আপনার ১ নং পাঠের স্যামুয়েলকে মনে আছে? স্যামুয়েল প্রত্যেকদিন বাইবেল পড়ত, কিন্তু সে যা পড়ছে তার মাধ্যমে ঈশ্বরের রব কী বলছে তা শুনত না। সমস্যাটি কী ছিল? স্যামুয়েল যা পড়ত তা ব্যাখ্যা করার প্রক্রিয়া তার কাছে ছিল না। সে পড়ত, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারত না।
[1]প্রেরিত ৮ অধ্যায় আরেক ব্যক্তির কাহিনী বলে যিনি পড়তেন কিন্তু বুঝতে পারতেন না। ফিলিপ, যিনি প্রথম শতকের মন্ডলীর একজন ডিকন ছিলেন, পবিত্র আত্মার নেতৃত্বে যিরুশালেম থেকে গাজার দিকে মরুপ্রান্তরের পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেখানে তার সাথে একজন ইথিওপীয় আধিকারিকের দেখা হয় যিনি যিরুশালেম মন্দির থেকে আরাধনা করে ফিরছিলেন। সেই আধিকারিক তার যাত্রাকালে যিশাইয় ভাববাদীর পুস্তক থেকে পড়ছিলেন।
ফিলিপ সেই আধিকারিককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনি যা পাঠ করছেন, তা কি বুঝতে পারছেন?” (প্রেরিত ৮:৩০)। আধিকারিক উত্তর দিয়েছিলেন, “কেউ আমাকে এর ব্যাখ্যা না করে দিলে, আমি কী করে বুঝতে পারব?” (প্রেরিত ৮:৩১)। যখন ফিলিপ ঈশ্বরের বাক্য ব্যাখ্যা করে দিয়েছিলেন, সেই ব্যক্তি যিশুকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে বিশ্বাস করেছিলেন এবং একজন নতুন বিশ্বাসী হিসেবে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন।
আমরা যা পড়ছি তা কীভাবে ব্যাখ্যা করব তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী কিছু পাঠে আমরা শাস্ত্র ব্যাখ্যা করার প্রক্রিয়া অধ্যয়ন করব। আমরা ব্যাখ্যার জন্য ব্যবহারিক ধাপগুলি শিখব।
“আমাকে বোধশক্তি দাও, যেন আমি তোমার আইনকানুন পালন করতে পারি এবং সমস্ত হৃদয় দিয়ে বাধ্য হতে পারি”
- গীত ১১৯:৩৪
ব্যাখ্যার গুরুত্ব
তিনজন বিচারক আদালতে তাদের কাজ নিয়ে আলোচনা করছেন। প্রথম বিচারক বললেন, “কিছু লোক দোষী হয় এবং কিছু লোক নির্দোষ হয়। কে কোনটা তা আমি চিহ্নিত করতে পারি।” এই বিচারক বিশ্বাস করেন যে এক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য বলে কিছু আছে। দোষী লোক আছে এবং নির্দোষ লোক আছে, এবং বিচারকের কাজ হল কোনটি সত্য তা ঘোষণা করা।
দ্বিতীয় বিচারক বললেন, “কিছু লোক দোষী হয় এবং কিছু লোক নির্দোষ হয়। আমি প্রভেদ বুঝতে চেষ্টা করি একজন ব্যক্তি দোষী নাকি নির্দোষ।” এই বিচারক জানেন যে এক্ষেত্রে প্রকৃত সত্য আছে, কিন্তু তিনি এটাও উপলব্ধি করেন যে কারোর ব্যাপারে তার মতামতের ক্ষেত্রে তিনি ভুলও হতে পারেন।
তৃতীয় বিচারক বললেন, “যতক্ষণ না আমি আমার বিচার শোনাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত একজন ব্যক্তি দোষী বা নির্দোষ কোনোটাই নয়।” এই বিচারক প্রকৃত সত্যে বিশ্বাস করেন না। তিনি মনে করেন তার ঘোষণাই কোনোকিছুকে সত্য হিসেবে স্থাপন করবে।
দুঃখজনকভাবে, বহু খ্রিষ্টবিশ্বাসী বিশ্বাস করে যে শাস্ত্রের কোনো চূড়ান্ত অর্থ নেই। তারা বলে, “আপনার জন্য যা সত্যি, তা আমার জন্য সত্যি নাও হতে পারে।” এই দৃষ্টিভঙ্গিতে, প্রত্যেক পাঠক তাদের নিজস্ব “সত্য” তৈরি করে। তারা মনে করে বাইবেলের কোনো বিবৃতি সেটাই নির্দেশ করে যা তারা নির্দেশ করতে চায়।
গল্পটির দ্বিতীয় বিচারকের মতোই, খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সত্য বোঝা প্রয়োজন:
১। শাস্ত্রে প্রকাশিত অর্থই হল চূড়ান্ত, এবং আমাদের কাজ হল পাঠ্যে ঈশ্বরের সত্য বোঝার চেষ্টা করা।
২। আমাদের বোধশক্তি সীমিত। এই কারণে আমাদের ব্যাখ্যা ভুল হতে পারে। আমাদের নম্র হতে হবে।
পর্যবেক্ষণ পর্যায়ে, আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, “আমি পাঠ্যে কী দেখি?” ব্যাখ্যা পর্যায়ে, আমরা প্রশ্ন করি, “পাঠ্যটি কী অর্থ প্রকাশ করে?” পরে, আমরা আমাদের জীবনে শাস্ত্রের প্রয়োগ দেখব।
“লেখক কী বলতে চেয়েছেন?”, এই প্রশ্নটি দিয়ে আমরা ব্যাখ্যার প্রক্রিয়া শুরু করি। এটি আমাদেরকে জানতে প্রস্তুত করবে যে, “এই শাস্ত্রটি আমার কাছে কোন অর্থ প্রকাশ করছে?”
সঠিক ব্যাখ্যার প্রতিকূলতাসমূহ
বাইবেলের মতো প্রাচীন বই ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে একজন আধুনিক পাঠকের একাধিক প্রতিকূলতা থাকে। সময় এবং দূরত্ব হল দু’টি বিষয় যা আমাদেরকে আসল লেখকের থেকে পৃথক করে যা ব্যাখ্যার কাজকে কঠিন করে তোলে। আমরা একটি আলাদা ভাষায় কথা বলি। আমাদের সংস্কৃতি বাইবেলের লেখকদের সংস্কৃতির থেকে আলাদা।
ছবিটি আমাদের সময়কালে বাইবেল ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে জড়িত সমস্যাগুলিকে তুলে ধরে। বাইবেল একটি প্রাচীন পৃথিবীর (১) জন্য লেখা হয়েছিল। প্রথম পাঠক আজকের পাঠকের থেকে একটি পৃথক সংস্কৃতিতে বাস করত। নদী (২) যেটি তাদের জগৎকে আজকের জগৎ থেকে আলাদা করেছে তা আমাদের জন্য বাইবেল বুঝতে পারা অনেক বেশি কঠিন করে তুলেছে। এই নদীটি আমাদের সংস্কৃতি এবং বাইবেলের জগতের মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। একজন আধুনিক পাঠক এবং আসল লেখকের মধ্যে পার্থক্যগুলি কী কী?
ভাষাগত পার্থক্য
বাইবেল তিনটি ভাষায় লেখা হয়েছিল: হিব্রু, গ্রীক, এবং অরামিক। আজকে, আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই আমাদের নিজেদের ভাষায় বাইবেল পড়ি। এটি আমাদের এবং লেখকের মধ্যে একটি দূরত্ব তৈরি করে। যারা দ্বিতীয় কোনো ভাষা বলতে পারে, তারা ভাষার এই অসুবিধাগুলি বুঝতে পারবে।
সাংস্কৃতিক পার্থক্য
ভাষাগত অসুবিধার সাথে একইরকম আরেকটি অসুবিধা হল সাংস্কৃতিক পার্থক্য। শাস্ত্রের মানব লেখকরা এমন একটি সংস্কৃতির অংশ ছিলেন যেটি হয়ত আমাদের জগত থেকে অনেক আলাদা ছিল। আমরা যখন শাস্ত্র পড়ি, আমাদের প্রশ্ন করা উচিত, “আমি প্রাচীন পৃথিবীর সংস্কৃতি সম্পর্কে কী জানতে পারি যা আমাকে বাইবেলের বার্তা আরো ভালোভাবে বুঝতে এবং ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করবে?”
অপরিচিত ভৌগোলিক অবস্থান
বাইবেলের ঘটনাগুলি সত্যিকারের স্থানে বাস করা সত্যিকারের লোকদের জীবনে ঘটেছিল। এই ভৌগোলিক ব্যাপারগুলি আমরা যত ভালোভাবে বুঝতে পারব, আমরা তত সেই নদীটি অতিক্রম করতে সক্ষম হব যা আমাদের জগত এবং তাদের জগতকে পৃথক করেছে।
যিরীহো এবং যিরুশালেমের মধ্যবর্তী রাস্তাটি একটি বিপদজনক পাহাড়ি এলাকার মধ্যে দিয়ে গেছে – এই তথ্যটি জানা সেই যাজক এবং লেবীয়র সতর্কতাকে ব্যাখ্যা করে (লূক ১০:৩১-৩২)। এটি এক শমরীয় ব্যক্তির দয়ালু মানসিকতার জন্যও একটি প্রশংসা প্রদান করে যে সেই জখম অপরিচিত ব্যক্তিটিকে সাহায্য করার জন্য নিজের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েছিল (লূক ১০:৩৩-৩৪)।
পাঠকরা প্রশ্ন করেছে, “যিশু মার্ক ৬ অধ্যায়ে ৫,০০০ লোককে খাওয়ানোর পর কেন মার্ক ৮ অধ্যায়ে শিষ্যরা ৪,০০০ লোককে খাওয়ানোর ব্যাপারে যিশুর ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ করেছিল?” একটি মানচিত্র এর উত্তর দেয়। মার্ক ৭ অধ্যায়ে যিশু ডেকাপলিতে ভ্রমণ করেছিলেন, এই এলাকাটিতে পরজাতিদের ভিড় বা সংখ্যা বেশি। শিষ্যদের প্রশ্ন এইটা ছিল না যে, “যিশু কি এই লোকদের খাওয়াতে পারবেন?”, বরং প্রশ্নটি ছিল, “তিনি কি তাদের খাওয়াবেন?” তারা মনে করত না যে পরজাতিরাও একই অলৌকিক কাজ প্রত্যাশা করে। তারা তখনও বুঝতে পারেনি যে যিশু সমস্ত মানুষের জন্য এসেছিলেন।
মার্ক ৬
মার্ক ৭
মার্ক ৮
স্থান
গালীল
ভ্রমণ
ডেকাপলি
লোক
ইহুদি
-
পরজাতিয়
মার্ক ৪ অধ্যায় দেখায় যে কীভাবে যিশু গালীল সাগরে ঝড় থামিয়েছিলেন। বাইবেল মানচিত্রে আমরা দেখি যে গালীল সাগর হল একটা বিশাল হ্রদ যেটি সমুদ্র স্তর থেকে ২০০ মিটার নিচু। হ্রদের চারপাশের উচ্চতা একটি ফানেলের মতো কাজ করার কারণে বাতাস মাঝে মাঝেই কয়েক মিনিটের মধ্যে মারাত্মক ঝড় তৈরি করে। মৎস্যজীবী বা জেলে হিসেবে যারা এই সাগরে জীবন কাটিয়েছিল, সেই শিষ্যরা এই মারাত্মক ঝড়গুলির সাথে অভ্যস্ত ছিল। তাদের জীবনের জন্য তাদের ভয় পেয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমাদের জানায় যে এটা কোনো সাধারণ ঝড় ছিল না। এটা একটা অস্বাভাবিক শক্তিশালী ঝড় ছিল, কিন্তু যিশুর কাছে সেই সাগরে শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য এটি কয়েকটি শব্দের বেশি আর কিছুই ছিল না। আশ্চর্যের কিছু নেই যখন তারা বলেছিল, “ইনি তাহলে কে? ঝড় ও ঢেউ যে এঁর আদেশ পালন করে!” (মার্ক ৪:৩৬-৪১)
অপরিচিত সাহিত্যিক রূপ
প্রত্যেক ধরণের সাহিত্য আলাদা আলাদা পদ্ধতিতে পড়া উচিত। যখন আমরা রোমীয় পুস্তক পড়ি, আমাদের খুব মনোযোগ দিয়ে পৌলের যুক্তিগুলি দেখা উচিত কারণ তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে আমরা ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক হয়ে উঠি। যখন আমরা কোনো রূপক কাহিনী পড়ি, তখন আমরা এক গল্পকারের কথা শুনি যিনি একটা সুন্দর গল্পের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা দিচ্ছেন।
উপসংহার
ছবিটির দিকে আবার দেখুন। যদিও ভাষা, সংস্কৃতি, ভূগোল, এবং সাহিত্যের নদীটি আমাদেরকে আলাদা করেছে, তবুও বাইবেলের একটি বার্তা রয়েছে যা সমস্ত সংস্কৃতির জন্য বলা হয়েছে। এটি হল নদীর উপর দিয়ে যাওয়া একটি ব্রিজ (৩)। ব্রিজটি সেই সমস্ত নীতি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে যা বাইবেল শেখায়। এই নীতিগুলি প্রত্যকে যুগে সমস্ত সংস্কৃতির জন্য সত্য।
মানচিত্রটি (৪) আমাদেরকে বিবেচনা করে দেখতে বলে যে বাইবেলের কাহিনীতে আমরা কোন অবস্থানে আছি। খ্রিষ্টের আগমন পুরাতন নিয়মের বহু ভাববাণী এবং বিধানকে পরিপূরণ করেছিল। এটি মনে রাখা আমরা যেভাবে শাস্ত্রের এই অংশগুলি ব্যাখ্যা করি এবং প্রয়োগ করি তা পরিবর্তন করবে।
অবশেষে, আমরা আমাদের আজকের জগতে (৫) এসে পৌঁছেছি। এই পর্যায়ে, আমরা জানতে চাই যে আমরা যে নীতিগুলি পেয়েছি (৩) তা কীভাবে আমাদের জগতের জন্য প্রযোজ্য হবে।
আমরা আগামী পাঠগুলোতে এই ছবিটিতে আবার ফিরে আসব। আপাতত, আপনি এই ধাপ বা পর্যায়গুলি নিয়ে সচেতন থাকুন।
[1]ছবি: “Interpreting the Bible” Anna Boggs-র আঁকা, https://www.flickr.com/photos/sgc-library/52377290578 থেকে প্রাপ্ত, CC BY 2.0 দ্বারা লাইসেন্সকৃত। J. Scott Duvall and J. Daniel Hays, Grasping God’s Word (Grand Rapids: Zondervan, 2012)-এর ধারণা থেকে।
বাইবেল ব্যাখ্যাকারীদের কিছু প্রচলিত ভুল
এক্ষেত্রে একাধিক প্রচিলত ভুল আছে যা বাইবেল ব্যাখ্যাকারীরা করে থাকে।
পাঠ্যটি ভুলভাবে পড়া
কিছু কিছু প্রচারক প্রচার করেন যে পৌল বলেছেন, “অর্থই হল সমস্ত অনর্থের মূল।” কিন্তু পৌল মোটেই তা বলেন নি! তিনি বলেছেন, “কারণ অর্থের প্রতি আসক্তি সকল প্রকার অনর্থের মূল” (১ তিমথি ৬:১০)। এটি সম্ভব যে অর্থের প্রতি আসক্তি বা ভালোবাসা ছাড়াই অর্থের অধিকারী হওয়া সম্ভব, এবং অর্থের প্রতি আসক্তি থাকাও সম্ভব, এমনকি যদি আপনার কাছে অতিরিক্ত অর্থ নাও থাকে। পৌলের সতর্কতা প্রাথমিকভাবে অর্থ নিয়ে নয়; এটি এমন একটি হৃদয়ের ব্যাপারে যা অর্থের প্রতি আসক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
কিছু কিছু খ্রিষ্টবিশ্বাসী গীত ৩৭:৪ পদকে ভুলভাবে পড়ে বিশেষত এটি বলার জন্য যে, “ঈশ্বর আমার হৃদয়ের সব ইচ্ছা পূরণ করার প্রতিজ্ঞা করেছেন। আমি বড়লোক হতে চাই, তাই ঈশ্বর আমাকে বড়লোক করবেন।” গীতরচক বলেছেন, “সদাপ্রভুতে আনন্দ করো, তিনিই তোমার মনের অভিলাষ পূর্ণ করবেন।” গীতটি প্রতিজ্ঞা করেছে যে যদি আমরা প্রভুতে আনন্দ করি, প্রভু আমাদেরকে আমাদের আনন্দ – অর্থাৎ প্রভুকে – প্রদান করবেন। পরবর্তীতে, যিশু প্রতিজ্ঞা করেছেন যে যদি আমরা ধার্মিকতার জন্য ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত হই, তাহলে আমরা – ধার্মিকতার দ্বারা – পরিপূর্ণ হব (মথি ৫:৬)। এটি আর্থিক সমৃদ্ধির প্রতিজ্ঞা নয়; এই আরো ভালো কিছুর প্রতিজ্ঞা, যেটি হল আত্মিক সমৃদ্ধি।
এই কোর্সে আমরা প্রথম যে ধাপটি শিখেছিলাম তা ছিল পর্যবেক্ষণ। আমাদের পর্যবেক্ষণ অবশ্যই নির্ভুল হওয়া উচিত, নয়ত আমাদের ব্যাখ্যা ভুল হয়ে যাবে। সতর্ক থাকুন যাতে আপনি পাঠ্যটি ভুলভাবে না পড়েন। একজন বলেছিলেন যে বাইবেল অধ্যয়নের প্রথম তিনটি পদক্ষেপ হল:
১। পাঠ্যটি পড়া।
২। পাঠ্যটি আবার পড়া।
৩। ২য় ধাপের পর, পাঠ্যটি পুনরায় পড়া!
পাঠ্যকে বিকৃত করা
ইতিহাস জুড়ে, ভ্রান্ত শিক্ষকেরা তাদের ভুলগুলিকে রক্ষা করার জন্য শাস্ত্রকে বিকৃত করে এসেছে। পৌল সতর্ক করেছেন যে কিছু লোক স্বেচ্ছাকৃত পাপ অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছাকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য তিনি কেবল বিশ্বাস দ্বারা ধার্মিকগণিত হওয়া (justification) নিয়ে যে শিক্ষা দিয়েছেন তা বিকৃত করবে (রোমীয় ৬:১-২)। এমন অনেক সময় আছে যখন লোকেরা দাসত্ব বা সরকারের কোনো জাতিগত দলকে হত্যা করার মতো বিষয়কে ঠিক বলে প্রমাণ করার জন্য শাস্ত্র ব্যবহার করত। আজকে, বহু সুসমাচার প্রচারক ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাকে এমন এক সমৃদ্ধ-সুসমাচারে (prosperity gospel) বিকৃত করে যা শাস্ত্রীয় সত্যের বিপরীত।
যারা নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনতে শাস্ত্রকে বিকৃত করে, তাদেরকে পিতর সতর্ক করেছিলেন (২ পিতর ৩:১৬)। একইভাবে, যারা শিক্ষাদান করেন, তাদের গুরু দায়িত্বভারের ব্যাপারে যাকোব বলেছেন (যাকোব ৩:১)। আমরা যারা বাইবেলের শিক্ষা দিই, তাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন আমরা ভুল ধারণাকে সমর্থন করার জন্য শাস্ত্রকে বিকৃত না করে ফেলি।
কাল্পনিক অর্থ প্রদান করা
তিনজন বিচারকের গল্পটি বাইবেল ব্যাখ্যাকারীদের আরেকটি প্রচলিত ভুলকে তুলে ধরে: একটি ধারণা যেখানে বলা হয় শাস্ত্রের অর্থ পাঠকের কল্পনা থেকে আসে। কেউ কেউ কেবল জিজ্ঞাসা করে, “শাস্ত্রের অর্থের ব্যাপারে আমি কী অনুভব করি?” আবেগ এবং অনুভূতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও, শাস্ত্রের চূড়ান্ত সত্য রয়েছে লেখক যা লিখেছেন তার মধ্যে, তিনি যা লিখেছেন সেই ব্যাপারে আমি কী অনুভব করি তার মধ্যে নয়।
অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হওয়া
একজন ব্যাখ্যাকারী তখনই তার নিজের যুক্তিকে অতিরিক্ত বিশ্বাস করে যদি সে মনে করে যে সে কখনোই ভুল হতে পারে না। পাঠ্যের অর্থ সম্পর্কে উপসংহারে পৌঁছানোর জন্য আমরা শাস্ত্র অধ্যয়ন করি; তবে, যখন আমাদের উপসংহারগুলি ভুল হয় তখন তা মেনে নেওয়ার জন্য আমাদের নম্রতা থাকা আবশ্যক। কারোর কাছেই সবকিছুর উত্তর নেই।
ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে নম্রতা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন বাইবেল অধ্যয়ন করবেন, আপনি এমন অনেক জায়গা খুঁজে পাবেন যেখানে বিশ্বস্ত খ্রিষ্টবিশ্বাসীরা সহমত হয়নি। এর মানে সবসময় এই নয় যে একপক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে শাস্ত্রকে বিকৃত করেছে; এটি দুইপক্ষের মধ্যে অকৃত্রিম মতভেদ হতে পারে যেখানে উভয়পক্ষই শাস্ত্রের সত্যের প্রতি দায়বদ্ধ। আমাদের নিজেদের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই নম্রতা থাকা উচিত এবং যাদের আলাদা মতামত আছে তাদের প্রতিও সহনশীল থাকতে সক্ষম হওয়া উচিত।
আপনার পালা
নিচে কিছু ভুল বক্তব্য দেওয়া হল যা মানুষের নিজের তৈরি, তারা মনে করে যে তারা শাস্ত্র উদ্ধৃতি করছে। সতর্কতা সহকারে পাঠের জন্য আরো ভালো উপলব্ধি পেতে প্রত্যেকটি উদাহরণে দেওয়া পাঠ্যগুলি খুঁজে বের করুন যেগুলি বিকৃত হয়েছে এবং বাইবেল প্রকৃতভাবে কী বলছে তা লিখে রাখুন। প্রথম উদাহরণটি আপনার জন্য সম্পূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে।
SGC exists to equip rising Christian leaders around the world by providing free, high-quality theological resources. We gladly grant permission for you to print and distribute our courses under these simple guidelines:
No Changes – Course content must not be altered in any way.
No Profit Sales – Printed copies may not be sold for profit.
Free Use for Ministry – Churches, schools, and other training ministries may freely print and distribute copies—even if they charge tuition.
No Unauthorized Translations – Please contact us before translating any course into another language.
All materials remain the copyrighted property of Shepherds Global Classroom. We simply ask that you honor the integrity of the content and mission.