বাইবেলভিত্তিক সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্ব

বাইবেলভিত্তিক সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্ব

ভূমিকা

► একজন শিক্ষার্থী গ্রুপের জন্য মথি ২৮:১৮-২০ পাঠ করবে।

কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে এই আজ্ঞাটি কেবলমাত্র প্রেরিতদের জন্যই ছিল।

► এই আজ্ঞাটি কি কেবল তাদের জন্যই ছিল যারা সেটি সেইদিন এটি শুনেছিল? আপনার উত্তর ব্যাখ্যা করুন।

উইলিয়াম কেরী (William Carey)-র জীবনকাল ছিল ১৭৬১-১৮৩৪। তিনি ইংল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি জুতো তৈরি করতেন এবং তিনি সুসমাচার প্রচারকের জন্য তীব্র তাগিদ অনুভব করতেন। তার মন্ডলী বিদেশে মিশনারী কাজকর্মের জন্য খুব একটা ইচ্ছুক ছিল না। তারা মনে করত যে ঈশ্বর কাকে রক্ষা করবেন তা তিনি ইতিমধ্যেই স্থির করে রেখেছেন, এবং সেই কাজের জন্য তাঁর কোনো মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন নেই।

পাস্টারদের একটি সমাবেশে, কেরী একটি বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন: তিনি বলেছিলেন জগতের শেষদিন পর্যন্ত এই মহান নিযুক্তি (Great Commission) মন্ডলীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, কারণ যিশু এই মহান নিযুক্তির সাথে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে জগতের শেষদিন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে থাকবেন। সেই সমাবেশের নেতা বলেছিলেন, “যুবক, তুমি চুপ করে বসো। তুমি অতি উৎসাহী [ধর্মান্ধ]। ঈশ্বর যখন বিধর্মীদের রূপান্তরিত করতে চাইবেন, তখন তিনি তা তোমার বা আমার সাহায্য ছাড়াই করবেন।”

আমরা জানি যে জগতের শেষদিন পর্যন্ত মন্ডলীর জন্য এই আজ্ঞাটি দেওয়া আছে। যিশু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে তিনি সুসমাচার বহনকারীদের সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন, এমনকি যুগান্ত পর্যন্তও, যেটি প্রকাশ করে যে প্রত্যেক প্রজন্মেই মন্ডলীর উপর এই কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত আছে। প্রেরিতরা তাদের জীবনকালের মধ্যে এই কাজ শেষ করে উঠতে পারেননি, কিন্তু যিশু বলেছিলেন জগতের সমস্ত জাতির কাছে সুসমাচার প্রচার করতে হবে (মথি ২৪:১৪)।

সুতরাং, সুসমাচার প্রচারের দায়িত্ব মন্ডলীতে প্রতি প্রজন্মেই উত্তরাধিকার সূত্রে ন্যস্ত রয়েছে।

► পুনরায় মথি ২৮:১৮-২০-এর বর্ণনাটির দিকে দেখুন। কোন আজ্ঞাটি বিশেষভাবে দেওয়া হয়েছে?

যিশুর নির্দিষ্ট আজ্ঞাটি ছিল যে মন্ডলীকে প্রত্যেকটি জায়গায় পৌঁছাতে হবে এবং তাঁর জন্য শিষ্য তৈরি করতে হবে।

এই আজ্ঞাটির মধ্যে সুসমাচার প্রচার অন্তর্ভুক্ত, কারণ কোনো ব্যক্তি রূপান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত একজন শিষ্য হয়ে উঠতে পারে না।

আজ্ঞাটির অর্থ হলে যে মন্ডলীকে সুসমাচার প্রচার এবং শিষ্যত্বের কাজটিকে অগ্রাধিকার হিসেবে নিতে হবে এবং তার জন্য উদ্যোগী পদক্ষেপও নিতে হবে; নয়তো, মন্ডলীর অস্তিস্ত্বের উদ্দেশ্য পরিপূরণ হবে না।

[1]“সমস্ত জাতি” (প্রতিটি জনগোষ্ঠী) কথাটি প্রকাশ করে যে বিদেশে মিশনারী কাজের আজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, কারণ অন্যান্য জাতির কাছে সুসমাচার নিয়ে যাওয়া না হলে তারা সেটি পাবে না। কোনো ধরণের মানুষকেই বাদ দেওয়া যাবে না।

আজ্ঞাটি কেবল সুসমাচার প্রচারের নয়। শিক্ষাদানের একটি প্রক্রিয়া প্রয়োজন, কারণ যিশুর নির্দেশিত সমস্ত কিছুই আমাদেরকে রূপান্তরিতদের শেখাতে হবে।

শিক্ষকের অবশ্যই খ্রিষ্টের আজ্ঞার প্রতি পরিপূর্ণ ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা থাকতে হবে কারণ তাকে আবশ্যিকভাবে একজন ভালো দৃষ্টান্ত হতে হবে, যিনি রূপান্তরিতদের কাছে তুলে ধরবেন যে কীভাবে খ্রিষ্টের প্রতি আনুগত্যের একটি জীবন যাপন করতে হয়।

রূপান্তরিত ব্যক্তিকেও আবশ্যিকভাবে খ্রিষ্টের প্রতি অনুগত হতে হবে, কারণ খ্রিষ্টের আজ্ঞাগুলি কেবল শেখাই যথেষ্ট নয়, যদি না তিনি যা শিখছেন তা মেনে চলেন। যদি তিনি যা শিখেছেন তা মেনে না চলেন, তার মানে হল তিনি শিষ্যত্বের কাজকে বাধা দিচ্ছেন। শিষ্যত্বের প্রক্রিয়া কেবল শিক্ষামূলক নয়, বরং তা চরিত্র গঠনেরও বিষয়।


[1]

“আমি আগের চেয়ে বেশি নিশ্চিত যে আমরা যদি আমাদের প্রভুর দিকনির্দেশনা এবং তিনি তাঁর প্রথম শিষ্যদেরকে আমাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে যে আশ্বাসগুলি দিয়েছিলেন তা আরো সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করি, তাহলে সেগুলি ঐসময়ে যেভাবে প্রদত্ত হয়েছিল, আমাদের তা বর্তমানে সময়ের উপযোগিতা অনুযায়ী কার্যকর করে তোলা উচিত।“

- জে. হাডসন টেলর (J. Hudson Taylor, “The Call to Service”)