► আপনার বর্তমান বাইবেল অধ্যয়নে ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগ-এর সম্পর্ক আলোচনা করুন। যখন আপনি প্রচার করেন বা শিক্ষা দেন, কোনটি তুলনামূলক সহজ: পাঠ্যটি ব্যাখ্যা করা নাকি এটিকে আজকের জগতে প্রয়োগ করা? যখন আপনি শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন বা একটি সারমন শোনেন, আপনি কি তখন আপনার জীবনে সেটির প্রয়োগ খুঁজে পেতে সক্ষম?
জনার্দন বলেছিল, “পাস্টার, একদিন দেখা করা যেতে পারে? বাইবেল নিয়ে আমার একটা প্রশ্ন আছে।” এক সপ্তাহ পরে, পাস্টার জনার্দনের সাথে দেখা করেন এবং শাস্ত্র থেকে একাধিক অংশ দেখেন যা জনার্দনের সমস্যাটি তুলে ধরেছিল। কয়েক মিনিট পর, জনার্দন বাইবেল বন্ধ করে দেয় এবং বলে, “আমি একদম সত্যি বলছি। আমি ইতিমধ্যেই জানি যে বাইবেল কী বলছে, কিন্তু আমি তা করতে চাই না। এটা আমার পক্ষে খুবই কঠিন।”
[1]ব্যাখ্যা করা জনার্দনের সমস্যা ছিল না; সমস্যাটি ছিল তা প্রয়োগ করা। শাস্ত্র কী বলছে তা পর্যবেক্ষণ করা এবং সেটির অর্থ ব্যাখ্যা করাই যথেষ্ট নয়; আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের জীবনে এটিকে প্রয়োগ করতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, বাইবেল অধ্যয়ন ব্যাখ্যা পর্যায়েই শেষ হয়ে যায়।
পাঠ্যটি কী বলছে তা পর্যবেক্ষণ করা দিয়ে আমরা শুরু করি; আমরা এটির অর্থ ব্যাখ্যার দ্বারা এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাই; এবং আমরা অবশ্যই পাঠ্যটি আমাদের জীবনে প্রয়োগের দ্বারা সমাপ্ত করব। আমরা তিনটি প্রশ্নের দ্বারা এই প্রক্রিয়াটির সারসংক্ষেপ করতে পারি:
“যে বাক্য শোনে অথচ তার নির্দেশ পালন করে না, সে এমন মানুষের মতো যে আয়নায় তার মুখ দেখে,নিজেকে দেখার পর সে চলে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গেই ভুলে যায়, সে দেখতে কেমন”
- যাকোব ১:২৩-২৪
প্রয়োগের কিছু বিকল্প
গীতরচক লিখেছেন, যে ব্যক্তি সদাপ্রভুর বিধানে আনন্দ করে এবং যে বিধান নিয়ে ধ্যান করে, “সেই ব্যক্তি জলস্রোতের তীরে লাগানো গাছের মতো, যা যথাসময়ে ফল দেয়” (গীত ১:২-৩)। শয়তান আমাদেরকে বাইবেল থেকে দূরে রাখতে চায়। সে জানে যে যদি আমরা ঈশ্বরের বাক্যের পুষ্টি গ্রহণ না করি, তাহলে আমরা দুর্বল হয়ে যাব এবং আত্মিকভাবে মারা যাব।[1]
যদি শয়তান আমাদেরকে ঈশ্বরের বাক্য থেকে দূরে সরাতে না পারে, তাহলে সে আমাদের জীবনে সত্যকে প্রয়োগ করা থেকে আমাদেরকে দূরে সরাতে চেষ্টা করে। যতক্ষণ না আমরা ঈশ্বরের বাক্যে জীবন যাপন করব, আমরা ফলদায়ক বা সফল হয়ে উঠব না। যদি শয়তান আমাদেরকে বাইবেল পড়া থেকে দূরে সরাতে না পারে, তাহলে সে আমাদেরকে প্রয়োগের কোনো বিকল্প গ্রহণ করতে প্রলোভিত করবে।
আমরা প্রয়োগের পরিবর্তে ব্যাখ্যাকে বিকল্প হিসাবে নিই
শাস্ত্রের একটি অংশকে খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে এবং সেটির অর্থ নির্ধারণ করেও সেটিকে প্রয়োগ না করা সম্ভব। যখন দায়ূদ নাথানের কাছে এক ধনী ব্যক্তির রূপক কাহিনীটি শুনেছিলেন যেখানে ধনী ব্যক্তিটি এক গরীব লোকের ভেড়া চুরি করেছিল, তখন দায়ূদ সেটির সঠিক ব্যাখ্যাটি বুঝে উত্তর দিয়েছিলেন। “…জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, যে এ কাজটি করেছে তাকে মরতেই হবে! সেই শাবক ভেড়ীটির চারগুণ দাম তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে, কারণ সে এরকম কাজ করেছে ও তার মনে দয়ামায়াও হয়নি” (২ শমূয়েল ১২:৫-৬)।
দায়ূদের ব্যাখ্যা সঠিক ছিল। দায়ূদ সদাপ্রভুর নামে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন; তিনি সুবিচারের উপর জোর দিয়েছিলেন; তিনি ক্ষতিপূরণের দাবি করেছিলেন। কেউই দায়ূদের ব্যাখ্যাকে ভুল প্রমাণ করতে পারবে না, কিন্তু দাউদ তার নিজের জীবনে রূপকটি প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ভাববাদী সেই প্রয়োগের কাজটি করেছিলেন, “আপনিই সেই লোক!” (২ শমূয়েল ১২:৭)।
প্রচারক এবং শিক্ষকদের জন্য এটি একটি বিশেষ বিপদ। আমরা অন্যদেরকে শাস্ত্রের শিক্ষা দিয়ে থাকি যেখানে আমরা নিজেরাই নিজেদের অবাধ্যতাকে এড়িয়ে যাই। যাকোব বাধ্যতাহীন ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছিলেন। “তাহলে, সৎকর্ম করতে জেনেও যে তা করে না, সে পাপ করে” (যাকোব ৪:১৭)। শাস্ত্রকে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার পর, আমাদের কোনোমতেই এটির প্রয়োগে ব্যর্থ হওয়া উচিত নয়। আমাদের কখনোই প্রয়োগের জন্য ব্যাখ্যাকে প্রতিস্থাপন করা উচিত নয়।
আমরা পূর্ণ বাধ্যতার পরিবর্তে আংশিক বাধ্যতাকে বিকল্প হিসাবে নিই
আমাদেরকে সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন না করতে দিয়েও শাস্ত্রের একটি অংশ অধ্যয়ন করা, এটির অর্থ নির্ধারণ করা, এবং প্রয়োগের কিছু ক্ষেত্র খুঁজে নেওয়া সম্ভব। আমরা এমন অনেক জায়গা খুঁজে পাই যেখানে আমরা শাস্ত্রের বাধ্য হয়ে চলি, কিন্তু আমরা আমাদের জীবনে অবাধ্যতার গভীরতম জায়গাগুলি এড়িয়ে যাই।
আমরা হয়ত ইফিষীয় ৪:২৯ অধ্যয়ন করেছি, তোমরা কোনো অশালীন কথা বোলো না, প্রয়োজন অনুসারে যা অপরকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়ক, যা শ্রোতার পক্ষে কল্যাণকর, তোমাদের মুখ থেকে শুধু এমন কথাই বের হোক।” প্রয়োগ পর্যায়ে, আমরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলি পরীক্ষা করে দেখি। আমরা প্রশ্ন করি:
“আমার প্রচারগুলি কি আমার মন্ডলীর লোকেদের গেঁথে তোলে?” “হ্যাঁ; আমি একজন বিশ্বস্ত পাস্টার।”
“আমি কি আমার সন্তানদের সাথে অনুপ্রেরণাদায়ক কথা বলি?” “হ্যাঁ; আমি একজন প্রেমময় বাবা/মা।”
“আমি কি আমার স্বামী/স্ত্রী’কে গেঁথে তুলি?” “না; আমি প্রায়ই নেতিবাচক মন্তব্য করি।”
আপনার স্বামী বা স্ত্রীর সাথে আপনার কথোপকথন হল এমন এক জায়গা যেখানে ঈশ্বরের আত্মা আপনাকে পরিবর্তন করতে চান। শয়তান আপনাকে আপনার স্বামী বা স্ত্রী’র সাথে আপনার সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই পাঠ্যটির একটি জীবন-পরিবর্তনকারী প্রয়োগের জন্য অন্যান্য ক্ষেত্রে বাধ্যতা প্রতিস্থাপন করতে প্রলোভিত করে। সে আপনাকে পূর্ণ বাধ্যতার পরিবর্তে আংশিক বাধ্যতা স্বীকার করতে প্রলোভিত করে।
আমরা অনুতাপের পরিবর্তে অজুহাতকে বিকল্প হিসাবে নিই
এক আইনজীবী যিশুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “গুরুমহাশয়, অনন্ত জীবনের অধিকারী হওয়ার জন্য আমাকে কী করতে হবে?” (লূক ১০:২৫)। সেই আইনজীবী উত্তরটি জানতেন: “তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, সমস্ত প্রাণ, সমস্ত শক্তি ও সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করবে; এবং, তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো প্রেম করবে” (লূক ১০:২৭)।
আইনজীবী শাস্ত্রটি বুঝতে পেরেছিলেন। “কিন্তু সে নিজের সততা প্রতিপন্ন করতে যীশুকে প্রশ্ন করল, ‘বেশ, আমার প্রতিবেশী কে?’” (লূক ১০:২৯)। তার সমস্যা ব্যাখ্যা করায় ছিল না; তার সমস্যা ছিল প্রয়োগ করা। আইনজীবী তার ভালোবাসার অভাবকে যুক্তিযুক্ত করেছিলেন।
সম্ভবত ঈশ্বরের আত্মা আপনাকে বলছেন, “তোমার কথা তোমার স্বামী বা স্ত্রীকে উন্নত করছে না; এটি ধ্বংসাত্মক সংযোগ ।” আপনি বাক্য পড়েছেন; আপনি বাক্যের ব্যাখ্যা করেছেন; এখন এটি শাস্ত্রবাক্য প্রয়োগ করার সময়। পরিবর্তে, আপনি ভাবতে পারেন, “আমার স্বামী বা স্ত্রী সবসময়েই নেতিবাচক। আমি যদি নেতিবাচক হই, তবে এর কারণ হল আমার স্বামী বা স্ত্রী খুবই নেতিবাচক। এটি আমার দোষ নয়!” আপনি কী করলেন? আপনি ঈশ্বরের বাক্য মানতে আপনার ব্যর্থতার জন্য অনুতপ্ত হওয়ার পরিবর্তে আপনার আচরণের জন্য অজুহাত দিলেন।
আমরা রূপান্তরের পরিবর্তে আবেগকে বিকল্প হিসাবে নিই
যাকোব এমন এক ব্যক্তির উদ্দেশ্যে লিখেছেন যে ঈশ্বরের বাক্য শোনে, কিন্তু সেই অনুযায়ী কাজ করে না (যাকোব ১:২৩-২৪)। কখনো কখনো একজন ব্যক্তি ঈশ্বরের বাক্য শোনে এবং প্রকৃতভাবেই উদ্দীপিত হয়, কিন্তু সে সত্যিকারের পরিবর্তনের পরিবর্তে একটি আবেগজনক প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দেয়। প্রত্যেক পাস্টারই একটি বিষয়ের উপর প্রচার করার পর লোকেদের কাছে থেকে “এই সারমনটি আমাকে চেতনা দিয়েছিল” শোনার পর কোনো স্থায়ী রূপান্তর দেখতে না পাওয়ার হতাশাটি জানেন।
আপনি হয়ত কোনো ম্যারেজ [বিবাহ] সেমিনারে ইফিষীয় ৪:২৯ পদের ব্যাপারে শিখেছিলেন। সেমিনারের শেষে প্রতিজ্ঞা করার সময়ে, আপনি আপনার স্বামী অথবা স্ত্রীকে বললেন, “আমি দুঃখিত। আমি এখন থেকে ইতিবাচক কথা বলতে চাই। আমি আরো ভালো হওয়ার চেষ্টা করব!” কিন্তু, আপনি দ্রুতই খারাপ কথা বলার, নেতিবাচক বক্তব্য প্রকাশ করার এবং আঘাত দেয় এমন সমস্ত কথা বলার যে পুরনো অভ্যাস আপনার ছিল সেটিতে পতিত হবেন।
কী ঘটল? আপনার বক্তব্যটি একটি আবেগজনক প্রত্যুত্তর ছিল, সেখানে কোনো প্রকৃত রূপান্তর ছিল না। এটা বিপদজনক; বারংবার ব্যর্থতার পর, আমরা মেনে নিই যে রূপান্তর অসম্ভব। সত্যের প্রতি একটি আবেগজনক প্রত্যুত্তর অবশ্যই প্রকৃত রূপান্তর এবং বাধ্যতা দ্বারা পরিপূর্ণ হতে হবে, যা কেবল তখনই সম্ভব যখন আমরা পবিত্র আত্মার কাজের কাছে নিজেদের সমর্পণ করি।
[1]এই পাঠের উপাদানটি Howard G. Hendricks and William D. Hendricks, Living By the Book (Chicago: Moody Publishers, 2007) পুস্তক থেকে অভিযোজিত করা হয়েছে।
শাস্ত্র প্রয়োগের ধাপসমূহ
আয়নায় নিজেকে দেখার পর তাকে কেমন দেখতে তা ভুলে যাওয়া ব্যক্তির বর্ণনা দেওয়ার পর, যাকোব সেই ব্যক্তির বর্ণনা দিয়েছেন যে তার জীবনে শাস্ত্রকে যথার্থভাবে প্রয়োগ করে। “কিন্তু যে নিখুঁত বিধানের প্রতি আগ্রহভরে দৃষ্টি দেয়, যা স্বাধীনতা প্রদান করে ও যা শুনেছে তা ভুলে না গিয়ে নিরন্তর তা পালন করতে থাকে, সে সবকাজেই আশীর্বাদ পাবে” (যাকোব ১:২৫)। ঈশ্বরের বাক্য কেবল শোনাই যথেষ্ট নয়, আমাদের অবশ্যই বাক্যকে প্রয়োগ করতে হবে। শাস্ত্রের যথার্থ প্রয়োগের জন্য কী প্রয়োজন?
শাস্ত্রকে যথার্থভাবে প্রয়োগ করার জন্য, আপনাকে অবশ্যই তিনটে কাজ করতে হবে।
ধাপ ১: শাস্ত্রের অর্থ জানা
এই কারণেই পর্যবেক্ষণ এবং ব্যাখ্যার উপর লেখা পাঠগুলি গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা পাঠ্যটি না জানি, আমাদের প্রয়োগ সঠিক হবে না। আমরা এই প্রশ্নটির দ্বারা প্রয়োগের ধাপটি শুরু করি, “কীভাবে প্রথম শতকের খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা তাদের জগতে এই শাস্ত্রটি প্রয়োগ করেছিলেন?”
উদাহরণস্বরূপ, পৌল লিখেছেন, “যিনি আমাকে শক্তি দান করেন, তাঁর মাধ্যমে আমি সবকিছুই করতে পারি” (ফিলিপীয় ৪:১৩)। কিছু শিক্ষক এটিকে একটি প্রতিজ্ঞা হিসেবে নিয়েছেন যে আমরা যা কিছু আকাঙ্খা করি, সেই সবকিছুই অর্জন করতে পারি কারণ “খ্রিষ্ট আমাদের শক্তি দেন।” খেলোয়াড়রা ঘোষণা করে, “আমি আজকের খেলাটা জিতব কারণ ‘খ্রিষ্টের মাধ্যমে আমি সবকিছুই করতে পারি।’” বিশ্বাসে সুস্থকারীরা (faith healers) তাদের শ্রোতাদের আশ্বস্ত করে, “যদি আপনার পর্যাপ্ত বিশ্বাস থাকে, আপনি সুস্থ হবেন কারণ ‘খ্রিষ্টের মাধ্যমে আপনি সবকিছুই করতে পারেন।’” মিথ্যা সমৃদ্ধির সুসমাচার (prosperity gospel) প্রচারকারীরা ঘোষণা করে, “ঈশ্বর আপনাকে ধনী করতে চান। আপনাকে অবশ্যই যা করতে হবে তা হল ঈশ্বরের সাথে সহযোগিতা করা। আপনি ‘খ্রিষ্টের মাধ্যমে সবকিছুই করতে পারেন।’”
যখন আমরা প্রশ্ন করি, “কীভাবে ফিলিপির খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা এই পদটি প্রয়োগ করেছিলেন?”, তখন আমরা দেখতে পাই যে এটি কোনো জাগতিক সাফল্যের প্রতিজ্ঞা ছিল না, বরং এটি ছিল আত্মিক সহ্যশক্তির এক প্রতিজ্ঞা। পৌল রোমে কারাগারে বন্দী ছিলেন; তার শ্রোতারা নির্যাতনের সম্মুখীন হচ্ছিল। তিনি বলেননি যে তিনি জাগতিক সাফল্য পেয়েছেন, কিন্তু বলেছিলেন যে তিনি বিশ্বাস এবং বাধ্যতা দ্বারা সমস্ত পরিস্থিতিতে স্থির থাকতে সক্ষম ছিলেন। পৌল সমস্ত পরিস্থিতিতে অবিচল থাকতে শিখেছিলেন কারণ খ্রিষ্টের মাধ্যমে তিনি সেই সবকিছুই করতে পারতেন যা ঈশ্বর তাকে দিয়ে করাতে চেয়েছিলেন। তিনি এক স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ জীবনের কথা বলেননি; এটি প্রকাশ করেছে যে কঠিন পরিস্থিতির মুখেও তার সন্তুষ্টির আত্মাকে হারিয়ে ফেলেননি।
ধাপ ২: কীভাবে জীবনে শাস্ত্রকে প্রয়োগ করতে হয় তা বোঝা
পৌল তিমথিকে সচেতন করেছিলেন যে অন্যদের মধ্যে সফলভাবে পরিচর্যা কাজ করার জন্য তিমথির অবশ্যই নিজেকে খুব ভালোভাবে জানা ও চেনা দরকার। “তোমার জীবন ও শাস্ত্রশিক্ষা সম্বন্ধে একান্তভাবে সচেতন থেকো। এসব পালন করে চলো তাহলে তুমি নিজেকে এবং তোমার কথা যারা শোনে, তাদেরও রক্ষা করতে পারবে” (১ তিমথি ৪:১৬)। যেহেতু তিমথি নিজের প্রতি ও তিনি যে শিক্ষা প্রচার করতেন তার প্রতি গভীরভাবে মনোযোগ দিয়েছিলেন, তিনি তার শ্রোতাদের কাছে এক কার্যকর পরিচর্যা কাজ করেছিলেন।
এই পাঠ্যটি জানার পর এবং এটি কীভাবে এটির প্রথম পাঠকদের কাছে প্রযোজ্য হয়েছিল তা জানার পর, আমাকে অবশ্যই নিজেকে জানতে হবে এবং জানতে হবে যে কীভাবে পাঠ্যটি আমার জগতে প্রযোজ্য হবে। হয়ত আমি নিজের দিকে দেখলাম, এবং দেখলাম যে আমার জীবন বা কাজ সাধারণভাবে ঈশ্বরের আশীর্বাদ বা সাহায্য প্রত্যাশা করার মতো নয়। ফিলিপীয় ৪:১৩ আমাকে বলছে আত্মবিশ্বাসের সাথে জীবনের প্রতিকূলতাগুলির মোকাবিলা করতে, কারণ “যিনি আমাকে শক্তি দান করেন, তাঁর মাধ্যমে আমি সবকিছুই করতে পারি।”
এখন প্রয়োগটি স্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট হয়ে উঠেছে। এই পদটির পাশে, আমি লিখতে পারি, “খ্রিষ্টীয় মূল্যবোধের বিরোধী পরিবেশে কাজ করার সময়ে, আমি বিশ্বস্ততায় নিজেকে শক্তিশালী করার জন্য ঈশ্বরের অনুগ্রহে বিশ্বাস করব। আমি খ্রিষ্টের মাধ্যমে সবকিছু করতে পারি।” এটিই পদটিকে প্রথম শতাব্দী থেকে একবিংশ শতাব্দীতে নিয়ে আসে।
শাস্ত্রের সঠিক প্রয়োগ বাস্তব জগতে কাজ করবে। ঈশ্বরের বাক্য জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত। আমি শাস্ত্র প্রয়োগ করার সময়ে জিজ্ঞাসা করব না, “এই পাঠ্যের ‘ধর্মীয়’ প্রয়োগটি কী?” পরিবর্তে, আমি জিজ্ঞাসা করব, “কিভাবে এই পাঠ্যটি অনুযায়ী জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জীবনযাপন করব?”
জন ওয়েসলি (John Wesley) লিখেছেন, “খ্রিষ্টের সুসমাচার ধর্মের নয় কিন্তু তা সমাজের জন্য; সামাজিক পবিত্রতা ছাড়া অন্য কোনো পবিত্রতার নয়।”[1] যেভাবে সাধুরা সমাজ থেকে লুকিয়ে জীবন যাপন করে সেইভাবে নয়, বরং অন্যদের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকা বিশ্বাসী হিসেবে আমরা সুসমাচারের জীবন যাপন করি। আমরা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পবিত্রতায় বেড়ে উঠি না, বরং একটি মন্ডলীর প্রেক্ষাপটে সকলের সাথে পবিত্রতায় বৃদ্ধি পাই।
এর আগে, আমরা ইফিষীয় ৪:২৯ পদ দেখেছি। আমি এই পদটির প্রয়োগ বিবেচনা করার সময়ে, সহবিশ্বাসীদের সাথে আমার সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমার এটি প্রয়োগ করা উচিত: “আমার কথা কি আমার সহবিশ্বাসীদের গড়ে তোলে, নাকি তাদের ভেঙে দেয়?” এই পদটি আমার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হওয়া উচিত: “আমার কথা কি আমার পরিবারকে গড়ে তোলে, নাকি এটি আমার স্বামী বা স্ত্রী এবং সন্তানদের আত্মবিশ্বাসকে দুর্বল করে?” আমার কাজের সাথে পদটিকে যুক্ত করা উচিত: “আমি কি এমন একজন কর্মচারী যে ইতিবাচক কথা বলে, নাকি আমি নেতিবাচক ধারণা ছড়িয়ে দিই?” ইফিষীয় ৪:২৯ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত।
এই কারণেই পৌল লিখেছেন যে, যে সকল দাসেরা তাদের মনিবদের সাথে যথার্থ সম্পর্কে থাকে, তারা সব বিষয়ে আমাদের পরিত্রাতা ঈশ্বরের শিক্ষাকে সুশোভিত করবে (তীত ২:১০)। শাস্ত্রের সচেতন প্রয়োগ আমাদের চারপাশের লোকেদের মধ্যে সুসমাচারকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
ধাপ ৩: শাস্ত্রের বাধ্য হওয়া
বাইবেল অধ্যয়নের মূল উদ্দেশ্য হল দৈনন্দিন প্রয়োগ। ২ তিমথি ২:৩-৬-তে পৌল খ্রিষ্টবিশ্বাসীদেরকে সৈনিক, দৌড়বীর, এবং কৃষক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এই চিত্রগুলি এমন এক ব্যক্তির বর্ণনা দেয় যে তার নিজের উদ্দেশ্য পূরণে অবিচল। সৈনিক কখনো যুদ্ধ চলাকালীন বিশ্রাম নেয় না; দৌড়বীর কখনো দৌড়ের মাঝপথে থেমে যায় না; কৃষক কখনো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত লাঙল টানা বন্ধ করে দেয় না। খ্রিষ্টীয় জীবন ধৈর্য্য চায়। “আর যে দৌড় আমাদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, এসো ধৈর্যের সঙ্গে সেই অভিমুখে ছুটে চলি” (ইব্রীয় ১২:১)।
যখন আপনি শাস্ত্র অধ্যয়ন করছেন, তখন প্রশ্ন করুন, “আমার জীবনে কি এমন কোনো ক্ষেত্র আছে যেখানে এই সত্যটি আমার অনুশীলন করা উচিত?” আপনার জীবনে সত্যটি শৃঙ্খলাবদ্ধ প্রয়োগ করার জন্য ঈশ্বরের কাছে সাহায্য চান। যখন আপনি এটি করবেন, ঈশ্বর আরো অনেক সত্য আপনার সামনে প্রকাশ করবেন। আপনি তখন আত্মিক খাদ্যের জন্য আরো বেশি চাহিদা গড়ে তুলবেন।
যদি ঈশ্বর আপনার কথার ব্যাপারে চেতনা দেওয়ার জন্য ইফিষীয় ৪:২৯ পদের মাধ্যমে আপনার সাথে কথা বলেন, আপনার অবশ্যই এমন কথা বলার অভ্যাসের প্রতিজ্ঞা করা উচিত যা গঠনমূলক। এটি ঈশ্বরের কাছে আপনার জন্য কারোর জীবনে একদিন অনুগ্রহের কথা বলার সুযোগ চাওয়ার মতোই সহজ ব্যাপার। এটি হতে পারে আপনি একজন বিশ্বস্ত বন্ধুকে বললেন যে আপনার মুখ থেকে কোনো ক্ষতিকারক শব্দ শুনলেই সে যেন আপনাকে সচেতন করে দেয়। এটিই দৈনন্দিন ভিত্তিতে ঈশ্বরের বাক্য অনুশীলন করার একটি পদ্ধতি হয়ে ওঠে।
কলেজে এক যুবক ছিল যে প্রলোভনের একটা নির্দিষ্ট ক্ষেত্র নিয়ে লড়াই করছিল। জয়ন্ত মিউজিক ভালোবাসত, তার মধ্যে এমনকিছু গানের কথা ছিল যেগুলি তাকে তার দুর্বলতার ক্ষেত্রগুলিতে প্রলোভিত করত। জয়ন্ত প্রলোভনের উপরে বিজয় লাভ করতে চেয়েছিল, কিন্তু সে শাস্ত্রকে তার জীবনে ধারাবাহিকভাবে প্রয়োগ করেনি।
সেপ্টেম্বর মাসে সেখানে একটি উদ্দীপনা সভা হয়। জয়ন্ত মঞ্চের কাছে অলটারে যায়। সে তার নিজের ঘরে ফিরে আসে এবং তার অনুপযুক্ত মিউজিকগুলি ছুঁড়ে ফেলে দেয়। কয়েক সপ্তাহের জন্য, সে এক উজ্জ্বল সাক্ষ্য হয়ে ওঠে। তারপর সে সেই ধরণের কিছু নতুন মিউজিক কিনতে শুরু করে। দ্রুত সে বিমর্ষ হয়ে পড়ে; নভেম্বরে মাসে সে বলতে পারে, “আমি পিছিয়ে পড়েছি।”
ফেব্রুয়ারিত মাসে সেখানে একটি বাইবেল কনফারেন্স হয়। জয়ন্ত মঞ্চের কাছে অলটারে যায়। সে তার সমস্ত রেকর্ডগুলি ছুঁড়ে ফেলে দেয় এবং কয়েক সপ্তাহের জন্য এক উজ্জ্বল সাক্ষ্য হয়ে ওঠে। তারপর এপ্রিল মাসে সে আবার কিছু রেকর্ড কেনে এবং একই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়!
জয়ন্তর কী প্রয়োজন ছিল? আরো ভালো ব্যাখ্যা? না! সে তার দুর্বলতার ক্ষেত্রটি জানত; সে জানত যে একটি বিশুদ্ধ মনের অধিকারী হওয়ার ব্যাপারে বাইবেল কী বলে; সে জানত যে ওই নির্দিষ্ট মিউজিক তার আত্মিক জীবনে কী প্রভাব ফেলছে। জয়ন্তর সমস্যা ব্যাখ্যায় ছিল না; সে যা জানত তা কেবল অনুশীলন করার প্রয়োজন ছিল।
প্রয়োগের কোন ক্ষেত্রটি আপনার অনুশীলন করা প্রয়োজন?
[1]John and Charles Wesley’s 1739 edition of Hymns and Sacred Poems-এর মুখবন্ধ।
যে প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করবেন
শাস্ত্রকে কীভাবে জীবনে প্রয়োগ করাবেন তা জানার জন্য এই পাঁচটি প্রশ্ন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
(১) এমন কোনো পাপ আছে যা এড়িয়ে চলতে হবে?
বহু খ্রিষ্টবিশ্বাসীই নিরাশ হয়ে পড়ে যখন তারা এমন এক ক্ষেত্র দেখে যেখানে তাদের জীবনে শাস্ত্রের দাবি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। যখন ঈশ্বর তাঁর বাক্যের মাধ্যমে আমাদের সাথে আমাদের জীবনে থাকা পাপের কোনো ক্ষেত্র নিয়ে কথা বলেন তখন আমাদের নিরাশ হওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে, আমাদের অবশ্যই স্বেচ্ছায় তাঁর বাক্যের বাধ্য হওয়া উচিত।
(২) এমন কোনো প্রতিজ্ঞা আছে যা দাবি করতে হবে?
কখনো কখনো প্রয়োগ হল সরল ভাবে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলি দাবি করা। আমাদের অবশ্যই প্রতিজ্ঞাগুলি যথার্থভাবে ব্যাখ্যা করার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কিছু কিছু প্রতিজ্ঞা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা ইস্রায়েল জাতির জন্য করা হয়েছিল। আমাদের কখনোই কোনো প্রতিজ্ঞাকে সেটির প্রসঙ্গ বা প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। কিন্তু, যখন আমরা কোনো প্রতিজ্ঞাকে এটির বাইবেলভিত্তিক প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা করেছি এবং জানি যে প্রতিজ্ঞাটি সকল বিশ্বাসীদের জন্য, তখন আমরা আমাদের জীবনের জন্য প্রতিজ্ঞাটি দাবি করতে পারি।
(৩) এমন কোনো পদক্ষেপ আছে তা নিতে হবে?
প্রশ্ন করুন, “শাস্ত্রের এই অংশটির কারণে আমার কী করা উচিত? এই অংশটি কোন সত্যের শিক্ষা দিচ্ছে? এটি কি আমাকে আমার মতবাদের কোনো ভুল সম্বন্ধে সতর্ক করছে? এই শাস্ত্রটির সাথে মানানসই হওয়ার জন্য আমাকে কি আমার চিন্তাধারা পরিবর্তন করতে হবে? এই শাস্ত্রটির জন্য আমাকে কোন পদক্ষেপটি নিতে হবে?”
একটি উদাহরণ হল প্রার্থনা। যখন আমরা দায়ূদ, পৌল, নহিমিয়, এবং যিশুর প্রার্থনা দেখি, তখন আমরা আমাদের নিজেদের প্রার্থনার জীবনের জন্য বিভিন্ন আদর্শ বা মডেল খুঁজে পাই। পৌল বা যিশুর প্রার্থনা অনুকরণ করে প্রার্থনা করতে শেখা কতই না ভালো ব্যাপার! যেমন আমি পড়ি, তেমনভাবে আমি আমার নিজের জীবনের জন্য বিভিন্ন প্রার্থনা শেখার পদক্ষেপ নিতে পারি।
(৪) এমন কোনো আদেশ আছে যা মেনে চলতে হবে?
পৌলের চিঠিগুলির দ্বিতীয়ভাগগুলিতে সাধারণত বিভিন্ন আদেশ রয়েছে। এই আদেশগুলি মূলত খুবই সাধারণ এবং সরাসরি। মাঝে মাঝে খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা গভীর সত্যগুলির খোঁজ করে, যেখানে তারা ইতিমধ্যেই যা জানে সেইগুলোর সহজ প্রয়োগকে এড়িয়ে চলে!
কেউ একজন স্পষ্ট সত্যকে উপেক্ষা করে গভীর সত্যগুলির দিকে দৃষ্টিপাত করার বিপদের বিষয়ে লিখেছিলেন। তিনি নতুন নিয়মের গ্রিক নিয়ে তার প্রথম দিকের অধ্যয়নের ব্যাপারে বলেছিলেন। মথি ১৬:২৪ পদে যিশু বলেছেন, “কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, সে অবশ্যই নিজেকে অস্বীকার করবে, তার ক্রুশ তুলে নেবে ও আমাকে অনুসরণ করবে।” আসল গ্রিকে কোনো আলাদা, বিষ্ময়কর অর্থে এটি লেখা নেই। গ্রিকে, এই পদটির মানে ঠিক সেটাই আছে যা এই পদটি প্রকাশ করেছে। অর্থটি বোঝা কঠিন নয়। বরং, পালন করা বা মেনে চলা কঠিন।[1]
কখনো কখনো যা প্রয়োজন তা হল সহজভাবে বলা, “হ্যাঁ, প্রভু। আমি মেনে চলব।”
(৫) এমন কোনো উদাহরণ আছে যা অনুসরণ করতে হবে?
বেশিরভাগ শাস্ত্রাংশই হল জীবনচরিত। যখন আমরা বায়োগ্রাফি পড়ি, আমরা প্রশ্ন করি, “এমন কোনো উদাহরণ আছে যা অনুসরণ করতে হবে?”
যখন আমরা আদিপুস্তক ১৮ অধ্যায়ে অব্রাহামের ব্যাপারে পড়ি, তখন আমরা আমাদের জগতের জন্য বিনতি-প্রার্থনা করার উদ্দেশ্যে অব্রাহামের আদর্শ অনুসরণ করতে পারি। একজন শিক্ষক নাইজেরিয়াতে শিক্ষা দিচ্ছিলেন। নাইজেরিয়া মুসলিম এবং খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বিভক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন তার সহপাঠীকে প্রশ্ন করেছিল, “কেন আমরা মুসলিমদের জন্য প্রার্থনা না করে ওদের সাথে বেশি করে যুদ্ধ করছি? আমরা কি বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর তাদেরকে পরিত্রাণে নিয়ে আসতে পারেন? যদি তাই হয়, আমাদের অব্রাহামের উদাহরণ অনুসরণ করা উচিত এবং ওদের জন্য বিনতি-প্রার্থনা করা উচিত!” এটাই হল প্রয়োগ।
আমরা রোমীয় ১২:১-২ পদ পর্যবেক্ষণ করেছি। আমরা এই পদগুলি থেকে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলির উপর শব্দ অধ্যয়নের কাজটিও করেছি। পৌলের বার্তাটি সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য আমরা ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, এবং বাইবেলভিত্তিক প্রসঙ্গ অধ্যয়ন করেছি।
আমরা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত। কীভাবে আপনি আপনার জীবনে রোমীয় ১২:১-২ পদ প্রয়োগ করবেন?
► আগের পাঠগুলিতে আপনি রোমীয় ১২:১-২ পদের উপর যে নোটগুলি তৈরি করেছিলেন সেগুলি পর্যালোচনা করুন। তারপর তিনটে নির্দিষ্ট বিষয়ের তালিকা করুন যেগুলি আপনি আপনার জীবনে এই পাঠ্যটি প্রয়োগ করার জন্য করতে পারেন।
► যদি আপনি এই পাঠটি একটি গ্রুপের সাথে অধ্যয়ন করছেন, তাহলে আপনার প্রয়োগটি গ্রুপের সকলের সাথে আলোচনা করুন। ভবিষ্যতে আবার দেখা হলে, জবাবদিহিতা গড়ে তুলুন। কিছু অঙ্গীকার করুন এবং আপনার গ্রুপকে বলুন তারা যেন আপনি কীভাবে আপনার প্রয়োগে উন্নতি করছেন তা জানতে চেয়ে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখে।
উপসংহার
এই কোর্সটি হল অন্যদেরকে শেখানোর উদ্দেশ্যে বাইবেলের ব্যাখ্যা করার সাথে সম্পর্কিত। ঈশ্বরের বাক্যের পরিচর্যাকারী হিসেবে আমাদেরকে এই কাজটি করতে আহ্বান করা হয়েছে। তবে, এটিতে একটি বিপদ আছে। যদি আমরা সচেতন না থাকি, তাহলে আমরা কেবল প্রচার করা এবং শিক্ষা দেওয়ার জন্য বাইবেল অধ্যয়ন করতে পারি। আমরা বাইবেলের সত্যগুলি আমাদের নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হতে পারি।
বাইবেল স্টাডির উদ্দেশ্য কেবল শেখা এবং শেখানো নয়। ঈশ্বরের বাক্যকে সেই খাবারে সাথে তুলনা করা যেতে পারে যা আমাদেরকে দৈহিকভাবে পরিপুষ্ট করে। খাবার খাওয়ার দৈনন্দিন এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আছে। আপনি একটা স্বাস্থ্যকর খাবার একবার খেয়ে কোনোভাবেই আপনার কোলেস্টেরলকে কমাতে পারবেন না, এবং আপনি ঈশ্বরের বাক্যে একদিন সময় কাটিয়ে আত্মিক শক্তি গড়ে তুলতে পারবেন না। দৈহিক সুস্বাস্থ্য গড়ে তোলার জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়, এবং আত্মিক শক্তি গড়ে তোলার জন্য ঈশ্বরের বাক্য দীর্ঘমেয়াদে গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবুও দৈনন্দিনের খাবারটি সেইদিন আপনি যা কিছুর মুখোমুখি হন তার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ, ঠিক যেমন একটি ভালো ব্রেকফাস্ট আপনাকে দিনের কঠিন পরিশ্রমে সাহায্য করে।
পাস্টার, শিক্ষক এবং মন্ডলীর লিডার হিসেবে আমাদের কখনোই ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে আমাদের নিজস্ব আত্মিক জীবনও অবশ্যই প্রতিদিন পরিপুষ্ট করা উচিত। অন্যদের শেখানোর জন্য আমাদের প্রচেষ্টায়, আমাদের কখনোই ঈশ্বরের বাক্যের রুটি দিয়ে নিজেদের হৃদয়কে তৃপ্ত করা ভুলে যাওয়া উচিত নয়। আমরা যখন নিজেদের পরিপুষ্ট করে তুলি তখনই আমাদের মধ্যে সেই আত্মিক শক্তি থাকে যা ঈশ্বরের লোকদের পরিচর্যা করার জন্য আমাদের প্রয়োজন।
পৌল এই বিপদটি নিয়ে খুব ভালোভাবে সচেতন ছিলেন। তিনি অন্যদের কাছে প্রচার করার পর নিজেকে অযোগ্যরূপে দেখার মারাত্মক সম্ভাবনা সম্পর্কে লিখেছেন (১ করিন্থীয় ৯:২৭)। যখন আমরা আমাদের নিজেদের অন্তরে ঈশ্বরের অনুগ্রহ প্রত্যাখ্যান করে অন্যদের শিক্ষা দিই, তা কী শোচনীয় ব্যাপার। অন্যদের শেখানোর জন্য অধ্যয়ন করুন, কিন্তু আপনার নিজের অন্তরে ঈশ্বরের কথা শোনার জন্যও অধ্যয়ন করুন।
এটি অনুশীলন করুন
► লূক ১৪:২৫-১৭:১০ হল উপমা এবং নির্দেশনার একটি সিরিজ। যিশু যখন শেষবার যিরুশালেমে গিয়েছিলেন, তিনি তাঁর শিষ্যদেরকে তাঁর শেষ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। যখন আপনি যিশুর দেওয়া শিক্ষাগুলি পড়ছেন, এই পদগুলি থেকে নির্দিষ্ট প্রয়োগগুলি খুঁজে বের করুন। প্রশ্ন করুন:
(১) ঈশ্বরের বাক্য কেবল যথার্থভাবে ব্যাখ্যা করাই যথেষ্ট নয়; এটিকে অবশ্যই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করতে হবে।
(২) শয়তান আমাদেরকে বিভিন্ন বিকল্প দ্বারা প্রয়োগকে প্রতিস্থাপন করতে প্রলোভিত করে:
আমরা প্রয়োগের পরিবর্তে ব্যাখ্যাকে বিকল্প হিসাবে নিতে পারি।
আমরা পূর্ণ বাধ্যতার পরিবর্তে আংশিক বাধ্যতাকে বিকল্প হিসাবে নিতে পারি।
আমরা অনুতাপের পরিবর্তে অজুহাতকে বিকল্প হিসাবে নিতে পারি।
আমরা রূপান্তরের পরিবর্তে আবেগকে বিকল্প হিসাবে নিতে পারি।
(৩) আমাদের জীবনে শাস্ত্রকে প্রয়োগ করার জন্য, আমাদের তিনটি পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত:
শাস্ত্রের অর্থ জানা।
কীভাবে জীবনে শাস্ত্রকে প্রয়োগ করতে হয় তা বোঝা।
শাস্ত্রের বাধ্য হওয়া।
(৪) শাস্ত্রকে কীভাবে জীবনে প্রয়োগ করাবেন তা জানার জন্য এই প্রশ্নগুলি ব্যবহার করুন:
এমন কোনো পাপ আছে যা এড়িয়ে চলতে হবে?
এমন কোনো প্রতিজ্ঞা আছে যা দাবি করতে হবে?
এমন কোনো পদক্ষেপ আছে তা নিতে হবে?
এমন কোনো আদেশ আছে যা মেনে চলতে হবে?
এমন কোনো উদাহরণ আছে যা অনুসরণ করতে হবে?
৯ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
১ নং পাঠে, আপনি এই কোর্স জুড়ে অধ্যয়ন করার জন্য শাস্ত্রের একটি অংশ বেছে নিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষণ এবং ব্যাখ্যায় আপনি যে নোটগুলি তৈরি করেছিলেন সেগুলি ব্যবহার করে আপনি যে শাস্ত্রটি অধ্যয়ন করছেন তার জন্য বাস্তবিক প্রয়োগের একটি তালিকা তৈরি করুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.