► আপনার ভাষায় এমন একটি শব্দ বলুন যার অনেকগুলি অর্থ আছে। যখন কেউ সেই শব্দটি ব্যবহার করে, তখন আপনি কীভাবে বোঝেন যে তারা কী বোঝাতে চাইছে?
বাইবেল ব্যাখ্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হল আমরা যে অংশটি অধ্যয়ন করছি তার প্রসঙ্গ। এই পাঠে আমরা একটি অংশের ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ এবং পারিপার্শ্বিক বাইবেলভিত্তিক প্রসঙ্গ অধ্যয়ন করা শিখব।[1]
[1]এই পাঠের বেশিরভাগ উপাদান J. Scott Duvall and J. Daniel Hays, Grasping God’s Word (Grand Rapids: Zondervan, 2012) পুস্তকটির ৬ ও ৭ নং অধ্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে।
ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট
► ২ তিমথি ৪:৬-২২ পড়ুন।
পৌল তিমথিকে লিখছেন, “তুমি শীতকালের আগেই এখানে আসার জন্য যথাসাধ্য” (২ তিমথি ৪:২১)। নিম্নলিখিত প্রেক্ষাপটের আলোয় পৌলের অনুরোধটি শুনুন:
পৌল একটি রোমীয় কারাগারে বন্দী আছেন। দ্রুত তিনি তার বিশ্বাসের জন্য শহীদ হবেন।
তিমথি কয়েক’শ কিলোমিটার দূরে ইফিষ শহরে পরিচর্যা কাজ করছেন।
সমুদ্রে শরৎকালে ভ্রমণ করা বিপদজনক এবং শীতকালের অসম্ভব। তিমথিকে শীতকালের আগে পৌঁছতে হলে, এই চিঠিটি পাওয়ার পরেই তাকে বেরিয়ে পড়তে হবে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটটি পৌলের অনুরোধের পিছনে আবেগের প্রতি আমাদের উপলব্ধি যোগ করে। “যখন সম্ভব তখন দেখা করতে এসো”, এই কথাটির চেয়েও পৌল বেশি কিছু বলছেন। তিনি তার আত্মিক পুত্রের কাছে আবেদন করছেন, “আমি মারা যাওয়ার আগে আবার তোমাকে দেখতে চাই। যদি তুমি শীতকাল অবধি অপেক্ষা করো, তাহলে যাত্রা অসম্ভব হয়ে উঠবে। দয়া করে খুব বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই এসো।” আপনি যদি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিছুই না জানেন, তবুও চিঠির বার্তা একই, কিন্তু প্রসঙ্গটি পৌলের অনুরোধের গভীরতাটি দেখায়।
ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ কারণ ঈশ্বর বাইবেলকে এমন একটি একক ভাষায় প্রদান করেননি যা পৃথিবীর সব মানুষ বোঝে। শাস্ত্র সম্পর্কে দু’টি বিবৃতি গুরুত্বপূর্ণ:
১। যেকোনো সময়ে যেকোনো স্থানে যেকোনো ব্যক্তির জন্য শাস্ত্রের নীতিগুলি সত্য।
২। একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট স্থানে একটি নির্দিষ্ট জাতির জন্য শাস্ত্রের নীতিগুলি দেওয়া হয়েছিল।
ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক পার্থক্যসমূহ যা আমাদের পৃথিবীকে প্রাচীন পৃথিবী থেকে আলাদা করেছে
৩
ব্রিজ বা সেতু
পাঠ্যে যে নীতিটি শেখানো হয়েছে
৪
মানচিত্র
নতুন নিয়মের সাথে সম্পর্ক (পুরাতন নিয়মের অংশগুলির জন্য)
৫
আমাদের শহর
আমাদের জগতে নীতিটির প্রয়োগ
আমরা শাস্ত্রের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট আমরা যত ভালোভাবে বুঝতে পারব, বাইবেলের সর্বজনীন নীতিগুলি আমরা ততই ভালভাবে বুঝতে পারব।
যখন আমরা ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ অধ্যয়ন করি, তখন আমরা আসল শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বার্তাটি বোঝার জন্য বাইবেলকে “তাদের শহর”-এ পড়ি। তারপর আমরা “নদী”-র দিকে তাকাই – বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পার্থক্য যা আমাদের পৃথিবী এবং প্রাচীন পৃথিবীকে আলাদা করে। আমরা যত ভালোভাবে বাইবেলের জগতকে বুঝব, আমরা আজকে আমাদের জগতে ঈশ্বরের বাক্য কী বলছে তা তত স্পষ্টভাবে বুঝতে পারব।
শাস্ত্রকে তার মূল প্রসঙ্গে পড়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি বাইবেলে ব্যাখ্যার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতির ভিত্তিমূল: আজকের দিনে বাইবেলের কোনো পাঠ্যের যেকোনো বৈধ ব্যাখ্যা অবশ্যই পাঠ্যটির মূল বার্তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আমি এমন কোনো অর্থ খুঁজে বের করবো না যা পাঠ্যের মূল বার্তার বিপরীত।
ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ কী? ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ হল মূল পাঠ্যের বাইরে এমনকিছু তথ্য যা আমাদেরকে পাঠ্যটিকে বুঝতে সাহায্য করে। এটিতে নিম্নলিখিত কিছু প্রশ্নের উত্তর অন্তর্ভুক্ত থাকে:
মরুভূমিতে ইস্রায়েলীয়দের জীবন কেমন ছিল (যাত্রাপুস্তক–দ্বিতীয় বিবরণের প্রেক্ষাপট)
প্রথম শতকে প্যালেস্টাইনের সংস্কৃতি কেমন ছিল (সুসমাচার পুস্তকগুলির প্রেক্ষাপট)?
কারা সেই ভ্রান্ত শিক্ষকেরা ছিল যাদের জন্য গালাতীয় এবং ফিলিপীয়দের প্রতি পৌলের এরকম হতাশা সৃষ্টি হয়েছিল?
ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ অধ্যয়নের সময় কিছু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন:
(১) বাইবেলের লেখক সম্পর্কে আমরা কী জানতে পারি?
যেহেতু ঈশ্বর মানব লেখকদের মাধ্যমে কথা বলেছেন, তাই লেখকদের জ্ঞান আমাদেরকে ঈশ্বরের বাক্য আরো ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে।
পৌলের পত্রগুলি পড়ার সময়ে, রূপান্তরের আগে তার জীবন মনে করুন। যখন তিনি তার আগের “আস্থাশীল হওয়ার যথেষ্ট কারণ” (ফিলিপীয় ৩:৪-৬) ব্যাখ্যা করছেন, মনে রাখবেন যে ফরিশীরা বিধানের প্রতি তাদের যত্নশীল আনুগত্যের জন্য উচ্চপর্যায়ে সম্মানিত ছিলেন। আমরা যখন তাদের কপটতা বা যিশুকে গ্রহণ করার ব্যাপারে তাদের প্রত্যাখ্যান দেখি, তখন আমাদের ঈশ্বরের বিধানের বিশদের প্রতি তাদের ভালোবাসার কথাও মনে রাখা উচিত।
অপরদিকে, যখন পৌল নিজেকে পাপীদের মধ্যে “নিকৃষ্টতম” বলে বর্ণনা করছেন (১ তিমথি ১:১৫), মনে রাখবেন পৌল মন্ডলীকে তাড়না করতেন এবং খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের মৃত্যুদন্ড দিতেন। এই ব্যক্তি দামাস্কাসের রাস্তায় খ্রিষ্টের সাথে সাক্ষাতের আগে তার জীবনের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে ছিলেন।
যাত্রাপুস্তক পড়ার সময়ে, আমাদের ফরৌণের প্রাসাদের মোশির সুযোগগুলি সম্পর্কেও জানা উচিত। যখন আমরা প্রাসাদের জীবনের বিলাসবহুলতা বিবেচনা করি, তখন মোশির সম্পর্কে ইব্রীয় ১১:২৫ পদে বলা কথাগুলি আরো অনেক বেশি অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে; “…তিনি পাপের ক্ষণস্থায়ী সুখ ভোগ করার বদলে, ঈশ্বরের প্রজাদের সঙ্গে নির্যাতন ভোগ করাই শ্রেয় বলে মনে করলেন।” যখন আমরা তরুণ মোশির শিক্ষাগত এবং সাংস্কৃতিক সুযোগগুলি উপভোগের বিষয়টি দেখি, তখন আমরা দেখি যে ঈশ্বর একটি মহান জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁর দাসকে তৈরি করছিলেন।
(২) বাইবেলের শ্রোতাদের সম্পর্কে আমরা কী জানতে পারি?
বাইবেলের লেখকদের সম্পর্কে জানার পাশাপাশি, আমাদের যতটা সম্ভব আসল শ্রোতাদের ব্যাপারেও জানা উচিত।
১ম এবং ২য় বংশাবলীর বেশিরভাগ উপাদানই শমূয়েল এবং রাজাবলী থেকে পুনরাবৃত্ত হয়েছে। কেন? ইস্রায়েলের নির্বাসন থেকে ফিরে আসার পর বংশাবলী লেখা হয়েছিল। রাজাবলী দেখায় যে কেন ঈশ্বর ইস্রায়েলকে বিচারের কষ্টভোগ করতে দিয়েছিলেন; বংশাবলী দেখায় যে ঈশ্বর এখনো তাঁর লোকদের জন্য যত্ন নেন।
যিরমিয় যিরুশালেমের ধ্বংসের কাছাকাছি সময়ে প্রচার করতেন। বিচারের ব্যাপারে আমরা যখন তার বার্তা পড়ি, আমাদের তখন মনে রাখা উচিত যে সেই প্রতিজ্ঞা করা বিচার অবশ্যই ঘটার ছিল। তবে, যিরমিয়তে, আমরা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাও পড়ি, “কারণ তোমাদের জন্য কৃত পরিকল্পনার কথা আমি জানি, সদাপ্রভু এই কথা বলেন। তা হল তোমাদের সমৃদ্ধির পরিকল্পনা, তোমাদের ক্ষতি করার নয়, তোমাদের এক আশা ও ভবিষ্যৎ মঙ্গলদানের পরিকল্পনা” (যিরমিয় ২৯:১১)। এই প্রতিজ্ঞাটি হল লোকেদেরকে বিদেশে বন্দী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হবে। ঈশ্বরের পরিকল্পনায় তাঁর লোকেদের জন্য বিচারও অন্তর্ভুক্ত থাকে যা তাদেরকে অনুতাপে নিয়ে আসবে।
১ম যোহন পত্রটি সেইসব খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল যারা একটা ভ্রান্ত শিক্ষার সম্মুখীন হয়েছিল যে কেবল আত্মাই ভালো; দৈহিক বিষয় মন্দ। ভ্রান্ত শিক্ষকেরা বলেছিল যে যিশু সত্যিকারের মানুষ ছিলেন না; তিনি কেবল মানুষ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। যোহন তার পাঠকদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে যিশুর একটি রক্ত-মাংসের দেহ ছিল। “প্রথম থেকেই যা ছিল বিদ্যমান, যা আমরা শুনেছি, যা আমরা নিজের চোখে দেখেছি, যা আমরা নিরীক্ষণ করেছি এবং নিজের হাতে যা স্পর্শ করেছি, জীবনের সেই বাক্য সম্পর্কে আমরা ঘোষণা করছি” (১ যোহন ১:১)।
ভ্রান্ত শিক্ষকেরা এটিও বলেছিল যে পরিত্রাণ গুপ্তজ্ঞান থেকে এসেছিল যা কেবল কিছু লোকের কাছে প্রকাশিত হয়েছিল। যোহন দেখিয়েছেন যে ঈশ্বর সম্বন্ধে সত্য জ্ঞান পাওয়ার জন্য আমাদের অবশ্যই বাধ্য হতে হবে; “আমরা যদি তাঁর আদেশ পালন করি, তাহলেই বুঝতে পারব যে আমরা তাঁকে জেনেছি” (১ যোহন ২:৩)। যে জ্ঞান অনন্ত জীবন নিয়ে আসে তার মধ্যে প্রেম অন্তর্ভুক্ত; “আমরা জানি, মৃত্যু থেকে আমরা জীবনে উত্তীর্ণ হয়েছি, কারণ আমাদের ভাইবোনদের আমরা ভালোবাসি; যে ভালোবাসে না, সে মৃত্যুর মাঝেই বাস করে” (১ যোহন ৩:১৪)।
(৩) আমরা পুস্তকের ঐতিহাসিক বিন্যাস সম্পর্কে কী জানতে পারি?
একজন প্রচারকের ব্যাপারে কল্পনা করুন যিনি বলছেন, “আজকে আমি প্রচার করবো যে কীভাবে একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর স্ত্রী পাওয়া উচিত। বিচারকর্তৃগণ ২১:২০-২১ আমাদেরকে বলে যে আমাদের কোনো কাছাকাছি গ্রামে যেতে হবে এবং সেখানে ঝোপের মধ্যে অপেক্ষা করতে হবে। যখনই সেই গ্রামের কোনো তরুণী মেয়ে সেখান দিয়ে যাবে, তাকে ধরতে হবে এবং বাড়ি নিয়ে যেতে হবে। এটিই হল স্ত্রী নির্বাচনের জন্য বাইবেলভিত্তিক আদর্শ।” আপনার এই প্রচারকের শাস্ত্রের প্রয়োগ নিয়ে সন্দেহ করা উচিত!
এই প্রচারকের প্রয়োগে ভুলটি কোথায়? বিচারকর্তৃগণ বলছে যে বিন্যামীন গোষ্ঠীর পুরুষেরা একবার একটা ঘটনায় এইভাবে স্ত্রীদের পেয়েছিল। এটি এমনকি এটাও বলছে যে তারা একটি ভালো উদ্দেশ্যে এটি করেছিল – ইস্রায়েলের একটি গোষ্ঠীকে সংরক্ষণ করার জন্য। তবে, প্রচারক ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ অবজ্ঞা করছেন। এই কাহিনীটি বিচারকর্তৃগণের একদম শেষে রয়েছে, এটি এমন একটি পুস্তক যেটি ঈশ্বরের পরিকল্পনা থেকে বিশৃঙ্খলার দিকে ইস্রায়েলের পতনকে দেখায়। বিয়ের ব্যাপারে ঈশ্বরের পরিকল্পনা তুলে ধরার পরিবর্তে, এই কাহিনীটি দেখায় যে যখন ঈশ্বরের লোকেরা বিদ্রোহ করে, তখন কী ঘটে।
কখনো কখনো আমরা লেখক বা শ্রোতা সম্পর্কে খুবই কম জানতে পারি, কিন্তু আমরা সাধারণ ঐতিহাসিক বিন্যাসের ব্যাপারে জানি। আমরা জানি না রূতের পুস্তক কে লিখেছেন, কিন্তু আমরা জানি যে এই ঘটনাগুলি বিচারকর্তৃগণের শাসনকালে ঘটেছিল (রূত ১:১)। এটি ইস্রায়েলে একটি সামাজিক বিশৃঙ্খলার সময় ছিল (বিচারকর্তৃগণ ২১:২৫)। ঈশ্বরের প্রতি ইস্রায়েলের অবিশ্বস্ততার বিপরীতে, রূতের পুস্তকটি রূত নামের এক মোয়াবীয় বিধবার বিশ্বস্ততার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করে।
এছাড়াও এই কাহিনীটি জানায় যে কীভাবে বোয়স স্বার্থহীনভাবে রূতকে নয়মীর মৃত ছেলেদের আইনি অধিকার পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিয়ে করেছিলেন। একজন স্বজাতি-উদ্ধারকর্তা (kinsman-redeemer) হিসেবে, বোয়স নয়মীর জন্য একটি পুত্র প্রদান করার উদ্দেশ্যে তার নিজের উত্তরাধিকারের অধিকার ত্যাগ করেছিলেন। এটি করার মাধ্যমে, বোয়স দায়ূদের বংশে স্থান পেয়েছিলেন (মথি ১:৬, ১৬)।
যোনার পুস্তক ব্যাখ্যা করার সময়ে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট গুরুত্বপূর্ণ:
নীনবী ছিল আসিরিয়া’র রাজধানী শহর, যারা ছিল ইস্রায়েলের সবচেয়ে বিপদজনক শত্রু।
যে সময়ে যোনা নীনবীতে প্রচার করছিলেন, প্রায় সেই একই সময়ে, আমোষ এবং হোশেয় সতর্ক করে দিচ্ছিলেন যে আসিরিয়দের হাতেই ইস্রায়েলের উপর ঈশ্বরের বিচার নেমে আসবে।
একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, আসিরীয়দের কাছে যোনার প্রচার করতে চাওয়ার অনিচ্ছা বোধগম্য। যোনার পুস্তকটি ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গিকে দেখায়, এমন এক ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি যিনি সমস্ত মানুষকে কোনোরকম বাধা ছাড়াই ভালোবাসেন।
(৪) আমরা পুস্তকের সাংস্কৃতিক বিন্যাস সম্পর্কে কী জানতে পারি?
শাস্ত্রের ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ বাইবেলের জগতের সাংস্কৃতিক রীতি-নীতির দিকেও দৃষ্টিপাত করে। আমরা যিশুর বলা রূপক কাহিনীগুলি থেকে নতুন নতুন অন্তর্দৃষ্টি পাই যখন আমরা প্রথম শতকের প্যালেস্টাইনের রীতি-নীতির বিন্যাসে সেগুলি পড়ি:
“উত্তম শমরীয়”-এর রূপক কাহিনীটি (লূক ১০:৩০-৩৫) ইহুদি দর্শকদের জন্য খুবই বিস্ময়কর ছিল। যিশুর শ্রোতারা একজন আহত ভ্রমণকারীকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতাদের ব্যর্থতায় আশ্চর্য হয়নি। তবে, তারা আশা করেছিল যে উদ্ধারকারী কোনো রব্বি অর্থাৎ গুরু বা ফরিশী হবে। পরিবর্তে, যিশু প্রেমের আদর্শরূপে এক সামান্য শমরীয়কে নির্দেশ করেছেন।
“হারানো ছেলে”-এর রূপক কাহিনীটিতে (লূক ১৫:১১-৩২), আমাদের মনে রাখা উচিত যে ইহুদি বাবারা খুবই সম্ভ্রান্ত হতেন। শ্রোতারা আশা করেছিল যে সেই বাবা তার ছেলের ফিরে আসাকে প্রত্যাখ্যান করবেন, বা খুব সম্ভবত তাকে একজন দাস হিসেবে থাকার অনুমতি দেবেন। পরিবর্তে, সেই বাবা তার হারিয়ে যাওয়া ছেলের ফিরে আসার আনন্দে তার নিজের সম্মান-মর্যাদা ভুলে গিয়েছিলেন। এই কাজটা এতটাই বিস্ময়কর ছিল যে যে প্রাচ্যের কিছু সংস্কৃতিতে এই কাহিনীটিকে “ধাবমান পিতার রূপক” বলে থাকে। একইভাবে আমাদের স্বর্গস্থ পিতাও আমাদের ক্ষমা অর্জন করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন না; বরং তিনি জঘন্য পাপীদের খোঁজ করেন। এটা আমাদের পিতার অপরিমিত ভালোবাসার একটি চিত্র।
পৌলের পত্রগুলি প্রথম শতকের সাংস্কৃতিক অবস্থা বিবেচনা করে পড়া উচিত। ইফিষীয় ৫:২১-৬:৯ পৌলের পাঠকদের কাছে খুবই হতবাক করে দেওয়ার মতো ছিল। একজন স্ত্রীকে তার স্বামীর কাছে বশ্যতা স্বীকার করতে হবে – এই বিষয়ে পৌলের আদেশ খুবই সাধারণ ব্যাপার ছিল; কিন্তু স্বামীদেরকে খ্রিষ্টের আত্মত্যাগের উদাহরণ অনুসরণ করার বিষয়ে তার আদেশটি রোমীয় দর্শকদের কাছে একেবারেই অপরিচিত ছিল। সন্তানরা তাদের বাবা-মায়ের বাধ্য হয়ে চলবে – এমনটাই প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু রোমীয় জগতে কেউ কোনোদিন পিতাদেরকে বলেনি যে তারা যেন তাদের সন্তানদের ক্রুদ্ধ না করে।
যখন পৌল ফিলিপীয়দের বলেছিলেন তাদের এমনভাবে জীবন যাপন করতে হবে যেন তাদের নাগরিকত্ব স্বর্গের, তখন তিনি এমন একটি শহরের উদ্দেশ্যে চিঠিটি লিখছিলেন যাদের রোম সাম্রাজ্যে বিশেষ নাগরিকত্বের সুবিধা ছিল। যেহেতু শহরটি অবসরপ্রাপ্ত সৈনিকদের জন্য একটি কলোনি হিসেবে স্থাপিত হয়েছিল, তাই ফিলিপীর বাসিন্দারা তাদের নাগরিকত্বকে বিশেষ মর্যাদা দিত। পৌল তাদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে তাদের প্রকৃত নাগরিকত্ব স্বর্গে রয়েছে, কোনো পার্থিব শহরে নয়। এই ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক পটভূমিটি জানা ফিলিপীয়দের প্রতি পত্রেকে আরো ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে।
ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট আবিষ্কার করা
যেমন আমরা দেখেছি, আমাদের একটি অনুচ্ছেদের ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের অধ্যয়ন প্রশ্ন করা দিয়ে শুরু হয়। আমরা কীভাবে আমাদের প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজে পাবো? কোর্সের পরিশিষ্টে বাইবেল অধ্যয়নের জন্য কিছু উপাদানের উল্লেখ রয়েছে যা আমাদেরকে উত্তর প্রদান করতে পারে। এছাড়াও আমরা Shepherds Global Classroom-এর প্রস্তুত করা পুরাতন নিয়ম এবং নতুন নিয়মের প্রাথমিক কোর্সগুলি সুপারিশ করব। এই কোর্সগুলি বাইবেলের প্রতিটি পুস্তকের পটভূমি প্রদান করে।
[1]ছবি: “Interpreting the Bible” Anna Boggs-র আঁকা, https://www.flickr.com/photos/sgc-library/52377290578 থেকে প্রাপ্ত, CC BY 2.0 দ্বারা লাইসেন্সকৃত। J. Scott Duvall and J. Daniel Hays, Grasping God’s Word (Grand Rapids: Zondervan, 2012)-এর ধারণা থেকে।
বাইবেলের প্রেক্ষাপট
বাইবেলভিত্তিক ব্যাখ্যার আরেকটি বিবেচ্য বিষয় হল পারিপার্শ্বিক প্রসঙ্গ বা প্রেক্ষাপট। এটি জিজ্ঞাসা করা গুরুত্বপূর্ণ, “কীভাবে এই পদটি, অনুচ্ছেদটি, অধ্যায়টি, এবং পুস্তকটি বাইবেলের বাকি অংশের সঙ্গে যুক্ত?”
কল্পনা করুন যে আপনি একটি চিঠি থেকে ছেঁড়া একটুকরো কাগজ পেয়েছেন যাতে একটিই বাক্য লেখা আছে। কাগজটাতে লেখা আছে, “হ্যাঁ, ৭ ঠিক আছে।” এই বাক্যটি কী বোঝাচ্ছে?
হয়ত লেখকের কারোর সাথে দেখা করার ছিল। তিনি নিশ্চিত করছেন যে মিটিংয়ের জন্য সন্ধ্যে ৭টা সঠিক সময়।
হয়ত লেখকের স্ত্রী একটি নোট লিখে জানতে চেয়েছিলেন, “শুক্রবার রাতে ভোজনের কতজনকে নিমন্ত্রণ করব?” তিনি উত্তর দিচ্ছেন, “সাত (জন) ঠিক আছে।”
হয়ত লেখক কোনো বই ৮ ডলারে বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কেউ জানতে চেয়েছেন, “আপনি কি দামটা ৭ ডলার করতে পারেন?” লেখক উত্তর দিয়েছেন, “হ্যাঁ, ৭ ডলার ঠিক আছে।”
আমরা একটি বাক্য তখনই বুঝতে পারি যখন আমরা প্রসঙ্গটি জানতে পারি। আমরা একটি সমগ্র অনুচ্ছেদের প্রেক্ষাপটে একটি বাক্য পড়ি। আমরা একটি সমগ্র চিঠির প্রেক্ষাপটে একটি অনুচ্ছেদ পড়ি। বৃহত্তর ক্ষেত্রে, আমরা দুই ব্যক্তির মধ্যে একাধিক চিঠি আদানপ্রদানের ক্রমের প্রসঙ্গে একটি চিঠি পড়ে থাকি।
শাস্ত্র একইভাবে কাজ করে। প্রতিটি পদকে অবশ্যই পারিপার্শ্বিক পদ, অধ্যায়, এবং পুস্তকের প্রসঙ্গ অনুযায়ী পড়তে হবে। প্রসঙ্গটি সরাসরি অনুচ্ছেদ থেকে বেরিয়ে সমগ্র বাইবেলে ছড়িয়ে পড়ে।
একটি নির্দিষ্ট পদকে যথার্থভাবে বোঝার জন্য, আমাদেরকে অবশ্যই পারিপার্শ্বিক প্রসঙ্গের দিকে দেখতে হবে। যে ব্যক্তি ঈশ্বরের বিধানে আনন্দিত হয়, গীত ১:৩ পদ তার জন্য একটি অসাধারণ প্রতিজ্ঞা প্রদান করে। সে একটি সতেজ গাছের মতো যা প্রচুর ফল ধারণ করে। “সে যা কিছু করে তাতে উন্নতি লাভ করে।” কেউ কেউ এটিকে প্রত্যেক বিশ্বস্ত বিশ্বাসীর জন্য বস্তুগত সমৃদ্ধির একটি প্রতিজ্ঞা হিসেবে দাবি করে।
তবে, যখন আপনি গীত ১ অধ্যায়ের বাকি অংশটি পড়েন, তখন মূল দৃষ্টি বস্তুগত আশীর্বাদে নয় বরং যারা সদাপ্রভুর বিধান অনুযায়ী চলে, তাদের আত্মিক উর্বরতার দিকে থাকে। এই গীতটি একটি প্রতিজ্ঞা দিয়ে শেষ হয়েছে; ঈশ্বর “ধার্মিকদের পথে দৃষ্টি রাখেন, কিন্তু দুষ্টদের সকল পথ ধ্বংসের দিকে যায়” (গীত ১:৬)। ঈশ্বরের পরিচিত (তিনি লক্ষ্য রাখেন এবং তাঁর অনুমোদিত) পথ এবং যে পথ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় তার মধ্যে একটি পার্থক্য রয়েছে।
গীতসংহিতার বাকি অংশ এবং সামগ্রিকভাবে বাইবেল অনুসরণ করে, এই বার্তাটি নিশ্চিত করা হয়েছে। একজন বিশ্বাসীর সমৃদ্ধি বস্তুগত সম্পদে নয়, কিন্তু ঈশ্বরের অনুমোদনে পাওয়া যায়। এটিই হল প্রকৃত সমৃদ্ধি।
একটি অনুচ্ছেদকে প্রেক্ষাপট বা প্রসঙ্গ অনুযায়ী পড়ার জন্য তিনটি ধাপ অনুসরণ করুন:
১। দেখুন কীভাবে সমগ্র পুস্তকটি বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বিভক্ত হয়েছে। আপনি যে পদটি পড়ছেন তার সরাসরি প্রেক্ষাপটটি কী?
২। একটি বা দু’টি বাক্যে অনুচ্ছেদটির ধারণাটিকে সারসংক্ষেপ করুন। এটি আপনাকে সমগ্র বিভাগটির বার্তাটি বুঝতে সাহায্য করবে।
৩। সমগ্র পুস্তকটি পড়ুন এবং প্রশ্ন করুন: “আমি যে অনুচ্ছেদটি অধ্যয়ন করছি, সেটি কীভাবে পুস্তকটির বার্তার সাথে যুক্ত?”
সমগ্র বাইবেল > সম্পূর্ণ পুস্তক > অনুচ্ছেদ বা অধ্যায় > পদ
রোমীয় ১২:১-২ ঈশ্বরের কাছে আমাদের পূর্ণ সমর্পণের জন্য আহ্বান করে।
অতএব, ভাইবোনেরা, ঈশ্বরের বহুবিধ করুণার পরিপ্রেক্ষিতে, আমি তোমাদের কাছে মিনতি করছি, তোমরা তোমাদের শরীরকে জীবন্ত বলিরূপে, পবিত্র ও ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্যরূপে উৎসর্গ করো—তাই হবে তোমাদের যুক্তিসংগত আরাধনা।আর তোমরা এই জগতের রীতি অনুযায়ী জীবনযাপন করো না, কিন্তু তোমাদের মনের নতুনীকরণের দ্বারা রূপান্তরিত হও। তখন তোমরা ঈশ্বরের ইচ্ছাকে যাচাই ও অনুমোদন করতে পারবে, যা উৎকৃষ্ট, প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।
এটি একটি বিভাগ (রোমীয় ১২-১৫) শুরু করেছে যেটি দেখায় যে একজন খ্রিষ্টবিশ্বাসীর দৈনন্দিন জীবনে এই সমর্পণ কেমন হবে। এটির সরাসরি প্রসঙ্গ থেকে সরে, রোমীয় ১২-১৫ তাত্ত্বিক নির্দেশের ১১টি অধ্যায় অনুসরণ করে যা দেখায় যে কীভাবে আমরা ঈশ্বরের সঙ্গে এক সঠিক সম্পর্কে আসি।
রোমীয় পুস্তকের প্রেক্ষাপটের পিছনে, পৌলের লেখা প্রত্যেকটি চিঠি আমাদের খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের ব্যবহারিক বাহ্যিক কাজের জন্য তাঁর উদ্বেগকে প্রকাশ করে। অবশেষে, রোমীয় ১২:১-২ ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য বা বাধ্যতা এবং সমর্পণের বার্তা নিয়ে সমগ্র বাইবেলে মানানসই বা উপযুক্ত হয়। উদাহরণস্বরূপ, রোমীয় ১২:১-২ পদের ভাষা লেবীয় পুস্তকে বলিদানের বিষয়টিকে প্রতিফলিত করে। বাইবেলের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটগুলি আমরা যত ভালোভাবে বুঝব, পৌলের কথাগুলি তত শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
১। মথি ১৮:২০ পদটি পড়ুন। এটির অর্থ কী?
২। এবার মথি ১৮:১৫-২০ পদ পড়ুন। এটি কি ১৮:২০ পদের অর্থকে প্রভাবিত করে?
১। রোমীয় ৮:২৮ পদটি পড়ুন। এটি কীসের প্রতিজ্ঞা করছে?
২। এবার রোমীয় ৮:২৮-৩০ পদ পড়ুন। রোমীয় ৮:২৮ পদে কোন মঙ্গলের প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে?
১। প্রকাশিত বাক্য ৩:২০ পদটি পড়ুন। কে আমন্ত্রিত?
২। এবার প্রকাশিত বাক্য ৩:১৪-২১ পদ পড়ুন। কাকে উদ্দেশ্য করে এই আমন্ত্রণ দেওয়া হয়েছে?
প্রসঙ্গ অধ্যয়নের ক্ষেত্রে কিছু প্রচলিত ভুল
এই পাঠের উপসংহারে, আমরা এমন কিছু প্রচলিত ভুল দেখব যেগুলি ব্যাখ্যাকারীরা শাস্ত্রের প্রসঙ্গ বা প্রেক্ষাপট অধ্যয়ন করার সময়ে করে থাকে।
বেঠিক তথ্য ব্যবহার করা
একজন শিক্ষার্থী মথি ১৯:২৩-২৪ পদের উপরে একটি ভুল উপস্থাপনা দিয়েছিল। সে বলেছিল যে যিশুর সময়কালে যিশালেমের একটি দরজাগুলির মধ্যে একটিকে “সুচের ছিদ্রপথ” বলা হত। এই দরজাটি এতই নিচু ছিল যে সেটির মুখ দিয়ে একটি পশুর যাওয়ার জন্য উটের পিঠ থেকে সমস্ত বোঝা নামিয়ে দিতে হত।
এই শিক্ষার্থীর উপস্থাপনায় দুটি সমস্যা ছিল:
১। যিশুর সময়কালে এই দরজার কোনো ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই। “সুচের ছিদ্রপথ” যিশুর সময়কালেও সেই একই জিনিসকেই বোঝাতো যা এটি এখন বোঝায়, সুচের মাথার দিকে থাকা সূক্ষ্ম ছিদ্র।
২। তার প্রেক্ষাপটের তথ্য ভুল থাকার কারণে, শিক্ষার্থীটি পাঠ্যটি সম্পর্কে মিথ্যে উপসংহারে পৌঁছেছিল। তার উপস্থাপনাটিতে জোর দেওয়া হয়েছিল যে আমাদেরকে আমাদের জীবন থেকে সমস্ত অতিরিক্ত বোঝা বাদ দিতে হবে যাতে আমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারি।
তবে, যিশু এটা শেখাচ্ছিলেন না যে ধনী এবং ক্ষমতাশালীদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা খুব কঠিন; তিনি শেখাচ্ছিলেন যে এটা অসম্ভব! শিষ্যরা এই কথায় এতটাই স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল যে তারা বলে উঠেছিল, “তাহলে কে পরিত্রাণ পেতে পারে?”
যিশু প্রত্যুত্তরে বলেলনি, “এটি কঠিন, কিন্তু যদি তুমি মারাত্মকভাবে চেষ্টা করো, তাহলে প্রবেশ করতে পারো।” তিনি সুসমাচারের সুসংবাদ দিয়ে প্রত্যুত্তর করেছিলেন: “মানুষের পক্ষে এটা অসম্ভব, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবকিছুই সম্ভব।” প্রেক্ষাপট অধ্যয়নের সময়ে, ভুল তথ্য দিয়ে নিজেকে ভুল দিকে নিয়ে যাবেন না।
বার্তার উর্দ্ধে প্রসঙ্গ অধ্যয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া
দ্বিতীয় বিপদটি হল পাঠ্যটির বার্তার চেয়ে প্রসঙ্গ অধ্যয়নকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে অনুমতি দেওয়া। পৌল করিন্থীয় খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে ভুল জ্ঞান গর্বিত করে, কিন্তু প্রেম একে অপরকে গেঁথে তোলে (১ করিন্থীয় ৮:১)।[1] এটাও সম্ভব যে আমরা প্রেক্ষাপটের বিশদ দ্বারা এতই মুগ্ধ হয়ে যাই যে আমরা যে পাঠ্যটি অধ্যয়ন করছি তার বার্তাটিই ভুলে যাই।
একজন ব্যক্তি শমরীয় সংস্কৃতির ব্যাপারে সবকিছু শিখে ফেলতে পারে এবং উত্তম শমরীয়র রূপকের উদ্দেশ্যটি ভুলে যেতে পারে: “যাও ফিরে গিয়ে তুমিও সেরকম করো” (লূক ১০:৩৭)। সেক্ষেত্রে, আমাদের জ্ঞান ব্যর্থ হয়ে যাবে। শাস্ত্রের বার্তাটি বোঝার জন্য অধ্যয়ন করুন; নিজের স্বার্থে অধ্যয়নে নিমজ্জিত হবেন না। অনেক বেশি কার্যকরভাবে প্রচার করা এবং শিক্ষাদানের জন্য অধ্যয়ন করুন, আপনার মহান জ্ঞানের ভিত্তিতে নিজেকে নিয়ে গর্ব করার জন্য নয়!
[1]পৌল জ্ঞানের বিরোধী নন; তিনি নবীন মন্ডলীগুলির জন্য উত্তম নির্দেশনা প্রদান করার জন্য তার পত্রটি লিখেছিলেন। যাইহোক, করিন্থীয়দের গর্বিত "জ্ঞান" ধ্বংসের দিকে পরিচালিত করেছিল, উন্নতির দিকে নয়।
(১) সঠিক ব্যাখ্যার জন্য আমাদের যেকোনো নির্দিষ্ট শাস্ত্রীয় অংশের প্রেক্ষাপট অধ্যয়ন করতে হবে।
(২) ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বাইবেলের সাংস্কৃতিক অবস্থা তুলে ধরে। এটি প্রশ্ন করে:
বাইবেলের লেখক সম্পর্কে আমরা কী জানতে পারি?
বাইবেলের শ্রোতাদের সম্পর্কে আমরা কী জানতে পারি?
আমরা পুস্তকের ঐতিহাসিক বিন্যাস সম্পর্কে কী জানতে পারি?
আমরা পুস্তকের সাংস্কৃতিক বিন্যাস সম্পর্কে কী জানতে পারি?
(৩) বাইবেলভিত্তিক প্রেক্ষাপট দেখায় যে কীভাবে একটি পদ শাস্ত্রের বাকি অংশের সঙ্গে জুড়ে আছে ।
৫ নং পাঠের অ্যাসাইনমেন্ট
১ নং পাঠে আপনি এই কোর্স জুড়ে অধ্যয়ন করার জন্য শাস্ত্রের একটি অংশ বেছে নিয়েছিলেন। আপনার নির্বাচিত সেই শাস্ত্রের ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক এবং বাইবেলভিত্তিক প্রসঙ্গ অধ্যয়ন করুন। নোট লেখার জন্য একটি পৃষ্ঠা রাখুন যেখানে আপনি এই প্রেক্ষাপটের ব্যাপারে এই পাঠের আলোচনা থেকে যতগুলি সম্ভব প্রশ্নের উত্তর লিখবেন।
প্রশ্ন করুন:
লেখক কে ছিলেন?
তিনি কোন সময়ে লিখেছিলেন?
তার প্রেক্ষাপট কী ছিল?
তার শ্রোতা কারা ছিলেন?
তাদের কোন ধরণের সমস্যা ছিল?
অংশটির পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি কেমন ছিল?
এই পুস্তকটির সময়ে কোন কোন ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল?
কোন সাংস্কৃতিক বিষয়গুলি বইটিকে ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে?
অংশটির বাইবেলভিত্তিক প্রসঙ্গ নির্ধারণ করার জন্য আগে-পরের অধ্যায়গুলি পড়ুন।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.