্তিগত লাভ বা ব্যক্তিগত কৃতিত্বের মত উদ্দেশ্য হল ঈশ্বরের একজন দাসের অসমীচীন।
প্রেরিতত্ব আহ্ববানের অনবদ্যতা
► বর্তমানে কি কোন জীবিত প্রেরিত আছেন?
প্রেরিত শব্দটি কখনও কখনও বাইবেলে ব্যবহৃত হয়েছে যার সাধারণ অর্থ হল “যাকে পাঠানো হয়েছে।” প্রেরিত ১৪:১৪ পদে পৌল এবং বার্নাবাকে প্রেরিত বলা হয়েছে, যদিও বার্নাবা মূল বারোজনের একজন ছিলেন না। গালাতীয় ১:১৯ পদে পৌল বলেছিলেন যে একটি নির্দিষ্ট সফরে তিনি কৈফা (পিতর) এবং প্রভুর ভাই যাকোব ছাড়া প্রেরিতদের কাউকে দেখেননি। এই ক্ষেত্রে, তিনি যাকোবকে একজন প্রেরিত হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন, যদিও তিনি মূল বারোজনের একজন ছিলেন না।
যাইহোক, বারোজন প্রেরিতকে সাধারণত একটি বিশেষ দল হিসাবে বিবেচনা করা হত, যার সাথে কাউকে যুক্ত করা হবে না। মথি ১০:২ বলে, "বারোজন প্রেরিতের নাম হল..." (আরও দেখুন লুক ৬:১৩)। যিশু প্রেরিতদের বলেছিলেন যে তারা ইস্রায়েলের ১২টি গোষ্ঠীর বিচার করার জন্য সিংহাসনে বসবে (লুক ২২:৩০)। এই প্রতিশ্রুতিটি ১২ জন পুরুষের জন্য সীমাবদ্ধ একটি পুরষ্কার দেবে বলে মনে হয়। বারোজন প্রেরিতের নাম ঈশ্বরের শহরের ১২টি ভিত্তির উপর রয়েছে, যা ১২ জন পুরুষের একটি অনন্য দলকে বোঝায় (প্রকাশিত বাক্য ২১:১৪)।
যিশুর ভাই যিহূদা নিজেকে একজন প্রেরিত বলেননি, কিন্তু তাদের কর্তৃত্বের কথা উল্লেখ করেছিলেন (যিহূদা ১৭ এর সাথে ২ পিতর ৩:২ এর তুলনা করুন)। প্রেরিতদের একটি অনন্য কর্তৃত্ব ছিল, এবং তারা মন্ডলীগুলিতে যা কিছু লিখতেন তা ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ হিসাবে বিবেচিত হত (২ পিতর ৩:১৫-১৬)।
মন্ডলী যিহূদার স্থলাভিষিক্ত করার জন্য মত্তথিয়কে বেছে নিয়েছিল, যেহেতু মনে করেছিল যে বারোজন প্রেরিত থাকা উচিত (প্রেরিত ১:২৬); কিন্তু আমরা ইতিহাসে খুঁজে পাই না যে প্রাচীন মন্ডলী প্রেরিতদের মৃত্যুর পর তাদের তাদের স্থান পূরণ করত।
পৌলকে একজন প্রেরিত হিসেবে ঈশ্বর আহ্ববান করেছিলেন (রোমীয় ১:১)। পৌল ইঙ্গিত করেছিলেন যে তার প্রেরিতত্বের একটি যোগ্যতা হল যে তিনি যিশুকে দেখেছিলেন (১ করিন্থীয় ৯: ১)। এটি মন্ডলীর প্রথম প্রজন্মের মধ্যে প্রেরিত পদকে সীমাবদ্ধ করবে।
প্যাসেজের অধ্যয়ন - রোমীয় ১ম পর্ব
পদের টীকাভাষ্য (অব্যাহত)
(১:৬) "আহূত" বলতে বোঝায় পবিত্র মানুষ হওয়ার জন্য উদ্ধার পাওয়ার আহ্বান, যেমনটি পরবর্তী পদে দেখা যায় (এছাড়াও ৮:৩০ দেখুন।) পৌল বলেছেন যে প্রেরিতদের সমস্ত জাতির জন্য একটি পরিচর্যা রয়েছে; তিনি এখন উল্লেখ করেছেন যে রোমীয় খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা প্রেরিতদের বাণীতে বিশ্বাসী। এইভাবে তিনি দেখান যে তারা তার প্রেরিত কর্তৃত্বকে গুরুত্ব সহকারে নিতে বাধ্য। এই পত্রটি শুধুমাত্র একজন মিশনারির কাছ থেকে ছিল না যার নাম তারা শুনেছিল। তিনি তাদের মন্ডলীর প্রতিষ্ঠাতা না হলেও তারা তাকে গম্ভীরভাবে মনোনিবেশ এবং শ্রদ্ধা করতে বাধ্য।[1]
(১:৭) পরিত্রাণের জন্য আহ্ববানকে পবিত্র হওয়ার আহ্ববান। বিবৃতিটি ১ পদের বিবৃতির সাথে তুলনীয়, যেখানে পৌল বলেছিলেন যে একজন প্রেরিত এই কারণে যে তিনি একজন প্রেরিত হিসেবে আহুত। এর অর্থ এই নয় যে তিনি একজন প্রেরিত হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বা আশা করেছিলেন, বরং তাকে আহ্বানের মাধ্যমে প্রেরিত করা হয়েছিল। রোমীয় বিশ্বাসীদের পবিত্র হওয়ার আহ্বান দ্বারা পবিত্র করা হয়েছিল। একজন প্রেরিত হওয়ার আহ্বান যেমন সেই পরিচর্যার জন্য বরদান এবং সামর্থ্য নিয়ে আসে, ঠিক তেমনি পবিত্র হওয়ার আহ্বানও সেই ক্ষমতা এবং শুদ্ধতার সাথে আসে যা আমাদের পবিত্র করে।, ঠিক তেমনি পবিত্র হওয়ার আহ্বান সেই শক্তি এবং শুদ্ধকরণের সাথে আসে যা আমাদের পবিত্র করে। ঈশ্বরের আহ্বান পূরণে সর্বদা অনুগ্রহ সঙ্গে থাকে।
মন পরিবর্তনের সময় যে পবিত্রতা শুরু হয় তা সসম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন নয়। বিশ্বাসীর উচিত ক্রমবর্ধমান ভাবে তার জীবন পরিবর্তন করা যাতে ঈশ্বরের সত্যের মানানসই হয় যাসে শেখে। মন পরিবর্তনে পবিত্রতা সম্পূর্ণ হয় না; কিন্তু পবিত্রতা মন পরিবর্তন থেকে শুরু হয় যখন পাপী অনুতপ্ত হয়, ঈশ্বরের বাধ্য হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় এবং একটি নতুন সৃষ্টি হয় (২ করিন্থীয় ৫:১৭)।
(১:৮) জগৎ (world) শব্দটি সাধারণত সমগ্র পৃথিবীর পরিবর্তে সভ্য, পরিচিত বিশ্বকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। সুসমাচার তখনো পৃথিবীর সর্বত্র যায় নি।
(১:৯) লাটরেয়ও (latreuo) ‘[আমি পরিচর্যা করি] শব্দটি নতুন নিয়মে সবসময় ধর্মীয় আচার-বিধির জন্য ব্যবহৃত হয়.... এই পরিচর্যাটি হল উপাসনা বা ধর্মীয় প্রকৃতির বাহ্যিক দায়িত্ব পালনে অংশগ্রহণ করা।‘[2] পৌল শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ধর্মীয় কার্যকলাপের সাথে নয়, কিন্তু তার আত্মা দিয়ে ঈশ্বরের সেবা করেছিলেন।
(১:১০-১২) এখানে পৌল তাদের জানান যে তিনি রোমে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তিনি তাদের আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন এবং তিনি জানতেন যে তারা একে অপরের বিশ্বাস দ্বারা পারস্পরিকভাবে উৎসাহিত হবে।
পৌলের বিবৃতি আমাদের বলে যে বিশ্বাসীরা একে অপরের সহভাগিতা থেকে আধ্যাত্মিকভাবে উপকৃত হয়। পবিত্র আত্মা অন্যান্য বিশ্বাসীদের মাধ্যমে বিশ্বাসীদের মধ্যে তার অনেক কাজ সম্পন্ন করেন। একজন ব্যক্তি অন্য বিশ্বাসীদের সাথে তার সম্পর্ককে অবহেলা করে সে সহভাগিতার মাধ্যমে যে অনুগ্রহ প্রতিষ্ঠা হয় তার সুযোগ হারাবে। (পৌল ১ করিন্থিয় ১২ অধ্যায়ে প্রতিটি সদস্যের অন্য সদস্যদের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছেন।)
(১:১৩) পৌল তাদের সাথে দেখা করার পূর্বের পরিকল্পনায় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন - সমস্যার কারণে নয়, বরং প্রচারের তার অগ্রাধিকার কারণে যেখানে এখনও সুসমাচার প্রচারিত হয়নি (দেখুন ১৫:২০-২২)। কারণ ইতিমধ্যেই রোমে সুসমাচার প্রচার করা হয়েছিল, পৌল প্রথমে অন্য জায়গায় গিয়েছিলেন। যাইহোক, এখন আসাটা তার অগ্রাধিকারের পরিপন্থী নয় কারণ তার সফর অন্য একটি না-পৌঁছানো এলাকায় পৌঁছানোর দিকে অগ্রসরের একটি পদক্ষেপ হবে (১৫:২৩-২৪)।
(১:১৪) গ্রীকরা তারা ছিল যারা গ্রীক প্রভাব দ্বারা সংস্কৃতিবান ও সভ্য ছিল। বর্বর শব্দের অর্থ ছিল ‘বিদেশী’, একটি আরো আদিম সংস্কৃতির ব্যক্তিদের বোঝায় যারা গ্রীক সংস্কৃতির দ্বারা কম প্রভাবিত হয়েছিল। গ্রীকরা বর্বরদেরকে অসভ্য ও অজ্ঞ মনে করত।
জ্ঞানী (wise) শব্দটি এমন লোকদের বোঝায় যারা শিক্ষিত ছিল, বিশেষ করে গ্রীক দর্শন দ্বারা; মূর্খরা (unwise) উচ্চ শিক্ষিত ছিল না। পৌল দেখিয়েছিলেন যে তার পরিচর্যা কোনও নির্দিষ্ট ধরণের মানুষের মধ্যে সীমিত নয়।। এটি ছিল তাদের কাছে তার পরিচর্যার জন্য প্রস্তুতি, এবং সেইসাথে একজন মিশনারি হিসাবে তার ভূমিকা দেখানোর জন্য।
পৌল বলেছিলেন যে যাদের সুসমাচার শোনার প্রয়োজন ছিল তিনি তাদের প্রত্যেকের কাছে ঋণী ছিলেন। পৌল ঋণী ছিলেন এই কারণে নয় যে পাপীরা সুসমাচার শোনার যোগ্য, কিন্তু তিনি অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং এটি দেত্তয়ার দায়বদ্ধতা প্রাপ্ত হয়েছিলেন৷
উদাহরণ: যদি কেউ জনকে টমাসের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য টাকা দেয়, জন এখন টমাসের কাছে ঋণী যদিও টমাস সেই অর্থ উপার্জনের জন্য কিছু করেনি। একই ভাবে, যারা সুসমাচার শোনেনি তাদের প্রতি আমাদের একটি ঋণ রয়েছে, কারণ ঈশ্বর আমাদেরকে তাদের সাথে সুসমাচার ভাগ করে নেওয়ার দায়বদ্ধতা দিয়েছেন।
► প্রত্যেক খ্রিষ্টবিশ্বাসী কি সুসমাচার শেয়ার করার জন্য ঋণী? কেন?
(১:১৫) পৌল গ্রীক এবং বর্বরদের কাছে প্রচার করেছিলেন এবং এখন তিনি রোমের লোকেদের কাছেও সুসমাচার প্রচার করতে আগ্রহী ছিলেন।
তিনি তার মূল বিষয়বস্তু শুরু করেছিলেন এই বলে, "তোমাদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার জন্য আমি এত উৎসুক।" তারপর খুব সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করেছিলেন সুসমাচার কী এবং পৃথিবীর কেন এটি প্রয়োজন৷ এই সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাটি সমগ্র পত্র জুড়ে বিস্তৃত করা হয়েছে।
১:১৪-১৫ পুনরায় দেখায় কেন পৌল তাদের কাছে আসার যোগ্য ছিলেন। তার কাছে একটি বার্তা ছিল যা পৃথিবীর প্রতিটি ব্যক্তির জন্য ছিল।[3]
(১:১৬) সুসমাচার হল ইহুদি এবং গ্রীকদের জন্য, এবং এই বিবৃতিটি ইহুদি ও পরজাতীয়দের ঈশ্বরের সামনে তাদের অবস্থান উপস্থাপিত করে৷ এই বিষয়টি রোমীয় ৩ অধ্যায়েও চলতে থাকে। পৌল এমনকি সাম্রাজ্যের ক্ষমতার কেন্দ্রে সুসমাচার নিয়ে লজ্জিত হবেন না, কারণ সুসমাচার হল ঈশ্বরের শক্তি।
সুসমাচারের বার্তায় ঈশ্বরের শক্তি কাজ করে, পরিত্রাণে এটিকে কার্যকরী করে তোলে। ঈশ্বরের আদেশ সম্পাদন করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সর্বদা সঙ্গে থাকে। ঈশ্বরের শক্তি কাজ করে যখন তাঁর বাক্যগুলি বলা হয়।[4] সুসমাচারের বার্তাবাহকরা সুসমাচারের শক্তির উপর নির্ভর করে কারণ তারা যখন বার্তাটি জানায়, পবিত্র আত্মা শ্রোতাদের কাছে তা বিশ্বাসযোগ্য এবং প্রভাবশালী করে তোলে।
পৌলের কাছে, সুসমাচারের পক্ষে দাঁড়ানোর অর্থ কেবলমাত্র এটিকে অভীষ্ট সত্য হিসাবে রক্ষা করা নয়, বরং এটিকে রূপান্তরকারী সত্য হিসাবে প্রচার করা। তিনি আত্মবিশ্বাসের সাথে এটি ঘোষণা করেছিলেন যে এটি তার শ্রোতাদের পরিবর্তন করবে।
► আমরা যখন সুসমাচার প্রচার করি তখন কেন আমাদের আস্থা রাখা উচিত?
(১:১৭) বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক ব্যক্তি বাঁচবে।[5] এটি রোমীয়দের প্রতি পত্রের কেন্দ্রীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সত্য।
সম্পূর্ণ রোমীয়দের প্রতি পত্রটি একজন মানুষকে কীভাবে ন্যায়সঙ্গত করা যায় সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করে; অর্থাৎ, ধার্মিকগণিত করা (ঈশ্বরের ধার্মিকতার অধিকার পাওয়া)। বিষয়টির আশু প্রয়োজনীয়তা পরবর্তী পদে দেখানো হয়েছে, কারণ যারা অধার্মিক থাকে তাদের জন্য ঈশ্বরের ক্রোধ প্রস্তুত আছে।
[6]এখানে বলা ঈশ্বরের ধার্মিকতা “তাঁর ধার্মিকতার বৈশিষ্ট্য নয়... বরং ধার্মিকতা যা তাঁর কাছ থেকে প্রবাহিত এবং তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য,”[7] ঈশ্বরের ধার্মিকতা তাদের বিশ্বাসের মাধ্যমে মানবসত্তার মধ্যে কাজ করছিল। একই চিন্তাধারা ফিলিপীয় ৩:৯ এ: "যে ধার্মিকতা ঈশ্বর থেকে বিশ্বাসের মাধ্যমে আসে।“ মানুষ শুধুমাত্র ক্ষমার কারণেই ধার্মিক বলে গণ্য হয় না, কিন্তু তারা সত্যিকারের ধার্মিক হতে শুরু করে কারণ ঈশ্বর তাদের পরিবর্তন করেন।
পত্রে পৌল আরও বলেছেন (রোমীয় ৩:২১-২২) যে ঈশ্বরের ধার্মিকতা যা যিশুতে বিশ্বাস দ্বারা পাওয়া যায় তা সকলের জন্য। রোমীয় ৫:১৭-১৯ এ আমরা ধার্মিকতার বরদান সম্পর্কে পড়ি যা অনেককে ধার্মিক করে তোলে।
"বিশ্বাসের জন্য বিশ্বাস থেকে" এই বাক্যটি জোর দেয় যে বিশ্বাসই হল ধার্মিকতার একমাত্র মাধ্যম। এটি পরিত্রাণের প্রয়োজনীয়তা হিসাবে শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদের জোরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
[8]রোমীয় পুস্তকে মৃত্যু শব্দটি ঈশ্বরের বিচারকে বোঝায়। শুধুমাত্র যারা বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক হয়েছে তারাই বাঁচবে, অর্থাৎ, বিচার থেকে রেহাই পাবে (১:১৮ দেখুন)। যারা বিশ্বাসের মাধ্যমে অব্যাহতি পেয়েছে তারা ব্যতীত ঈশ্বরের ক্রোধ সকলের উপর ঢেলে দেওয়া হবে।
► এর মানে কি যে একজন ব্যক্তি বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক হয়?
► এই প্যাসেজে, বেঁচে থাকার অর্থ কী? মৃত্যু কি? বিশ্বাসের মাধ্যমে বেঁচে থাকার অর্থ কী?
“এই পত্রের সাধারণ উদ্দেশ্য হল ঈশ্বরের চিরন্তন, অপরিবর্তনীয় উদ্দেশ্য বা আদেশ প্রকাশ করা, যা হল,
‘যে বিশ্বাস করবে সে উদ্ধার পাবে: যে বিশ্বাস করবে না সে বিনাশপ্রাপ্ত হবে।‘”
- জন ওয়েসলি (John Wesley), “Predestination Calmly Considered”
তিনজন ঈশতত্ত্ববিদ যারা রোমীয় পুস্তকের দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছিলেন
পত্রটির মূল উদ্দেশ্য এখনও মিশনারি কাজের ভিত্তি প্রদান করে। তবে, এটা তাতে সীমানা নেই। পৌল যখন ব্যাখ্যা করছিলেন কেন প্রত্যেকের বার্তাটি শোনা প্রয়োজন, তখন তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে বার্তাটি কী এবং কেন মানুষকে কেবল এইভাবেই রক্ষা করা যেতে পারে। তিনি কিছু সাধারণ আপত্তির জবাব দিয়েছেন। এই ব্যাখ্যাটি এবং তিনি যে বার্তা প্রচার করেছিলেন তার প্রতিরক্ষা বইটির বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে এবং এটি পুস্তকের কাঠামোটি নিয়ন্ত্রণ করে।
রোমীয় পুস্তক হল পরিত্রাণের ধর্মতত্ত্বের ব্যাখ্যা। পৌলের পরিত্রাণের ধর্মতত্ত্ব জুডাইজারদের[1] বিরুদ্ধে একটি তাৎক্ষণিক প্রতিরক্ষা প্রদান করেছিল এবং এটি পরিত্রাণের মতবাদ সম্পর্কে আধুনিক ত্রুটিগুলিও সংশোধন করে।[2]
[3]ইতিহাস জুড়ে, ঈশ্বর রোমীয়দের প্রতি পত্রটি ব্যবহার করেছেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সত্যগুলিকে পুনরুদ্ধার করার জন্য যখন তারা সেগুলি ভুলে গিয়েছিল।
একজন যুবক হিসাবে অগাস্টিন একজন ব্যভিচারী ছিলেন এবং তিনি দর্শনশাস্ত্র ও বুদ্ধিবৃত্তিক অধ্যয়নের মধ্যে সন্তুষ্টির সন্ধান করেছিলেন। তিনি সত্যের অন্বেষণ করেছিলেন এবং খ্রিষ্টধর্মে তা খুঁজে পেয়েছিলেন। তবুও পাপের প্রতি তার ভালবাসা তাকে বন্দী করে রেখেছিল। তিনি নিজেকে রোমীয় ৭ অধ্যায়ে বর্ণিত হতে দেখেছিলেন: তিনি সত্য জানতেন কিন্তু একটি ধার্মিক জীবনযাপন করতে সম্পূর্ণরূপে অক্ষম ছিলেন।
৩৮৬ খ্রিষ্টাব্দে, রোমীয় ১৩:১৩-১৪ পড়ার পর অগাস্টিন তার ত্রিশের দশক বয়সের প্রথম দিকে, তার পাপের জীবন ত্যাগ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। ঈশ্বর তাকে পাপের বন্ধন থেকে মুক্ত করেছিলেন এবং তাকে খ্রিষ্ট যিশুতে ঈশ্বরীয় জীবনযাপন করতে সক্ষম করেছিলেন।
অগাস্টিন (Augustine)
তার জীবনের বাকি বছরগুলিতে অগাস্টিন[4] ঈশ্বরের দ্বারা বিশেষ ভাবে ব্যবহৃত হন। তার লেখাগুলি ভ্রান্ত দর্শনবাদ্গুলির বিরুদ্ধে সঠিক মতবাদগুলিকে রক্ষা করেছিল। সেই সময়ে একটি জনপ্রিয় ধারণা ছিল এই বিশ্বাস যে মানুষ যা সঠিক তা করার স্বাভাবিক ক্ষমতা আছে এবং তাই পাপী না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। রোমীয় ৫ অধ্যায় থেকে অগাস্টিন শিখিয়েছিলেন যে মানুষ একটি পাপ-প্রকৃতির সাথে জন্মগ্রহণ করে যা তাদের ঈশ্বরের অবাধ্য করে তোলে। এই প্রকৃতি অনুগ্রহ ব্যতীত ঈশ্বরকে সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট করা অসম্ভব করে তোলে। অগাস্টিন ঈশ্বরের অনুগ্রহের বিষয়ে শিক্ষা ও সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যা মানুষকে ঈশ্বরের সাথে যথার্থ করে তোলে।
মার্টিন লুথার (Martin Luther)
পরিত্রাণের নিশ্চয়তা জানার জন্য বহু বছর অনুসন্ধান করার পর ১৫১৫ সালে মার্টিন লুথার রোমীয় ১:১৭ এর অর্থ উপলব্ধি করেছিলেন।[5] লুথার অতিরিক্ত উদ্যোগের সাথে সন্ন্যাসবাদের অনুশীলনগুলি অনুসরণ করে আধ্যাত্মিক শান্তি খোঁজার চেষ্টা করেতেন। তিনি উপবাস করতেন, ক্যাথলিক ধর্মের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান পালন করতেন, এমনকি নিজেকে মারধরও করতেন। রোমের সেন্ট পিটার্স ক্যাথেড্রালের সিঁড়ি বেয়ে রক্তাক্ত হাঁটুতে হামাগুড়ি দেওয়ার সময় তিনি হঠাৎ ঈশ্বরের কাছ থেকে বিশ্বাসের দ্বারা অনুগ্রহের উপলব্ধি লাভ করেন।
তিনি দেখেছিলেন যে ঈশ্বরের বিচার থেকে সেই ব্যক্তিই রক্ষা পাবে যে ঈশ্বরের ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে। এই নিশ্চয়তাই তার বার্তার ভিত্তি হয়ে ওঠে যে একমাত্র বিশ্বাসই [6]আমাদের পরিত্রাণ উপায় পারে।
১৭৩৮ সালে জন ওয়েসলি ব্যক্তিগত পরিত্রাণের নিশ্চয়তা খুঁজে পান যা তিনি বহু বছর ধরে ধরে অনুসন্ধান করছিলেন।[7] ওয়েসলি একজন উদ্যোগী বাইবেল পণ্ডিত ছিলেন এবং তিনি একটি সাবধানী, ধর্মীয় জীবনযাপন করতেন। এমনকি তিনি আমেরিকার স্থানীয় ইন্ডিয়ানদের কাছে একজন ধর্মপ্রচারক হিসাবে দুই বছরের জন্য গিয়েছিলেন, কিন্তু তখনও নিজে স্পষ্টভাবে সুসমাচার বুঝতে পারেননি। একটি ঝড়ের সময় জাহাজে তিনি মোরাভিয়ান পরিবারগুলিকে দেখেছিলেন যারা শান্তিপূর্ণভাবে ঈশ্বরের উপর ভরসা করেছিল ও মৃত্যুকে ভয় পায় নি, এবং ওয়েসলি বুঝতে পেরেছিলেন যে তার সেই ধরণের বিশ্বাস নেই।
ওয়েসলি শাস্ত্রে দেখেছিলেন যে মন-পরিবর্তন হঠাৎই ঘটে। তিনি মোরাভিয়ান ভাইদের সাথেও দেখা করেছিলেন যারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে তাদের পরিত্রাণের ব্যক্তিগত নিশ্চয়তা রয়েছে। তিনি বুঝতে শুরু করেছিলেন যে মন-পরিবর্তনের একটি নির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা তাকে লাভ করতে হবে। তার মন-পরিবর্তন ঘটে যখন তিনি একটি গৃহে অধ্যয়ন এবং প্রার্থনা করার জন্য একটি মিটিংয়ে যান। যখন কেউ একজন রোমীয়দের প্রতি পত্রে লুথারের মুখবন্ধ পড়ছিল, তখন ওয়েসলি তার হৃদয়ে "অদ্ভুতভাবে উষ্ণ" অনুভব করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি অনুভব করেছি যে আমি আমার পরিত্রাণের জন্য একমাত্র খ্রিষ্ট, খ্রিষ্টের উপরই আস্থা রেখেছি: এবং আমাকে একটি নিশ্চিততা দেওয়া হয়েছিল যে তিনি আমার পাপসকল নিয়ে নিয়েছেন, এমনকি আমারও, এবং আমাকে পাপ ও মৃত্যুর আইন থেকে রক্ষা করেছেন।[8]
জন ওয়েসলি (John Wesley)
এই তিনজনের জন্য, বার্তাটি বুঝতে পারা ছিল উদ্যোগী সুসমাচার প্রচারের প্রেরণা। বইটি এখনও পরিত্রাণের ধর্মতত্ত্ব ব্যাখ্যা করার মাধ্যমে মিশনের জন্য একটি ভিত্তি প্রদানের উদ্দেশ্য সম্পাদন করে।
► আপনি কি অনুমান করতে পারেন রোমীয় পুস্তকটি আপনার জীবন এবং পরিচর্যার উপর কী প্রভাব ফেলতে পারে?
[1]এই পাঠে ইহূদীবাদীদের (Judaizers) সম্বন্ধে পরে বর্ণনা করা হয়েছে।
[2]রোমীয় এবং গালাতীয় পত্রগুলি প্রায়শই একসাথে অধ্যয়ন করা হয়, কারণ গালাতীয় একই সুসমাচার বিষয়বস্তুর অল্পসম্পূর্ণ ব্যাখ্যা করে।
[8]John Wesley, The Works of John Wesley, Vol. I (Kansas City: Nazarene Publishing House), 103
১ নং পাঠের পর্যালোচনামূলক প্রশ্ন
(১) কেন পৌল রোমীয় বিশ্বাসীদের কাছে চিঠি লিখেছিলেন?
(২) কেন পৌল রোমে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন?
(৩) নতুন নিয়মের পত্রগুলিতে যিশুখ্রিষ্ট আমাদের প্রভু পরিভাষাটির অর্থ কী?
(৪) পুনরুত্থান কীভাবে যিশুর ঈশ্বরত্ব প্রমাণ করেছিল?
(৫) বর্বর শব্দটি ব্যাখ্যা করুন (রোমীয় ১:১৪)।
(৬) সুসমাচার প্রচারকের কেন সুসমাচার ভাগ করে নেওয়ার ঋণ রয়েছে?
(৭) রোমীয় পুস্তকের কেন্দ্রীয় ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সত্যটি কী?
(৮) রোমীয় পুস্তকে মৃত্যু বলতে কী বোঝায়?
(৯) রোমীয় পত্র অনুযায়ী, ঈশ্বরের বিচার থেকে কে বা কারা রেহাই পাবে?
১ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) এই পাঠের প্যাসেজ ব্যবহার করে, সুসমাচার পরিচর্যা সম্পর্কে এক পৃষ্ঠা রচনা লিখুন। পরিচর্যার আহ্বান ব্যাখ্যা করুন, যাদের এটি শোনা প্রয়োজন তাদের কাছে সুসমাচার প্রচারকের ঋণ, এবং শক্তি যে ঈশ্বর বার্তায় দেন।
(২) এই কোর্স চলাকালীন সপ্তাহগুলিতে, আপনাকে রোমীয় পুস্তকের প্যাসেজ ব্যবহার করে তিনটি প্রচার বা শিক্ষার পাঠ প্রস্তুত করতে হবে এবং ক্লাস ব্যতীত অন্য দলের কাছে তা উপস্থাপন করতে হবে। প্রতিটি উপস্থাপনার পরে, আপনাকে কিছু শ্রোতাদের জিজ্ঞাসা করতে হবে যে কীভাবে উপস্থাপনাটি উন্নত করা যেতে পারে। আপনার ক্লাস লিডারকে আপনার উপস্থাপনা নোটের একটি অনুলিপি, আপনি উপস্থাপিত দল এবং ইভেন্টের একটি বিবরণ, এবং আপনার উপস্থাপনা উন্নত করার জন্য আপনার পরিকল্পনাগুলি জমা দিতে হবে।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.