আপনার মিনিস্ট্রিতে, আপনি দেখবেন যে আপনাকে এমন লোকেদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে হবে যাদের সাথে আপনার সাংস্কৃতিক পটভূমির পার্থক্য রয়েছে। এটি অন্য দেশের কোনো ব্যক্তি হতে পারে, বা এটি কাছাকাছি গ্রামের কোনো ব্যক্তি হতে পারে, তবে বোঝাপড়া এবং সংযোগের মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য থাকবে।
এই পার্থক্যের ফারাকগুলি মেটানোর দক্ষতাই আপনাকে ঈশ্বরের রাজ্যের একজন পরিচারক হিসেবে আরো বেশি কার্যকর করে তুলবে। এই সংক্ষিপ্ত পাঠটিতে, আমরা বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগের কিছু প্রাথমিক নীতি নিয়ে আলোচনা করব।
► এমন কোনো সময়ের কথা আলোচনা করুন যখন আপনি একটি ভিন্ন সংস্কৃতির কোনো ব্যক্তির সাথে সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। আপনি কোন কোন জটিলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন? পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কি আপনি সংযোগ স্থাপনে সফল হয়েছিলেন?
অব্রাহামের সাথে ঈশ্বরের চুক্তি দেখিয়েছিল যে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে সুসমাচার প্রচারিত হবে। পৃথিবীর সমস্ত পরিবার অব্রাহামের বীজের দ্বারা আশীর্বাদযুক্ত হবে (আদিপুস্তক ১২:১-৩)। এটি এমন একটি ভবিষ্যতের পূর্বপরিকল্পনা করেছিল যেখানে বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ হবে।
ঈশ্বরের লোকেদের অন্যান্য সংস্কৃতির সাথে সংযোগ স্থাপনের কিছু উদাহরণ দেওয়া হল:
অব্রাহাম এবং যোষেফ মিশরের ফৌরণ-রাজের কাছে সম্মানিত হয়েছিলেন।
শলোমন প্রাচীন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিথিদের আপ্যায়ন করেছিলেন। বহু পন্ডিতই হিতোপদেশ ২২:১৭-২৪:২২ এবং হিতোপদেশের মিশরীয় সংকলন যাকে বলা হয় দ্য ইন্সট্রাকশন অফ আমেনেমপ(The Instruction of Amenemope) বা আমেনেমপ’র নির্দেশাবলী, তার মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছেন। এটি বোঝায় যে শলোমন মিশরীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত ছিলেন।
দানিয়েল ব্যাবিলন এবং পারস্যের শাসকদের কাছে একজন সম্মানীয় পরামর্শদাতা হয়ে উঠেছিলেন। দানিয়েল ১ অধ্যায় দেখায় যে দানিয়েল একজন দৃঢ়চেতা যুবক ছিলেন, কিন্তু তিনি ব্যাবিলনের আধিকারিকদের কাছেও সম্মানীয় ব্যক্তি ছিলেন (দানিয়েল ১:৮)।
এক ইহুদী যুবতী ইষ্টের, রাজা অহশ্বেরশের রানি হয়েছিলেন। পারস্য সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে (প্রস্তুতি ছাড়াই তার অনুরোধ উপস্থাপন করার পরিবর্তে রাজাকে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো) রাজার কাছে যাওয়ার সাহসিকতার প্রদর্শনের ক্ষমতার মাধ্যমে (“... যদি আমাকে মরতে হয় মরব”), তিনি তার লোকেদের বাঁচানোর জন্য ঈশ্বরের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিলেন। (ইষ্টের ৪:১৬, ইষ্টের ৫:৪, ৮)।
বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ বিষয়ে নতুন নিয়মের উদাহরণসমূহ
যিশু তাঁর শিষ্যদের বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগকারী হওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন:
অতএব, তোমরা যাও ও সমস্ত জাতিকে শিষ্য করো, পিতা ও পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে তাদের বাপ্তিষ্ম দাও। আর আমি তোমাদের যে সমস্ত আদেশ দিয়েছি, সেগুলি পালন করার জন্য তাদের শিক্ষা দাও (মথি ২৮:১৯-২০)
যিশু বলেছিলেন যে প্রেরিতরা জেরুশালেমে ও সমস্ত যিহূদিয়ায় ও শমরিয়ায় এবং পৃথিবীর প্রান্তসীমা পর্যন্ত তাঁর সাক্ষী হবে (প্রেরিত ১:৮)। বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ বিশ্বাসীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ছাড়া আমরা মহান নিযুক্তি (Great Commission) পরিপূর্ণ করতে পারব না।
যিশু বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের একটি মডেল বা দৃষ্টান্ত প্রদান করেছিলেন। তিনি পরজাতিদের মধ্যে পরিচর্যা কাজ করতে ইচ্ছুক এবং সক্ষম ছিলেন। অন্যান্য ইহুদি রব্বি বা গুরুরা যখন পরজাতিদের এলাকাগুলি এড়িয়ে চলত, যিশু স্ব-ইছায় ডেকাপলিতে গিয়েছিলেন (মার্ক ৭:৩১)। যখন অন্যরা শমরিয়া অঞ্চলকে এড়িয়ে চলত, যিশু স্বেচ্ছায় শমরীয় নারীর সাথে আলাপ করেছিলেন (যোহন ৪)।
প্রেরিত পৌল বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের একটি মডেল বা দৃষ্টান্ত প্রদান করেছেন। এক রোমীয় আধিকারিকের সাথে কথা বলার সময়, তিনি রোমান নাগরিকত্বের অধিকার দাবী করেছিলেন (প্রেরিত ২৫:১০-১১)। এথেন্স শহরে প্রচার করার সময়, তিনি দার্শনিক ভাষার ব্যবহার করেছিলেন যেটির জন্য সেই গ্রীক চিন্তাবিদরা জনপ্রিয় ছিলেন (প্রেরিত ১৭:১৬-৩৪)।
সমস্ত লোকের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য পৌল কঠিন পরিশ্রম করেছিলেন। পৌলের কাছে বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ তাঁর কাছে সুসমাচার গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
সব মানুষের কাছে আমি সবকিছু হয়েছি, যেন সম্ভাব্য সমস্ত উপায়ে, আমি কিছু মানুষের পরিত্রাণ সাধন করতে পারি। আমি সুসমাচারের কারণে এ সমস্ত করি, যেন আমি এর সমস্ত আশীর্বাদের অংশীদার হতে পারি (১ করিন্থীয় ৯:২২-২৩)
যাকোব লিখেছেন যে আমাদের শোনার বিষয়ে আগ্রহী, কিন্তু কথা বলায় ধীর হওয়া উচিত (যাকোব ১:১৯)। তিনি রাগ এবং জিহ্বা সম্পর্কে লিখেছিলেন, কিন্তু তার উপদেশ বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের জন্যও কার্যকর। আমরা যত বেশি শুনব, তত বেশি শিখব।
এটি শুনতে সহজ, কিন্তু আমরা যত বেশি ধরে শুনব, সফল বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ তত বেশি সময় ধরে স্থায়ী হবে। সময়ের কোনো বিকল্প নেই। সেইসব ব্যক্তিরাই হলেন শ্রেষ্ঠ বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগকারী যারা অন্য সংস্কৃতিতে একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন।
অনেক সময়েই, আমরা শোনার ক্ষেত্রে ধীর এবং বলার ক্ষেত্রে আগ্রহী। আমরা অনেক বেশি কথা বলি এবং খুব কম পর্যবেক্ষণ করি। যদি আমরা অন্যদের বুঝতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই শুনতে হবে। আমরা অন্য কোনো দেশে যাই, কাছাকাছি কোনো গ্রামে সুসমাচার প্রচার করি, অন্য কোনো বয়সের লোকদের শিক্ষা দিই, বা এমনকি আমাদের নিজেদের পরিবারের মধ্যেও দেখা করতে যাই – সবকিছু নির্বিশেষে এটি সত্য। প্রায়শই, আমরা বলার আগে শোনার কাজে ব্যর্থ হই।
একজন মিশানারি এবং ক্রস-কালচার স্টাডিজ’র প্রফেসর ডুয়ান এলমার (Duane Elmer) বলেছেন, “আপনি যাকে বোঝেন না, তার কাছে আপনি পরিচর্যা কাজ করতে পারবেন না। যদি আপনি লোকেদের না বুঝে তাদের কাছে পরিচর্যা কাজ করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনার একজন উপকারী অত্যাচারী হিসেবে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।”[1] অন্য কথায়, আপনার পরিচর্যা কাজের সমস্ত প্রচেষ্টাই ক্ষতিকর হবে এবং তা ভুল বোঝা হবে। সাহায্য করার চেষ্টা করতে গিয়ে, আপনি ক্ষতি করবেন। কেন? কারণ আপনি যে ব্যক্তিকে সাহায্য করতে চাইছেন তাকে বোঝার জন্য পর্যাপ্ত সময় অতিবাহিত করতে আপনি ব্যর্থ হয়েছেন!
জন সিম্যান্ডস (John Seamands) যখন ভারতে একজন মিশনারি-সুসমাচার প্রচারক হিসেবে কাজ করছিলেন, তখন তিনি শোনার গুরুত্ব সম্পর্কে শিখেছিলেন। যদি তিনি একটা গ্রামে যেতেন এবং প্রচার করা শুরু করে দিতেন, লোকেরা বিরক্ত হয়ে শুনত এবং অবাক হত, “এই অপরিচিত লোকটা কে? কেন তিনি আমাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন?”
তবে, যদি রেভারেন্ড সিম্যান্ডস একটা গোটা দিন গ্রামের নেতাদের সাথে দেখা করে, স্থানীয় স্কুলগুলিতে গিয়ে এবং প্রশ্ন করে অতিবাহিত করতেন, তাহলে তিনি অনেকটাই আলাদাভাবে গৃহিত হতেন। তখন তিনি আর অপরিচিত থাকতেন না, তিনি একজন অতিথি হতেন। তখন তিনি তাদের উদ্বেগ এবং প্রশ্ন সম্পর্কে জানতেন।[2]
সচেতনভাবে কৌতুক ব্যবহার করুন
বক্তাদের কাছে কৌতুক যতই মূল্যবান হোক, তা অবশ্যই সচেতনভাবে ব্যবহার করা উচিত। একটি বিবিধ-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে কৌতুক ব্যবহার করা কঠিন কারণ কৌতুক হল সংস্কৃতি-নির্দিষ্ট। চীনে যেটা হাস্যকর সেটা ফ্লোরিডায় হাস্যকর নয়। ইন্ডিয়ানায় যেটা মজাদার সেটা ভারতে মজাদার নয়। যখন আপনি কোনো কৌতুকপূর্ণ গল্পের ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন, তখন কাউকে নতুন সংস্কৃতির সাপেক্ষে গল্পটি অনুবাদ করে দিতে বলুন। বহু রাজনীতিবিদই শ্রোতাদেরকে এমন হাস্যকোউতুক দিয়ে বিরক্ত করেছেন যা অনুবাদ করা হয়নি।
গল্প বলুন
বেশিরভাগ গল্পই সাংস্কৃতিক বাধা অতিক্রম করে। যে গল্পগুলি মানুষের কাজ এবং আবেগকে বর্ণনা করে, সেগুলি বিবিধ সংস্কৃতিতেও ভালোভাবে গ্রহণযোগ্য। তবে, যদি গল্পটিতে একাধিক সাংস্কৃতিক উপাদান থাকে, তবে তা ভালো প্রভাব ফেলবে না। পুনরায়, নির্দিষ্ট সংস্কৃতির কোনো ব্যক্তির সাথে কথা বলা সহায়ক। জিজ্ঞাসা করুন, “আপনার কাছে এই গল্পটার মানে কী?”
একজন প্রফেসর একটি কলেজে মিউজিক হিস্ট্রি বা গানের ইতিহাস নিয়ে পড়ান। সেই কোর্সে, তিনি প্রায়শই বিঠোভেন (Beethoven)’র একটি উদাহরণ ব্যবহার করেন। যদিও বিঠোভেন একজন মহান সুরকার ছিলেন, কিন্তু তিনি লোকজনের সাথে ভালোভাবে মিশতে পারতেন না। তিনি একজন রাগী ব্যক্তি ছিলেন যিনি বহু মানুষকেই ক্ষুব্ধ করেছিলেন। তার বন্ধুরা তাকে “ড্রাগন” বলতেন কারণ তিনি খুবই কঠিন ব্যক্তি ছিলেন। পশ্চিমের মানুষদের কাছে, ড্রাগন হল একটি “আগুন-মুখো দানব।”
তারপর একবছর তিনি বিঠোভেন’র বিষয়ে চীনে পড়িয়েছিলেন। যখন তিনি বিঠোভেন কে “ড্রাগন” বলে উল্লেখ করেছিলেন, তার ছাত্রছাত্রীরা বিভ্রান্ত হয়েছিল। চীনে, ড্রাগন হল সৌভাগ্যের প্রতীক। তারা অবাক হয়েছিল, “এইরকম রাগী লোককে কেন এমন একটা ভালো উপাধি দেওয়া হয়েছিল?” সেই প্রফেসরকে গল্পটা পরিবর্তন করতে হয়েছিল, যাতে এশীয় শিক্ষার্থীরা তার বার্তা ভালোভাবে বুঝতে পারে।
সংস্কৃতির প্রতি সংবেদনশীল হন
ভালো সংযোগকারীরা তাঁদের সংযোগে বহু দৃষ্টান্ত এবং কথা বলার ভঙ্গী ব্যবহার করেন। তবে, দৃষ্টান্তগুলি অবশ্যই সংস্কৃতি অনুযায়ী উপযুক্ত হওয়া উচিত। যারা কোনোদিন কম্পিউটার দেখেইনি, তাদের কাছে কম্পিউটার সংক্রান্ত কোনো দৃষ্টান্ৎ ব্যবহার করার চেষ্টা একেবারেই অর্থহীন।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন (Bill Clinton) বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনে ভালো ছিলেন। তিনি একবার একদল খ্রিস্টান এবং মুসলিমের সামনে উত্তম শমরীয়’র গল্পটি বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “একটা লোক একদল সশস্ত্র ডাকাতের হাতে পড়েছিল। প্রথমে এক পুরোহিত এলেন। তিনি একজন ধর্মীয় নেতা ছিলেন। তারপর খুব উচ্চজাতের এক ব্যক্তি এলেন। অবশেষে শত্রু বা বিরোধী গোত্রের এক ব্যক্তি সেই আহত ব্যক্তিকে দেখতে পেল।” প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টন গল্পটিকে সাংস্কৃতিকভাবে প্রাসঙ্গিক পদ্ধতিতে বর্ণনা করেছিলেন।
বডি ল্যাঙ্গোয়েজ বা দৈহিক ভাব-ভঙ্গী গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকায় আপনি বন্ধুত্ব প্রকাশের জন্য আপনি খোলা হাত নাড়াতে পারেন; নাইজেরিয়াতে এই আচরণকে একটি অভিশাপ হিসেবে দেখা হয়। আমেরিকায় আপনি কোনো ব্যক্তিকে কাছে ডাকার জন্য একটি আঙুল ব্যবহার করতে পারেন; চীনে এই ভঙ্গী কেবল কুকুরের জন্য ব্যবহার করা হয়।
মানুষের মধ্যে দূরত্ব সংস্কৃতি অনুযায়ী বিবিধ হয়। কেউ কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে; কেউ একটি দূরত্ব বজায় রাখা পছন্দ করে। এমনকি ভলিউম বা আওয়াজও গুরুত্বপূর্ণ। আমেরিকানদের মধ্যে অন্য কিছু সংস্কৃতির লোকেদের তুলনায় জোরে কথা বলা এবং হাসার প্রবণতা রয়েছে। আবার কিছু সংস্কৃতির লোকেরা, বিশেষত জনসমক্ষে, তুলনামূলকভাবে আস্তে কথা বলে।
এটা বলা সহজ, “এই বিষয়গুলি কোনো ব্যাপার না; এটা কেবল সাংস্কৃতিক পছন্দ।” তবে, আমাদের এমন সবকিছুই এড়িয়ে চলা উচিত যা সুসমাচার প্রচারের ক্ষেত্রে সংযোগ স্থাপনকে কঠিন করে তুলবে। এই কারণেই আমরা যাদের কাছে পরিচর্যা কাজ করতে চাই তাদের সাংস্কৃতিক অভ্যাসগুলি শেখা গুরুত্বপূর্ণ।
একটি বানরের কাহিনী থেকে শিক্ষালাভ
একটা বানর একটা মাছকে নদীতে সাঁতার কাটতে দেখেছিল। বানরটি ভাবছিল, “বেচারা মাছটার আমার সাহায্য দরকার! আমি শুকনো ডাঙ্গায় স্বাচ্ছন্দ্যে আর নিরাপদে আছি, কিন্তু মাছটা জলে খাবি খাচ্ছে! আমি একটা দয়ালু বানর; আমি মাছটাকে সাহায্য করব।”
বানরটা একটা গাছে লাফিয়ে এল যেটা নদীর এপার-ওপার জুড়ে ছিল। সে একটা ডালে এল, যদিও সেটা তার জন্য খুব বিপজ্জনক ছিল। সে আরো নিচের দিকে নেমে এল এবং মাছটাকে জল থেকে উঠিয়ে নিল। তারপর বানরটা গাছ থেকে নেমে এল এবং মাছটাকে সাবধানে শুকনো ডাঙ্গায় রেখে দিল। কয়েক মিনিট, মাছটা খুব ছটপট করল, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে একদম শান্ত হয়ে গেল। বানরটা তা দেখে খুবই খুশি হল; সে ভাবল যে সে আরেকটা প্রাণীকে সাহায্য করেছে।
বানরটা সাহায্য করতে চেয়েছিল, কিন্তু পরিবর্তে সে মাছটাকে মেরে ফেলেছিল। কেন? কারণ সে মাছটার পরিস্থিতি এবং প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারেনি। সে যা ভালো মনে করেছিল সেটাই করেছিল। ভালো উদ্দেশ্যই যথেষ্ট নয়; আমরা যাদের কাছে পরিচর্যা কাজ করি, তাদের কথা আমাদের অবশ্যই শুনতে হবে।[3]
অন্যদের প্রতি প্রেমময় হন এবং তাদের সম্মান করুন
সম্ভাব্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ যেটি আপনি বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের জন্য শিখতে পারেন তা ২,০০০ বছর আগে দেওয়া হয়েছিল: “তোমার প্রতিবেশীকে তোমার নিজের মতোই প্রেম করবে” (মথি ২২:৩৯)। এটিকে একটি বাস্তবিক উপায়ে প্রয়োগ করার জন্য, যিশু বলেছেন, “...তোমরা অপরের কাছ থেকে যেরূপ ব্যবহার পেতে চাও, তাদের প্রতি তোমরাও সেরূপ ব্যবহার কোরো। কারণ এই হল বিধান ও ভাববাদীদের শিক্ষার মূল বিষয়” (মথি ৭:১২)।
প্রায়শই আমরা এটা ভেবে ভুল করি যে আমাদের সংস্কৃতি অন্য লোকেদের সংস্কৃতির চেয়ে বেশি ভালো। আমাদের শেখা উচিত যে আমাদের সংস্কৃতি বেশি ভালো নয়; এটা কেবল ভিন্ন। অন্যদের সম্মান করতে শেখা আমাদের সংযোগ স্থাপনের দক্ষতাকে খুব ভালোভাবে উন্নত করবে।
৬০ বছর বয়সে, জেসনকে তাইওয়ানের একটি মন্ডলীতে পাস্টার হিসেবে কাজ করতে বলা হয়েছিল। তিনি কখনোই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যাননি। ৪০ বছর ধরে তিনি গ্রামীণ আমেরিকান কমিউনিটিগুলির ছোটো ছোটো মন্ডলীতে পরিচর্যা কাজ করেছেন; সেখানে তাইওয়ানের কাওহসিয়াং (Kaohsiung) একটা অনেক বড় শহর। জেসন কোনো দ্বিতীয় ভাষা জানতেন না; মন্ডলীটি ছিল একটি ম্যান্ডেরিন-ভাষী মন্ডলী। সম্পূর্ণভাবেই মনে হয়েছিল যে জেসন বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনে ব্যর্থ হবেন।
একজন বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগকারী হিসেবে জেসনের কেবল একটি ইতিবাচক গুণ ছিল; তিনি মানুষকে ভালোবাসতেন! তিনি কাওহসিয়াংয়ে দু’বছর কাটিয়েছিলেন। তিনি ম্যান্ডেরিন শেখেননি, কিন্তু তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুবাদকের সঙ্গে অতিবাহিত করতেন এটা নিশ্চিত করতে যে তার বার্তা সাংস্কৃতিক বেড়া পেরিয়ে সঠিকভাবে সংযোগ স্থাপন করছে। তিনি একজন জবরদস্ত বক্তা ছিলেন বলে লোকেরা তার মন্ডলীতে এসেছিল তা নয়, বরং আসল কারণ ছিল যে তিনি তাদের সাথে রাস্তায় আলাপ করতেন, দেখা হলে হাসতেন, এবং তারা যখন কথা বলত তা মন দিয়ে শুনতেন।
দু’বছর পরে, একজন ম্যান্ডেরিন-ভাষী মিশনারি কাওহসিয়াংয়ে এসেছিলেন। রাস্তার দিয়ে যাওয়ার সময়ে, এক দোকানদার তার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ায়। চাইনিজে সে বলে, “আপনি পাস্টার জেসনকে চেনেন?” “হ্যাঁ। কেন এটা জিজ্ঞাসা করছ?” “আমি পাস্টার জেসনকে ভালোবাসি।” “তুমি খ্রিস্টান?” “না, আমি একজন বৌদ্ধ। কিন্তু যদি আমি খ্রিস্টান হই, আমি পাস্টার জেসনের মন্ডলীতে যাব।” “কেন?” “তিনি আমায় ভালোবেসেছেন! প্রত্যেকদিন তিনি আমার দোকানে দেখা করতে আসতেন। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বহু বিষয় নিয়ে কথা বলতাম।” সেই মিশনারি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। যে ব্যক্তি একদমই ইংরাজি জানে না তার সাথে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে যাওয়া জেসনের পক্ষে সম্ভব ছিল না। কিন্তু তিনি সেই বৌদ্ধ দোকানদারের প্রতি প্রেম প্রদর্শন করেছিলেন।
এই কাহিনীটির মানে এই নয় যে অন্য ভাষা শেখার গুরুত্ব নেই, কিন্তু এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে প্রেমই হল সমস্ত কার্যকর মিনিস্ট্রির ভিত্তি। যদি আমরা যিশুর “তোমাদের প্রতিবেশীকে প্রেম করো” আদেশটি মেনে চলি, তাহলে ঈশ্বর তাঁর গৌরবের জন্য সামান্য ক্ষমতাকেও ব্যবহার করতে পারেন।
[1]Duane Elmer, Cross-Cultural Servanthood: Serving the World in Christlike Humility (Downers Grove: Intervarsity Books, 2009), Kindle location 148
[2]John T. Seamands, Tell It Well: Communicating the Gospel Across Cultures (Kansas City: Beacon Hill Press, 1981), 97
[3]Duane Elmer, Cross-Cultural Servanthood: Serving the World in Christlike Humility (Downers Grove: Intervarsity Books, 2009), Kindle edition location 214 থেকে নেওয়া হয়েছে।
বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ এবং পরিচর্যার জন্য একটি মডেল
ডুয়ান এলমার (Duane Elmer) লিখেছেন যে অন্যদের কাছে পরিচর্যা কাজের জন্য বোধগম্যতা, শিক্ষালাভ, বিশ্বাস, গ্রহণযোগ্যতা, এবং ঊন্মুক্ততা প্রয়োজন। ড. এলমার এই মডেলটি বিবিধ-সাংস্কৃতিক পরিচর্যার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। এটি বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।[1]
কার্যকর সংযোগের জন্য প্রয়োজন:
বোধগম্যতা।শিক্ষালাভ ছাড়া বোধগম্যতা সম্ভব নয়।
শেখা। আপনি এমন কারোর থেকে শিক্ষালাভ করতে পারবেন না যতক্ষণ না সেখানে বিশ্বাস তৈরি হচ্ছে।
বিশ্বাস। বিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য, অন্যদের অবশ্যই জানা দরকার যে আপনি তাদের মানুষ হিসেবে মূল্য দেন। সেখানে গ্রহণযোগ্যতা থাকা আবশ্যিক।
গ্রহণযোগ্যতা। গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই উন্মুক্ততা প্রদর্শন করতে হবে।
উন্মুক্ততা। উন্মুক্ততা হল মানুষকে আপনার উপস্থিতিতে স্বাগত জানানোর সাদর সম্মতি এবং তাদেরকে নিরাপদ অনুভব করানো।
[1]এই অংশটি Duane Elmer, Cross-Cultural Servanthood: Serving the World in Christlike Humility (Downers Grove: Intervarsity Books, 2009), Kindle location 303-318 থেকে অভিযোজিত হয়েছে।
একজন উত্তম শ্রোতা হয়ে ওঠা
► এমন একটি সময় নিয়ে আলোচনা করুন যখন আপনি একজন ভালো শ্রোতার সাথে সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। কোন গুণগুলি তাদের সঙ্গে কথা বলা সহজ করে তুলেছিল? এমন একটি সময় নিয়ে আলোচনা করুন যখন আপনি এমন একজনের সাথে সংযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করেছিলেন যিনি একজন ভালো শ্রোতা ছিলেন না। কোন বিষয়গুলি তাদের সঙ্গে কথা বলা কঠিন করে তুলেছিল? আপনি কি একজন ভালো শ্রোতা?
যেহেতু কার্যকর সংযোগ স্থাপনের জন্য মনোযোগ দিয়ে শোনা খুব গুরুত্বপূর্ণ, সেহেতু আমরা যেভাবে আমাদের কথা বলা বা লেখাকে উন্নত করছি সেইভাবেই আমাদের শোনার দক্ষতার উন্নতিসাধনে সচেতন হওয়া উচিত। পৃথিবীতে বাস করা সবচেয়ে জ্ঞানী ব্যক্তি সতর্ক করেছিলেন যে শোনার আগে উত্তর দেওয়া মূর্খতা এবং লজ্জার বিষয় (হিতোপদেশ ১৮:১৩)।
জন সিম্যান্ডস (John Seamands) শ্রীলঙ্কায় থাকা এক খ্রিষ্টীয় মিশনারির কাহিনী বলেছিলেন যাঁর সঙ্গে এক বৌদ্ধ পুরোহিতের আলাপ হয়েছিল। বৌদ্ধ পুরোহিতটি খ্রিষ্টধর্ম বিষয়ক কিছু বই নিতে এসেছিলেন। খ্রিষ্টীয় মিশনারি তাকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনি কি খ্রিষ্টধর্মে আগ্রহী?” বৌদ্ধ পুরোহিত উত্তর দিয়েছিলেন, “না, আমি নই, কিন্তু আমি তরুণ সন্ন্যাসীদের [বৌদ্ধ ধর্মে ‘মঙ্ক’ বা ‘ভিক্ষু’ নামে পরিচিত] প্রশিক্ষণ দিই যারা বৌদ্ধ মিশনারি হয়ে পশ্চিমের দেশগুলিতে যাবে। আমার মনে হয় তারা সেখানে যাওয়ার আগে সেখানকার বাসিন্দাদের ধর্ম সম্পর্কে তাদের শিক্ষালাভ করা উচিত।”[1]
এই বৌদ্ধ পুরোহিত জানতেন যে তিনি যে লোকেদের কাছে “প্রচার” করতে যাচ্ছেন তাদের ধর্ম বুঝতে তাকে তার ছাত্রদের অবশ্যই সাহায্য করতে হবে। আমরা যাদের কাছে সত্যিকারের সুসমাচার নিয়ে যাই তাদের শিক্ষা বোঝা খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের জন্য কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ!
এই বিভাগে আমরা মন দিয়ে শোনার জন্য কিছু টিপস শিখব। এটি বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগের পাশাপাশি যেকোনো অন্য ধরণের সংযোগ স্থাপনেও প্রযোজ্য।
“শোনা” এবং “মন দিয়ে শোনা”-র মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি কাউকে এমন একটি আলাদা ভাষায় কথা বলতে শুনেছেন যেখানে আপনি একটি শব্দও বুঝতে পারেননি। আপনি শুনতে পাবেন, কিন্তু বুঝবেন না। বিশ্ব জুড়ে খ্রিষ্টীয় লিডারদের লুজান উইলোব্যাঙ্ক (Lausanne Willowbank)-এর প্রতিবেদনে সুসমাচার প্রচারক, মিশনারি, পাস্টার এবং খ্রিষ্টীয় লিডারদের “বোঝার জন্য সংবেদনশীলভাবে শোনার” আহ্বান জানানো হয়েছে। [2]
(১) চিত্তবিক্ষেপতা দূর করুন।
আমরা বিক্ষিপ্ততায় পরিপূর্ণ একটি পৃথিবীতে বাস করি। টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন, টেক্সট মেসেজ, এবং অন্য সমস্ত সরঞ্জামগুলি আমাদের মনোযোগকে বিভক্ত করে দেয়। যদি আমরা সত্যিই কারোর কথা শুনতে চাই, তাহলে আমাদের অবশ্যই অন্যান্য বিক্ষিপ্ততাগুলি বন্ধ করতে হবে এবং তাদের প্রতি আমাদের মনোযোগ দিতে হবে।
একজন ব্যক্তি ছিল যে বারবার নিজের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অন্য এক ব্যক্তির সাথে তার কথোপকথনকে বিঘ্নিত করছিল। প্রতিবার সে ওই ব্যক্তিকে বলছিল, “আপনার সাথে কথা বলা আমার কাছে এই ফোনের উত্তর দেওয়ার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমি এই ফোনটা ধরার সময় কিছু মনে করবেন না।” একঘণ্টার মধ্যে সে সাতবার ফোনে কথা বলেছিল। তার মুখ বলেছিল, “আপনি বেশি গুরুত্বপূর্ণ”; কিন্তু তার কাজ বলেছিল, “আমার মোবাইল ফোন বেশি গুরুত্বপূর্ণ!”
সত্যিকারের শোনা চায় যে আমরা আমাদের মনোযোগ অপরদিকে থাকা ব্যক্তির ওপরেই রাখি। অনেককিছুই আমাদের সত্যিকারের শোনা থেকে বিরত করে:
অন্য জিনিস নিয়ে চিন্তা করা (“আমার টু-ডু লিস্টে এরপর কী আছে?”)
অপর ব্যক্তিকে খুশি করার চেষ্টা করা (“আমি আশা করি আমি তাদের বোঝাতে পারব যে আমি সঠিক।”)
যখন তারা কথা বলা থামাবে তখন আমরা কী বলব তা পরিকল্পনা করা
সত্যিকারের শোনার অর্থ হল সবকিছু একপাশে সরিয়ে রাখা এবং যে ব্যক্তি কথা বলছে তার প্রতি মনোযোগ দেওয়া।
একটি বাচ্চা ছিল যে তার বাবার পড়ার সময় তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করত। যখন বাচ্চাটি একটি গল্প বলত, তিনি উপযুক্ত সময়ে মন্তব্য করতে থাকতেন। তিনি ভাবতেন যে তিনি শুনছেন, কিন্তু শুনতেন না। একবার তার মেয়ে তাকে তার পড়া চলাকালীন একটি জঙ্গলের গল্প শুনিয়েছিল। তিনি ক্রমাগত মন্তব্য করেছিলেন, “হ্যাঁ, এটা দারুণ,” এবং বুঝতেই পারেননি যে তার মেয়ের গল্পটি পুরোপুরি কাল্পনিক ছিল।
(২) প্রকাশ করুন যে আপনি শুনছেন।
সংযোগ স্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল বডি ল্যাঙ্গোয়েজ বা দৈহিক ভাব-ভঙ্গী। কেবল শোনাই যথেষ্ট নয়; অপরদিকে থাকা ব্যক্তিরও অনুভব করা উচিত যে আপনি শুনছেন।
যেখানে তারা স্বাচ্ছন্দ্য এবং যেখান থেকে আপনি তাদের সরাসরি দেখতে পাবেন, সেখানে বসুন। সাধারণত, এটি সহায়ক হয় যদি, আপনি যখন মন্ডলীর কোনো সদস্যের সাথে, আপনার অধীনস্থ কোনো ব্যক্তির সাথে কথা বলছেন, বা কোনো ব্যক্তির কাউন্সেলিং করছেন, তখন ডেস্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন এবং সমান অবস্থানে বসেন। লোকেরা সাধারণত ডেস্কের পিছনে বসে থাকা কোনো ব্যক্তির সাথে খোলাখুলিভাবে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করে। একজন ভালো সংযোগকারী হওয়ার জন্য, অন্যদের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে এবং সহজভাবে সংযোগ স্থাপন করতে অনুপ্রাণিত করার জন্য আপনি যা যা করতে পারেন তা করুন।
(৩) নোটস নিন।
পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে, নোট নেওয়া এটি প্রকাশ করতে পারে যে আপনি একজন ভালো শ্রোতা। একটি ফর্ম্যাল সেটিংয়ে, যেমন ক্লাসরুমে বা বোর্ড মিটিংয়ে, নোট নেওয়া আপনাকে আপনি যা শুনেছেন তার একটি ভালো রেকর্ড রাখতে সাহায্য করবে। ব্যক্তিগত বার্তালাপে বা কাউন্সেলিং সেশনগুলিতে, আপনার অন্য ব্যক্তির থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। আপনি সহজভাবেই বলতে পারেন, “আরো ভালোভাবে মনোযোগ দেওয়ার জন্য আমি কিছু নোট নিতে চাই।”
[1]John T. Seamands, Tell It Well: Communicating the Gospel Across Cultures (Kansas City: Beacon Hill Press, 1981), 17
[2]Willowbank Report. “Gospel and Culture” (Lausanne Committee for World Evangelization, 1978), 15
উপসংহার
যদি আপনি একজন সেলসম্যান হতেন, তাহলে আপনি আপনার কাস্টমারদের খুব ভালোভাবে বুঝতে চাইতেন। আপনি নিশ্চিত করতে চাইতেন যে আপনি স্পষ্টভাবে সংযোগ স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়ে আপনার সেলসকে বাধাগ্রস্থ করেননি।
একজন পরিচর্যাকারী বা খ্রিষ্টীয় লিডার হয়ে, আপনি সুসমাচার বিক্রি করছেন না, বরং আপনি পরিত্রাণের সুসংবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এমনকি একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর চেয়েও একজন পরিচর্যাকারীর কাছে সংযোগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পৌলের মতোই, খ্রিষ্টে অন্যদের জেতার জন্য আপনি যা যা করতে পারেন সবকিছুই করতে চান। আপনার দর্শকদের বোঝার জন্য পর্যাপ্ত সময় নিলে তা আপনাকে আরো বেশি কার্যকর মিনিস্ট্রি প্রদান করবে।
৯ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
(১) পরবর্তী পাঠের শুরুতে, আপনি এই পাঠের ভিত্তিতে একটি পরীক্ষা নেবেন। প্রস্তুতির সময়ে পরীক্ষার প্রশ্নগুলি ভালোভাবে অধ্যয়ন করুন।
(২) এমন একটা জায়গা বেছে নিন যেখানে আপনার সাথে অন্য সংস্কৃতির কোনো ব্যক্তির দেখা হতে পারে। এটা কোনো রেস্টুরেন্ট, কোনো মন্ডলী, বা অন্য কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠান হতে পারে। প্রথমবার গিয়ে, সুসমাচার প্রচারের চেষ্টা করবেন না। বরং, শুনতে এবং শিখতে যান। প্রশ্ন করুন, বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন, এবং ভালোবাসা দেখান। আপনার ভিজিটের পর, ক্লাসে আপনার অভিজ্ঞতার কথা বলুন। অন্য সংস্কৃতির মানুষদের সাথে সময় কাটিয়ে আপনি কী শিখেছিলেন?
৯ নং পাঠের পরীক্ষা
(১) বিশ্বাসীদের জন্য বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ কেন?
(২) বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের জন্য এই পাঠে শেখা পাঁচটি বাস্তবিক বিবেচনার বিষয়ের তালিকা লিখুন।
(৩) বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে কৌতুক ব্যবহার করা কঠিন কেন?
(৪) বিবিধ-সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপনের জন্য যিশুর দেওয়া কোন আদেশগুলি আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়?
(৫) কার্যকর বিবিধ-সাংস্কৃতিক পরিচর্যা কাজ এবং সংযোগ স্থাপনের জন্য কোন পাঁচটি জিনিস প্রয়োজনীয়?
(৬) একজন মনোযোগী শ্রোতা হয়ে ওঠার জন্য তিনটি ব্যাবহারিক পদক্ষেপের তালিকা করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.